১৬৫-১৭৫ নং আয়াতের তাফসীর
হযরত লূত (আঃ) তাঁর কওমকে এই বিশেষ নির্লজ্জতাপূর্ণ কাজ থেকে বিরত রাখতে গিয়ে বলেনঃ “তোমরা তোমাদের কাম প্রবৃত্তি চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যে পুষদের নিকট যেয়ো না। বরং তোমরা তোমাদের হালাল স্ত্রীদের কাছে গিয়ে তোমাদের কাম বাসনা চরিতার্থ কর, যাদেরকে মহান আল্লাহ তোমাদের জোড়া বানিয়ে দিয়েছেন। তাঁর এ কথার উত্তরে তাঁর কওমের লোকেরা তাঁকে বললোঃ ‘হে লূত (আঃ)! তুমি যদি এ কাজ হতে বিরত না হও তবে অবশ্যই তোমাকে দেশ থেকে বের করে দেয়া হবে। যেমন আল্লাহ তা'আলা অন্য আয়াতে বলেনঃ
فَمَا كَانَ جَوَابَ قَوْمِهٖۤ اِلَّاۤ اَنْ قَالُوْۤا اَخْرِجُوْۤا اٰلَ لُوْطٍ مِّنْ قَرْیَتِكُمْ اِنَّهُمْ اُنَاسٌ یَّتَطَهَّرُوْنَ
অর্থাৎ “উত্তরে তার সম্প্রদায় শুধু বললোঃ তোমরা লুত (আঃ) ও তার অনুসারীদেরকে তোমাদের জনপদ হতে বহিষ্কার কর, তারা তো এমন লোক যারা অতি পবিত্র হতে চায়।” (২৭:৫৬) তাদের এ অবস্থা দেখে হযরত লুত (আঃ) তাদের প্রতি অসন্তুষ্টি ও তাদের থেকে বিচ্ছিন্নতার কথা ঘোষণা করেন এবং বলেন, “আমি তোমাদের এ জঘন্য কাজের প্রতি অসন্তুষ্ট। আমি এ কাজ মোটেই পছন্দ করি না। আমি মহান আল্লাহর সামনে নিজেকে এসব কাজ হতে মুক্তরূপে প্রকাশ করছি।'
অতঃপর হযরত লূত (আঃ) তাদের বিরুদ্ধে আল্লাহ তা'আলার নিকট বদদু'আ করেন এবং নিজের ও পরিবার-পরিজনদের জন্যে মুক্তির প্রার্থনা করেন। তাঁর স্ত্রী তাঁর কওমের সাথে যোগ দিয়েছিল। তাই সেও তাদের সাথে ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। যেমন সূরায়ে আ'রাফ, সূরায়ে হৃদ এবং সূরায়ে হিজরে বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করা হয়েছে।
হযরত লূত (আঃ) আল্লাহ তাআলার নির্দেশ অনুযায়ী তাঁর অনুসারীদেরকে নিয়ে ঐ জনপদ হতে সরে পড়লেন। নির্দেশ ছিল যে, তাঁদের সেখান হতে চলে যাওয়ার পরই তাঁর কওমের উপর আল্লাহর শাস্তি আপতিত হবে, ঐ সময় তাদের দিকে ফিরেও তাকানো যাবে না। অতঃপর তাদের সবারই উপর আযাব এসে পড়ে এবং তারা সব ধ্বংস হয়ে যায়। তাদের উপর আকাশ হতে পাথর বর্ষিত হয়। তাদের জন্যে এই প্রস্তর বৃষ্টি ছিল কতই না নিকৃষ্ট! তাদের এ ঘটনাটিও একটি শিক্ষামূলক বিষয়। এতে সবারই জন্যে উপদেশ রয়েছে। কিন্তু তাদের অধিকাংশই মুমিন নয়। তবে আল্লাহ যে মহাপরাক্রমশালী ও পরম দয়ালু এতে সন্দেহের লেশমাত্র নেই।