[১] অর্থাৎ, যে 'মহা সংবাদ' নিয়ে তাদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে সেই বিষয়েই ঐ জিজ্ঞাসাবাদ। কারো কারো মতে এই 'মহা সংবাদ'-এর উদ্দেশ্য হল, পবিত্র কুরআন। কেননা, কাফেররা এ ব্যাপারে বিভিন্ন মন্তব্য করত। কেউ তাকে যাদু, কেউ জ্যোতিষীর কথা, কেউ কবিদের কাব্য, কেউ বা আবার পূর্বযুগের উপাখ্যান বলে অভিহিত করত। অনেকের মতে এর উদ্দেশ্য হল, কিয়ামত সংঘটিত হওয়া এবং পুনর্বার জীবিত হওয়ার সংবাদ। কেননা, এ ব্যাপারেও তাদের মাঝে কিছু মতভেদ ছিল। কেউ তো একেবারেই তা অস্বীকার করত। আবার কেউ তাতে সন্দেহ পোষণ করত। কোন কোন আলেম বলেন, জিজ্ঞাসাকারী মু'মিন-কাফের উভয়ই ছিল। মু'মিনদের জিজ্ঞাসা তাদের ঈমান এবং অন্তর্দৃষ্টি বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে ছিল। আর কাফেরদের জিজ্ঞাসা ছিল ঠাট্টা-ব্যঙ্গ ও উপহাসস্বরূপ।
2 Tafsir Abu Bakr Zakaria
যে বিষয়ে তারা মতানৈক্য করছে [১],
[১] আয়াতের আরেকটি অর্থ হচ্ছেঃ “এ ব্যাপারে তারা নানা ধরনের কথা বলছে ও ঠাট্টা-বিদ্রুপ করে ফিরছে।” অন্য অর্থ এও হতে পারে, দুনিয়ার পরিণাম সম্পর্কে তারা নিজেরাও কোন একটি অভিন্ন আকীদা পোষণ করে না বরং “তাদের মধ্যে এ ব্যাপারে বিভিন্ন মত পাওয়া যায়।” কেউ কেউ আবার আখেরাত পুরোপুরি অস্বীকার করতো না, তবে তা ঘটতে পারে কিনা, এ ব্যাপারে তাদের সন্দেহ ছিল। কুরআন মজীদে এ ধরনের লোকদের এ উক্তি উদ্ধৃত করা হয়েছে, “আমরা তো মাত্র একটি ধারণাই পোষণ করি, আমাদের কোন নিশ্চিত বিশ্বাস নেই।” [সূরা আল-জাসিয়াহ, ৩২] আবার কেউ কেউ একদম পরিষ্কার বলতো, “আমাদের এ দুনিয়ার জীবনটিই সবকিছু এবং মরার পর আমাদের আর কখনো দ্বিতীয়বার উঠানো হবে না।” [সূরা আল-আন‘আম; ২৯]; “আমাদের এই দুনিয়ার জীবনটিই সব কিছু। এখানেই আমরা মরি, এখানেই জীবন লাভ করি এবং সময়ের চক্র ছাড়া আর কিছুই নেই যা আমাদের ধ্বংস করে।” [সূরা আল-জাসিয়াহ্; ২৪] [ফাতহুল কাদীর]