ইনশিরাহ আয়াত ৮
وَاِلٰى رَبِّكَ فَارْغَبْ ࣖ ( الشرح: ٨ )
Wa ilaa rabbika far ghab (aš-Šarḥ ৯৪:৮)
English Sahih:
And to your Lord direct [your] longing. (Ash-Sharh [94] : 8)
তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):
এবং তোমার রব-এর প্রতি গভীরভাবে মনোযোগ দিবে। (ইনশিরাহ [৯৪] : ৮)
1 Tafsir Ahsanul Bayaan
আর তোমার প্রতিপালকের প্রতিই মনোনিবেশ কর। [১]
[১] অর্থাৎ, তাঁর কাছেই তুমি জান্নাতের আশা রাখ। তাঁর কাছেই তুমি নিজের প্রয়োজন ভিক্ষা কর এবং সর্ববিষয়ে তাঁরই উপর নির্ভর কর ও ভরসা রাখ।
2 Tafsir Abu Bakr Zakaria
আর আপনার রবের প্রতি গভীর মনোযোগী হোন [১]।
[১] النصب অর্থ কঠোর প্রচেষ্টার পর ক্লান্ত হওয়া। এ প্রচেষ্টাটি দুনিয়ার কাজেও হতে পারে, আবার আখেরাতের কাজেও হতে পারে। এখানে কী উদ্দেশ্য তা নিয়ে কয়েকটি মত পাওয়া যায়। সবগুলো মতই গ্রহণযোগ্য হতে পারে। কেউ কেউ বলেছেন, এর অর্থ সালাতের পর দু‘আয় রত হওয়া। কেউ কেউ বলেন, ফরযের পর নফল ইবাদতে রত হওয়া। মূলত এখানে উদ্দেশ্য দুনিয়ার কাজ থেকে খালি হওয়ার পর আখিরাতের কাজে রত হওয়াই উদ্দেশ্য। শেষ আয়াতে বলা হয়েছে, একমাত্র আল্লাহ্রই নিকট মনোযোগী হয়ে সকল ইবাদত যেন তিনি কবুল করে নেন, এ আশা করো। এ আয়াতে মুমিনদের জীবনে বেকারত্বের কোন স্থান দেওয়া হয় নি। হয় সে দুনিয়ার কাজে ব্যস্ত থাকবে, নয় আখেরাতের কাজে। [আদ্ওয়াউল বায়ান, সা‘দী]
3 Tafsir Bayaan Foundation
আর তোমার রবের প্রতি আকৃষ্ট হও।
4 Muhiuddin Khan
এবং আপনার পালনকর্তার প্রতি মনোনিবেশ করুন।
5 Zohurul Hoque
আর তোমার প্রভুর প্রতি তবে একান্তভাবে মনোনিবেশ করো।
6 Mufti Taqi Usmani
এবং নিজ প্রতিপালকের প্রতিই মনোযোগী হও।
7 Mujibur Rahman
এবং তোমার রবের প্রতিই মনোনিবেশ কর।
8 Tafsir Fathul Mazid
নামকরণ:
الشرح শব্দের অর্থ সম্প্রসারণ করা, প্রশস্ত করা ও উন্মোচন করা ইত্যাদি। প্রথম আয়াতে উল্লিখিত نَشْرَحْ ক্রিয়া থেকে اَلشَّرْح নামে সূরার নামকরণ করা হয়েছে।
পূর্বের সূরাতে নাবী (সাঃ)-এর প্রতি তিনটি নেয়ামতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এ সূরাতেও মহান আল্লাহ আরো তিনটি নেয়ামতের কথা উল্লেখ করেছেন। প্রথমটা হলো : নাবী (সাঃ)-এর বক্ষ প্রশস্ত করে দেয়া। বক্ষ প্রশস্ত করে দেয়ার অর্থ হলো : দীন ইসলামের মাধ্যমে আল্লাহ তা‘আলার দিকে মানুষকে দাওয়াত এবং উত্তম চরিত্রের জন্য বক্ষ উন্মোচন করে দেয়া। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(فَمَنْ يُّرِدِ اللّٰهُ أَنْ يَّهْدِيَه۫ يَشْرَحْ صَدْرَه۫ لِلْإِسْلَامِ)
“আল্লাহ কাউকে সৎপথে পরিচালিত করতে চাইলে তিনি তার বক্ষ ইসলামের জন্য প্রশস্ত করে দেন।” (সূরা আনআম ৬ : ১২৫)
আবার কেউ কেউ এ আয়াত দ্বারা বক্ষ বিদীর্ণ বা সিনাচাককে বুঝিয়েছেন। সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত নাবী (সাঃ)-এর দু’বার সিনাচাক করা হয়েছিল। প্রথমবার ৪ বছর বয়সে। (সহীহ মুসলিম হা. ২৬১) দ্বিতীয়বার মি‘রাজের সময়। জিবরীল (আঃ) রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর বুককে চিরে অন্তরকে বের করে যমযমের পানি দিয়ে ধুয়ে পুনরায় স্বস্থানে বসিয়ে দেন। (সহীহ বুখারী হা. ৩৪৯, সহীহ মুসলিম হা. ১৬৪)
(وَوَضَعْنَا عَنْكَ وِزْرَكَ) অর্থাৎ তোমার অপরাধসমূহ অপসারণ করে দিয়েছি। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(لِّیَغْفِرَ لَکَ اللہُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْۭبِکَ وَمَا تَاَخَّرَ وَیُتِمَّ نِعْمَتَھ۫ عَلَیْکَ وَیَھْدِیَکَ صِرَاطًا مُّسْتَقِیْمًا)
“যাতে আল্লাহ তোমার আগের ও পরের ভুল-ক্রটি মাফ করেন, তোমার ওপর তাঁর নেয়ামত পূর্ণ করে দেন, এবং তোমাকে সরল-সঠিক পথে পরিচালিত করেন।” (সূরা ফাত্হ ৪৮: ২)
(وَرَفَعْنَا لَكَ ذِكْرَكَ)
অর্থাৎ যেখানে আল্লাহ তা‘আলার নাম আসবে সেখানে নাবী (সাঃ)-এর নামও আসবে। যেমন আযান, ইকামত, শাহাদাত ইত্যাদি। এ হিসাবে সারা বিশ্বে প্রতি মুহূর্তে তাঁর নাম উচ্চারিত ও তাঁর প্রতি দরূদ পাঠ করা হয়ে থাকে। তাছাড়া পূর্ববর্তী গ্রন্থেও নাবী (সাঃ)-এর নাম ও গুণাবলীর বিবরণ রয়েছে। ফেরেশতারাও তাঁর নাম সম্মানের সাথে উল্লেখ করেন। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন : একদা জিবরীল (আঃ) আমার কাছে আগমন করলেন এবং বললেন : নিশ্চয়ই আমার ও আপনার প্রভু আপনার আলোচনাকে কী করে সমুন্নত করবেন তা তিনি জানতে চান। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বললেন : সেটা আল্লাহ তা‘আলা ভাল জানেন। জিবরীল (আঃ) বললেন : আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন : আমার কথা যখন আলোচনা করা হবে তখন আমার রাসূলের (সাঃ)-এর কথাও আলোচিত হবে। (আহমাদ ৫/১৩৯ বণর্নাকারী নির্ভরযোগ্য।)
(فَإِنَّ مَعَ الْعُسْرِ يُسْرًا)
আরবী ব্যাকরণে যখন দু’টি নাম একত্রে উল্লেখ করা হবে তখন তার চারটি অবস্থা থাকে।
তার দু’টি অবস্থা এখানে তুলে ধরা হয়েছে :
(১) যদি দুটি নাম নির্দিষ্ট হয় তাহলে দ্বিতীয়টা দ্বারা প্রথম নাম উদ্দেশ্য।
(২) যদি দু’টি নামই অনির্দিষ্ট হয় তাহলে দুটি নাম দ্বারা ভিন্ন ভিন্ন জিনিস বুঝায়। আয়াতদ্বয়ে الْعُسْرِ শব্দটি দু’বার এসেছে। এবং দুবারেই ال (আলিফ-লাম) দ্বারা নির্দিষ্ট আর يسر শব্দটি দুবার এসেছে অনির্দিষ্ট অবস্থায়। তাহলে আয়াতদ্বয়ের অর্থ হলো: নিশ্চয়ই কষ্টের সাথে স্বস্তি রয়েছে, আবার ঐ কষ্টের সাথে আরেকটি স্বস্তি রয়েছে। এজন্য ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেছেন:
لن يغلب العسر يسرين
অর্থাৎ একটি কষ্ট দুটি স্বস্তির ওপর জয়ী হবে না। (মাবাহিস ফী উলূমুল কুরআন পৃ. ১৯১)
দুঃখের সাথেই সুখ রয়েছে এটা হলো মহা সুসংবাদ। এমনকি দুঃখ-কষ্ট যদি গুইসাপের গর্তে প্রবেশ করে তাহলে সুখও তাতে প্রবেশ করে তা থেকে বের করে নিয়ে আসবে। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
(سَيَجْعَلُ اللّٰهُ بَعْدَ عُسْرٍ يُّسْرًا)
“আল্লাহ কষ্টের পর সহজ করে দেবেন।” (সূরা তালাক ৬৫: ৭)
তারপর আল্লাহ তা‘আলা নাবী (সাঃ)-কে উদ্দেশ্য করে উম্মাতকে নির্দেশ দিয়ে বলছেন : যখনই দুনিয়াবী ব্যস্ততা থেকে অবসর পাবে তখন আল্লাহ তা‘আলার ইবাদতে সচেষ্ট হও।
فَارْغَبْ অর্থাৎ তাঁর কাছে তুমি জান্নাতের আশা রাখ। তাঁর কাছে তোমার প্রয়োজনে চাও এবং তাঁর ওপরই নির্ভর কর।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. নাবী (সাঃ)-এর ওপর আল্লাহ তা‘আলার অসংখ্য নেয়ামতের কথা জানতে পারলাম।
২. আল্লাহ তা‘আলা যার হিদায়াত চান তার অন্তরকে এভাবে উন্মোচন করে দেন।
৩. প্রত্যেক কষ্টের সাথে দু’টি স্বস্তি রয়েছে।
৪. প্রত্যেক মু’মিনের কর্তব্য অবসর পেলেই আল্লাহ তা‘আলার ইবাদতে মশগুল হওয়া।
9 Fozlur Rahman
এবং নিজের প্রভুর প্রতি মনোযোগী হবে।
10 Mokhtasar Bangla
৮. আর আপনার অনুরাগ ও আসক্তিকে এককভাবে আল্লাহর প্রতি নিবদ্ধ করুন।
11 Tafsir Ibn Kathir
১-৮ নং আয়াতের তাফসীর
আল্লাহ তাআলা স্বীয় নবী (সঃ) কে সম্বোধন করে বলেনঃ হে নবী (সঃ)! আমি তোমার কল্যাণার্থে তোমার বক্ষ প্রশস্ত করে দিয়েছি, দয়ামায়াপূর্ণ এবং অনুগ্রহপুষ্ট করে দিয়েছি। যেমন অন্য জায়গায় বলেনঃ
فَمَنْ یُّرِدِ اللّٰهُ اَنْ یَّهْدِیَهٗ یَشْرَحْ صَدْرَهٗ لِلْاِسْلَامِ
অর্থাৎ, “আল্লাহ যাকে হিদায়াত করার ইচ্ছা করেন তার বক্ষ তিনি ইসলামের জন্যে খুলে দেন।" (৬:১২৫) মহান আল্লাহ বলেনঃ “হে নবী (সঃ)! তোমার বক্ষ যেমন প্রশস্ত ও প্রসারিত করে দেয়া হয়েছে, তেমনই তোমার শরীয়তও প্রশস্ততা সম্পন্ন, সহজ সরল ও নম্রতাপূর্ণ করে দেয়া হয়েছে। তাতে কোন জটিলতা নেই এবং নেই কোন সংকীর্ণতা ও কঠোরতা। এটাও বলা হয়েছে যে, এখানে মিরাজের রাত্রের বক্ষ বিদারণ সম্বলিত ঘটনার কথা বুঝানো হয়েছে। মিরাজের রাত্রে বক্ষ বিদীর্ণ করা এবং বক্ষকে আল্লাহর রহস্যের আধারে পরিণত করা, এই দুই অর্থই নেয়া যেতে পারে। এ সব ব্যাপারে আল্লাহ তা'আলাই সবচেয়ে ভাল জানেন।
হযরত উবাই ইবনে কা'ব (রাঃ) বলেন যে, হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) বেশ সাহসিকতার সাথে রাসূলুল্লাহ (সঃ) কে এমন সব কথা জিজ্ঞাসা করতেন যে সব কথা অন্য কেউ জিজ্ঞেস করতে পারতেন না। একবার তিনি রাসূলুল্লাহ (সঃ) কে প্রশ্ন করেনঃ “হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! নবুওয়াতের কার্যাবলীর মধ্যে সর্বপ্রথম আপনি কি প্রত্যক্ষ করেছেন?” তখন রাসূলুল্লাহ(সঃ) ভালভাবে বসে বললেনঃ “হে আবূ হুরাইরা (রাঃ)! তা হলে শুনো! আমার বয়স যখন দশ বছর কয়েক মাস। একজন লোক অন্য একজন লোককে বলছেঃ “ইনিই কি তিনি?" তারপর দু’জন লোক আমার সামনে এলেন। তাদের চেহারা এমন নূরানী বা আলোকোজ্জ্বল ছিল যে, আমি এর পূর্বে ঐ রকম চেহারা কখনো দেখিনি। তাঁদের দেহ হতে এমন সুগন্ধি বেরুচ্ছিল যে, এর পূর্বে ঐ রকম সুগন্ধি কখনো আমার নাকে আসেনি। তারা এমন পোশাক পরিহিত ছিলেন যে, ঐ রকম পোশাক পূর্বে আমি কখনো দেখিনি। তারা এসে আমার উভয় বাহু আঁকড়ে ধরলেন। কিন্তু কেউ আমার বাহু ধরেছে বলে আমার মনে হলো না। তারপর একজন অপরজনকে বললেনঃ “এঁকে শুইয়ে দাও।" অতঃপর আমাকে শুইয়ে দেয়া হলো। কিন্তু তাতেও আমার কোন প্রকার কষ্ট হয়নি। তারা একজন অন্য জনকে বললেনঃ “এঁর বক্ষ বিদীর্ণ করে দাও।” অতঃপর আমার বক্ষ বিদীর্ণ করা হলো। কিন্তু তাতেও আমি মোটেই কষ্ট অনুভব করিনি। বিন্দুমাত্র রক্তও তাতে বের হয়নি। তারপর তাদের একজন অপরজনকে বললেনঃ “হিংসা বিদ্বেষ, শত্রুতা এঁর বুক থেকে বের করে দাও।” যাকে আদেশ করা হলে তিনি রক্ত পিণ্ডের মত কি একটা জিনিষ বের করলেন এবং ওটা ছুঁড়ে ফেললেন। এরপর আবার একজন অপরজনকে আদেশ করলেনঃ “বক্ষের মধ্যে দয়া মায়া, স্নেহ, অনুগ্রহ প্রবণতা ঢুকিয়ে দাও।" এই আদেশ মূলে বক্ষ হতে যে পরিমাণ জিনিষ বের করে ফেলা হয়েছিল সেই পরিমাণ রূপার মত কি একটা জিনিস বক্ষের মধ্যে ভরে দেয়া হলো। তারপর আমার ডান পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুলি নেড়ে তারা আমাকে বললেনঃ “যান, এবার শান্তিতে জীবন যাপন করুন। তারপর চলতে গিয়ে আমি অনুভব করলাম যে, প্রত্যেক ছোট ছেলের প্রতি আমার অন্তরের স্নেহ মমতা রয়েছে এবং প্রত্যেক বড় মানুষের প্রতি আমার শ্রদ্ধা ও সহানুভূতি রয়েছে।” (এ হাদীসটি মুসনাদে আহমদে বর্ণিত হয়েছে)
এরপর আল্লাহ তা'আলা স্বীয় নবী (সঃ) কে সম্বোধন করে বলেনঃ “আমি তোমার বোঝা অপসারণ করেছি।” এর ভাবার্থ হলো আল্লাহ তাঁর প্রিয় নবী (সঃ)-এর পূর্বাপর সমস্ত পাপ মার্জনা করে দিয়েছেন।
মহান আল্লাহ বলেনঃ হে নবী (সঃ)! আমি তোমার উপর থেকে তোমার সেই ভার অপসারিত করেছি যা তোমার মেরুদণ্ড ভেঙ্গে রেখেছিল।
“আর আমি তোমার জন্যে তোমার খ্যাতি সমুন্নত করেছি। হযরত মুজাহিদ (রঃ) বলেন যে, এর ভাবার্থ হলোঃ যেখানে আমার (আল্লাহর) আলোচনা হবে সেখানে তোমারও আলোচনা হবে। যেমনঃ
اَشْهَدُ اَنْ لَّآ اِلٰهَ اِلَّا اللّٰهُ وَاَنَّ مُحَمَّدًا رَّسُوْلُ اللّٰهِ
অর্থাৎ “আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোন মাবুদ নেই এবং মুহাম্মদ (সঃ) আল্লাহর রাসুল।" হযরত কাতাদা (রঃ) বলেন যে, এর ভাবার্থ হলোঃ দুনিয়ায় এবং আখিরাতে আল্লাহ তাআলা তাঁর প্রিয় নবী (সঃ)-এর আলোচনা বুলন্দ করেছেন। কোন খতীব, কোন বক্তা, কোন বাগী এবং কোন নামাযী এমন নেই যিনি আল্লাহর একত্ববাদের ঘোষণা দেয়ার সাথে সাথে রাসূলুল্লাহ (সঃ)এর রিসালাতের কথা উচ্চারণ করেন না। ইমাম ইবনে জারীর (রঃ) বর্ণনা করেছেন যে, হযরত জিব্রাঈল (আঃ) রাসূলুল্লাহর (সঃ) কাছে এসে বলেনঃ “আমার এবং আপনার প্রতিপালক আপনার আলোচনাকে কি করে সমনত করবেন তা তিনি জানতে চান।” রাসূলুল্লাহ (সঃ) উত্তরে বলেনঃ “সেটা আল্লাহ তা'আলাই ভাল জানেন।” তখন হযরত জিবরাঈল (আঃ) জানিয়ে দেনঃ “আল্লাহ তা'আলা বলেছেনঃ আমার কথা যখন আলোচনা করা হবে তখন আমার রাসূল (সঃ)-এর কথাও আলোচিত হবে।”
মুসনাদে ইবনে আবী হাতিমে হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “আমি আমার প্রতিপালককে একটি প্রশ্ন করেছি, কিন্তু প্রশ্নটি না করাই ভাল ছিল। প্রশ্নটি হলোঃ হে আল্লাহ! আমার পূর্ববর্তী কোন নবীর জন্যে কি আপনি বাতাসকে তাবেদার বানিয়েছিলেন? কারো হাতে মৃতকে কি জীবিত করিয়েছেন? আল্লাহ তাআলা জবাবে বলেনঃ “আমি কি তোমাকে ইয়াতীম পেয়ে আশ্রয় দিইনি?” আমি জবাবে বললামঃ হ্যাঁ, অবশ্যই দিয়েছেন। আল্লাহ পাক আবার প্রশ্ন করেনঃ “আমি কি তোমাকে পথভ্রষ্ট অবস্থায় পেয়েও পথ নির্দেশ প্রদান করিনি?” উত্তর দিলামঃ হ্যা, অবশ্যই করেছেন। আল্লাহ পুনরায় জিজ্ঞেস করলেনঃ আমি কি তোমাকে দরিদ্রাবস্থায় পেয়েও বিত্তশালী করিনি?” আমি জবাবে বললামঃ হ্যা, হে আমার প্রতিপালক! অবশ্যই করেছেন। তিনি আবারও প্রশ্ন করলেনঃ “আমি কি তোমার কল্যাণে তোমার বক্ষ প্রশস্ত করে দিইনি?” উত্তর দিলামঃ হে আমার প্রতিপালক! হ্যা, অবশ্যই দিয়েছেন। আল্লাহ পুনরায় প্রশ্ন করলেনঃ “আমি কি তোমার খ্যাতিকে উচ্চ মর্যাদা দান করিনি?” আমি জবাবে বললামঃ হ্যা, হে আমার প্রতিপালক! অবশ্যই করেছেন।”
হযরত আবু নাঈম লিখিত দালাইলুন নুবুওয়াহ্ নামক গ্রন্থে হযরত আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “আমার মহান প্রতিপালক আমাকে আকাশ ও জমীনের কাজের ব্যাপারে যে নির্দেশ দিয়েছেন সেই কাজ হতে অব্যাহতি লাভ করার পর আমি তাকে বললামঃ হে আমার প্রতিপালক আমার পূর্বে যত নবী গত হয়েছেন তাঁদের সবাইকে আপনি সম্মান ও মর্যাদা দান করেছেন। হযরত ইব্রাহীম (আঃ) কে বন্ধু বানিয়েছেন, হযরত মূসা (আঃ) কে কালীম বানিয়েছেন অর্থাৎ তার সাথে বাক বিনিময় করেছেন, হযরত দাউদ (আঃ)-এর জন্য পাহাড়কে বিদীর্ণ করেছেন, হযরত সুলাইমান (আঃ)-এর জন্যে বাতাস এবং শয়তানকে অনুগত করেছেন, হযরত ঈসা (আঃ)-এর হাতে মতকে জীবন দান করেছেন। সুতরাং আমার জন্যে কি করেছেন? আল্লাহ তা'আলা জবাবে বলেনঃ আমি কি তোমাকে তাদের সবার চেয়ে উত্তম জিনিস প্রদান করিনি? আমার যিকির বা আলোচনার সাথে তোমার আলোচনাও করা হয়ে থাকে, এবং আমি তোমার উম্মতের বক্ষকে এমন করে দিয়েছি যে, তারা প্রকাশ্যে কুরআন পাঠ করে। এটা আমি পূর্ববর্তী উম্মতের মধ্যে কাউকেও দিইনি। আর আমি তোমাকে আরশের ধনাগার হতে ধন দিয়েছি। সেই ধন হলোঃ لَاحَوْلَ وَلَا قُوَّةَ اِلَّا بِاللّٰهِ الْعَلِىِّ الْعَظِيْمِ অর্থাৎ পাকার্য হতে ফিরবার এবং ভাল কাজ করবার ক্ষমতা সমুন্নত ও মহান আল্লাহর সাহায্য ছাড়া কারো নেই।”
হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) ও হযরত মুজাহিদ (রঃ) বলেন যে, এখানে আযানকে বুঝানো হয়েছে। যেমন হযরত হাসসান ইবনে সাবিতের (রাঃ) নিম্নের কবিতায় রয়েছেঃ
اَغَرَّ عَلَيْهِ لِلنُّبُوَّةِ خَاتِمِ ـ مِنَ اللّهِ نُوْرٌ يَلُوْحُ وَيَشْهَدُ
وَضَمَّ الْاِلٰهُ اِسْمَ النَّبِيِّ اِلٰى اِسْمِهٖ ـ اِذَا قَالَ فِى الْخَمْسِ الْمُؤَذِّنِ اَشْهَدُ
وَشَقَّ لَهٗ مِنْ اِسْمِهٖ لِيَجْلَهٗ ـ فَذُو الْعَرْشِ مَحْمُوْدُ وَهٰذَا مُحَمَّدُ
অর্থাৎ “আল্লাহ তা'আলা মুহরে নুবুওয়াতকে নিজের নিকটের একটি নুর বানিয়ে তাঁর (নবী সঃ)-এর উপর চমকিত করেছেন, যা তাঁর রিসালাতের সাক্ষ্য দেয়। আল্লাহ নবী (সঃ)-এর নামকে নিজের নামের সাথে মিলিয়ে দিয়েছেন, যখন মুআযযিন পাঁচবার (পাঁচওয়াক্ত নামাযের মধ্যে) “আশহাদু' (আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি) বলে। আর আল্লাহর নবী (সঃ)-এর নামকে স্বীয় নাম হতে বের করেছেন, সুতরাং আরশের মালিক (আল্লাহ) হলেন মাহমুদ এবং ইনি (নবী করীম (সঃ) হলেন মুহাম্মদ (সঃ)।” অন্যেরা বলেন যে, পূর্ববর্তী এবং পরবর্তীদের মধ্যে আল্লাহ তা'আলা তাঁর প্রিয় নবী (সঃ)-এর নাম মর্যাদায়ে উন্নীত করেছেন। সকল নবী (সঃ)-এর নিকট থেকে অঙ্গীকার গ্রহণের দিনে আল্লাহ তা'আলা অঙ্গীকার নিয়েছিলেন যে, তাঁরা তাঁর প্রিয় নবীর (সঃ) উপর বিশ্বাস স্থাপন করবেন এবং নিজ নিজ উম্মতকেও বিশ্বাস স্থাপনের নির্দেশ দিবেন। তা ছাড়া প্রিয় নবী (সঃ)-এর উম্মতের মধ্যেও আল্লাহ তাআলা তাঁর আলোচনার প্রতি বিশেষ গুরুত্বারোপ করেছেন। তাদেরকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে যে, তারা যেন আল্লাহর আলোচনার সাথে সাথে নবী করীম (সঃ)-এরও আলোচনা করে। সরসরি (রঃ) একটি চমঙ্কার কথা বলেছেন। তিনি বলেনঃ
لَا يُصِحَّ الْاٰذَانُ فِى الْفَرْضِ اِلَّا ـ بِاسْمِهِ الْعَذْبِ فِى الْفَمِ الرِّضٰى
اَلَمْ تَرَ اَنَا لَا يُصَحَّ اٰذَانَنَا ـ وَلَا فَرَضْنَا اِنْ لَّمْ نُكَرِّرْهُ فِيْهِمَا
অর্থাৎ আল্লাহর প্রিয় রাসূল (সঃ)-এর মিষ্টি নাম পছন্দনীয় এবং সুন্দর মুখ থেকে উচ্চারিত হওয়ার পূর্বে আমাদের কর্তব্যজনিত আযান বিশুদ্ধ হয় না। তুমি কি দেখো না যে, আমাদের আযান এবং আমাদের কর্তব্য বিশুদ্ধ হয় না যতক্ষণ বারবার নবী করীম (সঃ)-এর নাম উচ্চারিত হয়।”
আল্লাহ পাকের উক্তিঃ কষ্টের সাথেই তো স্বস্তি আছে, অবশ্যই কষ্টের সাথেই স্বস্তি আছে।” আল্লাহ তা'আলা খবর দিচ্ছেন যে, কষ্ট ও দুঃখের পরেই শান্তি ও সুখ রয়েছে। অতঃপর খবরের প্রতি গুরুত্ব আরোপের জন্যে এ কথার পুনরাবৃত্তি করা হয়েছে।
হযরত আনাস ইবনে মালিক হতে বর্ণিত আছে যে, একদা নবী করীম (সঃ) বসেছিলেন, তার সামনে একটা পাথর ছিল। তখন তিনি বললেনঃ যদি মুশকিল বা কষ্টকর অবস্থা আসে এবং এ পাথরের মধ্যে প্রবেশ করে তাহলে আসানী ও আসবে এবং পাথরের মধ্যে প্রবেশ করে তার ভিতর থেকে মুশকিল ও কষ্টকর অবস্থাকে বের করে আনবে।” (এ হাদীসটি ইমাম ইবনু আবী হাতিম (রঃ) বর্ণনা করেছেন)
হযরত হাসান (রঃ) বলেন যে, লোকেরা বলেঃ একটি মুশকিল দুটি আসানীর উপর জয়যুক্ত হতে পারে না।
হযরত হাসান (রঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, একদা নবী করীম (সঃ) খুবই স্মিত মুখে এলেন এবং হাসতে হাসতে বললেনঃ “কিছুতেই একটি মুশকিল দুইটি আসানীর উপর জয়যুক্ত হতে পারে না। তারপর তিনি এ আয়াত পাঠ করলেন। (এ হাদীসটি ইমাম ইবনু আবী হাতিম (রঃ) বর্ণনা করেছেন এটি মুরসাল হাদীস অর্থাৎ এখানে সাহাবীর নাম উল্লেখ করা হয়নি। বুঝা যায় যে, মুশকিল মাত্র একটি, আর আসানী অনেক)
হযরত কাতাদা (রঃ) বলেনঃ আমাদের কাছে বলা হয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) তাঁর সাহাবীদেরকে সুসংবাদ দিয়েছেনঃ “দুটি আসানীর উপর একটি মুশকিল জয়যুক্ত হতে পারে না। এখানে عُسْر শব্দকে উভয় স্থানে মারিফাহ বা নির্দিষ্ট রূপে আনা হয়েছে, পক্ষান্তরে يُسْر শব্দকে উভয় স্থানে নাকিরাহ বা অনির্দিষ্টরূপে আনয়ন করা হয়েছে। এতে বুঝা যায় যে, মুশকিল মাত্র একটি, আর আসানী অনেক।
একটি হাদীসে রয়েছে যে, معونه অর্থাৎ আল্লাহর সাহায্য কষ্ট অনুপাতে আকাশ হতে অবতীর্ণ হয় এবং তা ধৈর্য ও সহনশীলতা অনুযায়ী আসমান হতে নাযিল হয়। হযরত ইমাম শাফিয়ী (রঃ) বলেনঃ
صَبْرًا جَمِيْلَا مَا اَقْرَبُ الْفَرْجَا ـ مَنَ رَاقَبَ اللّهَ فِى الْاُمُوْرِ نَجَا
مَنْ صَدَّق اللّهَ لَمْ يَنَلْهُ اَذٰى ـ وَمَنْ رَجَاهُ يَكُوْنُ حَيْثَ رَجَا
অর্থাৎ “ উত্তম ধৈর্য প্রশস্ততার কতই না নিকটবর্তী। নিজের কাজে যে ব্যক্তি আল্লাহ তা'আলার প্রতি খেয়াল রাখে সে মুক্তি লাভ করে। যে আল্লাহর কথাকে সত্য বলে বিশ্বাস করে, কষ্ট তাকে স্পর্শ করতে পারে না। আল্লাহর কাছে যে। ব্যক্তি কল্যাণ প্রত্যাশা করে, সে আশা অনুযায়ীই তা লাভ করে।
হযতর আবূ হাতিম সিজিস্তানী (রঃ) বলেনঃ
اِذَا اشْتَمَلَتْ عَلَى الْيَأْسِ الْقُلُوْبُ ـ وَضَاقَ لَمَّا بِهِ الصَّدْرُ الرَّجْبُ
وَاَوْطَأَتِ الْمَكَارِهُ وَاطْمَأَنَتْ ـ وَاَرْسَتْ فِىْ اَمَاكِنِهَا الْخُطُوْبُ
وَلَمْ تَرَ لِاِنْكِشَافِ الضَّرِّ وَجْهًا ـ وَلَا اَغْنٰى بِحِيْلَتِهٖ اِلَّارَبِيْبُ
اَتَاكَ عَلٰى قَنُوْطِ مِنْكَ غَوْثُ ـ بِمَنْ بِهِ اللَّطِيْفُ الْمُسْتَجِيْبُ
وَكُلُّ الْحَادِثَاتِ اِذَا تَنَاهَتْ ـ فَمَوْصُوْلٌ بِهَا الْفَرْجُ الْقَرِيْبُ
অর্থাৎ “হতাশা যখন অন্তর দখল করে নেয়, বুক যখন প্রশস্ততা সত্ত্বেও সংকীর্ণ হয়ে যায়, দুঃখ কষ্ট যখন ঘিরে ধরে, বিপদ এসে বাসা বাঁধে কিংকর্তব্যবিমূঢ় অবস্থার সৃষ্টি করে, মুক্তির কোন পথ খুঁজে পাওয়া যায় না, মুক্তির কোন প্রচেষ্টাই সফল হয় না, সেই সময় হঠাৎ আল্লাহর সাহায্য এসে পৌঁছে। আল্লাহ তাআলা দু’আ শ্রবণকারী। সূক্ষ্মদর্শী আল্লাহ মুশকিলকে আসানীতে রূপান্তরিত করেন এবং যন্ত্রণাকে, অশান্তিকে সুখ-শান্তি ও আরাম আয়েশে পরিণত করেন। সংকীর্ণতা পুরোপুরি এসে পড়লে আল্লাহ রাব্বল আলামীন সঙ্গে সঙ্গে প্রশস্ততা অবতীর্ণ করতঃ ক্ষতিকে লাভে রূপান্তরিত করে দেন।” অন্য এক কবি বলেন
وَلَرُبَّ نَازِلَةٌ يَضِيْقُ بِهِ الْفَتٰى ـ ذَرْعًا وَعِنْدَ اللّهِ مِنْهَا الْمَخْرِجُ
كَمَلَتْ فَلَمَّا اسْتَحْكَمَتْ حَلْقَاتُهَا ـ فَرَجَتْ وَكَانَ يَظُنُّهَا لَا تَفْرَجُ
অর্থাৎ মানুষের উপর এমন বহু বিপদ আপতিত হয় যাতে সে সংকীর্ণ হৃদয়ের অধিকারী হয়ে যায়, অথচ আল্লাহর কাছে সে সব বিপদে নিমিত্ত নিষ্কৃতিও রয়েছে। এসব বিপদ যখন পরিপূর্ণরূপে আত্মপ্রকাশ করে, বিপদের বন্ধন লাভ করে, মানুষ তখন ভাবতে থাকে যে, এ বিপদ থেকে নিষ্কৃতি পাওয়া যাবে তো? তখন হঠাৎ করুণাময় আল্লাহর অনুগ্রহ দৃষ্টি পড়ে যায় এবং তিনিই সেই বিপদ এমনভাবে দূর করে দেন যে, মনে হয় যেন বিপদ আসেইনি।”
এরপর আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ অতএব, হে নবী (সঃ) যখনই তুমি অবসর পাও সাধনা করো এবং তোমার প্রতিপালকের প্রতি মনোনিবেশ করো। অর্থাৎ দুনিয়ার কাজ থেকে অব্যাহতি পেলেই আমার ইবাদত ও আনুগত্যের প্রতি মনোনিবেশ করো, নিয়ত পরিষ্কার করো, পরিপূর্ণ আগ্রহ সহকারে আমার প্রতি আকৃষ্ট হও। এই অর্থ বিশিষ্ট একটি সহীহ হাদীসও রয়েছে। হাদীসটির মর্ম হলোঃ খাবার সামনে থাকা অথবা পায়খানা প্রস্রাবের বেগ থাকা অবস্থায় নামায পড়তে নেই। অন্য এক হাদীসে রয়েছেঃ “সবাই নামাযে দাঁড়িয়ে গেছে এমতাবস্থায় যদি রাতের খাবার তোমার সামনে থাকে তা হলে প্রথমে খাবার খেয়ে নাও।”
হযরত মুজাহিদ (রঃ) এ আয়াতের তাফসীরে বলেনঃ দুনিয়ার কাজ-কর্ম থেকে মুক্ত হয়ে নামাযে দাঁড়াও। অতঃপর আল্লাহর নিকট মনোযোগ সহকারে দু’আ কর এবং নিজের প্রয়োজন ব্যক্ত কর ও পূর্ণ মনোযোগ সহকারে স্বীয় প্রতিপালকের প্রতি আকৃষ্ট হও।
হযরত ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেন যে, এর ভাবার্থ হলোঃ ফরয নামায থেকে অব্যাহতি পাওয়ার পর তাহাজ্জুদের নামাযে দাড়িয়ে যাও। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেন যে, এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলোঃ নামায আদায় শেষ করে বসে বসে আল্লাহর প্রতি মনোযোগী হও অর্থাৎ তার যিক্র করো। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেনঃ অর্থাৎ, দু’আ করো। হযরত যায়েদ ইবনে আসলাম (রঃ) এবং যহহাক (রঃ) বলেন যে, এর ভাবার্থ হলোঃ জিহাদ থেকে মুক্ত হয়ে আল্লাহর ইবাদতে লেগে যাও। সাওরী (রঃ) বলেন যে, এর অর্থ হলো নিজের নিয়ত ও মনোযোগ আল্লাহর প্রতি নিবদ্ধ করো।