ইউসূফ আয়াত ১০৭
اَفَاَمِنُوْٓا اَنْ تَأْتِيَهُمْ غَاشِيَةٌ مِّنْ عَذَابِ اللّٰهِ اَوْ تَأْتِيَهُمُ السَّاعَةُ بَغْتَةً وَّهُمْ لَا يَشْعُرُوْنَ ( يوسف: ١٠٧ )
Afa aminooo an taatiya hum ghaashiyatum min 'azaabil laahi aw taatiyahumus Saa'atu baghtatanw wa hum laa yash'uroon (Yūsuf ১২:১০৭)
English Sahih:
Then do they feel secure that there will not come to them an overwhelming [aspect] of the punishment of Allah or that the Hour will not come upon them suddenly while they do not perceive? (Yusuf [12] : 107)
তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):
তারা কি নিশ্চিন্ত যে, আল্লাহর সর্বগ্রাসী ‘আযাব তাদের উপর এসে পড়বে না? কিংবা হঠাৎ ক্বিয়ামাত তাদের উপর এসে পড়বে না যা তারা টেরও পাবে না? (ইউসূফ [১২] : ১০৭)
1 Tafsir Ahsanul Bayaan
তবে কি তারা আল্লাহর সর্বগ্রাসী শাস্তি হতে অথবা তাদের অজ্ঞাতসারে কিয়ামতের আকস্মিক উপস্থিতি হতে নিরাপদ?
2 Tafsir Abu Bakr Zakaria
তবে কি তারা আল্লাহ্র সর্বগ্রাসী শাস্তি হতে বা তাদের অজান্তে কিয়ামতের আকস্মিক উপস্থিতি হতে নিরাপদ হয়ে গেছে [১]?
[১] এ আয়াতে হুশিয়ার করা হয়েছে যে, তারা নবীগণের বিরুদ্ধাচরণের অশুভ পরিণতির প্রতি লক্ষ্য করে না। যদি তারা সামান্যও চিন্তা করত এবং পারিপার্শ্বিক শহর ও স্থানসমূহের ইতিহাস পাঠ করত, তবে নিশ্চয়ই জানতে পারত যে, নবীগণের বিরুদ্ধাচরণকারীরা এ দুনিয়াতে কিরূপ ভয়ানক পরিণতির সম্মুখীন হয়েছে। কওমে-লূতের জনপদসমূহকে উল্টে দেয়া হয়েছে। কওমে-‘আদ ও কওমে সামূদকে নানাবিধ আযাব দ্বারা নাস্তানাবুদ করে দেয়া হয়েছে। দুনিয়াতে তাদের উপর এ ধরনের আযাব আসার ব্যাপারে তারা কিভাবে নিজেদেরকে নিরাপদ ভাবছে? আর আখেরাত তা তো তাদের কাছে হঠাৎ করেই আসবে। যখন তারা সেটার আগমন সম্পর্কে কিছুই জানতে পারবে না। ইবন আব্বাস বলেন, যখন আখেরাতের সে চিৎকার আসবে তখন তারা বাজারে ও তাদের কর্মস্থলে কাজ-কারবারে ব্যস্ত থাকবে। [বাগভী]
3 Tafsir Bayaan Foundation
আর তারা কি নিরাপদ বোধ করছে যে, তাদের উপর আল্লাহর পক্ষ থেকে কোন সর্বগ্রাসী আযাব আসবে না অথবা হঠাৎ তারা টের না পেতেই কিয়ামত উপস্থিত হবে না?
4 Muhiuddin Khan
তারা কি নির্ভীক হয়ে গেছে এ বিষয়ে যে, আল্লাহর আযাবের কোন বিপদ তাদেরকে আবৃত করে ফেলবে অথবা তাদের কাছে হঠাৎ কেয়ামত এসে যাবে, অথচ তারা টেরও পাবে না?
5 Zohurul Hoque
তারা কি তবে নিরাপদ বোধ করে তাদের উপরে আল্লাহ্র শাস্তির ঘেরাটোপ এসে পড়া সন্বন্ধে, অথবা তারা যখন বেখেয়াল থাকে তখন ঘন্টা অতর্কিতে তাদের উপরে এসে পড়া সন্বন্ধে?
6 Mufti Taqi Usmani
তবে কি তারা এ বিষয়ের একটুও ভয় রাখে না যে, তাদের উপর আল্লাহর আযাবের কোন মুসিবত এসে পড়বে অথবা সহসা তাদের উপর তাদের অজ্ঞাতসারে কিয়ামত আপতিত হবে?
7 Mujibur Rahman
তাহলে কি তারা আল্লাহর সর্বগ্রাসী শাস্তি হতে অথবা তাদের অজ্ঞাতসারে কিয়ামাতের আকস্মিক উপস্থিতি হতে নিরাপদ?
8 Tafsir Fathul Mazid
১০২-১০৭ নং আয়াতের তাফসীর:
ذٰلِكَ অর্থাৎ ইউসুফ (عليه السلام) এর জীবনের এসব ঘটনাসহ যা কিছু উল্লেখ করা হল সব গায়েবের বিষয়। নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর যুগ থেকে হাজার বছরের আগের কথা। এসব জানা নিরক্ষর নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর পক্ষে কক্ষনো সম্ভব নয়, তা তাছাড়া তিনি তখন উপস্থিত ছিলেন না অর্থাৎ নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর যুগ ও ইউসুফ (عليه السلام) এর যুগ এক নয়। তাঁকে জানানো হয়েছে ওয়াহীর মাধ্যমে। সুতরাং এতে প্রমাণিত হয়, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) গায়েব জানেন না। তিনি যদি গায়েব জানতেন তাহলে তা ওয়াহীর মাধ্যমে জানানোর কোন প্রয়োজন ছিল না। এ সম্পর্কে সূরা আলি ইমরানের ৭ ও ৪৪ নং আয়াত, সূরা কাসাসের ৪৫-৪৬ নং আয়াত এবং সূরা সাদের ৬৯-৭০ নং আয়াতে আলোচনা করা হয়েছে।
(وَمَآ أَكْثَرُ النَّاسِ) অর্থাৎ পূর্ববর্তী জাতির বিভিন্ন ঘটনার উল্লেখ, কিয়ামতের ভয়াবহতা সম্পর্কে সতর্কীকরণ এবং উপস্থিত নিদর্শন প্রত্যক্ষ করেও অধিকাংশ মানুষ ঈমান আনবে না। সুতরাং অধিকাংশ মানুষ ঈমান আনুক তা একজন নাবীর আশা করে লাভ নেই। কারণ পূর্বেই আল্লাহ তা‘আলা জানেন অধিকাংশ মানুষ ঈমান বর্জন করবে, শয়তানের দলে শামিল হবে। তবে মানুষকে সত্যের পথে আহ্বান জানানো অব্যাহত রাখতে হবে।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَقَلِيْلٌ مِّنْ عِبَادِيَ الشَّكُوْرُ)
“আর আমার কৃতজ্ঞ বান্দার সংখ্যা কম” (সূরা সাবা ৩৪:১৩)
(وَمَا تَسْئَلُهُمْ عَلَيْهِ مِنْ أَجْر)
অর্থাৎ হে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ! তোমার কাজের বিনিময়ে যদি কোন পারিশ্রমিক চাইতে তাহলে তারা সন্দেহ করত যে, হয়তো সম্পদের লোভে সে নতুন পথের দিকে দাওয়াত দিচ্ছে। এ কুরআন নাযিল করা হয়েছে এ জন্য যে, মানুষ এ থেকে হিদায়াত গ্রহণ করবে, সঠিক পথ চিনবে ও উপকৃত হবে। কিন্তু যাদের স্বচ্ছ অন্তর নেই তারা হিদায়াত নিতে পারবে না।
(وَكَأَيِّنْ مِّنْ اٰيَةٍ)
অর্থাৎ আল্লাহর তাওহীদ তথা একত্বের ওপর প্রমাণ বহন করে এমন কত নিদর্শন রয়েছে, মানুষ সকাল-সন্ধ্যা তা প্রত্যক্ষ করে কিন্তু তা অনুধাবন করে না এবং অনুধাবন করার চেষ্টাও করে না। মানুষ প্রতিদিন দেখছে সূর্য পূর্ব দিকে উঠে, পশ্চিম দিকে অস্ত যায়। কিন্তু কোনদিন চিন্তা করল না, এ সূর্য কে উদিত করছে, কে অস্ত করাচ্ছে? তিনি কত জন, কত শক্তির মালিক? ইত্যাদি নিয়ে একটু চিন্তা করলে আল্লাহকে চিনতে পারা যাবে এবং নিজের ভেতর থেকেই তাঁর কাছে আত্মসর্ম্পণ চলে আসবে।
(وَمَا يُؤْمِنُ أَكْثَرُهُمْ بِاللّٰهِ)
অর্থাৎ বিশ্বাস করে আল্লাহ তা‘আলা রয়েছেন কিন্তু ইবাদতের ক্ষেত্রে আল্লাহকে বাদ দিয়ে বিভিন্ন মা‘বূদের ইবাদত করে। যেমন মক্কার মুশরিকরা বিশ্বাস করত তাদের হায়াত-মউত, আকাশ-জমিন, বৃষ্টি দান এমনকি বিপদ থেকে উদ্ধারের মালিক একমাত্র আল্লাহ, কিন্তু ইবাদত করত লাত, উযযা, মানাতসহ শত শত প্রতিমার। যার কারণে তারা তাওহীদে রুবুবিয়্যাহর প্রতি (তথা সকল কিছুর মালিক ও স্রষ্টা একমাত্র আল্লাহ তা‘আলা) বিশ্বাস থাকলেও আখিরাতে নাজাত পাবে না, কারণ ইবাদত করেছে আল্লাহ ছাড়া অন্যের। এভাবে পৃথিবীর অধিকাংশ মানুষ বিভিন্ন মূর্তি, প্রতিমা, বৃক্ষ, নক্ষত্র, কবর, মাযার ও তাগুত ইত্যাদির ইবাদত করার মাধ্যমে মুশরিক হয়ে যাচ্ছে অথচ আবার মুসলিম দাবি করে। এভাবে একজন ব্যক্তি মুসলিম হতে পারে না এবং হলেও মুসলিম থাকবে না। প্রকৃত মুসলিম হতে হলে অবশ্যই তাওহীদ ও শির্ক সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতঃ সর্বদা আকীদাহ ও আমলে তাওহীদের ওপর প্রতিষ্ঠিত থাকতে হবে। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(قَدْ کَانَتْ لَکُمْ اُسْوَةٌ حَسَنَةٌ فِیْٓ اِبْرٰھِیْمَ وَالَّذِیْنَ مَعَھ۫ﺆ اِذْ قَالُوْا لِقَوْمِھِمْ اِنَّا بُرَءٰ۬ؤُا مِنْکُمْ وَمِمَّا تَعْبُدُوْنَ مِنْ دُوْنِ اللہِﺑ کَفَرْنَا بِکُمْ وَبَدَا بَیْنَنَا وَبَیْنَکُمُ الْعَدَاوَةُ وَالْبَغْضَا۬ئُ اَبَدًا حَتّٰی تُؤْمِنُوْا بِاللہِ وَحْدَھ۫ٓ)
“তোমাদের জন্য ইবরাহীম ও তাঁর অনুসারীদের মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ; তারা তাদের সম্প্রদায়কে বলেছিল: তোমাদের সঙ্গে এবং তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে যার ইবাদত কর তার সঙ্গে আমাদের কোন সম্পর্ক নেই; আমরা তোমাদেরকে প্রত্যাখ্যান করি। তোমাদের ও আমাদের মধ্যে সৃষ্টি হল শত্র“তা ও বিদ্বেষ চিরকালের জন্য, যতক্ষণ পর্যন্ত তোমরা এক আল্লাহর প্রতি ঈমান না আন।” (সূরা মুমতাহিনা ৬০:৪)
সুতরাং ঈমান হল সকল ভ্রান্ত মা‘বূদ, তাগুত ও তাদের অনুসারীদেরকে বর্জন করা এবং এক আল্লাহ তা‘আলার ইবাদতে অটল থাকা।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. সংখ্যা গরিষ্ঠতা সত্যের মাপকাঠি নয়, বরং সত্যের মাপকাঠি হল হক, যদিও তার পক্ষে একজন থাকে।
২. রব (প্রতিপালক) হিসেবে যেমন আল্লাহ তা‘আলাকে মানা হয় মা‘বূদ (একমাত্র ইবাদতের যোগ্য) হিসেবেও অনুরূপভাবে আল্লাহ তা‘আলাকে মানতে হবে। অন্যথায় নাজাত পাওয়া যাবে না।
৩. যারা অবিশ্বাসী বা কাফির, মুশরিক ও মুনাফিক এ অবস্থায় মৃত্যবরণ করে তারা আল্লাহ তা‘আলার শাস্তি থেকে কখনও রক্ষা পাবে না।
9 Fozlur Rahman
তবে কি তারা আল্লাহর আজাবস্বরূপ তাদের ওপর কোন দুর্যোগ নেমে আসা কিংবা তাদের অজ্ঞাতসারে অকস্মাৎ তাদের কাছে কেয়ামত এসে পড়া থেকে নিজেদেরকে নিরাপদ মনে করছে?
10 Mokhtasar Bangla
১০৭. এ মুশরিকরা কি এ ব্যাপারে নিশ্চিত যে, তাদেরকে দুনিয়াতে এমন কোন শাস্তি গ্রাস করবে না? যা তারা প্রতিরোধ করতে অক্ষম অথবা হঠাৎ তাদের উপর কিয়ামত এসে পড়বে না? যার জন্য তারা কোন প্রস্তুতি নিতে পারবে না। এ জন্যই কি তারা ঈমান আনে না?!
11 Tafsir Ibn Kathir
১০৫-১০৭ নং আয়াতের তাফসীর
আল্লাহ তাআ’লা সংবাদ দিচ্ছেন যে, ক্ষমতাবান আল্লাহর বহু নিদর্শন, তাঁর একত্বের সাক্ষ্য প্রমাণ রাতদিন মানুষের সামনে রয়েছে। তবুও অধিকাংশ লোক অত্যন্ত বেপরোয়াভাবে এগুলো থেকে উদাসীন ও অমনোযোগী রয়েছে। এই এতবড় ও প্রশস্ত আকাশ, এই বিস্তৃত যমীন, এই উজ্জ্বল নক্ষত্র-রাজি, এই আবর্তনশীল সূর্য ও চন্দ্র, এই গাছ-পালা, পাহাড়-পর্বত, শস্য-ক্ষেত্র, তরঙ্গ পূর্ণ সমুদ্র, প্রবাহিত বাতাস, বিভিন্ন প্রকারের ফল ফলাদি এবং নানা প্রকারের খাদ্য দ্রব্য সর্বশক্তিমান আল্লাহর এই অসংখ্য নিদর্শনাবলী কি জ্ঞানী ব্যক্তির কোন কাজে আসে না যে, এগুলি দ্বারা সে তাঁকে চিনতে পারে, যিনি এক, অমুখাপেক্ষী, অংশীবিহীন, ক্ষমতাবান, চিরঞ্জীব এবং চিরবিদ্যমান? এগুলো দেখে কি-সে তার উপর বিশ্বাস স্থাপন করতে পারে না? তাদের অধিকাংশের মাথা এমনভাবে বিগড়ে গেছে যে, তাদের আল্লাহর উপর বিশ্বাস আছে, অথচ তাঁর সাথে শরীক স্থাপন করছে। তারা আসমান ও যমীনের, পাহাড়-পর্বতের এবং দানব ও মানবের সৃষ্টিকর্তা হিসেবে আল্লাহকেই মানে, অথচ তাঁর সাথে অন্যদেরকেও শরীক করে ফেলে। এই মুশরিকরা হজ্জ করতে আসে এবং ইহরাম বেঁধে ‘লাব্বায়েক' উচ্চারণ করতে করতে বলেঃ “হে আল্লাহ! আপনার কোন শরীক নেই, শরীক যারা আছে তাদেরও মালিক আপনি। তাদের অধিকার ভুক্ত সবকিছুরও মালিক আপনি।”
সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমে রয়েছে যে, যখন মুশরিকরা বলতো: “হে আল্লাহ! আমরা হাজির আছি, আপনার কোন অংশীদার নেই, তখন রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলতেনঃ “যথেষ্ট হয়েছে। এর চেয়ে বেশী আর কিছু বলো না।” আল্লাহ তাআ’লা বলেছেন : اِنَّ الشِّرْكَ لَظُلْمٌ عَظِیْمٌ অর্থাৎ “নিশ্চয় শিরক চরম যুলুম।” (৩১:১৩) প্রকৃতপক্ষে এটা বড়ই অত্যাচার যে, আল্লাহর সাথে আরো কারো ইবাদত করা হবে। যেমন সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমে হযরত ইবনু মাসউদ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেনঃ “আমি বললামঃ হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! সবচেয়ে বড় পাপ কোনটি?” উত্তরে তিনি বলেনঃ “তা এই যে, তুমি আল্লাহর জন্যে শরীক স্থাপন করবে, অথচ তিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন।”
হযরত হাসান বসরী (রঃ) বলেন যে, এই আয়াতের মধ্যে মুনাফিকরাও এসে পড়ে। তাদের আমলে একনিষ্ঠতা ও আন্তরিকতা থাকে না। বরং তাদের মধ্যে রিয়াকারী ও লোক দেখানো ভাব থাকে। রিয়াকারীও শির্কের অন্তর্ভুক্ত। কুরআন কারীম ঘোষণা করেঃ اِنَّ الْمُنٰفِقِیْنَ یُخٰدِعُوْنَ اللّٰهَ وَ هُوَ خَادِعُهُمْۚ-وَ اِذَا قَامُوْۤا اِلَى الصَّلٰوةِ قَامُوْا كُسَالٰىۙ-یُرَآءُوْنَ النَّاسَ وَ لَا یَذْكُرُوْنَ اللّٰهَ اِلَّا قَلِیْلًا
অর্থাৎ “মুনাফিকরা আল্লাহকে প্রতারিত করতে চায়, কিন্তু আল্লাহর পক্ষ থেকে তারা নিজেরাই প্রতারিত হয়। তারা যখন নামাযে দাঁড়ায় তখন অত্যন্ত অলসভাবে দাঁড়ায়, তাদের উদ্দেশ্য হয় শুধু লোক দেখানো। তারা আল্লাহর যিকর খুব কমই করে।” (৪:১৪২) এটাও স্মরণ রাখা প্রয়োজন যে, কতকগুলি শির্ক খুবই হালকা ও গোপনীয় হয়। স্বয়ং শির্ককারীও ওটা বুঝতে পারে না। হযরত হুযাইফা (রাঃ) একজন রুগ্ন ব্যক্তির নিকট গমন করেন। তার হাতে একটা সূতা বাঁধা ছিল। তিনি ওটা দেখে ছিঁড়ে ফেলেন এবং বলেনঃ “মু'মিন হয়েও শিরক করছো?” অর্থাৎ তিনি এ আয়াতটিই পাঠ করেন। হাদীস শরীফে আছে যে, যে ব্যক্তি গায়রুল্লাহর কসম খেলো সে মুশরিয্ক হয়ে গেল। (এ হাদীসটি ইমাম তিরমযী (রঃ) হযরত ইবনু উমার (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন। এবং তিনি এটাকে হাসান বলেছে)
হযরত আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “ঝাড়-ফুঁক, সূতা, এবং মিথ্যা তাবীজ শির্ক।” (এ হাদীসটি ইমাম আহমদ (রঃ) ও ইমাম আবু দাউদ (রঃ) প্রভৃতি গুরুজন বর্ণনা করেছেন) তিনি আরো বলেছেনঃ “বান্দার নির্ভরশীলতার কারণে আল্লাহ তাআ’লা তার সমস্ত বিপদ আপদ দূর করে থাকেন।”
হযরত আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদের স্ত্রী হযরত যায়নাব (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ “ (আমার স্বামী) হযরত আবদুল্লাহ (রাঃ) এর অভ্যাস ছিল এই যে, যখন বাইরে থেকে বাড়ীতে প্রবেশ করতেন তখন তিনি গলা খাকড়াতেন এবং থুথু ফেলতেন। যাতে বাড়ীর লোকেরা তাঁর আগমনের ইঙ্গিত পেতে পারে এবং তিনি যেন তাদেরকে এমন অবস্থায় না দেখেন যা তিনি অপছন্দ করেন। একদা এই ভাবে তিনি বাড়ীতে প্রবেশের আভাষ দেন, ঐ সময় আমার কাছে একজন বুড়ী বিদ্যমান ছিল, যে আমার রোগের কারণে আমাকে ঝাড়-ফুক দিতে এসেছিল। আমি তাঁর গলা খাঁকড়ানোর শব্দ শুনেই বুড়িটিকে চৌকির নীচে লুকিয়ে দেই। তিনি আমার কাছে এসে চৌকির উপর বসে পড়েন এবং আমার গলায় সূতা দেখে আমাকে জিজ্ঞেস করেনঃ “এটা কি?” আমি উত্তরে বলিঃ এতে আমি ঝাড়-ফুক করিয়ে নিয়ে গলায় বেঁধেছি। আমার একথা শুনে তিনি ওটা ধরে ছিঁড়ে ফেলেন এবং বলেনঃ “আবদুল্লাহর (রাঃ) ঘর শিরক থেকে অমুখাপেক্ষী। স্বয়ং আমি রাসূলুল্লাহকে (সঃ) বলতে শুনেছি যে, ঝাড়-ফুক, তাবীয এবং ডোরা-সুতা বাধা শিরক।” আমি বললামঃ “আপনি এটা কিরূপে বলছেন? একবার আমার চক্ষু খারাপ হয়ে গিয়েছিল আমি অমুক ইয়াহূদীর কাছে যেতাম। সে আমার চোখে ঝাড়-ফুক করতো। তখন আমার চক্ষু ভাল হয়ে যেতো।” আমার এ কথা শুনে তিনি বললেনঃ “শয়তান তোমার চোখে গুতো মারতো এবং ঝাড়-ফুঁকের কারণে সে থেমে যেতো। রাসূলুল্লাহ (সঃ) যা শিখিয়েছেন তা যদি তুমি বলতে তবে ওটাই তোমার জন্যে যথেষ্ট হতো। তা হচ্ছেঃ اَذْهَبِ الْبَاْسَ رَبَّ النَّاسِ اِشْفِ اَنْتَ الشَّفِىْ لَا شِفَاءَ اِلَّا شِفَائُكَ شِفَاءً لَّا يُغَادِرُ سَقَمًا
অর্থাৎ “হে মানুষের প্রতিপালক! আপনি কষ্ট দূর করে দিন, আপনি আরোগ্য দান করুন, আপনিই আরোগ্য দানকারী, আপনার আরোগ্য ছাড়া কোন আরোগ্য নেই, এমন আরোগ্য দান করুন যাতে কোন রোগ অবশিষ্ট না থাকে।” (এ হাদীসটি ইমাম আহমদ (রঃ) স্বীয় মুসনাদে বর্ণনা করেছেন)
ঈসা ইবনু আবদির রহমান (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ একবার আবদুল্লাহ ইবনু হাকীম (রাঃ) রুগ্ন ছিলেন, আমরা তাঁকে দেখতে গেলাম। তাঁকে বলা হলো: “যদি আপনি কোন ডোরা-সূতা বাঁধতেন তবে ভাল হতো।” এ কথা শুনে তিনি বলেন, “আমি ডোরা-সূতা বাঁধবো? অথচ রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “যে ব্যক্তি যে জিনিষ লটকাবে তাকে তারই দিকে সমর্পণ করা হবে। (এ হাদীসটি মুসনাদে আহমদে বর্ণিত হয়েছে। এ হাদিস ইমাম নাসায়ীও হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত করেছে)
হযরত উকবা ইবনু আমির (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “যে ব্যক্তি তাবীয লটকালো সে শিরক করলো।” (এ হাদীসটিও ইমাম আহমদ (রঃ) স্বীয় মুসনাদ গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন)
অন্য রিওয়াইয়াতে আছে যে, যে ব্যক্তি তাবীয লটকায় আল্লাহ তার কাজ পূর্ণ করেন না এবং যে ব্যক্তি ওটা লটকায় আল্লাহ যেন ওটাকে লটকানো অবস্থাতেই রেখে দেন।
হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “আল্লাহ তাআ’লা বলেনঃ “আমি শরীকদের শিরক হতে অমুখাপেক্ষী। আমি ওর কোন পরওয়া করি না। যে ব্যক্তি এমন কাজ করলো যে, তাতে আমার শরীক স্থাপন করলো, আমি তাকে ও তার শিরককে পরিত্যাগ করি।” (এ হাদীসটি ইমাম মুসলিম (রঃ) বর্ণনা করেছেন)
হযরত আবু সাঈদ ইবনু আবি ফুযালা (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ আমি রাসূলুল্লাহকে (সঃ) বলতে শুনেছিঃ “যখন আল্লাহ তাআ’লা সমস্ত প্রথম ও শেষের লোকদেরকে একত্রিত করবেন এমন এক দিনে, যেই দিনের ব্যাপারে কোনই সন্দেহ নেই, তখন একজন আহবানকারী আহবান করবেনঃ যে ব্যক্তি কোন কাজে শিরক করবে, যে কাজ সে আল্লাহর জন্যে করেছে, সে যেন গায়রুল্লাহর কাছেই প্রতিদান চায়। নিশ্চয় আল্লাহ শরীকদের শিরক থেকে বেপরোয়া।” (এ হাদীসটি ইমাম আহমদ (রঃ) বর্ণনা করেছেন)
হযরত মাহমূদ ইবনু ওয়ালীদ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “তোমাদের উপর আমার যে জন্যে সবচেয়ে ভয়, তা হচ্ছে ছোট শিরক।” সাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেনঃ “হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! ছোট শির্ক কি?” তিনি উত্তরে বললেনঃ “রিয়াকারী (লোক দেখানো কাজ)। কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাআ’লা লোকদেরকে কর্মের প্রতিদান প্রদান করবেন। ঐ সময় তিনি ঐ রিয়াকারদেরকে বলবেনঃ “হে রিয়াকারগণ! তোমরা যাদেরকে দেখানোর জন্যে আমল করতে তাদের কাছেই আজ প্রতিদান চাও। দেখা যাক তারা তা দিতে পারে কি না।” (ইমাম আহমদ (রঃ) এই হাদীসটিও বর্ণনা করেছেন)
হযরত আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “যে ব্যক্তি কোন কাজের অশুভ লক্ষণ দেখে তা থেকে ফিরে আসলো সে মুশরিক হয়ে গেল।” সাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেনঃ “হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! এর কাফফারা কি?” তিনি উত্তরে বললেনঃ “এর কাফফারা এই যে, সে বলবেঃ اَللّٰهُمَّ لَا خَيْرَ اِلَّا خَيْرُكَ وَلَا طِيَرَ اِلَّا طِيَرُكَ وَلَا اِلٰهَ غَيْرُكَ
অর্থাৎ “হে আল্লাহ! আপনার মঙ্গল ছাড়া কোন মঙ্গল নেই এবং আপনার দেয়া অমঙ্গল ছাড়া কোন অমঙ্গলই নেই। (অর্থাৎ মঙ্গল ও অমঙ্গল উভয়েরই কারণ একমাত্র আপনিই। দুটোই আপনার পক্ষ থেকে এসে থাকে) আর আপনি ছাড়া কোন উপাস্য নেই।”
বর্ণিত আছে যে, একদা হযরত আবু মুসা আশআ’রী (রাঃ) স্বীয় ভাষণে বলেনঃ “হে জনমণ্ডলী! তোমরা শিরক থেকে বেঁচে থাকো। এটা পীপিলিকার গতির চেয়েও বেশি গোপনীয়।” তার একথা শুনে হযরত আবদুল্লাহ ইবনু হারব (রাঃ) এবং হযরত কায়েস ইবনু মাযারিব (রাঃ) দাঁড়িয়ে গিয়ে বলেনঃ “আপনি এর প্রমাণ পেশ করবেন, না আমরা হযরত উমারের (রাঃ) কাছে গিয়ে আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগ করবো?” তিনি উত্তরে বলেনঃ “এর প্রমাণ আমি দিচ্ছি। একদা রাসূলুল্লাহ (সঃ) আমাদেরকে ভাষণে বলেনঃ “হে লোক সকল! তোমরা এই শিরক হতে বেঁচে থাকো! এটাতো পিঁপড়ার গতির চেয়েও বেশী গোপনীয় ও সূক্ষ্ণ।” তখন কেউ জিজ্ঞেস করেনঃ “হে আল্লাহর রাসূল (সঃ) এটা পিঁপড়ার গতির চেয়েও সূক্ষ্ণ, তা হলে এর থেকে বাঁচবার উপায় কি?” তিনি জবাবে বলেনঃ “তোমরা বলোঃ اَللّٰهُمَّ اِنّا نَعُوْذُبِكَ مِنْ اَنْ نُشْرِكَ بِكَ شَيْئًا نَّعْلَمُهٗ وَنَسْتَغْفِرُكَ لِمَا لَا نَعْلَمُهٗ
অর্থাৎ “হে আল্লাহ! আমরা আপনার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি এমন কিছুকে আপনার সাথে শরীক স্থাপন করা হতে যা আমরা জানি এবং আমরা আপনার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করছি এমন কিছু হতে, যা আমরা জানি না”। (এ হাদীসটি ইমাম আহমদ (রঃ) বানু কাইল গোত্রের একটি লোক হতে বর্ণনা করেছেন)
একটি রিওয়াইয়াতে আছে যে, এই বর্ণনা ছিল হযরত আবু বকর সিদ্দীক (রাঃ) এর তিনি জিজ্ঞেস করেছিলেনঃ “হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! শিরক তো হচ্ছে এটাই যে, আল্লাহর সাথে অন্য কাউকেও ডাকা হয়।” এই হাদীসে দুআ’'র শব্দগুলি নিম্নরূপ রয়েছেঃ اَللّٰهُمَّ اِنّىْ اَعُوْذُبِكَ اَنْ اُشْرِكَ بِكَ وَاَنَا اَعْلَمُ وَاَسْتَغْفِرُكَ مِمَّا لَا اَعْلَمُ
অর্থাৎ “হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাচ্ছি এ থেকে যে, আমি আপনার সাথে শরীক স্থাপন করবো অথচ আমি জানি (যে, এটা শিরক) এবং আমি আপনার নিকট এমন কিছু হতে ক্ষমা প্রার্থনা করছি যা আমি জানিনা।” (এ হাদীসটি মুসনাদে আবি ইয়ালায় রয়েছে)
হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, হযরত আবু বকর সিদ্দীক (রাঃ) আরজ করেনঃ “হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! আমাকে এমন একটি দুআ’ শিখিয়ে দিন যা আমি সকাল ও সন্ধ্যা এবং বিছানায় শয়নের সময় পাঠ করবো।” তিনি বলেনঃ “তুমি এ দু’আটি বলবেঃ اَللّٰهُمَّ فَاطِرَ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضِ عَالِمَ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ، رَبَّ كُلِّ شَيْءٍ وَّمَلِيْكِهٖ اَشْهَدُ اَنْ لَّا اِلٰهَ اِلَّا اَنْتَ اَعُوْذُ بِكَ مِنْ شَرِّ نَفْسِىْ وَمِنْ شَرِّ الشَّيْطَانِ وَشِرْكِهٖ
অর্থাৎঃ“হে আল্লাহ! হে আকাশসমূহ ও পৃথিবীর সৃষ্টিকর্তা, দৃশ্য ও অদৃশ্যের পরিজ্ঞাতা, প্রত্যেক জিনিষের প্রতিপালক ও অধিকর্তা! আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আপনি ছাড়া অন্য কোন উপাস্য নেই। আমি আমার নফসের অনিষ্ঠ হতে, শয়তানের অনিষ্ট হতে এবং তার শিরক হতে আপনার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি।” (এ হাদীসটি ইমাম আহমদ (রঃ) ইমাম আবু দাউদ (রঃ) এবং ইমাম তিরমিযী (রঃ) বর্ণনাকরেছেন এবং ইমাম তিরমিযী (রঃ) এটাকে বিশুদ্ধ বলেছেন) অন্য রিওয়াইয়াতে আছে যে, হযরত আবু বকর (রাঃ) বলেনঃ “আমাকে রাসূলুল্লাহ (সঃ) উক্ত দুআ’’টি শিখিয়ে দেন এবং এর শেষে রয়েছে: وَاِنِ اقْتَرِفَ عَلٰى نَفْسِىْ سُوْءً اَوْ اَجُرَّهٗ اِلٰى مُسْلِمٍ
আল্লাহ পাকের উক্তিঃ “তবে কি তারা আল্লাহর সর্বগ্রাসী শাস্তি হতে অথবা তাদের অজ্ঞাতসারে কিয়ামতের আকস্মিক উপস্থিতি হতে নির্ভয় হয়ে গেছে? যেমন অন্য জায়গায় রয়েছেঃ “প্রতারণা ও দুষ্কার্যকারীরা কি এ বিষয় থেকে নির্ভয় হয়ে গেছে যে, আল্লাহ তাদেরকে যমীনে ধ্বসিয়ে দিবেন অথবা এমন স্থান হতে শান্তি আনয়ন করবেন যে, তারা বুঝতেই পারবে না? অথবা তাদের চলাফেরা অবস্থাতেই তিনি তাদেরকে পাকড়াও করবেন? তারা তাঁকে অপারগকারী নয়।” আর এক জায়গায় মহান আল্লাহ বলেনঃ “গ্রামবাসী এ থেকে কি নির্ভয় ও নিশ্চিন্ত হয়ে গেছে যে, তাদের কাছে তাদের শয়ন ও ঘুমন্ত অবস্থায় আমার শাস্তি চলে আসবে? গ্রামবাসী কি এ থেকে নিরাপদ হয়ে গেছে যে, তাদের কাছে দিনের পূর্বভাগে তাদের খেলা ধূলায় মত্ত থাকা অবস্থায় আমার শাস্তি এসে পড়বে? তারা কি আল্লাহর মকর থেকে নির্ভয় ও নিরাপদ হয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত কওম ছাড়া কেউই আল্লাহর মকর থেকে নির্ভয় ও নিরাপদ থাকেনা।”