বড়ই পরিতাপ নিশ্চয়ই সে বিষয়ে (আমরা ভুলে গিয়েছিলাম)
not
لَا
না
will succeed
يُفْلِحُ
সফল হয়
the disbelievers"
ٱلْكَٰفِرُونَ
কাফিররা"
তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):
গতকাল যারা তার মর্যাদার ন্যায় কামনা করেছিল তারা সকলে বলতে লাগল, ‘হায়, আল্লাহ তাঁর বান্দাদের যার জন্য ইচ্ছে রিযক বর্ধিত করেন আর যার জন্য ইচ্ছে হ্রাস করেন। আল্লাহ যদি আমাদের প্রতি অনুগ্রহ না করতেন তবে তিনি আমাদেরকেও ভূগর্ভে প্রোথিত করে দিতেন। হায়! অবিশ্বাসীরা সাফল্যমন্ডিত হয় না।
English Sahih:
And those who had wished for his position the previous day began to say, "Oh, how Allah extends provision to whom He wills of His servants and restricts it! If not that Allah had conferred favor on us, He would have caused it to swallow us. Oh, how the disbelievers do not succeed!"
পূর্বদিন যারা তার (মত) মর্যাদা কামনা করেছিল তারা বলতে লাগল,[১] ‘দেখ, আল্লাহ তাঁর দাসদের মধ্যে যার জন্য ইচ্ছা তার রুযী বর্ধিত করেন এবং যার জন্য ইচ্ছা তা হ্রাস করেন। যদি আল্লাহ আমাদের প্রতি অনুগ্রহ না করতেন, তবে আমাদেরকেও তিনি মাটিতে ধসিয়ে দিতেন।[২] দেখ, অকৃতজ্ঞরা সফলকাম হয় না।’ [৩]
[১] مَكَان বলতে পার্থিব সম্মান ও মান-মর্যাদা, যা কোন ব্যক্তিকে পৃথিবীতে সাময়িকভাবে দেওয়া হয়ে থাকে; যেমন কারূনকে দেওয়া হয়েছিল। أَمْس গতকালকে বলা হয়। কিন্তু এখানে নিকটবর্তী সময় বুঝানো হয়েছে। وَيكَأَنَّ আসলে وَيلَكَ اعلَمُ أَنَّ ছিল। অর্থাৎ, আফসোস বা আশ্চর্য! তোমার জানা উচিত ছিল। কেউ কেউ বলেন, এটি أَلَم تَرَ এর অর্থে ব্যবহার হয়েছে। (ইবনে কাসীর) এর পূরো অর্থ হল কারূনের মত ধন-সম্পদ ও মান-মর্যাদার অভিলাষী ব্যক্তিরা যখন কারূনের শিক্ষণীয় করুণ পরিণতি দেখল, তখন তারা বলল, ধন-দৌলত এই কথার প্রমাণ নয় যে, ধনবান ব্যক্তির উপর আল্লাহ সন্তুষ্ট। তুমি কি দেখ না যে, আল্লাহ কাউকে মাল বেশি দেন, আবার কাউকেও কম। এর সম্পর্ক সম্পূর্ণভাবে আল্লাহর ইচ্ছার ও হিকমতের সাথে যা একমাত্র তিনি ছাড়া আর কেউ জানেন না। মালের আধিক্য তাঁর সন্তুষ্টির ও মাল না থাকা তাঁর অসন্তুষ্টির প্রমাণ বহন করে না। যেমন এসব মান-ইজ্জতের মাপকাঠিও নয়।
[২] অর্থাৎ, আমাদের পরিণাম ঐরূপ হত, যেরূপ কারূনের হয়েছিল।
[৩] অর্থাৎ, কারূন সম্পদ পেয়ে আল্লাহর কৃতজ্ঞ না হয়ে অকৃতজ্ঞতা ও পাপের পথ অবলম্বন করল। সুতরাং দেখ তার পরিণাম কি হল?
2 Tafsir Abu Bakr Zakaria
আর আগের দিন যারা তার মত হওয়ার কামনা করেছিল, তারা বলতে লাগল, ‘দেখলে তো, আল্লাহ্ তাঁর বান্দাদের মধ্যে যার জন্য ইচ্ছে তার রিফিক বাড়িয়ে দেন এবং যার জন্য ইচ্ছে কমিয়ে দেন। যদি আল্লাহ্ আমাদের প্রতি সদয় না হতেন, তবে আমাদেরকেও তিনি ভূগর্ভে প্রোথিত করতেন। দেখলে তো ! কাফেররা সফলকাম হয় না [১]।’
[১] অর্থাৎ আল্লাহ্র পক্ষ থেকে রিযিক প্রসারিত বা সংকুচিত করা যেটাই ঘটুক না কেন তা ঘটে তাঁর ইচ্ছাক্ৰমেই। এ ইচ্ছার মধ্যে তাঁর ভিন্নতর উদ্দেশ্য সক্রিয় থাকে। কাউকে বেশী রিযিক দেবার অর্থ নিশ্চিত ভাবে এ নয় যে, আল্লাহ্ তার প্রতি খুবই সন্তুষ্ট তাই তাকে পুরষ্কার দিচ্ছেন। অনেক সময় কোন ব্যাক্তি হয় আল্লাহ্র কাছে বড়ই ঘৃণিত ও অভিশপ্ত কিন্তু তিনি তাকে বিপুল পরিমাণ ধন-দৌলত দিয়ে যেতে থাকেন। এমনকি এ ধন শেষ পর্যন্ত তার উপর আল্লাহ্র কঠিন আযাব নিয়ে আসে। পক্ষান্তরে যদি কারো রিযিক সংকুচিত হয়, তাহলে নিশ্চিতভাবে তার এ অর্থ হয় না যে, আল্লাহ্ তার প্রতি নারাজ হয়ে গেছেন এবং তাকে শাস্তি দিচ্ছেন। অধিকাংশ সৎ লোক আল্লাহ্র প্রিয়পাত্র হওয়া সত্ত্বেও আর্থিক অভাব অনটনের মধ্যে থাকে। অনেক সময় দেখা যায় এ অভাব অনটন তাঁদের জন্য আল্লাহ্র রহমতে পরিণত হয়েছে। এ সত্যটি না বোঝার ফলে যারা আসলে আল্লাহ্র গযবের অধিকারী হয় তাদের সমৃদ্ধিকে মানুষ ঈর্ষার দৃষ্টিতে দেখে।
3 Tafsir Bayaan Foundation
আর গতকাল যারা তার মত হতে প্রত্যাশা করেছিল তারা বলতে লাগল, ‘আশ্চর্য! দেখলে তো, আল্লাহ তাঁর বান্দাদের মধ্য থেকে যার জন্য ইচ্ছা রিয্ক প্রসারিত অথবা সংকুচিত করেন। যদি আল্লাহ আমাদের প্রতি অনুগ্রহ না করতেন তবে আমাদেরকেও তিনি দাবিয়ে দিতেন। দেখলে তো, কাফিররা সফল হয় না’।
4 Muhiuddin Khan
গতকল্য যারা তার মত হওয়ার বাসনা প্রকাশ করেছিল, তারা প্রত্যুষে বলতে লাগল, হায়, আল্লাহ তাঁর বান্দাদের মধ্যে যার জন্যে ইচ্ছা রিযিক বর্ধিত করেন ও হ্রাস করেন। আল্লাহ আমাদের প্রতি অনুগ্রহ না করলে আমাদেরকেও ভূগর্ভে বিলীন করে দিতেন। হায়, কাফেররা সফলকাম হবে না।
5 Zohurul Hoque
আর আগের দিন যারা তার অবস্থার জন্য কামনা করত তারা সাত-সকালে বলতে লাগল -- ''আহা দেখো! আল্লাহ্ তাঁরে বান্দাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা করেন তার প্রতি রিযেক প্রসারিত করেন এবং মেপেজোখে দেন। আল্লাহ্ যদি আমাদের উপরে সদয় না হতেন তবে আমাদেরও গ্রাস করাতেন। আহা দেখো! অবিশ্বাসীরা কখনো সফলকাম হয় না।’’