اَفَرَءَيْتَ مَنِ اتَّخَذَ اِلٰهَهٗ هَوٰىهُ وَاَضَلَّهُ اللّٰهُ عَلٰى عِلْمٍ وَّخَتَمَ عَلٰى سَمْعِهٖ وَقَلْبِهٖ وَجَعَلَ عَلٰى بَصَرِهٖ غِشٰوَةًۗ فَمَنْ يَّهْدِيْهِ مِنْۢ بَعْدِ اللّٰهِ ۗ اَفَلَا تَذَكَّرُوْنَ ( الجاثية: ٢٣ )
Afara'ayta manit takhaza ilaahahoo hawaahu wa adal lahul laahu 'alaa 'ilminw wa khatama 'alaa sam'ihee wa qalbihee wa ja'ala 'alaa basarihee ghishaawatan famany yahdeehi mim ba'dil laah; afalaa tazakkaroon (al-Jāthiyah ৪৫:২৩)
English Sahih:
Have you seen he who has taken as his god his [own] desire, and Allah has sent him astray due to knowledge and has set a seal upon his hearing and his heart and put over his vision a veil? So who will guide him after Allah? Then will you not be reminded? (Al-Jathiyah [45] : 23)
তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):
তুমি কি লক্ষ্য করেছ তার প্রতি যে তার খেয়াল-খুশিকে ইলাহ বানিয়ে নিয়েছে? আল্লাহ জেনে শুনেই তাকে পথভ্রষ্ট করেছেন আর তার কানে ও দিলে মোহর মেরে দিয়েছেন আর তার চোখের উপর টেনে দিয়েছেন পর্দা। অতঃপর আল্লাহর পর আর কে (আছে যে) তাকে সঠিক পথ দেখাবে? এরপরও কি তোমরা শিক্ষাগ্রহণ করবে না? (আল জাসিয়া [৪৫] : ২৩)
1 Tafsir Ahsanul Bayaan
তুমি কি লক্ষ্য করেছ তাকে, যে তার খেয়াল-খুশীকে নিজের উপাস্য করে নিয়েছে?[১] আল্লাহ জেনেশুনেই ওকে বিভ্রান্ত করেছেন[২] এবং ওর কর্ণ ও হৃদয় মোহর করে দিয়েছেন[৩] এবং ওর চোখের ওপর রেখেছেন পর্দা।[৪] অতএব, আল্লাহ মানুষকে বিভ্রান্ত করার পর কে তাকে পথনির্দেশ করবে?[৫] তবুও কি তোমরা উপদেশ গ্রহণ করবে না? [৬]
[১] তাই সেটাকেই সে ভাল মনে করে, যেটাকে তার প্রবৃত্তি ভাল মনে করে এবং সেটাকেই সে মন্দ মনে করে, যেটাকে তার প্রবৃত্তি মন্দ মনে করে। অর্থাৎ, আল্লাহ ও তাঁর রসূলের যাবতীয় বিধি-বিধানের উপর স্বীয় প্রবৃত্তির চাহিদাকে প্রাধান্য এবং তার জ্ঞান-বুদ্ধিকে বেশী গুরুত্ব দেয়। অথচ জ্ঞান-বুদ্ধিও পরিবেশ দ্বারা প্রভাবিত হয়ে অথবা স্বার্থপরতার শিকার হয়ে প্রবৃত্তির মত ভুল ফায়সালাও করতে পারে। একটি অর্থ এর এই করা হয়েছে; যে ব্যক্তি আল্লাহর পক্ষ হতে অবতীর্ণকৃত পথনির্দেশ ও দলীল ছাড়াই স্বীয় মনমর্জির দ্বীন অবলম্বন করে। আর কেউ কেউ বলেছেন, এ থেকে এমন ব্যক্তিকে বুঝানো হয়েছে, যে পাথর পূজা করত। যখন তুলনামূলক কোন সুন্দর পাথর পেয়ে যেত, তখন সে পূর্বের পাথরকে ফেলে দিয়ে দ্বিতীয় পাথরটিকে উপাস্য বানিয়ে নিত। (ফাতহুল ক্বাদীর)
[২] অর্থাৎ, তিনি জানেন যে, সে এই ভ্রষ্টতার উপযুক্ত। অথবা অর্থ এই যে, জ্ঞান এসে যাওয়া এবং হুজ্জত কায়েম হয়ে যাওয়ার পরও (জেনেশুনে) সে ভ্রষ্টতার পথ অবলম্বন করে। যেমন, নিজেকে বড় জ্ঞানী মনে করে এমন বহু অহংকারী ভ্রষ্ট আলেমদের অবস্থা; তারা ভ্রষ্ট হয়। মতামত তাদের ভিত্তিহীন হয়, কিন্তু 'আমার মত বড় পন্ডিত কেউ নেই' মনে করার এই অহমিকায় তারা নিজেদের দলীলাদিকে এমন মনে করে, যেন তা আসমান থেকে পেড়ে আনা তারকা। এইভাবে জেনেশুনে তারা কেবল নিজেরাই ভ্রষ্ট হয় না, বরং অন্যদেরকেও ভ্রষ্ট করে গর্ববোধ করে। نَعُوْذُ بِاللهِ مِنْ هَذَا الْعِلْمِ الضَّالِّ وَالْفَهْمِ السَّقِيْمِ وَالْعَقْلِ الزَّائِغِ।
[৩] যার কারণে ভালো কথা শোনা থেকে তার কান এবং হিদায়াত গ্রহণ করা হতে তার অন্তর বঞ্চিত হয়ে গেছে।
[৪] তাই সে সত্য দেখতেও পায় না।
[৫] যেমন বলেছেন, ﴿مَنْ يُّضْلِلِ اللهُ فَلاَ هَادِيَ لَهُ وَيَذَرُهُمْ فِي طُغْيَانِهِمْ يَعْمَهُوْنَ﴾ (الأعراف; ১৮৬)
[৬] অর্থাৎ, চিন্তা-ভাবনা করবে না? যাতে প্রকৃত ব্যাপার তোমাদের কাছে স্পষ্ট ও পরিষ্কার হয়ে যায়।