مَا جَعَلَ اللّٰهُ مِنْۢ بَحِيْرَةٍ وَّلَا سَاۤىِٕبَةٍ وَّلَا وَصِيْلَةٍ وَّلَا حَامٍ ۙوَّلٰكِنَّ الَّذِيْنَ كَفَرُوْا يَفْتَرُوْنَ عَلَى اللّٰهِ الْكَذِبَۗ وَاَكْثَرُهُمْ لَا يَعْقِلُوْنَ ( المائدة: ١٠٣ )
তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):
আল্লাহ না নির্দিষ্ট করেছেন বাহীরাহ্, না সাইবাহ্, না ওয়াসীলাহ্, না হাম বরং যারা কুফরী করেছে তারাই আল্লাহর নামে মিথ্যা আরোপ করে, তাঁদের অধিকাংশই নির্বোধ।
English Sahih:
Allah has not appointed [such innovations as] bahirah or sa’ibah or wasilah or ham. But those who disbelieve invent falsehood about Allah, and most of them do not reason.
1 Tafsir Ahsanul Bayaan
আল্লাহ বাহীরা, সায়েবা, অস্বীলা ও হাম[১] বিধিবদ্ধ করেননি। কিন্তু যারা অবিশ্বাস করে, তারা আল্লাহর প্রতি মিথ্যা আরোপ করে থাকে। বস্তুতঃ তাদের অধিকাংশ উপলব্ধি করে না।
[১] এগুলি ঐ সকল পশুর বিভিন্ন নাম, যা আরবের বাসিন্দাগণ তাদের প্রতিমার নামে উৎসর্গ করত। এগুলির বিভিন্ন ব্যাখ্যা বর্ণনা করা হয়েছে। সহীহ বুখারীতে সাঈদ বিন মুসাইয়েব কর্তৃক এইরূপ ব্যাখ্যা উল্লেখ হয়েছে, 'বাহীরা' ঐ জন্তুকে বলা হত, যার দুধ দোহন করা হত না এবং বলত যে, এ দুধ প্রতিমার জন্য। সুতরাং কোন লোকই তার ওলানে (দুধের বাঁটে) হাত লাগাত না। 'সায়েবা' ঐ জন্তুকে বলা হয়, যাকে মূর্তির নামে স্বাধীন ছেড়ে দেওয়া হত; না তার উপর আরোহণ করা হত আর না তার উপর কোন বোঝা বহন করা হত। 'অস্বীলা' ঐ উটনীকে বলা হত, যা প্রথমবার একটা মাদী বাচ্চা প্রসব করার পর দ্বিতীয় বারেও মাদী বাচ্চা প্রসব করত। (অর্থাৎ প্রথম মাদী বাচ্চার সাথে দ্বিতীয় মাদী বাচ্চা মিলিত হত এবং উভয়ের মাঝে নর বাচ্চা পার্থক্য সৃষ্টি করত না) তাহলে ঐ ধরনের উটনীকে মূর্তির নামে স্বাধীন ছেড়ে দেওয়া হত। 'হাম' ঐ ষাঁড় উটকে বলা হত, যার বীর্যে বহু বাচ্চা জন্মলাভ করত (এবং তার বংশ যথেষ্ট বৃদ্ধি পেত), তখন তার দ্বারা বোঝা বহনের কাজ নেওয়া হত না এবং তার উপর আরোহণ করাও হত না। তাকে মূর্তির নামে স্বাধীন ছেড়ে দেওয়া হত। আর তাকে 'হামী' বলা হত। এই বর্ণনায় এ হাদীসও উল্লেখ করা হয়েছে যে, আমর বিন আমের খুযাঈ সর্বপ্রথম মূর্তির নামে জন্তু উৎসর্গ করার প্রথা চালু করেছিল। নবী করীম (সাঃ) বলেন, "আমি তাকে জাহান্নামে নিজ নাড়ীভুঁড়ি নিয়ে টানাটানি করতে দেখেছি।" (বুখারীঃ সূরা মায়েদার তফসীর) আলোচ্য আয়াতে বলা হয়েছে যে, মহান আল্লাহ এই জন্তুগুলোকে ঐভাবে শরীয়তরূপে নির্ধারণ করেননি। কেননা তিনি নযর-নিয়ায শুধু নিজের জন্যই নির্দিষ্ট করেছেন। মূর্তির নামে নযর-নিয়াযের পদ্ধতি মুশরিকদের চালু করা জঘন্য প্রথা। বলা বাহুল্য, মূর্তি ও বাতেল উপাস্যদের নামে জন্তু উৎসর্গ করা এবং নযর-নিয়ায পেশ করার ধারা আজও মুশরিকদের মাঝে বিদ্যমান। এমনকি কিছু নামধারী মুসলিমদের মাঝেও এই শিরকী কাজ প্রচলিত। আমরা এই সমস্ত কর্ম থেকে আল্লাহর আশ্রয় কামনা করি।