يٰٓاَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوا اذْكُرُوْا نِعْمَتَ اللّٰهِ عَلَيْكُمْ اِذْ هَمَّ قَوْمٌ اَنْ يَّبْسُطُوْٓا اِلَيْكُمْ اَيْدِيَهُمْ فَكَفَّ اَيْدِيَهُمْ عَنْكُمْۚ وَاتَّقُوا اللّٰهَ ۗوَعَلَى اللّٰهِ فَلْيَتَوَكَّلِ الْمُؤْمِنُوْنَ ࣖ ( المائدة: ١١ )
তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):
হে মু’মিনগণ! তোমরা আল্লাহর নি‘আমাতের কথা স্মরণ কর যখন একটি সম্প্রদায় তোমাদের বিরুদ্ধে তাদের হস্ত উত্তোলন করতে চেয়েছিল, তখন তিনি তোমাদের থেকে তাদের হাত নিবৃত্ত করেছিলেন। আল্লাহকে ভয় কর, আর মুমিনগণ যেন আল্লাহরই উপর ভরসা করে।
English Sahih:
O you who have believed, remember the favor of Allah upon you when a people determined to extend their hands [in aggression] against you, but He withheld their hands from you; and fear Allah. And upon Allah let the believers rely.
1 Tafsir Ahsanul Bayaan
হে বিশ্বাসীগণ! তোমাদের প্রতি আল্লাহর নিয়ামত স্মরণ কর, যখন এক সম্প্রদায় তোমাদের বিরুদ্ধে হস্ত প্রসারিত করতে উদ্যত হয়েছিল, তখন আল্লাহ তোমাদের উপর থেকে তাদের হস্তকে প্রতিহত করেছিলেন[১] এবং আল্লাহকে ভয় কর। আর বিশ্বাসীগণের উচিত, কেবল আল্লাহর উপরেই ভরসা করা।
[১] এই আয়াতের শানে নুযুল বা অবতীর্ণের কারণ সম্পর্কে কুরআনের ভাষ্যকারগণ বিভিন্ন ঘটনা উল্লেখ করেছেন যেমন; (ক) একজন বেদুঈনের ঘটনা, কোন এক সফর থেকে প্রত্যাবর্তনের সময় রসূল (সাঃ) কোন এক গাছের ছায়ায় বিশ্রাম নিচ্ছিলেন এবং তরবারিটিকে গাছে ঝুলিয়ে রেখেছিলেন। (সুযোগ বুঝে) ঐ বেদুঈন (তাঁর দিকে ধাবিত হয়ে) তরবারিটি হস্তগত করে ফেলল। অতঃপর তাঁর দিকে তরবারি উঁচিয়ে বলল, 'হে মুহাম্মাদ! আমার কবল থেকে কে তোমাকে রক্ষা করবে?' রসূল (সাঃ) নিশ্চিন্তে উত্তর দিলেন; 'আল্লাহ।' (অর্থাৎ আল্লাহ রক্ষা করবেন।) শুধু এতটুকু কথা বলতে যত দেরী, (অদৃশ্য শক্তির ইঙ্গিতে) তার হাত থেকে তরবারিটি পড়ে গেল। (খ) আবার কেউ বলেন যে, কা'ব বিন আশরাফ ও তার সহযোগীরা রসূল (সাঃ) ও তাঁর সাহাবা (রাঃ)গণের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও ছল-চাতুরী করে তাঁদের ক্ষতি করার ষড়যন্ত্র করেছিল; যখন তিনি ও সাহাবাগণ তার বাড়িতে পৌঁঁছেছিলেন। কিন্তু তাদের এ ষড়যন্ত্র আল্লাহ তাআলা যথাসময়ে তাঁর রসূল (সাঃ)-কে অবগত করে ব্যর্থ করে দেন। (গ) আবার কেউ বলেন যে, একজন মুসলমানের হাতে ভুলক্রমে আ'মেরী গোত্রের দুই ব্যক্তি খুন হয়েছিল। আল্লাহর রসূল (সাঃ) ও সাহাবায়ে কেরাম (রাঃ) সহ রক্তপণ আদায়ের ব্যাপারে সন্ধিচুক্তি মোতাবেক সহযোগিতার কামনায় ইয়াহুদীদের গোত্র বানী নাযবীরের বস্তীতে গমন করেন। তিনি একটি দেওয়ালের সাথে হেলান দিয়ে বসেন। অপর দিকে তারা ষড়যন্ত্র করেছিল যে, উপর থেকে যাঁতার একটি পাথর ফেলে তাঁকে হত্যা করা হবে। আল্লাহ তাআলা তাঁর রসূল (সাঃ)-কে অহীর মাধ্যমে (তাদের সংকল্পের কথা) জানিয়ে দেন এবং তৎক্ষণাৎ তিনি সেখান থেকে প্রস্থান করেন। সম্ভবতঃ উক্ত সমস্ত ঘটনার পরেই এই আয়াত অবতীর্ণ হয়। কেননা একটি আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার ব্যাপারে বিভিন্ন কারণ ও পটভূমিকা থাকতে পারে। (তাফসীরে ইবনে কাসীর, আইসারুত তাফাসীর ও ফাতহুল ক্বাদীর)