Skip to main content

فَلَمَّا سَمِعَتْ بِمَكْرِهِنَّ اَرْسَلَتْ اِلَيْهِنَّ وَاَعْتَدَتْ لَهُنَّ مُتَّكَاً وَّاٰتَتْ كُلَّ وَاحِدَةٍ مِّنْهُنَّ سِكِّيْنًا وَّقَالَتِ اخْرُجْ عَلَيْهِنَّ ۚ فَلَمَّا رَاَيْنَهٗٓ اَكْبَرْنَهٗ وَقَطَّعْنَ اَيْدِيَهُنَّۖ وَقُلْنَ حَاشَ لِلّٰهِ مَا هٰذَا بَشَرًاۗ اِنْ هٰذَآ اِلَّا مَلَكٌ كَرِيْمٌ   ( يوسف: ٣١ )

So when
فَلَمَّا
অতঃপর যখন
she heard
سَمِعَتْ
(মহিলা) শুনলো
of their scheming
بِمَكْرِهِنَّ
সম্বন্ধে তাদের ষড়যন্ত্রেরর কথা
she sent
أَرْسَلَتْ
মহিলা (লোক) প্রেরণ করলো
for them
إِلَيْهِنَّ
তাদের কাছে
and she prepared
وَأَعْتَدَتْ
ও প্রস্তুত করলো
for them
لَهُنَّ
তাদের জন্যে
a banquet
مُتَّكَـًٔا
(হেলান দিয়ে) বসার আসন
and she gave
وَءَاتَتْ
ও দিলো
each
كُلَّ
ব্যক্তিকে
one
وَٰحِدَةٍ
প্রত্যেক
of them
مِّنْهُنَّ
তাদের মধ্যকার
a knife
سِكِّينًا
একটি করে ছুরি (ফল কেটে খেতে)
and she said
وَقَالَتِ
এবং বললো (ইউসুফকে)
"Come out
ٱخْرُجْ
"বের হও
before them"
عَلَيْهِنَّۖ
সামনে তাদের"
Then when
فَلَمَّا
অতঃপর যখন
they saw him
رَأَيْنَهُۥٓ
তাকে তারা দেখলো
they greatly admired him
أَكْبَرْنَهُۥ
তারা অভিভূত হলো
and cut
وَقَطَّعْنَ
ও তারা কেটে ফেললো
their hands
أَيْدِيَهُنَّ
(ফলের পরিবর্তে) তাদের হাত
they said
وَقُلْنَ
ও তারা বললো
"Forbid
حَٰشَ
"মহিমা
Allah
لِلَّهِ
জন্যে আল্লাহর
not
مَا
নয়
(is) this
هَٰذَا
এতো
a man
بَشَرًا
মানুষ
not
إِنْ
নয়
(is) this
هَٰذَآ
এতো
but
إِلَّا
এ ছাড়া
an angel
مَلَكٌ
ফেরেশতা
noble"
كَرِيمٌ
সম্মানিত"

তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):

মহিলাটি যখন তাদের চক্রান্তের কথা জানতে পারল, তখন তাদেরকে ডেকে পাঠাল আর তাদের জন্য হেলান দিয়ে বসার ব্যবস্থা করল, আর তাদের প্রত্যেককে একটা করে ছুরি দিল। অতঃপর ইউসুফকে বলল, ‘ওদের সামনে বেরিয়ে এসো।’ যখন তারা তাকে দেখল, বিস্ময়ে অভিভূত হয়ে গেল আর নিজেদের হাত কেটে ফেলল, আর বলল, ‘আল্লাহ আমাদের রক্ষা করুন, এ তো মানুষ নয়, এতো এক সম্মানিত ফেরেশতা।’

English Sahih:

So when she heard of their scheming, she sent for them and prepared for them a banquet and gave each one of them a knife and said [to Joseph], "Come out before them." And when they saw him, they greatly admired him and cut their hands and said, "Perfect is Allah! This is not a man; this is none but a noble angel."

1 Tafsir Ahsanul Bayaan

মহিলাটি যখন তাদের চক্রান্তের কথা শুনল, তখন সে তাদেরকে ডেকে পাঠাল[১] এবং একটি বৈঠকের আয়োজন করল।[২] তাদের প্রত্যেককে একটি করে ছুরি দিল এবং তাকে বলল, ‘তাদের সামনে বের হও।’[৩] অতঃপর তারা যখন তাকে দেখল, তখন তারা তার (রূপ-মাধুর্যে) অভিভূত হল এবং নিজেদের হাত কেটে ফেলল।[৪] তারা বলল, ‘আল্লাহ পবিত্র! এ তো মানুষ নয়। এ তো এক মহিমান্বিত ফিরিশতা!’ [৫]

[১] মিসরের মহিলাদের পশ্চাতে সমালোচনা এবং নিন্দা ও ভৎর্সনাকে 'চক্রান্ত' বলা হয়েছে। যার ফলে কোন কোন তফসীরবিদ বলেছেন যে, শহরের সেই নারীদের নিকটেও ইউসুফ (আঃ)-এর অপরূপ সৌন্দর্যের সংবাদ পৌঁছে গিয়েছিল এবং তারাও কোনক্রমে সেই সৌন্দর্যের অধিকারী (ইউসুফ)-কে দেখতে চাচ্ছিল। সুতরাং তারা তাদের সেই চক্রান্ত (গুপ্ত কৌশলে) কৃতকার্য হয়ে গেল। যেহেতু আযীয-পত্নী এই কথা প্রমাণ করার জন্য সেই মহিলাদেরকে যিয়াফত করল এবং তাদের ভোজনের ব্যবস্থা করল যে, আমি যার প্রতি আসক্তা হয়ে পড়েছি, সে শুধু একজন দাস বা সাধারণ ব্যক্তি নয়; বরং সে বাহ্যিক ও আভ্যন্তরিক এমন অসাধারণ সৌন্দর্যের অধিকারী যে, তাকে দেখে মন মুগ্ধ ও প্রাণ লুণ্ঠিত হওয়া কোন আশ্চর্যের বিষয় নয়।

[২] অর্থাৎ, এমন বসার স্থান নির্দিষ্ট করল, যেখানে হেলান-বালিশ রাখা হয়ে ছিল। যেমন বর্তমানে আরবদের মাঝে এরূপ মজলিস প্রসিদ্ধ আছে, এমনকি হোটেল ও রেস্তরাঁতেও তা রাখা হয়।

[৩] অর্থাৎ, ইউসুফ (আঃ)-কে প্রথমে আড়ালে রাখা হয়েছিল। অতঃপর যখন উপস্থিত সব মহিলারা (ফল বা অন্য কিছু কেটে খাওয়ার জন্য) ছুরি হাতে নিল, তখন আযীয-পত্নী (যুলাইখা) ইউসুফ (আঃ)-কে উক্ত মজলিসে আসার আদেশ দিল।

[৪] অর্থাৎ, ইউসুফের মনোমুগ্ধকর রূপ দেখে প্রথমতঃ তাঁর মাহাত্ম্য ও মর্যাদার কথা স্বীকার করল এবং দ্বিতীয়তঃ তারা নিজেরা এমন দিশেহারা হয়ে পড়ল যে, (ফল কাটার জায়গায়) নিজ নিজ হাতেই ছুরি চালিয়ে বসল, ফলে তাদের হাত কেটে রক্তাক্ত হয়ে গেল। হাদীসে এসেছে যে, ইউসুফকে (সৃষ্টির) অর্ধেক রূপ দান করা হয়েছিল। (মুসলিমঃ ঈমান অধ্যায়)

[৫] এর অর্থ এ নয় যে, ফিরিশতাগণ আকার-আকৃতিতে মানুষ থেকে অধিক সুন্দর। কারণ, ফিরিশতাদেরকে তো মানুষ দেখেইনি। তাছাড়া আল্লাহ তাআলা মানুষ সম্পর্কে নিজেই কুরআন মাজীদে বর্ণনা দিয়েছেন যে, আমি তাদেরকে সুন্দরতম অবয়বে সৃষ্টি করেছি। (সূরা তীন) সেই মহিলাগণ ইউসুফ (আঃ)-কে 'মানুষ নয়' এই জন্য বলেছিল যে, তারা তখন যেরূপ সৌন্দর্যের অধিকারী ব্যক্তিকে দেখেছিল, সেরূপ সৌন্দর্যের অধিকারী কোন মানুষকে কখনো দেখেনি এবং তারা এই জন্য তাঁকে ফিরিশতা বলেছিল যে, সাধারণতঃ মানুষ মনে করে যে, ফিরিশতাগণ রূপ ও গুণের দিক থেকে এমন হন, যা মানুষ থেকে ঊর্ধ্বে। এ থেকে বুঝা গেল যে, নবীগণের অসাধারণ বৈশিষ্ট্য ও স্বতন্ত্র গুণাবলীর কারণে তাঁদেরকে মানব-বংশ থেকে বের করে 'নূরের সৃষ্টি' বলা সর্বযুগের এমন মানুষদের স্বভাব ছিল, যারা নবুঅত ও তাঁর মর্যাদার ব্যাপারে অজ্ঞ।