হিজর আয়াত ৯৩
عَمَّا كَانُوْا يَعْمَلُوْنَ ( الحجر: ٩٣ )
'Ammaa kaanoo ya'maloon (al-Ḥijr ১৫:৯৩)
English Sahih:
About what they used to do. (Al-Hijr [15] : 93)
তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):
তারা যা করছে সে সম্পর্কে। (হিজর [১৫] : ৯৩)
1 Tafsir Ahsanul Bayaan
সেই বিষয়ে যা তারা করত।
2 Tafsir Abu Bakr Zakaria
সে বিষয়ে, যা তারা আমল করত।
3 Tafsir Bayaan Foundation
তারা যা করত, সে সম্পর্কে।
4 Muhiuddin Khan
ওদের কাজকর্ম সম্পর্কে।
5 Zohurul Hoque
তারা যা করে চলেছিল সে-সন্বন্ধে।
6 Mufti Taqi Usmani
তারা যা-কিছু করত সে সম্পর্কে,
7 Mujibur Rahman
সেই বিষয়ে, যা তারা করে।
8 Tafsir Fathul Mazid
৮৭-৯৩ নং আয়াতের তাফসীর:
(وَلَقَدْ آتَيْنَاكَ سَبْعًا)
এখানে স্বাব-এ মাছানী দ্বারা কী উদ্দেশ্য এ বিষয়ে আলেমদের মতামত পাওয়া গেলেও সঠিক কথা হল এই যে, এর দ্বারা উদ্দেশ্য সূরা ফাতিহা। কারণ এতে সাতটি আয়াত রয়েছে আর এটা সালাতে প্রত্যেক রাকাআতে পাঠ করা হয়। আর এটিই সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত।
“আবূ সাঈদ বিন মুয়াল্লা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার পাশ দিয়ে অতিক্রম করছিলেন এমতাবস্থায় আমি সালাতরত ছিলাম, সে সময় তিনি আমাকে আহ্বান করলেন কিন্তু আমি তাঁর ডাকে সাড়া দেইনি। অতঃপর আমি সালাত শেষ করে তাঁর নিকট আসলাম। তখন তিনি আমাকে বললেন: আমার নিকট আসতে কিসে তোমাকে বারণ করল? আমি উত্তরে বললাম যে, আমি সালাতরত অবস্থায় ছিলাম, তখন তিনি বলেন, আল্লাহ তা‘আলা কি বলেননি?
(يٰٓأَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوا اسْتَجِيْبُوْا لِلّٰهِ وَلِلرَّسُوْلِ إِذَا دَعَاكُمْ لِمَا يُحْيِيْكُمْ)
“হে মু’মিনগণ! রাসূল যখন তোমাদেরকে এমন কিছুর দিকে আহ্বান করে যা তোমাদেরকে প্রাণবন্ত করে, তখন আল্লাহ ও রাসূলের আহ্বানে সাড়া দাও।” (সূরা আনফাল ৮:২৪)
অতঃপর তিনি বললেন: আমি কি মাসজিদ থেকে বের হবার পূর্বে কুরআনে মর্যাদার দিক দিয়ে কোন্ সূরাটি সবচেয়ে বেশি মর্যাদাসম্পন্ন সে সম্পর্কে তোমাকে অবগত করব না? অতঃপর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বের হবার সময় আমি তাকে এ কথা স্মরণ করিয়ে দিলে তিনি বলেন, এটা হল
(اَلْحَمْدُ لِلّٰهِ رَبِّ الْعٰلَمِيْنَ)
“সমস্ত প্রশংসা একমাত্র আল্লাহর জন্য যিনি জগতসমূহের প্রতিপালক।”
সূরা ফাতিহা হল বার বার পঠিত সাতটি আয়াত ও কুরআনুল আযীম যা আমাকে দেয়া হয়েছে। (সহীহ বুখারী: ৪৭০৩)
পরবর্তী আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা বলেন যে, যেহেতু তিনি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে তাঁর নিকট হতে সবচেয়ে বড় ও মহান একটি জিনিস দিয়েছেন তাই তাঁকে নিষেধ করছেন তিনি কাফির-মুশরিকদের এই তুচ্ছ অংশ দেখে আকৃষ্ট না হওয়ার জন্য।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন: “তুমি তোমার চক্ষুদ্বয় কখনও প্রসারিত কর না তার প্রতি, যা আমি তাদের বিভিন্ন শ্রেণীকে পার্থিব জীবনের সৌন্দর্যস্বরূপ উপভোগের উপকরণ হিসেবে দিয়েছি, তার দ্বারা তাদেরকে পরীক্ষা করার জন্য। তোমার প্রতিপালক প্রদত্ত জীবনোপকরণ উৎকৃষ্ট ও অধিক স্থায়ী। এবং তোমার পরিবারবর্গকে সালাতের আদেশ দাও ও তাতে অবিচল থাক, আমি তোমার নিকট কোন জীবনোপকরণ চাই না; আমিই তোমাকে জীবনোপকরণ দেই এবং শুভ পরিণাম তো মুত্তাকীদের জন্য।” (সূরা ত্বহা ২০:১৩১-১৩২) এবং তিনি তাঁর নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে নিষেধ করলেন তিনি যেন তাদের ব্যাপারে দুঃশ্চিন্তাগ্রস্ত না হন।
আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন:
(وَاصْبِرْ وَمَا صَبْرُكَ إِلَّا بِاللّٰهِ وَلَا تَحْزَنْ عَلَيْهِمْ وَلَا تَكُ فِيْ ضَيْقٍ مِّمَّا يَمْكُرُوْنَ)
“তুমি ধৈর্য ধারণ কর, তোমার ধৈর্য তো আল্লাহরই সাহায্যে। তাদের দরুন দুঃখ কর না এবং তাদের ষড়যন্ত্রে তুমি মনঃক্ষুণত্ন হয়ো না।” (সূরা নাহল ১৬:১২৭)
আর তিনি তাঁর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে নির্দেশ দিলেন তিনি যেন মু’মিনদের জন্য তার বিনয়ের ডানাকে অবনমিত করেন। অর্থাৎ তাদের সাথে উত্তম আচরণ করেন।
যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَاخْفِضْ جَنَاحَكَ لِمَنِ اتَّبَعَكَ مِنَ الْمُؤْمِنِيْنَ)
“এবং যারা তোমার অনুসরণ করে সে সমস্ত মু’মিনদের প্রতি বিনয়ী হও।” (সূরা শু‘আরা ২৬:২১৫)
সুতরাং মানুষের উচিত মু’মিন ব্যক্তিবর্গের সাথে বিনয়ের সাথে কথা বলা। উচ্চৈঃস্বরে হৈ-হুল্লোড় করে নয়। মানুষকে দাওয়াত দিতে গেলে তাকে নম্র ভাষায় দাওয়াত দিতে হবে, তা না হলে মানুষ তার দাওয়াতে সাড়া দেবে না।
পরবর্তীতে আল্লাহ তা‘আলা অবগত করছেন যে, তিনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সতর্ককারী রূপে প্রেরণ করেছেন। সুতরাং যারা শাস্তির কথা শোনার পরও সতর্ক হবে না, ঈমান আনবে না তাদের অবস্থা হবে ঐ সম্প্রদায়ের মত যারা আল্লাহ তা‘আলার বিধান ও রাসূলের ব্যপারে মিথ্যা শপথ করত আর তার ফলে তাদের যে করুণ পরিণতি হয়েছিল তাদেরও সেরূপই হবে।
এখানে الْمُقْتَسِمِيْنَ দ্বারা কাদেরকে বুঝানো হয়েছে তা নিয়ে মতানৈক্য বিদ্যমান থাকলেও সঠিক কথা হল, এরা হল তারা যারা কুরআনের ব্যাপারে শপথ করত, কুরআনের কিছু অংশের প্রতি ঈমান আনত আর কিছু অংশের প্রতি কুফরী করত। চাই তারা ইয়াহূদী, খ্রিস্টান বা অন্য যারাই হোক না কেন। (তাফসীর মুয়াসসার, অত্র আয়াতের তাফসীর)
তাদেরকে الْمُقْتَسِمِيْنَ বলার কারণ হল যে, তারা কথায় কথায় মিথ্যা শপথ করত এর দ্বারা মানুষদেরকে আল্লাহর পথ থেকে বাধা প্রদান করার জন্য। যার ফলে তাদের الْمُقْتَسِمِيْنَ বলা হত।
অতএব তারা যদি সতর্ক না হয় তাহলে অবশ্যই তাদেরকে তাদের কৃতকর্ম সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. সূরা ফাতিহা অন্যতম একটি মর্যাদাসম্পন্ন সূরা।
২. পার্থিব কোন জিনিসের প্রতি লোভ করা যাবে না।
৩. মানুষকে নম্র ভাষায় ঈমানের দিকে ডাকতে হবে।
৪. মিথ্যা শপথ করা যাবে না।
৫. মানুষকে মৃত্যুর পর তার কার্য-কলাপ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে।
9 Fozlur Rahman
তারা যা কিছু করত সে সম্পর্কে।
10 Mokhtasar Bangla
৯৩. তারা দুনিয়াতে যে কুফরি ও পাপের কাজ করছে আমি সে সম্পর্কে তাদেরকে প্রশ্ন করবো।
11 Tafsir Ibn Kathir
৮৯-৯৩ নং আয়াতের তাফসীর
আল্লাহ তাআলা স্বীয় নবীকে (সঃ) নির্দেশ দিচ্ছেনঃ “হে নবী (সঃ)! তুমি। জনগণের সামনে ঘোষণা করে দাওঃ আমি সমস্ত মানুষকে আল্লাহর শাস্তি হতে প্রকাশ্য ভয় প্রদর্শক। জেনে রেখো যে, আমার উপর মিথ্যারোপ কারীরা পূর্ববর্তী নবীদের উপর মিথ্যারোপ কারীদের মতই আল্লাহর আযারের শিকার হয়ে যাবে। مُقْتَسِمِيْنَ শব্দের ভাবার্থ হচ্ছে শপথকারীগণ, যারা নবীদেরকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করা, তাঁদের বিরুদ্ধাচরণ করা এবং তাঁদেরকে কষ্ট দেয়ার উপর পরম্পর শপথ গ্রহণ করতো। যেমন হযরত সালেহের (আঃ) কওমের বর্ণনা কুরআন কারীমে রয়েছে যে, তারা শপথ করে বলেছিলঃ রাতারাতি আমরা সালেহ (আঃ) ও তার পরিবার বর্গকে ধ্বংসের পথে ঠেলে দেবো।” অনুরূপ ভাবে কুরআনপাকে রয়েছে যে, তারা আল্লাহর নামে কঠিন শপথ করে বলেছিলঃ “যে মরে গেছে তাকে আল্লাহ পুনরুত্থিত করবেন না। অন্য জায়গায় এই ব্যাপারে শপথ করার উল্লেখ আছে যে, মুসলমানরা কখনো কোন করুণা লাভ করতে পারে না। মোট কথা, যেটা তারা স্বীকার করতো না ওর উপর শপথ করার তাদের অভ্যাস ছিল।
হযরত আবু মূসা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, নবী (সঃ) বলেছেনঃ “আমার এবং যে হিদায়াতসহ আমাকে প্রেরণ করা হয়েছে তার দৃষ্টান্ত ঐ ব্যক্তির মত, যে তার কওমের নিকট এসে বললোঃ হে লোক সকল! আমি শত্রু সেনাবাহিনী স্বচক্ষে দেখে এলাম। সুতরাং তোমরা সাবধান হয়ে যাও এবং মুক্তি লাভের জন্যে প্রস্তুত হও। এখন কিছু লোক তার কথা বিশ্বাস করলো এবং তৎক্ষণাৎ সেখান থেকে সরে পড়লো। ফলে তারা শত্রুর আক্রমণ থেকে বেঁচে গেল। পক্ষান্তরে কিছু লোক তার কথা অবিশ্বাস করলো এবং সেখানেই নিশ্চিন্তভাবে রয়ে গেল। এমতাবস্থায় অকস্মাৎ শত্রু সেনাবাহিনী এসে পড়লো এবং তাদেরকে পরিবেষ্টন করতঃ ধ্বংস করে দিলো। সুতরাং আমাকে মান্যকারী ও অমান্যকারীদের দৃষ্টান্ত এটাই।” (এ হাদীসটি ইমাম বুখারী (রঃ) ও ইমাম মুসলিম (রঃ) বর্ণনা করেছেন)
ঘোষণা করা হচ্ছেঃ “তারা তাদের উপর অবতারিত আল্লাহর কিতাবগুলিকে টুকরা টুকরা করে ফেলেছিল। যে মাস্আলাকে ইচ্ছা করতো মানতে এবং যেটা মন মত হতো না তা পরিত্যাগ করতো।”
হযরত ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, এর দ্বারা আহলে কিতাবকে বুঝানো হয়েছে। তারা কিতাবের কিছু অংশ মানতো এবং কিছু অংশ মানতো না। এটাও বর্ণিত আছে যে, এর দ্বারা আল্লাহর কিতাব সম্পর্কে কাফিরদের উক্তিকে বুঝানো হয়েছে। তারা কিতাবুল্লাহ সম্পর্কে বলতোঃ “এটা যাদু, ভবিষ্যৎ কথন এবং পূর্ববর্তীতের কাহিনী। আর এর কথক হচ্ছে যাদকুর, পাগল, ভবিষ্যদ্বক্তা ইত্যাদি।”
‘সীরাতে ইবনু ইসহাক’ গ্রন্থে বর্ণিত আছে যে, একবার কুরআনের নেতৃবর্গ ওয়ালীদ ইবনু মুগীরার নিকট একত্রিত হয়। হজ্বের মওসুম নিকটবর্তী ছিল। ওয়ালীদ ইবনু মুগীরাকে তাদের মধ্যে খুবই সম্ভ্রান্ত ও বুদ্ধিমান লোক হিসেবে বিবেচনা করা হতো। সে সকলকে সম্বোধন করে বললোঃ “দেখো, হজ্জ্ব উপলক্ষে দূরদূরান্ত থেকে আরবের বহু লোক এখানে সমবেত হবে। তোমরা তো দেখতেই পাচ্ছি যে, এই লোকটি (নবী, সঃ) বড়ই হাঙ্গামা সৃষ্টি করে রেখেছে। এর সম্পর্কে ঐ বহিরাগত লোকদেরকে কি বলা যায়? কোন একটি কথার উপর সবাই একমত হয়ে যাও। কেউ এক কথা বলবে এবং অন্য জন অন্য কথা বলবে। এরূপ যেন না হয়। বরং সবাই এক কথাই বলবে এক একজন এক এক কথা বললে তোমাদের উপর থেকে মানুষের আস্থা হারিয়ে যাবে। এ বিদেশীরা তোমাদেরকে মিথ্যাবাদী মনে করবে।” তখন বললোঃ “হে আবদে শামস্! আপনিই কোন একটি প্রস্তাব পেশ করুন।” সে বললোঃ “তোমরাই আগে বল, তাহলে আমি চিন্তা ভাবনা করার সুযোগ পাবো।” তারা তখন বললোঃ “আমাদের মতে সবাই তাকে ভবিষ্যদ্বক্তা বলবে।” সে বললোঃ “না, এটা প্রকৃত ঘটনার বিপরীত কথা।” সে বললোঃ “এটাও ভুল।” তারা বললোঃ “তা হলে কবি?” সে উত্তরে বললোঃ “সে তো কবিতা জানেই না।” তারা বললোঃ “তাকে আমরা যাদুকর বলবো কি?” সে উত্তর দিলোঃ না, সে যাদুকরও নয়।” তারা বললোঃ “তা হলে আমরা তাকে কি বলবো?” সে বললোঃ “জেনে রেখো যে, তোমরা তাকে যাই বল না কেন, দুনিয়াবাসী জেনে। নেবে যে, সবই ভুল। তার কথাগুলি মিষ্টি মাখানো। কাজেই আমাদের কোন কথাই টিকবে না। তবুও কিছু বলতেই হবে। তোমরা তাকে যাদুকরই বলবে।”
সবাই এতে একমত হয়ে গেল। এই আয়াতগুলিতে এরই আলোচনা করা হয়েছে। মহান আল্লাহর উক্তিঃ “তোমার প্রতিপালকের শপথ! আমি তাদের সকলকে প্রশ্ন করবই সেই বিষয়ে যা তারা করে। অর্থাৎ কালেমা লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ সম্পর্কে। হযরত আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) বলেনঃ “যে আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন উপাস্য নেই তাঁর শপথ! তোমাদের প্রত্যেকটি লোক কিয়ামতের দিন এককভাবে আল্লাহর সামনে হাজির হবে, যেমন প্রত্যেক ব্যক্তি এককভাবে চৌদ্দ তারিখের চাঁদ দেখে থাকে।” আল্লাহ তাআলা জিজ্ঞেস করবেনঃ “হে আদম সন্তান! আমার ব্যাপারে কিসে তোমাকে গর্বিত করে তুলেছিল? হে আদমের (আঃ) পুত্র! যা তুমি শিক্ষা করেছিলে তার থেকে কি আমল করেছিলেঃ হে আদম সন্তান! আমার রাসূলদেরকে তুমি কি জবাব দিয়েছিলে?” আবুল আলিয়া (রঃ) বলেন, প্রত্যেককে দুটি বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। প্রথম প্রশ্ন হবেঃ “তুমি কাকে মাবুদ বানিয়েছিলে”? দ্বিতীয় প্রশ্ন হবেঃ “তুমি রাসূলের (সঃ) আনুগত্য স্বীকার করেছিলে কি কর নাই”? ইবনু উইয়াইনা (রঃ) বলেন, আমল এবং মাল সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে।
হযরত মুআয ইবনু জাবাল (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “হে মুআয (রাঃ)! মানুষকে কিয়ামতের দিন তার সমস্ত আমল সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে। হে মুআয (রাঃ)! দেখো, যেন কিয়ামতের দিন এরূপ না হয় যে, তুমি আল্লাহর নিয়ামত কম খেয়ালকারী রয়ে যাও।”
এই আয়াতে তো রয়েছে যে, প্রত্যেককে তার আমল সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে। আর সূরায়ে আর-রাহমানে রয়েছেঃ لَّا یُسْــئَلُ عَنْ ذَنْۢبِهٖۤ اِنْسٌ وَّ لَا جَآنٌّ অর্থাৎ মানব এবং দানবকে তার গুনাহ্ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে না। (৫৫:৩৯) এই দুই আয়াতের মধ্যে হযরত ইবনু আব্বাসের (রাঃ) উক্তি অনুযায়ী সামঞ্জস্যের উপায় এই যে, “তুমি কি এই আমল করেছিলে? এ কথা জিজ্ঞেস করা হবে না। বরং জিজ্ঞেস করা হবেঃ “তুমি এই কাজ কেন করেছিলে?