৭৩-৭৫ নং আয়াতের তাফসীর:
(خَلِيْلًا....... وَإِنْ كَادُوْا)
শানে নুযূল:
ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, উমাইয়া বিন খালফ, আবু জাহাল বিন হিশাম এবং কুরাইশদের কিছু লোক রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এসে বলল: হে মুহাম্মাদ! তুমি আমাদের উপাস্যগুলোকে একটু হাত বুলিয়ে দাও, আমরা তোমার ধর্মে প্রবেশ করব। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট তাঁর সম্প্রদায়ের বিচ্ছিন্ন হওয়াটা কষ্টকর মনে হল, আর তিনি তাদের ইসলাম গ্রহণ করাটাকে সমর্থন করছিলেন। তখন আল্লাহ তা‘আলা এই আয়াতটি অবতীর্ণ করেন। (লুবাবুন নুকূল ফী আসবাবিন নুযূল)
উক্ত আয়াতগুলোতে মূলত আল্লাহ তা‘আলা তাঁর অনুগ্রহে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে কাফিরদের সকল চক্রান্ত থেকে হেফাযত রেখেছেন সে কথাই বর্ণনা করা হয়েছে। তারা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট বিভিন্ন সময় দাবী করত আর বলত, এটা এনে দিতে পারলে আমরা ইসলাম গ্রহণ করব। কখনো বলত, আমাদের মা‘বূদের এক বছর ইবাদত কর পরের বছর আমরা তোমার মা‘বূদের ইবাদত করব।
অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন: “যারা আমার সাক্ষাতের আশা পোষণ করে না তারা বলে, ‘অন্য এক কুরআন আন এটা ছাড়া, অথবা এটাকে বদলাও।’ বল: ‘নিজ হতে এটা বদলান আমার কাজ নয়। আমার প্রতি যা ওয়াহী হয়, আমি কেবল তারই অনুসরণ করি। আমি আমার প্রতিপালকের অবাধ্যতা করলে অবশ্যই আমি মহাদিবসের শাস্তির আশংকা করি।” (সূরা ইউনুস ১০:১৫)
অর্থাৎ যদি আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে দীনের উপর অটল না রাখতেন, তাহলে তিনি তো তাদের হিদায়াতের আশায় তাদের দিকে ঝুঁকেই পড়তেন। আর যদি তা হয়ে যেত তাহলে নাবীকে দুনিয়া ও আখিরাতে দ্বিগুণ শাস্তি পেতে হতো। সুতরাং অধিকাংশ মানুষের হিদায়াতের আশায় বা সমঝোতার লক্ষ্যে সত্যের সাথে মিথ্যাকে সংমিশ্রণ করা বা মিলমিশ করে চলার চিন্তাধারা সঠিক নয়। বরং সত্যের সাথে একজন থাকলেও তাকে নিয়েই চলতে হবে। এতেই সফলতা নিহিত।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. অসত্যের আহ্বানে সাড়া দেয়া যাবে না।
২. যার যত মর্যাদা বেশি, তার অপরাধের কারণে শাস্তিও তত বেশি হবে।
৩. সত্য-মিথ্যা সংমিশ্রণ করে সকলে মিলমিশ হয়ে চলার চিন্তাধারা ঠিক নয়, বরং সত্যের সাথে চলতে গিয়ে অন্যরা শত্র“ হলেও তাতেই কল্যাণ নিহিত রয়েছে।