وَيَسْـَٔلُوْنَكَ عَنْ ذِى الْقَرْنَيْنِۗ قُلْ سَاَتْلُوْا عَلَيْكُمْ مِّنْهُ ذِكْرًا ۗ ( الكهف: ٨٣ )
তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):
তোমাকে তারা যুলকারনাইন সম্পর্কে জিজ্ঞেস করছে। বল, ‘আমি তার বিষয় তোমাদের নিকট কিছু বর্ণনা করব।’
English Sahih:
And they ask you, [O Muhammad], about Dhul-Qarnayn. Say, "I will recite to you about him a report."
1 Tafsir Ahsanul Bayaan
আর তারা তোমাকে যুলকারনাইন সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করে; [১] তুমি বলে দাও, ‘আমি তোমাদের নিকট তার বিষয়ে বর্ণনা করব।’
[১] ইয়াহুদীদের কথামত মুশরিকরা যে তিনটি প্রশ্ন নবী (সাঃ)-কে করেছিল তার মধ্যে এটি তৃতীয় প্রশ্নের উত্তর। যুলক্বারনাইন এর শাব্দিক অর্থ হল দুই শিংবিশিষ্ট। আর তাঁর নামকরণের কারণঃ যেহেতু তাঁর মাথায় বাস্তবেই দুটি শিং ছিল। কিংবা কারণ এই যে, তিনি পৃথিবীর পূর্ব ও পশ্চিম প্রান্তে পৌঁছে সূর্যের (উদয়-অস্তের সময় তার) শিং বা কিরণ প্রত্যক্ষ করেছিলেন। কেউ কেউ বলেন, তাঁর মাথায় শিঙের মত চুলের দুটি ঝুঁটি ছিল। পূর্ববর্তী মুফাসসিরগণের মতানুসারে তিনি হলেন রোমের আলেকজান্ডার, যাঁর রাজত্ব ছিল পূর্ব-পশ্চিম বিস্তৃত। কিন্তু আধুনিক যুগের মুফাসসিরগণ অভিনব ঐতিহাসিক তত্তের আলোকেই তাঁদের সাথে একমত নন। বিশেষ করে মওলানা আবুল কালাম আজাদ যিনি যুলক্বারনাইনের স্বরূপ ও প্রকৃতত্ব উদ্ঘাটনের জন্য যে গবেষণা করেছেন তা প্রশংসাযোগ্য।
তার গবেষণার সারমর্ম হলঃ
(ক) যুলক্বারনাইন সম্বন্ধে কুরআন পরিষ্কার করে দিয়েছে যে, তিনি এমন এক বাদশাহ ছিলেন যাকে আল্লাহ প্রচুর পার্থিব উপকরণ ও উপাদান দান করেছিলেন। (খ) পূর্ব ও পশ্চিমের দেশসমূহকে জয় করে এমন এক পাহাড়ী রাস্তায় পৌছলেন যার অন্য দিকে য়্যা'জূজ-মা'জূজ জাতি বাস করে। (গ) সেখানে তিনি য়্যা'জূজ-মা'জুজের রাস্তা বন্ধ করার জন্য একটি মজবুত প্রাচীর নির্মাণ করেন। (ঘ) তিনি ন্যায়পরায়ণ, আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাসী সম্রাট ছিলেন। (ঙ) তিনি প্রবৃত্তিপূজারী ও ধন-সম্পদের লোভী ছিলেন না। মওলানা আজাদ বলেন, এই সমস্ত গুণের অধিকারী একমাত্র পারস্যের সেই সম্রাট যাকে ইউনানী (গ্রীস) ভাষায় সাইরাস, ইবরানী (হিব্রু) ভাষায় খুরাস এবং আরবী ভাষায় কাইখাসরু নামে অভিহিত করা হয়। তাঁর রাজত্বকাল ৫৩৯ খ্রিষ্টপূর্ব। মওলানা আরো বলেন, ১৮৩৮ খ্রিষ্টাব্দে সাইরাসের একটি মূর্তি পাওয়া গেছে, যাতে তাঁর দেহকে এমনভাবে দেখানো হয়েছে যে, তাঁর শরীরের দু দিকে ঈগলের মত দুটি ডানা এবং ভেড়ার মত মাথায় দুটি শিং রয়েছে। (বিস্তারিত দ্রষ্টব্যঃ তুরজুমানুল কুরআন ১ম খন্ড ৩৯৯-৪৩০পৃঃ) আর আল্লাহই ভালো জানেন।