مَا جَعَلَ اللّٰهُ لِرَجُلٍ مِّنْ قَلْبَيْنِ فِيْ جَوْفِهٖ ۚوَمَا جَعَلَ اَزْوَاجَكُمُ الّٰـِٕۤيْ تُظٰهِرُوْنَ مِنْهُنَّ اُمَّهٰتِكُمْ ۚوَمَا جَعَلَ اَدْعِيَاۤءَكُمْ اَبْنَاۤءَكُمْۗ ذٰلِكُمْ قَوْلُكُمْ بِاَفْوَاهِكُمْ ۗوَاللّٰهُ يَقُوْلُ الْحَقَّ وَهُوَ يَهْدِى السَّبِيْلَ ( الأحزاب: ٤ )
Maa ja'alal laahu lirajulim min qalbaini fee jawfih; wa maa ja'ala azwaajakumul laaa'ee tuzaahiroona minhunna ummahaatikum; wa maa ja'ala ad'iyaaa'akum abnaaa'akum; zaalikum qawlukum bi afwaa hikum wallaahu yaqoolul haqqa wa Huwa yahdis sabeel (al-ʾAḥzāb ৩৩:৪)
English Sahih:
Allah has not made for a man two hearts in his interior. And He has not made your wives whom you declare unlawful your mothers. And He has not made your claimed [i.e., adopted] sons your [true] sons. That is [merely] your saying by your mouths, but Allah says the truth, and He guides to the [right] way. (Al-Ahzab [33] : 4)
তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):
আল্লাহ কোন মানুষের বুকে দু’টি অন্তর সৃষ্টি করেননি। তোমাদের স্ত্রীদের মধ্যে যাদের সঙ্গে তোমরা জিহার কর, তিনি তাদেরকে তোমাদের জননী করেননি, আর তিনি তোমাদের পোষ্য পুত্রদেরকে তোমাদের পুত্র করেননি, এগুলো তোমাদের মুখের বুলি, আল্লাহই বলেন সত্য কথা, আর তিনিই দেখান (সঠিক) পথ। (আল আহযাব [৩৩] : ৪)
1 Tafsir Ahsanul Bayaan
আল্লাহ কোন মানুষের অভ্যন্তরে দু’টি হৃদয় সৃষ্টি করেননি;[১] তোমাদের স্ত্রীগণ যাদের সাথে তোমরা ‘যিহার’ করেছ তাদেরকে তোমাদের মা করেননি[২] এবং পোষ্যপুত্র -- যাদেরকে তোমরা পুত্র বল, আল্লাহ তাদেরকে তোমাদের পুত্র করেননি।[৩] এগুলি তোমাদের মুখের কথা।[৪] আল্লাহই সত্য কথা বলেন[৫] এবং তিনিই পথনির্দেশ করেন।
[১] কোন কোন বর্ণনায় পাওয়া যায় যে, একজন মুনাফিক দাবী করত যে, তার দু'টি অন্তর আছে। একটি মুসলিমদের সাথে ও অপরটি কুফর ও কাফেরেদের সাথে। (আহমাদ ১২৬৭) উক্ত আয়াত তার কথা খন্ডন করার জন্যই অবতীর্ণ হয়েছে। উদ্দেশ্য এই যে, একই অন্তরে আল্লাহর মহববত ও তাঁর শত্রুর আনুগত্য একত্রিত হওয়া অসম্ভব। কেউ কেউ বলেন যে, মক্কার মুশরিকদের মধ্যে জামীল বিন মা'মার ফিহরী নামক এক ব্যক্তি ছিল, সে বড় হুঁশিয়ার, চতুর ও ধোঁকাবাজ ছিল। তার দাবী ছিল যে, আমার দু'টি অন্তর আছে যার দ্বারা আমি চিন্তা ভাবনা করি ও বুঝি। আর মুহাম্মাদ (সাঃ)-এর অন্তর একটি। এই আয়াত তারই রদ স্বরূপ অবতীর্ণ হয়েছে। (আইসারুত তাফাসীর) পক্ষান্তরে কিছু তফসীরবিদগণ বলেন যে, সামনে যে দুটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে এটা তারই ভূমিকা। অর্থাৎ, যেরূপ এক ব্যক্তির দুই অন্তর হয় না, অনুরূপ যদি কোন ব্যক্তি নিজ স্ত্রীর সাথে 'যিহার' করে ফেলে; অর্থাৎ বলে ফেলে যে, 'তোমার পিঠ আমার জন্য আমার মায়ের পিঠের মত' তাহলে এ কথা বলাতে তার স্ত্রী তার মা হয়ে যাবে না। কারণ একজনের দুই মা হয় না। অনুরূপ কোন ব্যক্তি কাউকে পোষ্যপুত্র বানিয়ে নিলে সে তার প্রকৃত পুত্র হয়ে যায় না। বরং সে যার পুত্র তারই থাকে, তার দুই বাপ হতে পারে না। (ইবনে কাসীর)
[২] একে 'যিহার' বলা হয়। এর বিস্তারিত বর্ণনা সূরা মুজাদালাহ ৫৮;২-৪ নং আয়াতে আসবে।
[৩] এর বিস্তারিত বর্ণনা এই সূরাতেই একটু পরে আসবে ـ أَدْعِيَاءُ دَعِيٌ -এর বহুবচন যার অর্থ পালিত সন্তান, পোষ্যপুত্র, পাতানো ছেলে বা মৌখিক সূত্রে বেটা।
[৪] অর্থাৎ, মুখে কাউকে মা বলে সম্বোধন করলে সে প্রকৃত মা হয়ে যাবে না এবং কাউকে বেটা বললে সে আপন বেটা হয়ে যাবে না। অর্থাৎ তাদের উপর মা ও বেটা সম্পর্কিত সংশ্লিষ্ট শরয়ী বিধান প্রযোজ্য হবে না।
[৫] সুতরাং তাঁরই অনুসরণ কর এবং যিহারকৃত স্ত্রীকে মা এবং পোষ্যপুত্রকে আপন পুত্র বলো না। প্রকাশ থাকে যে, কোন স্নেহভাজনকে আদর করে 'বেটা' বলা এবং পোষ্যপুত্রকে আপন পুত্র মনে করে 'বেটা' বলা একই পর্যায়ের নয়। প্রথমটি বৈধ। এখানে উদ্দেশ্য দ্বিতীয় বিষয়টিকে অবৈধ ঘোষণা করা।