وَقَالُوْٓا ءَاٰلِهَتُنَا خَيْرٌ اَمْ هُوَ ۗمَا ضَرَبُوْهُ لَكَ اِلَّا جَدَلًا ۗبَلْ هُمْ قَوْمٌ خَصِمُوْنَ ( الزخرف: ٥٨ )
তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):
এবং বলে আমাদের উপাস্যরা উত্তম না ‘ঈসা? (কারণ খৃস্টানরা ‘ঈসাকে উপাস্য বানিয়েছে আর আমরা মক্কাবাসীরা উপাস্য বানিয়েছি অন্যদেরকে)। তারা শুধু বিতর্ক সৃষ্টির উদ্দেশ্যেই তোমার সামনে এ দৃষ্টান্ত পেশ করে। আসলে তারা হল এক ঝগড়াটে জাতি।
English Sahih:
And they said, "Are our gods better, or is he?" They did not present it [i.e., the comparison] except for [mere] argument. But, [in fact], they are a people prone to dispute.
1 Tafsir Ahsanul Bayaan
এবং বলে, ‘আমাদের দেবতাগুলি শ্রেষ্ঠ, না ঈসা?’ এরা কেবল বিতর্কের উদ্দেশ্যেই তোমাকে এ কথা বলে। বস্তুতঃ এরা তো এক বিতর্ককারী সম্প্রদায়। [১]
[১] পৌত্তলিকতা ও শিরকের খন্ডন এবং মিথ্যা উপাস্যগুলোর অসহায়তার কথা পষ্কিারভাবে তুলে ধরার জন্য মক্কার মুশরিকদেরকে বলা হত যে, তোমাদের সাথে তোমাদের উপাস্যগুলোও জাহান্নামে প্রবেশ করবে। আর লক্ষ্য হত, পাথরের সেই মূর্তিগুলো, যার তারা পূজা করত। এ থেকে লক্ষ্য কিন্তু সেই সৎলোক (নবী-অলী)গণ নন, যাঁরা তাঁদের জীবদ্দশায় মানুষদেরকে তাওহীদের দাওয়াত দিয়েছেন। অতঃপর তাঁদের মৃত্যুর পর ভক্তরা তাঁদেরকেও উপাস্য বানিয়ে নিয়েছে। তাঁদের ব্যাপারে কুরআন কারীমে এ কথা পরিষ্কার করে দেওয়া হয়েছে যে, তাঁরা জাহান্নাম থেকে দূরে থাকবে। {إِنَّ الَّذِيْنَ سَبَقَتْ لَهُمْ مِّنَّا الْحُسْنَى اُولَئِكَ عَنْهَا مُبْعَدُوْنَ} (الأنبياء; ১০১) কারণ, এতে তাঁদের কোন দোষ নেই। আর এই জন্যই কুরআন এই মূর্তিগুলোর ব্যাপারে مَا শব্দ ব্যবহার করেছে; যা জ্ঞানহীন প্রাণী বা বস্তুর জন্য ব্যবহার হয়। সুতরাং এ থেকে আম্বিয়া ও সৎলোকেরা বের হয়ে যান; যাঁদেরকে লোকেরা নিজে থেকেই উপাস্য বানিয়ে রেখেছিল। অর্থাৎ, এটা হতে পারে যে, অন্যান্য মূর্তিদের সাথে তাঁদের আকৃতিতে বানানো মূর্তিগুলোকেও আল্লাহ জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন, কিন্তু এ লোকগুলো তো অবশ্যই জাহান্নাম থেকে দূরে থাকবেন। মুশরিকরা নবী (সাঃ)-এর পবিত্র জবানে ঈসা (আঃ)-এর সুনাম শুনে এই অসার তর্ক-বিতর্কে লিপ্ত হত যে, যদি ঈসা প্রশংসার যোগ্য হন অথচ খ্রিষ্টানরা তাঁকে উপাস্য বানিয়েছে, তবে আবার আমাদের উপাস্যগুলো নিন্দিত হল কিভাবে? এরাও কি উত্তম নয়? কিংবা আমাদের উপাস্যগুলো যদি জাহান্নামে যায়, তাহলে ঈসা ও উযায়েরও জাহান্নামে যাবেন। মহান আল্লাহ এখানে বললেন, আনন্দে তাদের শোরগোল করা তাদের বিতর্ক বৈ কিছুই নয়। তাছাড়া তর্কের অর্থই এই হয় যে, বিতর্ককারীর কাছে কোন দলীল থাকে না। কিন্তু নিজের মত বহাল রাখার জন্য অযথা কথা কাটাকাটি করে।