তারা রাত্রির সামান্য অংশই নিদ্রায় অতিবাহিত করত। [১]
[১] هُجُوْعٌ এর অর্থ রাতে ঘুমানো। مَا يَهْجَعُوْنَ এ مَا তাকীদ স্বরূপ ব্যবহার হয়েছে। অর্থাৎ, তারা রাতে কম ঘুমাত। অর্থ হল, সারা রাত ঘুমিয়ে এবং আমোদ-প্রমোদে কাটাত না। বরং রাতের কিছু অংশ আল্লাহর স্মরণ ও তাঁর সমীপে অনুনয়-বিনয়ের মাধ্যমে অতিবাহিত করত। যেমন হাদীসেও 'কিয়ামুল লাইল' তথা রাত জেগে ইবাদত করার তাকীদ এসেছে। উদাহরণ স্বরূপ একটি হাদীসে (নবী করীম (সাঃ) ) বলেছেন, "লোকদেরকে খাদ্য দান কর, আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখ, সালাম প্রচার কর এবং রাতে উঠে নামায পড়; যখন মানুষ ঘুমিয়ে থাকে, তাহলে তোমরা নির্বিঘ্নে জান্নাতে প্রবেশ লাভ করবে।" (মুসনাদ আহমাদ ৫/৪৫১)
2 Tafsir Abu Bakr Zakaria
তারা রাতের সামান্য অংশই অতিবাহিত করত নিদ্রায় [১],
[১] يَهْجَعُوْنَ শব্দটি هجوع থেকে উদ্ভূত। এর অর্থ রাত্রিতে নিদ্রা যাওয়া। এখানে মুমিন মুত্তাকীদের এই গুণ বৰ্ণনা করা হয়েছে যে, তারা আল্লাহ তা'আলার ইবাদতে রাত্রি অতিবাহিত করে, কম নিদ্রা যায় এবং অধিক জাগ্রত থাকে। যারা তাদের রাতসমূহ পাপ-পঙ্কিলতা ও অশ্লীল কাজ-কর্মে ডুবে থেকে কাটায় এবং তারপরও মাগফিরাত প্রার্থনা করার চিন্তাটুকু পর্যন্ত তাদের মনে জাগে না। এরা তাদের শ্রেণীভুক্ত ছিল না। কোন কোন মুফাসসির বলেন; এখানে ما শব্দটি “না’ বোধক অর্থ দেয় এবং আয়াতের অর্থ এই যে, তারা রাত্রির অল্প অংশে নিদ্রা যায় না এবং সেই অল্প অংশে সালাত, দো'আ ইত্যাদি ইবাদতে অতিবাহিত করে। এই অর্থের দিক দিয়ে যে ব্যক্তি রাত্রির শুরুতে অথবা শেষে অথবা মধ্যস্থলে যে কোন অংশে ইবাদত করে নেয় সে এই আয়াতের অন্তর্ভুক্ত। এ কারণেই আনাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, “যে ব্যক্তি মাগরিব ও এশার মধ্যবর্তী সময়ে সালাত পড়ে সে এই আয়াতের অন্তর্ভুক্ত ৷” [আবু দাউদ; ১৩২২] ইমাম আবু জাফর বাকের রাহেমাহুল্লাহ বলেনঃ যে ব্যক্তি এশার সালাতের পূর্বে নিদ্রা যায় না, আয়াতে তাকেও বোঝানো হয়েছে। [ইবনে কাসীর]