আল ওয়াক্বিয়া আয়াত ৭৪
فَسَبِّحْ بِاسْمِ رَبِّكَ الْعَظِيْمِ ࣖ ( الواقعة: ٧٤ )
Fasabbih bismi Rabbikal 'azeem (al-Wāqiʿah ৫৬:৭৪)
English Sahih:
So exalt the name of your Lord, the Most Great. (Al-Waqi'ah [56] : 74)
তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):
কাজেই (হে নবী!) তুমি তোমার মহান প্রতিপালকের মহিমা ও গৌরব ঘোষণা কর। (আল ওয়াক্বিয়া [৫৬] : ৭৪)
1 Tafsir Ahsanul Bayaan
সুতরাং তুমি তোমার মহান প্রতিপালকের নামের পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর।
2 Tafsir Abu Bakr Zakaria
কাজেই আপনি আপনার মহান রবের নামের পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করুন [১]।
[১] পূর্ববর্তী যে সমস্ত নেয়ামতের কথা উল্লেখ হলো এবং এটা স্পষ্ট হলো যে, এগুলো একমাত্র মহান আল্লাহই সম্পন্ন করে থাকেন। এর অবশ্যম্ভাবী ও যুক্তিভিত্তিক পরিণতি এই যে, মানুষ আল্লাহ তা'আলার অপার শক্তি ও তৌহীদে বিশ্বাস স্থাপন করবে এবং মহান পালনকর্তার নামের পবিত্ৰতা ঘোষণা করবে। সুতরাং হে নবী! আপনি সে পবিত্র নাম নিয়ে ঘোষণা করে দিন যে, কাফের ও মুশরিকরা যেসব দোষত্রুটি, অপূর্ণতা ও দুর্বলতা তাঁর ওপর আরোপ করে তা থেকে পবিত্র এবং কুফার ও শির্কমূলক সমস্ত আকীদা ও আখেরাত অস্বীকারকারীদের প্রতিটি যুক্তি তর্কে যা প্রচ্ছন্ন আছে তা থেকেও মহান আল্লাহ সম্পূর্ণরূপে পবিত্র। [দেখুন, কুরতুবী; ইবন কাসীর]
3 Tafsir Bayaan Foundation
অতএব তোমার মহান রবের নামে তাসবীহ পাঠ কর।
4 Muhiuddin Khan
অতএব, আপনি আপনার মহান পালনকর্তার নামে পবিত্রতা ঘোষণা করুন।
5 Zohurul Hoque
অতএব তোমার সর্বশক্তিমান প্রভুর নামের জপতপ করো।
6 Mufti Taqi Usmani
সুতরাং (হে রাসূল!) তুমি তোমার মহান প্রতিপালকের নাম নিয়ে তার তাসবীহ পাঠ কর।
7 Mujibur Rahman
সুতরাং তুমি তোমার মহান রবের নামের পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর।
8 Tafsir Fathul Mazid
৬৩-৭৪ নম্বর আয়াতের তাফসীর :
এ আয়াতগুলোতে আল্লাহ তা‘আলা তাঁর কয়েকটি নেয়ামতকে চিন্তার দৃষ্টিতে অবলোকন করার জন্য মানব জাতিকে দিকনির্দেশনা প্রদান করছেন। এগুলোতে মানুষের কোন হাত আছে নাকি একমাত্র আল্লাহ তা‘আলাই করে থাকেন। যেমন যে বীজ কৃষক জমিনে বপন করে তা থেকে এমনিই ফসল হয়ে যায়? কৃষক শুধু ক্ষেতে বীজ বপনের উপযোগী করে বীজ বপন করে সে বীজ বিদীর্ণ করে, মাটি ভেদ করে অঙ্কুরিত করে, ফসল ফলান কে? তিনি হলেন একমাত্র আল্লাহ তা‘আলা। আল্লাহ তা‘আলা ইচ্ছা করলে বীজের অঙ্কুরোদ্গম ক্ষমতা নষ্ট করে দিতে পারেন, আবার ইচ্ছা করলে ফসল সবুজ শ্যামল করে বড় করে তোলার পর পাকার উপক্রম হলেও শুকিয়ে খড়কুটোয় পরিণত করে দিতে পারেন। কিন্তু আল্লাহ তা‘আলা বান্দার প্রতি অনুগ্রহশীল। حُطَامًا অর্থ খড়কুটো, আগাছা।
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন : তোমাদের কেউ যেন না বলে ‘যারা’আতু’ বা আমি রোপণ করেছি বরং বলবে ‘হারাসতু’ বা চাষ করেছি। কেননা আল্লাহ তা‘আলা হলেন ‘যারে’ বা রোপণকারী। (সিলসিলা সহীহাহ হা. ২৮০১)
তারপর আল্লাহ তা‘আলা আকাশ হতে যে সুপেয় পানি বর্ষণ করেন তা নিয়ে চিন্তা করতে বলছেন, তিনি ইচ্ছা করলে তা লবণাক্ত করে দিতে পারেন। الْمُزْنِ অর্থ মেঘমালা। أُجَاجًا অর্থ লবণাক্ত।
অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা আগুন সম্পর্কে চিন্তা করার কথা বলছেন, যে আগুন মানুষ জ্বালায়। আগুন সৃষ্টি হয় যে বৃক্ষ থেকে তা তো আল্লাহ তা‘আলাই সৃষ্টি করেছেন। বলা হয় আরবে দুটি গাছ আছে মার্খ ও আফার। এ দু’টি গাছের ডাল নিয়ে যদি পরস্পরের সাথে ঘষা দেয়া হয় তবে তা থেকে আগুনের ফুলকি বের হয়।
(نَحْنُ جَعَلْنٰهَا تَذْكِرَةً)
অর্থাৎ দুনিয়ার আগুনকে আমি জাহান্নামের আগুনের স্মারক করে দিয়েছি। যেমন হাদীসে এসেছে নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন : আদম সন্তান যে আগুন জালিয়ে থাকে তা জাহান্নামের আগুনের সত্তর ভাগের এক ভাগ। (সহীহ বুখারী হা. ৩২৬৫, সহীহ মুসলিম হা. ২৮৪৩) এবং আগুন মুসাফিরদের উপকারী করে দিয়েছেন। আগুন মুকিমদের জন্যও তো উপকারী, তাহলে এখানে বিশেষভাবে মুসাফিরের কথা উল্লেখ করার কারণ কী? উত্তর : সাধারণ অবস্থায় মুসাফিরদের আগুন বেশি কাজে লাগে এবং জরুরী। আর এটাও হতে পারে দুনিয়ার জীবনটাই তো সফরের জীবন। জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত মানুষের মুসাফির হিসেবেই বসবাস। তাই আগুন দুনিয়া নামক মুসাফির জীবনের জন্য উপকারী করেছেন আর পরকালের আগুনের স্মারক করেছেন। অতত্রব যে মহান আল্লাহ আমাদেরকে ফসল পানি ও আগুনসহ অসংখ্য নেয়ামত দান করেছেন সে মহান প্রতিপালকের নামে তাসবীহ পাঠ, শুকরিয়া আদায় করা উচিত।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয় :
১. আল্লাহ তা‘আলার সৃষ্টি নিয়ে গবেষণা করলে আল্লাহ তা‘আলাকে চেনা যায়।
২. আল্লাহ তা‘আলার নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় করা দরকার।
৩. আল্লাহ তা‘আলা যা ইচ্ছা তাই করতে পারেন।
9 Fozlur Rahman
অতএব, তুমি তোমার মহান প্রভুর নামের পবিত্রতা ও মহিমা বর্ণনা কর।
10 Mokhtasar Bangla
৭৪. তাই হে রাসূল! আপনি নিজ মহান প্রতিপালকের জন্য বেমানান এমন বস্তু থেকে তাঁর পবিত্রতা ঘোষণা করুন।
11 Tafsir Ibn Kathir
৬৩-৭৪ নং আয়াতের তাফসীর:
মহান আল্লাহ বলেনঃ তোমরা জমি চাষাবাদ করে থাকো, জমি চাষ করে বীজ বপন কর। আচ্ছা, এখন বলতো, তোমরা যে বীজ বপন করে থাকো তা অংকুরিত করার ক্ষমতা কি তোমাদের, না আমার? না, না, বরং ওকে অংকুরিত করা, তাতে ফুল-ফল দেয়ার কাজ একমাত্র আমার।
হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “তোমরা زَرَعْتُ বলো না, বরং حَرَثْتُ বলো।” অর্থাৎ তোমরা বললঃ “আমি বীজ বপন করেছি,' ‘আমি অংকুরিত করেছি' একথা বলো না। হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) বলেন, আমি এ হাদীসটি শুনবার পর বলি, তোমরা কি আল্লাহ তাআলার নিম্নের উক্তি শুননিঃ “তোমরা যে বীজ বপন কর সে সম্পর্কে চিন্তা করেছো কি? তোমরা কি বীজ অংকুরিত কর, না আমি অংকুরিত করি?” (এ হাদীসটি ইমাম ইবনে জারীর (রঃ) বর্ণনা করেছেন)
ইমাম হাজর মাদরী (রঃ) এই আয়াত বা অনুরূপ আয়াত পাঠের সময় বলতেনঃ بَلْ اَنْتَ يَا رَبِّ অর্থাৎ “হে আমার প্রতিপালক! বরং আপনি (অংকুরিত করেন)।” (এটা ইমাম ইবনে আবি হাতিম (রঃ) বর্ণনা করেছেন)
এরপর আল্লাহ তাআলা বলেনঃ আমি ইচ্ছা করলে ওকে খড়-কুটায় পরিণত করতে পারি, তখন হতবুদ্ধি হয়ে পড়বে তোমরা। অর্থাৎ অংকুরিত করার পরেও আমার মেহেরবানী রয়েছে যে, আমি ওকে বড় করি ও পাকিয়ে তুলি। কিন্তু আমার এ ক্ষমতা আছে যে, আমি ইচ্ছা করলে ওকে শুকিয়ে দিয়ে খড়-কুটায় পরিণত করতে পারি। এভাবে ওকে বিনষ্ট ও নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারি। তখন তোমরা বলতে শুরু করবেঃ আমাদের তো সর্বনাশ হয়েছে। আমাদের তো আসলটাও চলে গেল। লাভ তো দূরের কথা, আমাদের মূলধনও মারা গেল। তখন তোমরা বিভিন্ন কথা মুখ দিয়ে বের করে থাকো। কখনো কখনো বলে থাকোঃ হায়! যদি আমরা এবার বীজই বপন না করতাম তবে কতই না ভাল হতো! যদি এরূপ করতাম বা ঐরূপ করতাম! ভাবার্থ এও হতে পারেঃ ঐ সময় তোমরা নিজেদের পাপের উপর লজ্জিত হয়ে থাকো।
تَفَكُّه শব্দটির দু’টি অর্থই হতে পারে। একটি হলো লাভ বা উপকার এবং অপরটি দুঃখ বা চিন্তা مُزْن বলা হয় মেঘকে।
মহান আল্লাহ পানির ন্যায় বড় নিয়ামতের কথা স্মরণ করিয়ে বলেনঃ দেখো, এটা বর্ষণ করাও আমার ক্ষমতাভুক্ত। কেউ কি মেঘ হতে পানি বর্ষাবার ক্ষমতা রাখে? যখন এ পানি বর্ষিত হয় তখন ওকে মিষ্ট ও তিক্ত করার ক্ষমতা আমার আছে। এই সুমিষ্ট পানি বসে বসেই তোমরা পেয়ে থাকো। এই পানিতে তোমরা গোসল কর, থালা-বাসন ধৌত কর, কাপড় চোপড় পরিষ্কার কর, জমিতে, বাগানে সেচন করে থাকো এবং জীব-জন্তুকে পান করিয়ে থাকে। তবে তোমরা আমার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবে না ওটাই কি তোমাদের জন্যে উচিত? রাসূলুল্লাহ (সঃ) পানি পান করার পর বলতেনঃ
اَلْحَمْدُ لِلّٰهِ الَّذِىْ سَقَانَا عَذْبًا فُرَاتًا بِرَحْمَتِهٖ وَلَمْ يَجْعَلْهُ مِلْحًا اُجَاجًا بِذُنُوْبِنَا
অর্থাৎ “ঐ আল্লাহর জন্যে সমস্ত প্রশংসা যিনি স্বীয় রহমতের গুণে আমাদেরকে সুমিষ্ট ও উত্তম পানি পান করিয়েছেন এবং আমাদের পাপের কারণে এই পানিকে লবণাক্ত এবং তিত করেননি।”
আরবে মুরখ ও ইফার নামক দুটি গাছ জন্মে যেগুলোর সবুজ শাখাগুলো পরস্পর ঘর্ষিত হলে আগুন বের হয়ে থাকে। এই নিয়ামতের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেনঃ এই যে আগুন, যদ্বারা তোমরা রান্না-বান্না করে থাকো এবং আরো বহুবিধ উপকার লাভ করে থাকো, বলতো, এর মূল অর্থাৎ এই গাছ সৃষ্টিকারী তোমরা, না আমি? এই আগুনকে আমি উপদেশ স্বরূপ বানিয়েছি। অর্থাৎ এই আগুন দেখে তোমরা জাহান্নামের আগুনকে স্মরণ করবে এবং তা হতে রক্ষা পাওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
হযরত কাতাদা (রঃ) বর্ণিত একটি মুরসাল হাদীসে রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “তোমাদের দুনিয়ার এই আগুন জাহান্নামের আগুনের সত্তর ভাগের এক ভাগ।” সাহাবীগণ (রাঃ) একথা শুনে বললেনঃ “হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! এটাই তো (জ্বালিয়ে দেয়ার জন্যে) যথেষ্ট।” তখন রাসূলুল্লাহ (সঃ) বললেনঃ “হ্যাঁ, এ আগুনকেও দু’বার পানি দ্বারা ধৌত করা হয়েছে। এখন এটা এই যোগ্যতা রেখেছে যে, তোমরা এর দ্বারা উপকার লাভ করতে পার এবং ওর নিকটে যেতে পার।” (এ হাদীসটি মুরসাল রূপে বর্ণিত হয়েছে এবং এটা সম্পূর্ণরূপে বিশুদ্ধ হাদীস)
مُقْوِيْن দ্বারা মুসাফিরকে বুঝানো হয়েছে। কারো কারো মতে জঙ্গলে বসবাসকারীদের مُقْوِيْن বলে। আবার কেউ কেউ বলেন যে, প্রত্যেক ক্ষুধার্তকেই مُقْوِيْن বলা হয়। মোটকথা, এর দ্বারা প্রত্যেক ঐ ব্যক্তি উদ্দেশ্য যারই আগুনের প্রয়োজন হয়ে থাকে এবং আগুন দ্বারা উপকার লাভের মুখাপেক্ষী। প্রত্যেক আমীর, ফকীর, শহুরে, গ্রাম্য, মুসাফির এবং মুকীম সবারই আগুনের প্রয়োজন হয়ে থাকে। রান্না-বান্নার কাজে, তাপ গ্রহণ করার কাজে, আগুন জ্বালাবার কাজে ইত্যাদিতে আগুনের একান্ত দরকার। এটা আল্লাহ তা'আলার বড়ই মেহেরবানী যে, তিনি গাছের মধ্যে এবং লোহার মধ্যে আগুনের ব্যবস্থা রেখেছেন, যাতে মুসাফির ব্যক্তি ওকে সঙ্গে নিয়ে যেতে পারে এবং প্রয়োজনের সময় কাজে লাগাতে পারে।
সুনানে আবু দাউদ প্রভৃতিতে হাদীস রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “তিনটি জিনিসের মধ্যে মুসলমানদের সমান অংশ রয়েছে। তাহলে আগুন, ঘাস ও পানি।” সুনানে ইবনে মাজাহ্নতে রয়েছে যে, এ তিনটি জিনিস হতে বাধা দেয়ার কারো অধিকার নেই। একটি রিওয়াইতে মূল্যেরও উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু এর সনদ দুর্বল। এসব ব্যাপারে আল্লাহ তাআলাই সবচেয়ে ভাল জানেন।
এরপর মহান আল্লাহ বলেনঃ যিনি এই বিরাট ক্ষমতার অধিকারী তাঁর সদা-সর্বদা পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করা তোমাদের একান্ত কর্তব্য। যে আল্লাহ আগুন জ্বালাবার মত জিনিস তোমাদের উপকারার্থে সৃষ্টি করেছেন, যিনি পানিকে লবণাক্ত ও তিক্ত করেননি, যাতে তোমরা পিপাসায় কষ্ট না পাও, এই পানি তিনি করেছেন পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ও প্রচুর পরিমাণ। তোমরা দুনিয়ায় এসব নিয়ামত ভোগ করতে থাকো এবং মহান প্রতিপালকের কৃতজ্ঞতা প্রকাশে মোটেই কার্পণ্য করো না। তাহলে আখিরাতেও তোমরা চিরস্থায়ী সুখ লাভ করবে। দুনিয়ায় আল্লাহ তা'আলা এই আগুন তোমাদের উপকারের জন্যে বানিয়েছেন এবং সাথে সাথে এজন্যেও যে, যাতে তোমরা এর দ্বারা আখিরাতের আগুন সম্পর্কে অনুভূতি লাভ করতে পার এবং তা হতে বাঁচার জন্যে আল্লাহ তাআলার বাধ্য ও অনুগত হয়ে যাও।