Skip to main content

وَالَّذِيْنَ تَبَوَّءُو الدَّارَ وَالْاِيْمَانَ مِنْ قَبْلِهِمْ يُحِبُّوْنَ مَنْ هَاجَرَ اِلَيْهِمْ وَلَا يَجِدُوْنَ فِيْ صُدُوْرِهِمْ حَاجَةً مِّمَّآ اُوْتُوْا وَيُؤْثِرُوْنَ عَلٰٓى اَنْفُسِهِمْ وَلَوْ كَانَ بِهِمْ خَصَاصَةٌ ۗوَمَنْ يُّوْقَ شُحَّ نَفْسِهٖ فَاُولٰۤىِٕكَ هُمُ الْمُفْلِحُوْنَۚ   ( الحشر: ٩ )

wa-alladhīna
وَٱلَّذِينَ
And those who
এবং যারা
tabawwaū
تَبَوَّءُو
settled
বসবাস করেছে
l-dāra
ٱلدَّارَ
(in) the home
(এই) নগরীতে
wal-īmāna
وَٱلْإِيمَٰنَ
and (accepted) faith
এবং ঈমান (এনেছে)
min
مِن
from
মধ্য হতে
qablihim
قَبْلِهِمْ
before them
তাদের পূর্বে
yuḥibbūna
يُحِبُّونَ
love
তারা ভালোবাসে
man
مَنْ
(those) who
(তাদেরকে) যারা
hājara
هَاجَرَ
emigrated
হিজরত করেছে
ilayhim
إِلَيْهِمْ
to them
তাদের দিকে
walā
وَلَا
and not
এবং না
yajidūna
يَجِدُونَ
they find
তারাপায়
فِى
in
মধ্যে
ṣudūrihim
صُدُورِهِمْ
their breasts
তাদের অন্তরগুলোর
ḥājatan
حَاجَةً
any want
প্রয়োজনের (অনুভূতি)
mimmā
مِّمَّآ
of what
(যা) তা থেকে
ūtū
أُوتُوا۟
they were given
তাদের দেয়া হয়
wayu'thirūna
وَيُؤْثِرُونَ
but prefer
এবং তারা প্রাধান্য দেয়
ʿalā
عَلَىٰٓ
over
উপর
anfusihim
أَنفُسِهِمْ
themselves
তাদের নিজেদের
walaw
وَلَوْ
even though
এবং যদিও
kāna
كَانَ
was
আছে
bihim
بِهِمْ
with them
তাদের সাথে
khaṣāṣatun
خَصَاصَةٌۚ
poverty
অভাব অনটন
waman
وَمَن
And whoever
এবং যে
yūqa
يُوقَ
is saved
রক্ষা করবে
shuḥḥa
شُحَّ
(from) stinginess
কৃপণতা (থেকে)
nafsihi
نَفْسِهِۦ
(of) his soul
তার নিজেকে
fa-ulāika
فَأُو۟لَٰٓئِكَ
then those
অতঃপর ঐসব লোক
humu
هُمُ
[they]
তারাই
l-muf'liḥūna
ٱلْمُفْلِحُونَ
(are) the successful ones
সফলকাম

Wallazeena tabawwa'ud daara wal eemaana min qablihim yuhibboona man haajara ilaihim wa laa yajidoona fee sudoorihim haajatam mimmaa ootoo wa yu'siroona 'alaa anfusihim wa law kaana bihim khasaasah; wa many yooqa shuhha nafsihee fa ulaaa'ika humul muflihoon (al-Ḥašr ৫৯:৯)

English Sahih:

And [also for] those who were settled in the Home [i.e.,al-Madinah] and [adopted] the faith before them. They love those who emigrated to them and find not any want in their breasts of what they [i.e., the emigrants] were given but give [them] preference over themselves, even though they are in privation. And whoever is protected from the stinginess of his soul – it is those who will be the successful. (Al-Hashr [59] : 9)

তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):

(আর এ সম্পদ তাদের জন্যও) যারা মুহাজিরদের আসার আগে থেকেই (মাদীনাহ) নগরীর বাসিন্দা ছিল আর ঈমান গ্রহণ করেছে। তারা তাদেরকে ভালবাসে যারা তাদের কাছে হিজরাত করে এসেছে। মুহাজিরদেরকে যা দেয়া হয়েছে তা পাওয়ার জন্য তারা নিজেদের অন্তরে কোন কামনা রাখে না, আর তাদেরকে (অর্থাৎ মুহাজিরদেরকে) নিজেদের উপর অগ্রাধিকার দেয়- নিজেরা যতই অভাবগ্রস্ত হোক না কেন। বস্তুত; যাদেরকে হৃদয়ের সংকীর্ণতা থেকে রক্ষা করা হয়েছে তারাই সফলকাম। (আল হাশর [৫৯] : ৯)

1 Tafsir Ahsanul Bayaan

আর তাদের (মুহাজিরদের আগমনের) পূর্বে যারা এ নগরী (মদীনা)তে বসবাস করেছে[১] ও বিশ্বাস স্থাপন করেছে, তারা মুহাজিরদেরকে ভালবাসে এবং মুহাজিরদেরকে যা দেওয়া হয়েছে, তার জন্য তারা অন্তরে ঈর্ষা পোষণ করে না,[২] বরং নিজেরা অভাবগ্রস্ত হলেও তারা (তাদেরকে) নিজেদের উপর প্রাধান্য দেয়।[৩] আর যাদেরকে নিজ আত্মার কার্পণ্য হতে মুক্ত রাখা হয়েছে, তারাই সফলকাম। [৪]

[১] এ থেকে আনসারী সাহাবাদেরকে বুঝানো হয়েছে। যাঁরা মুহাজির সাহাবাদের মদীনা আসার পূর্ব থেকেই মদীনার বাসিন্দা ছিলেন এবং মুহাজিরদের হিজরত করে মদীনা আসার পূর্বেই তাঁদের অন্তরে ঈমান প্রতিষ্ঠা লাভ করেছিল। তবে এর অর্থ এই নয় যে, মুহাজির সাহাবাদের ঈমান আনার পূর্বেই আনসারী সাহাবাগণ ঈমান এনেছিলেন। কেননা, তাঁদের অধিকাংশই মুহাজির সাহাবাদের ঈমান আনার পর ঈমান এনেছেন। অর্থাৎ, مِنْ قَبْلِهِمْ (তাদের পূর্বে)এর অর্থ, مِنْ قَبْلِ هِجْرَتِهِمْ (তাঁদের হিজরত করার পূর্বে)। আর الدَارٌ বলতে دَارُ الْهِجْرَةِ অর্থাৎ, মদীনাকে বুঝানো হয়েছে।

[২] অর্থাৎ, মুহাজির সাহাবীদেরকে আল্লাহর রসূল (সাঃ) যা কিছু দিতেন তাতে তাঁরা না হিংসা করতেন, আর না মনে কোন প্রকার সংকীর্ণতা অনুভব করতেন। যেমন, 'মালে ফাই' পাওয়ার প্রথম অধিকারী তাঁদেরকেই গণ্য করা হয়। এতে আনসার সাহাবীগণ কিছুই মনে করেননি।

[৩] অর্থাৎ, নিজেদের তুলনায় মুহাজিরদের প্রয়োজনকে অগ্রাধিকার দিতেন। নিজেরা ক্ষুধার্ত থাকতেন, কিন্তু মুহাজিরদেরকে খাওয়াতেন। যেমন, হাদীসে একটা ঘটনা বর্ণিত হয়েছে যে, একদা নবী (সাঃ)-এর নিকট একজন মেহমান এল। কিন্তু রসূল (সাঃ)-এর ঘরে কিছুই ছিল না। সুতরাং একজন আনসারী সাহাবী তাঁকে নিজের বাড়ীতে নিয়ে গেলেন। ঘরে গিয়ে স্ত্রীকে জানালে স্ত্রী বললেন, 'ঘরে তো কেবল ছেলেদের খাবার মত সামান্য কিছু আছে।' পরে উভয়ে পরামর্শ করলেন যে, ছেলেদেরকে আজ (ভুলিয়ে-ভালিয়ে) ক্ষুধার্ত রেখেই ঘুম পাড়িয়ে দাও এবং আমরা নিজেরাও কিছু না খেয়েই ঘুমিয়ে যাব। তবে মেহমানকে খাওয়ানোর সময় (ছল করে) বাতিটা নিভিয়ে দেবে, যাতে সে আমাদের ব্যাপারে জানতে না পারে যে, আমরা তার সাথে খাবার খাচ্ছি না। সকালে যখন এই সাহাবী রসূল (সাঃ)-এর নিকট উপস্থিত হলেন, তখন তিনি তাঁকে বললেন যে, মহান আল্লাহ তোমার ও তোমার স্ত্রীর ব্যাপারে এই আয়াত অবতীর্ণ করেছেন। ﴿وَيُؤْثِرُونَ عَلَى أَنْفُسِهِمْ﴾ (সহীহ বুখারী, সূরা হাশরের তফসীর) তাঁদের ত্যাগের একটি বিস্ময়কর দৃষ্টান্ত এও যে, একজন আনসারী সাহাবীর নিকট দু'জন স্ত্রী ছিল। তিনি তাঁর মুহাজির ভাইকে প্রস্তাব দিলেন যে, আমি তোমার জন্য আমার একজন স্ত্রীকে তালাক দেব। ইদ্দত অতিবাহিত হওয়ার পর তুমি তাকে বিবাহ করে নেবে! (বুখারী, বিবাহ অধ্যায়)

[৪] হাদীসে আছে যে, কৃপণতা হতে দূরে থাক। কারণ, এই কৃপণতাই তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদেরকে ধ্বংস করে দিয়েছে। এই কৃপণতাই তাদেরকে নিজেদের রক্তপাত করতে এবং হারামকে হালাল করে নিতে প্ররোচিত করেছিল। (মুসলিমঃ নেকী অধ্যায়, পরিচ্ছেদঃ অত্যাচার করা হারাম)