আবাসা আয়াত ৩২
مَتَاعًا لَّكُمْ وَلِاَنْعَامِكُمْۗ ( عبس: ٣٢ )
Mata'al-lakum wa li-an'amikum. (ʿAbasa ৮০:৩২)
English Sahih:
[As] enjoyment [i.e., provision] for you and your grazing livestock. ('Abasa [80] : 32)
তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):
তোমাদের আর তোমাদের গৃহপালিত পশুগুলোর ভোগের জন্য। (আবাসা [৮০] : ৩২)
1 Tafsir Ahsanul Bayaan
এটা তোমাদের ও তোমাদের পশুদের উপভোগের জন্য।
2 Tafsir Abu Bakr Zakaria
এগুলো তোমাদের ও তোমাদের চতুস্পদ জন্তুদের ভোগের জন্য [১]।
[১] অর্থাৎ কেবল তোমাদের জন্যই নয়, তোমাদের যেসব গবাদি-গৃহপালিত পশু রয়েছে, তাদের জন্যও। এসব নেয়ামতের দিকে দৃষ্টিপাত করলে মহান আল্লাহ্র ইবাদত, তার প্রতি শুকরিয়া আদায় করা ও তার নির্দেশাবলি মেনে চলার প্রয়োজনীয়তা ফুটে ওঠে।
3 Tafsir Bayaan Foundation
তোমাদের ও তোমাদের চতুষ্পদ জন্তুগুলোর জীবনোপকরণস্বরূপ।
4 Muhiuddin Khan
তোমাদেরও তোমাদের চতুস্পদ জন্তুদের উপাকারার্থে।
5 Zohurul Hoque
তোমাদের জন্য খাদ্যভান্ডার ও তোমাদের গবাদি-পশুর জন্যেও।
6 Mufti Taqi Usmani
তোমাদের নিজেদের ও তোমাদের গবাদি পশুর ভোগের জন্য।
7 Mujibur Rahman
এটা তোমাদের ও তোমাদের পশুগুলির ভোগের জন্য।
8 Tafsir Fathul Mazid
১৭-৩২ নম্বর আয়াতের তাফসীর:
যারা পুনরুত্থানকে অস্বীকার করে আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে তিরস্কার ও অভিশাপ করে বলছেন যে, কাফির ব্যক্তিদের ওপর অভিশাপÑতারা কতই না অকৃতজ্ঞ ও নিমক হারাম। ইবনু জারীর (রহঃ) বলেন: এর অর্থ এটাও হতে পারে
أي شئ جعله كافرا
কোন্ জিনিস তাকে কাফির বানালো? অথচ তার খেয়াল করা উচিত, তাকে এক বিন্দু বীর্য দ্বারা সৃষ্টি করা হয়েছে এবং তার আয়ু, রিযিক, আমল সবকিছু নির্ধারিত করে দেয়া হয়েছে, তার পরেও কি তার এরূপ কুফরী করা শোভা পায়?
(ثُمَّ السَّبِيْلَ يَسَّرَه۫)
অর্থাৎ মানুষকে সৃষ্টি করার পর ভাল-মন্দের পথ বর্ণনা করে দিয়েছেন। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(إِنَّا هَدَيْنٰهُ السَّبِيْلَ إِمَّا شَاكِرًا وَّإِمَّا كَفُوْرًا)
“আমি তাকে পথ দেখিয়েছি, এরপর হয় সে কৃতজ্ঞ হবে, নয়তো হবে অকৃতজ্ঞ।” (সূরা দাহ্র ৭৬: ৩)
তারপর তার আয়ু শেষ হলে আল্লাহ তা‘আলা তাকে মৃত্যু দান করেন এবং তাকে কবরস্থ করেন। যাতে মানুষের সম্মান হানি না হয়। কেননা যদি কবরস্থ না করা হয় তাহলে হিংস্র পশু পাখি লাশ ছিঁড়ে ফেড়ে খাবে ফলে মানুষের যে সম্মান তা থাকবে না।
কেউ কেউ এ আয়াতের অর্থ বলেছেন : অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা তার জন্য মায়ের পেট থেকে বের হওয়ার পথ সহজ করে দিয়েছেন।
(ثُمَّ إِذَا شَا۬ءَ أَنْشَرَه۫)
অর্থাৎ তোমাদের মৃত্যুর পর যখন ইচ্ছা তখন তিনি তোমাদেরকে পুনরুত্থিত করবেন।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَمِنْ اٰیٰتِھ۪ٓ اَنْ خَلَقَکُمْ مِّنْ تُرَابٍ ثُمَّ اِذَآ اَنْتُمْ بَشَرٌ تَنْتَشِرُوْنَ)
“আর তাঁর দৃষ্টান্তগুলোর মধ্যে (অন্যতম) এই যে, তিনি তোমাদেরকে মাটি থেকে সৃষ্টি করেছেন অতঃপর এখন তোমরা মানুষ সব জায়গায় বিস্তার লাভ করেছ।” (সূরা রূম ৩০: ২০)
(كَلَّا لَمَّا يَقْضِ مَآ أَمَرَه۫)
অর্থাৎ কাফিররা যেমন বলে থাকে বিষয়টি তেমন নয়। আল্লাহ তা‘আলা তাদের যে ঈমান আমলের নির্দেশ দিয়েছেন তা তারা পালন করেনি। (তাফসীর মুয়াসসার)
অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা মানুষকে যে সকল নেয়ামত দান করেছেন তার কয়েকটি উল্লেখ করে মানুষকে তার দিকে চিন্তার দৃষ্টিতে তাকানোর নির্দেশ দিয়েছেন। এগুলোর দিকে মানুষ চিন্তার দৃষ্টিতে তাকালে সহজেই আল্লাহ তা‘আলাকে চিনতে পারবে।
غُلْبً অর্থ ঘন বৃক্ষ, أَبًّا অর্থ এমন তৃণলতা যা চতুষ্পদ প্রাণী খায়। এজন্যই বলা হয়েছে, এটা তোমাদের ও তোমাদের পশুদের উপভোগের জন্য।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. মানুষ যদি তার সৃষ্টি প্রক্রিয়া নিয়ে চিন্তা করে তাহলে কখানো আল্লাহ তা‘আলার সাথে কুফরী করত না।
২. মৃত্যুর পরেও মানুষের সম্মান রক্ষার জন্য আল্লাহ তা‘আলা মানুষকে কবরস্থ করার ব্যবস্থা করেছেন।
৩. আল্লাহ তা‘আলার সৃষ্টি নিয়ে গবেষণা করলে তাঁকে চেনা যায়।
9 Fozlur Rahman
তোমাদের ও তোমাদের পশুদের ভোগের (বা উপকারের) জন্য।
10 Mokhtasar Bangla
৩২. তাদের ও তাদের পশুগুলোর উপভোগের নিমিত্তে।
11 Tafsir Ibn Kathir
১৭-৩২ নং আয়াতের তাফসীর
মৃত্যুর পর পুনরুত্থানকে যারা বিশ্বাস করে না এখানে তাদের নিন্দে করা হয়েছে। হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) قُتِلَ الْاِنْسَانُ -এর অর্থ করেছেনঃ মানুষের উপর লা'নত বর্ষিত হোক। তারা কতই না অকৃতজ্ঞ! আর এও অর্থ করা হয়েছে যে, সাধারণভাবে প্রায় সব মানুষই অবিশ্বাসকারী। তারা কোন দলীল-প্রমাণ ছাড়াই শুধুমাত্র ধারণার বশবর্তী হয়ে একটি বিষয়কে অসম্ভব মনে করে থাকে। নিজেদের বিদ্যা-বুদ্ধির স্বল্পতা সত্ত্বেও ঝট করে আল্লাহ্ তা'আলার বাণীকে অস্বীকার ও অবিশ্বাস করে বসে। এ কথাও বলা হয়েছে যে, এটাকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করতে তাকে কোন্ জিনিস উদ্বুদ্ধ করছে? তারপর মানুষের অস্তিত্বের প্রশ্ন তুলে আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ কেউ কি চিন্তা করে দেখেছে যে, আল্লাহ্ তাকে কি ঘৃণ্য জিনিস দ্বারা সৃষ্টি করেছেন? তিনি কি তাকে দ্বিতীয়বার সৃষ্টি করতে সক্ষম হবেন না? শুক্র বিন্দু বা বীর্য দ্বারা তিনি মানুষকে সৃষ্টি করেছেন। তারপর তাদের তকদীর নির্ধারণ করেছেন অর্থাৎ বয়স, জীবিকা, আমল এবং সৎ ও অসৎ হওয়া। তারপর তাদের জন্যে মায়ের পেট থেকে বের হওয়ার পথ সহজ করে দিয়েছেন। অর্থ এও হতে পারেঃ আমি স্বীয় দ্বীনের পথ সহজ করে দিয়েছি অর্থাৎ সুস্পষ্ট করে দিয়েছি। যেমন অন্য জায়গায় রয়েছেঃ
اِنَّا هَدَیْنٰهُ السَّبِیْلَ اِمَّا شَاكِرًا وَّ اِمَّا كَفُوْرًا
অর্থাৎ “আমি তাকে পথের নির্দেশ দিয়েছি, হয় সে কৃতজ্ঞ হবে, না হয় সে অকৃতজ্ঞ হবে।” (৭৬:৩) হযরত হাসান (রঃ) এবং হযরত ইবনে যায়েদ (রঃ) এ অর্থটিকেই সঠিকতর বলেছেন। এসব ব্যাপারে আল্লাহ্ তা'আলাই সবচেয়ে ভাল জানেন।
আল্লাহ্ তা'আলা বলেনঃ “তৎপর তার মৃত্যু ঘটান এবং তাকে কবরস্থ করেন। আরবদের বাক-বিনিময়ের মধ্যে এ কথা প্রচলিত আছে যে, যখন তারা কোন লোককে দাফন বা কবরস্থ করে তখন বলে থাকেঃ قَبَرْتُ الرَّجُلَ “আমি লোকটিকে কবরস্থ করলাম।” আর এ কথাও বলেঃ اَقْبَرَهُ اللّٰهِ অর্থাৎ “আল্লাহ্ তাকে কবরস্থ করলেন।” এ ধরনের আরো কিছু পরিভাষা তাদের মধ্যে প্রচলিত আছে। অর্থাৎ আল্লাহ্ তা'আলা তাকে কবরের অধিবাসী করেছেন। আবার যখন ইচ্ছা তিনি তাকে পুনরুজ্জীবিত করবেন। এটাকেই بَعْث এবং نُشُوْر বলা হয়। যেমন অন্য জায়গায় রয়েছেঃ
وَ مِنْ اٰیٰتِهٖۤ اَنْ خَلَقَكُمْ مِّنْ تُرَابٍ ثُمَّ اِذَاۤ اَنْتُمْ بَشَرٌ تَنْتَشِرُوْنَ
অর্থাৎ “তার নিদর্শনাবলীর মধ্যে রয়েছে যে, তিনি (আল্লাহ) তোমাদেরকে মৃত্তিকা হতে সৃষ্টি করেছেন। এখন তোমরা মানুষ, সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ছো।” (৩০:২০) আর এক জায়গায় মহান আল্লাহ্ বলেনঃ
وَ انْظُرْ اِلَى الْعِظَامِ كَیْفَ نُنْشِزُهَا ثُمَّ نَكْسُوْهَا لَحْمًا
অর্থাৎ “আর অস্থিগুলোর প্রতি লক্ষ্য কর, কিভাবে আমি সেগুলোকে সংযোজিত করি এবং গোত দ্বারা ঢেকে দিই।” (২:২৫৯) হযরত আবু সাঈদ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, নবী (সঃ) বলেছেন, “মেরুদণ্ডের হাড় ছাড়া মানব দেহের সমস্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ মাটিতে খেয়ে ফেলে।” জিজ্ঞেস করা হলো। “হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! ওটা কি? উত্তরে তিনি বললেনঃ “ওটা একটা সরিষার বীজের সমপরিমাণ জিনিস, ওটা থেকেই তোমাদেরকে পুনরায় সৃষ্টি করা হবে। (এ হাদীসটি ইমাম ইবনে আবি হাতিম বর্ণনা করেছেন। সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমেও এটা ভাষার কিছু পার্থক্যসহ বর্ণনা করা হয়েছে। সেখানে প্রশ্ন ও উত্তরকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে)
এরপর আল্লাহ্ তা'আলা বলেনঃ অকৃতজ্ঞ এবং নিয়ামত অস্বীকারকারী মানুষ বলে যে, তাদের জান-মালের মধ্যে আল্লাহর যেসব হক ছিল তা তারা আদায় করেছে। কিন্তু আসলে তারা তা আদায় করেনি। মূলতঃ তারা আল্লাহ্র ফারায়েয আদায় করা হতে বিমুখ রয়েছে। তাই তো আল্লাহ্ তাবারাকা ওয়া তা'আলা বলেনঃ তিনি তাদেরকে যা আদেশ করেছেন তা তারা এখনো পুরো করেনি।
হযরত মুজাহিদ (রঃ) বলেন যে, কোন মানুষের পক্ষেই আল্লাহ্ তা'আলার ফারায়েয পুরোপুরি আদায় করা সম্ভব নয়। হযরত হাসান বসরী (রঃ) হতেও এ ধরনের একটি উক্তি বর্ণিত রয়েছে। মুতাকাদ্দিমীনের মধ্যে আমি এটা ছাড়া অন্য কোন উক্তি পাইনি। আমার মনে হয় আল্লাহ্ তা'আলার এই উক্তির ভাবার্থ এই যে, পুনরায় তিনি যখনই ইচ্ছা করবেন তখনই পুনরুজ্জীবিত করবেন, সেই সময় এখনো আসেনি। অর্থাৎ এখনই তিনি তা করবেন না, বরং নির্ধারিত সময় শেষ হলে এবং বানী আদমের ভাগ্যলিখন সমাপ্ত হলেই তিনি তা করবেন। তাদের ভাগ্যে এই পৃথিবীতে আগমন এবং এখানে ভালমন্দ কাজ করা ইত্যাদি আল্লাহর ইচ্ছা অনুযায়ী পূর্ণতা প্রাপ্ত হওয়ার পর সমগ্র সৃষ্টিকে তিনি পুনরুজ্জীবিত করবেন। প্রথমে তিনি যেভাবে সৃষ্টি করেছিলেন দ্বিতীয়বারও সেভাবেই সৃষ্টি করবেন।
মুসনাদে ইবনে আবী হাতিমে হযরত অহাব ইবনে মুনাব্বাহ্ (রঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, হযরত উযায়ের (আঃ) বলেনঃ “আমার নিকট একজন ফেরেশতা এসে আমাকে বলেন যে, কবরসমূহ জমীনের পেট এবং যমীন মাখলুকের মাতা। সমস্ত মাখলুক সৃষ্ট হবার পর কবরে পৌছে যাবে। কবরসমূহ পূর্ণ হবার পর পৃথিবীর সিলসিলা বা ধারা পূর্ণতা লাভ করবে। ভূ-পৃষ্ঠে যা কিছু রয়েছে সবই মৃত্যুবরণ করবে। জমীনের অভ্যন্তরে যা কিছু রয়েছে জমীন সেগুলো উগলিয়ে ফেলবে। কবরে যতো মৃতদেহ রয়েছে সবকেই বাইরে বের করে দেয়া হবে।” আমরা এই আয়াতের যে তাফসীর করেছি তা এই উক্তির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। মহান ও পবিত্র আল্লাহই সকল বিষয়ে সর্বজ্ঞানী।
এরপর আল্লাহ্ তাবারাকা ওয়া তা'আলা বলেনঃ মানুষ তার খাদ্যের প্রতি লক্ষ্য করুক। মৃত্যুর পর পুনরুজ্জীবিত হওয়ার প্রমাণ এর মধ্যেও নিহিত রয়েছে। হে মানুষ! শুষ্ক অনাবাদী জমি থেকে আমি যেমন সবুজ-সতেজ গাছেন জন্ম • দিয়েছি, সেই জমি থেকে ফসল উৎপন্ন করে তোমাদের আহারের ব্যবস্থা করেছি, ঠিক তেমনি পচে গলে বিকৃত হয়ে যাওয়া হাড় থেকে আমি একদিন তোমাদের পুনরুত্থান ঘটাবো। তোমরা দেখতে পাচ্ছ যে, আমি আকাশ থেকে ক্রমাগত বারি বর্ষণ করে ঐ পানি জমিতে পৌঁছিয়ে দিয়েছি। তারপর ঐ পানির স্পর্শ পেয়ে বীজ থেকে শস্য উৎপন্ন হয়েছে। কত রকমারী শস্য, কোথাও আঙ্গুর। কোথাও আবার তরি-তরকারী উৎপন্ন হয়েছে।
حَبّ সর্বপ্রকারের দানা বা বীজকে বলা হয় عِنَب-এর অর্থ হলো আঙ্গুর।قَضْب বলা হয় সেই সবুজ চারাকে যেগুলো পশুরা খায়। আল্লাহ্ তা'আলা যায়তুন পয়দা করেছেন যা তরকারী হিসেবে রুটির সাথে খাওয়া হয়। তাছাড়া ওকে জ্বালানী রূপে ব্যবহার করা যায় এবং তা হতে তেলও পাওয়া যায়। তিনি সৃষ্টি করেছেন খেজুর বৃক্ষ। সেই বৃক্ষের কাঁচা-পাকা, শুকনো এবং ভিজে খেজুর তোমরা খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করে থাকো। সেই খেজুর দিয়ে তোমরা শিরা এবং সিরকাও তৈরী করে থাকো। তাছাড়া আল্লাহ্ বাগান সৃষ্টি করেছেন।
غُلْبًا খেজুরের বড় বড় ফলবান বৃক্ষকেও বলা হয়। حَدَآئِقَ غُلْبًا এমন বাগানকে বলা হয় যা খুবই ঘন এবং ফলে ফলে সুশোভিত। মোটা গ্রীবাবিশিষ্ট লোককেও আরববাসীরা اَغْلَب বলে থাকে। আর আল্লাহ্ তা'আলা মেওয়া সৃষ্টি করেছেন। اَبّ বলা হয় ঘাস পাতা ইত্যাদিকে যা পশুরা খায়, কিন্তু মানুষ খায় না। মানুষের জন্যে যেমন ফল, মেওয়া তেমনি পশুর জন্যে ঘাস।
হযরত আতা (রঃ) বলেন যে, জমিতে যা কিছু উৎপন্ন হয় তাকে اَبّ বলা হয়। যহ্হাক (রঃ) বলেন যে, মেওয়া ছাড়া বাকী সবকিছুকে اَبّ বলা হয়। আবুস সায়েব (রঃ) বলেন যে, اَبّ মানুষ এবং পশু উভয়ের খাদ্য বা আহার্য হিসেবেই ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
হযরত আবু বকর সিদ্দীক (রাঃ)-কে এ সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি উত্তরে বলেনঃ “কোন আকাশ আমাকে তার নীচে ছায়া দিবে? কোন্ জমীন আমাকে তার পিঠে তুলবে? যদি আমি আল্লাহর কিতাবের যে বিষয় ভাল জানি না তা জানি বলে উক্তি করি?” অর্থাৎ এ সম্পর্কে আমার জানা নেই। ইবরাহীম নাখঈ (রঃ) হযরত সিদ্দীকে আকবর (রাঃ)-কে পাননি। সহীহ্ সনদে তাফসীরে ইবনে জারীরে হযরত উমার ফারুক (রাঃ) থেকে বর্ণিত এ রিওয়ায়িত আছে যে, তিনি মিম্বরের উপর সূরা عَبَس পাঠ করতে শুরু করেন এবং বলেনঃ فَاكِهَة-এর অর্থ তো আমরা মোটামুটি জানি, কিন্তু اَبّ এর অর্থ কি? তারপর তিনি নিজেই বলেনঃ “হে উমার (রাঃ)! এ কষ্ট ছাড়ো!” এতে স্পষ্টভাবে বুঝা যায় যে, اَبّ যমীন থেকে উৎপাদিত জিনিসকে বলা হয়, কিন্তু তার আকার-আকৃতি জানা যায় না...... فَاَنْۢبَتْنَا فِيْهَا দ্বারা এর চেয়ে স্পষ্ট কিছু জানা যায় না।
এরপর আল্লাহ্ পাক বলেনঃ এটা তোমাদের ও তোমাদের পশুগুলোর ভোগের জন্যে। কিয়ামত পর্যন্ত এই সিলসিলা বা ক্রমধারা অক্ষুন্ন থাকবে এবং তোমরা তা থেকে লাভবান হতে থাকবে।