যারা কল্যাণকর কাজ করে তাদের জন্য রয়েছে কল্যাণ এবং আরো অতিরিক্ত (পুরস্কার), কলংক ও লাঞ্ছনা তাদের মুখমন্ডলকে মলিন করবে না, তারাই হল জান্নাতের অধিবাসী, সেখানে তারা থাকবে চিরকাল।
English Sahih:
For them who have done good is the best [reward] – and extra. No darkness will cover their faces, nor humiliation. Those are companions of Paradise; they will abide therein eternally.
1 Tafsir Ahsanul Bayaan
যারা কল্যাণকর কাজ করে, তাদের জন্য রয়েছে কল্যাণ (জান্নাত) এবং আরো অধিক (আল্লাহর দীদার)।[১] তাদের মুখমন্ডলকে মলিনতা আচ্ছন্ন করবে না এবং লাঞ্ছনাও না; তারাই হচ্ছে জান্নাতের অধিবাসী, তারা ওর মধ্যে অনন্তকাল বাস করবে।
[১] এই زِيَادَةٌ -'অধিক'এর কয়েকটি অর্থ বর্ণনা করা হয়েছে। কিন্তু হাদীসে এর ব্যাখ্যা আল্লাহ তাআলার দীদার বা দর্শনসুখ বর্ণনা করা হয়েছে। জান্নাতীদেরকে জান্নাত ও জান্নাতের সকল নিয়ামত দান করার পর এই দীদার দ্বারা সম্মানিত করা হবে। (মুসলিম)
2 Tafsir Abu Bakr Zakaria
যারা ইহসানের সাথে আমল করে (উত্তমরূপে কাজ করে) তাদের জন্য আছে জান্নাত এবং আরো বেশী [১]। কালিমা ও হীনতা তাদের মুখমন্ডলকে আছন্ন করবে না [২]। তারাই জান্নাতের অধিবাসী, সেখানে তারা স্থায়ী হবে।
[১] এ আয়াতে (اَحْسَنُوا) বলে বুঝানো হয়েছে ঐ সমস্ত লোকদেরকে যারা ইহসানের সাথে তাদের সৎকাজ করেছে। আর ইহ্সানের অর্থ যা হাদীসে এসেছে তা হলো, এমনভাবে আল্লাহ্র ইবাদাত করা যেন সে আল্লাহকে দেখছে, যদি তা সম্ভব না হয় তবে এটা যেন বিশ্বাস করে যে, আল্লাহ তো তাকে দেখছেন। সুতরাং যারা ইহসানের সাথে তাদের ইবাদাত সম্পাদন করেছে তারা হলো পরিপূর্ণ তাওহীদ বাস্তবায়নকারী তাদের জন্য দুটি পুরস্কারের ঘোষণা রয়েছে- [১] (الْحُسْنٰى) যার অর্থ জান্নাত। [২] (زِيَادَةٌ) যার অর্থ বাড়তি পাওনা। এর অর্থ এও হতে পারে যে, তাদেরকে শুধু তাদের কাজ অনুসারেই প্রতিফল দেয়া হবে না বরং তাদের আমলের সওয়াব দশগুণ ও ততোধিক বহুগুণ যেমন সত্তরগুণে বর্ধিত করে দেয়া হবে। এ ছাড়া তাদের জন্য সেখানে অট্টালিকা, উদ্যান ও সুন্দর সুন্দর স্ত্রীসমূহ থাকবে। [ইবন কাসীর]। তাছাড়া আরো থাকবে আল্লাহর দীদার। এ সম্পর্কে হাদীসে এসেছে যে, যখন জান্নাতবাসীগণ জান্নাতে প্রবেশ করবে এবং জাহান্নামবাসীগণ জাহান্নামে প্রবেশ করবে তখন একজন আহবানকারী ডেকে বলবেঃ হে জান্নাতবাসীগণ! তোমাদের সাথে আল্লাহর একটি ওয়াদা রয়েছে যা তিনি পূরণ করতে চান। তারা বলবেঃ সেটা কি? তিনি কি আমাদের মীযানের পাল্লা ভারী করে দেননি? আমাদের চেহারা শুভ্র করে দেন নি? আমাদেরকে জান্নাতে প্রবেশ করান নি? আমাদেরকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেন নি? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ তারপর তাদের জন্য তাঁর পর্দা খুলে দেয়া হবে ফলে তারা তার দিকে তাকাবে। আল্লাহর শপথ করে বলছিঃ আল্লাহ তাদেরকে তাঁর দিকে তাকানোর চেয়ে প্রিয় এবং চক্ষু শীতলকারী আর কোন জিনিস দেননি। [সহীহ মুসলিমঃ ১৮১, তিরমিয়ীঃ ২৫৫২, মুসনাদে আহমাদ ৪/৩৩৩] সুতরাং বুঝা যাচ্ছে যে, এখানে (زِيَادَةٌ) বা বাড়তি পাওনার মধ্যে আল্লাহর দীদার তথা তার চেহারা মুবারকের দিকে তাকানো ও আল্লাহ্ তা'আলাকে দেখার সৌভাগ্যও শামিল। সাহাবা, তাবেয়ীন, তাবে-তাবেয়ীন, মুজতাহেদীনসহ পূর্ববতী ও পরবর্তী অনেক আলেম থেকে এ তাফসীর বর্ণিত হয়েছে। [তাবারী; বাগভী; কুরতুবী; ইবন কাসীর; ফাতহুল কাদীর]
[২] বরং তাদের চেহারা হবে শুভ্ৰ, মন হবে আনন্দে উদ্বেলিত। যেমনটি সূরা আল-ইনসানের ১১ নং আয়াতে বর্ণিত হয়েছে।
3 Tafsir Bayaan Foundation
যারা ভালো কাজ করে তাদের জন্য রয়েছে শুভ পরিণাম (জান্নাত) এবং আরও বেশি। আর ধূলোমলিনতা ও লাঞ্ছনা তাদের চেহারাগুলোকে আচ্ছন্ন করবে না। তারাই জান্নাতবাসী। তারা তাতে স্থায়ী হবে।
4 Muhiuddin Khan
যারা সৎকর্ম করেছে তাদের জন্য রয়েছে কল্যাণ এবং তারও চেয়ে বেশী। আর তাদের মুখমন্ডলকে আবৃত করবে না মলিনতা কিংবা অপমান। তারাই হল জান্নাতবাসী, এতেই তারা বসবাস করতে থাকবে অনন্তকাল।
5 Zohurul Hoque
যারা ভালো করে তাদের জন্য রয়েছে ভালো এবং আরো বেশি। আর তাদের মুখমন্ডলকে আচ্ছাদন করবে না কোনো কালিমা এবং কোনো অপমানও নয়। এরাই হচ্ছে বেহেশতের অধিবাসী, তারা সেখানে থাকবে স্থায়ীভাবে।