কাজেই কারো সাথে আল্লাহর তুলনা দিও না। আল্লাহ জানেন, আর তোমরা জান না।
English Sahih:
So do not assert similarities to Allah. Indeed, Allah knows and you do not know.
1 Tafsir Ahsanul Bayaan
সুতরাং তোমরা আল্লাহর সদৃশাবলী স্থির করো না।[১] নিশ্চয় আল্লাহ জানেন এবং তোমরা জান না।
[১] যেমন, মুশরিকরা উদাহরণ দিয়ে থাকে যে, যদি রাজার সাথে সাক্ষাৎ করতে হয় বা তাঁর নিকট থেকে কোন কাজ নিতে হয়, তাহলে রাজার নিকট সরাসরি যাওয়া যায় না; বরং তাঁর নিকটতম লোকেদের সাথে সম্পর্ক ও যোগাযোগ করতে হয়, (উকিল ধরতে হয়,) তবেই রাজার নিকট পৌছনো সম্ভব হয়। অনুরূপ আল্লাহ অত্যন্ত মহান ও বিশাল রাজা। তাঁর নিকট পৌছনোর জন্য আমরা এই সব উপাস্যদের উপাসনা করি বা বুযুর্গদেরকে অসীলা ও মাধ্যমরূপে ব্যবহার করি। মহান আল্লাহ এর উত্তরে বলেন, তোমরা আল্লাহকে নিজেদের উপর অনুমান করো না এবং তাঁর জন্য কোন উপমা, দৃষ্টান্ত বা সদৃশ পেশ করো না। কারণ তিনি অনুপম; তাঁর কোন উপমা নেই। তিনি একক; তাঁর কোন সদৃশ নেই। তারপর মানুষ রাজা না গায়বী খবর জানে, আর না সে সব সময় সবার নিকট উপস্থিত, না সে সর্বশ্রোতা সর্বজ্ঞাতা যে, বিনা কোন মাধ্যমে প্রজাদের অবস্থা ও তাদের প্রয়োজন জানতে সক্ষম। অন্যথা মহান আল্লাহ প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য, দৃশ্য-অদৃশ্য প্রত্যেক বস্তুর খবর রাখেন। রাত্রির অন্ধকারে সংঘটিত কর্মও তিনি দেখতে পান। প্রত্যেকের অভাব-অভিযোগও জানতে-শুনতে সক্ষম। অতএব কিভাবে একজন পার্থিব রাজা ও শাসকের সাথে মহান রাজা আল্লাহর তুলনা ও সাদৃশ্য হতে পারে?
2 Tafsir Abu Bakr Zakaria
কাজেই তোমরা আল্লাহ্র কোন সদৃশ স্থির করো না [১]। নিশ্চয় আল্লাহ্ জানেন এবং তোমরা জান না।
[১] ‘আল্লাহর জন্য সদৃশ স্থির করো না- মুফাসসির যাজ্জাজ এর তাফসীরে বলেন, তোমরা আল্লাহর জন্য উদাহরণ ও দৃষ্টান্ত পেশ করো না। কেননা, তিনি এক, তার কোন দৃষ্টান্ত নেই। আর তারা বলত যে, জগতের মা’বুদ এতই মহিয়ান যে তাকে আমাদের কেউ ইবাদত করতে পারে না। সুতরাং তারা মূর্তি-প্রতিমা, দেব-দেবী ও তারকারাজির মাধ্যম গ্রহণ করত। যেমন সাধারণ ছোট ছোট লোকেরা বাদশার দরবারে যেতে বড় বড় লোকদের দ্বারস্থ হয়ে থাকে। আর এ বড় বড় লোকগুলো বাদশার খেদমত করে, সুতরাং তাদের কথা শুনবে। এ আয়াতে তাদেরকে তা থেকে নিষেধ করা হয়েছে। [ফাতহুল কাদীর] অর্থাৎ আল্লাহকে দুনিয়ার রাজা-মহারাজা ও বাদশাহ-শাহানশাহদের সমপর্যায়ে রেখে বিচার করো না। রাজা-বাদশাহদের অনুচর, সভাসদ ও মোসাহেবদের মাধ্যম ছাড়া তাদের কাছে কেউ নিজের আবেদন নিবেদন পৌছাতে পারে না। ঠিক তেমনি আল্লাহর ব্যাপারেও তোমরা এ ধারণা করতে থাকো যে, তিনি নিজের শাহী মহলে ফেরেশতা, আউলিয়া ও অন্যান্য সভাসদ পরিবৃত হয়ে বিরাজ করছেন এবং এদের মাধ্যমে ছাড়া তাঁর কাছে কারোর কোন কাজ সম্পন্ন হতে পারে না। আলোচ্য বাক্যটি তাদের সন্দেহের মূল উপড়ে দিয়ে বলেছে যে, আল্লাহ তা'আলার জন্য সৃষ্টজীবের দৃষ্টান্ত পেশ করা একান্তই নিবুদ্ধিতা। তিনি দৃষ্টান্ত, উদাহরণ এবং আমাদের ধারণা-কল্পনার অনেক উর্ধ্বে। এরপর আল্লাহ্ তা'আলা তার জন্য দৃষ্টান্ত পেশ করতে নিষেধ করার কারণ হিসেবে বলেছেন যে, আল্লাহ জানেন তোমাদের উপর কি ইবাদাত করণীয়, তোমরা জান না তিনি ব্যতীত অন্যদের ইবাদত করলে কি কঠিন পরিণতির সম্মুখীন তোমাদের হতে হবে। [ফাতহুল কাদীর]
3 Tafsir Bayaan Foundation
সুতরাং তোমরা আল্লাহর জন্য অন্য কোন দৃষ্টান্ত স্থাপন করো না। নিশ্চয় আল্লাহ জানেন আর তোমরা জান না।
4 Muhiuddin Khan
অতএব, আল্লাহর কোন সদৃশ সাব্যস্ত করো না, নিশ্চয় আল্লাহ জানেন এবং তোমরা জান না।
5 Zohurul Hoque
অতএব আল্লাহ্র সঙ্গে কোনো সদৃশ স্থির করো না। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ জানেন আর তোমরা জান না।