যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহ্রই যিনি তাঁর বান্দার উপর কিতাব নাযিল করেছেন [১] এবং তাতে তিনি বক্রতা রাখেননি [২];
সূরা সংক্রান্ত আলোচনাঃ
নামকরণঃ
এ সূরার নাম সূরা আল-কাহাফা। কারণ সূরার মধ্যে কাহাফ বা গুহাবাসীদের আলোচনা স্থান পেয়েছে।
আয়াত সংখ্যাঃ ১১০ ৷
নাযিল হওয়ার স্থানঃ
সূরা আল-কাহাফ মক্কায় নাযিল হয়েছে। [কুরতুবী]
সূরার কিছু বৈশিষ্ট্যঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ “যে ব্যক্তি সূরা আল-কাহফের প্রথম দশ আয়াত মুখস্থ করবে, সে দাজ্জালের ফেৎনা থেকে নিরাপদ থাকবে। [আবু দাউদঃ ৪৩২৩, আহমাদঃ ৬/৪৪৯] অন্য এক হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ “যে ব্যক্তি সূরা কাহফের শেষ দশটি আয়াত মুখস্থ করবে। সে দাজ্জালের ফেৎনা থেকে মুক্ত থাকবে’। [মুসলিমঃ ৮০৯] অন্য এক হাদীসে বারা ইবনে আযিব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, এক লোক সূরা আল-কাহাফ পড়ছিল তার ঘরে ছিল একটি বাহন। বাহনটি বারবার পালাচ্ছিল। সে তাকিয়ে দেখল যে, মেঘের মত কিছু যেন তাকে ঢেকে আছে। সে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে সেটা বৰ্ণনা করার পর রাসূল বললেন; হে অমুক! তুমি পড়। এটাতো কেবল "সাকীনাহ' বা প্রশান্তি যা কুরআন পাঠের সময় নাযিল হয় ৷ [বুখারী; ৩৬১৪, মুসলিম; ৭৯৫]। অন্য হাদীসে এসেছে, যে কেউ শুক্রবারে সূরা আল-কাহাফ পড়বে পরবর্তী জুম'আ পর্যন্ত সে নূর দ্বারা আলোকিত থাকবে। ” [মুস্তাদরাকে হাকিম; ২/৩৬৮, সুনান দারমী ২/৪৫৪] অপর হাদীসে এসেছে, যেভাবে সূরা আল-কাহাফ নাযিল হয়েছে সেভাবে কেউ তা পড়লে সেটা তার জন্য কিয়ামতের দিন নূর বা আলোকবর্তিকা হবে'। [মুস্তাদরাকে হাকিম; ১/৫৬৪]
---------------
[১] সূরার শুরুতে মহান আল্লাহ নিজেই নিজের প্রশংসা করছেন। এ ধরনের প্রশংসা একমাত্র তাঁরই। প্রথম ও শেষ সর্বাবস্থায় শুধু তাঁরই প্রশংসা করা যায়। তিনি তাঁর বান্দা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর কিতাব নাযিল করেছেন সুতরাং তিনি প্রশংসিত; কারণ এর মাধ্যমে তিনি মানুষদেরকে অন্ধকার থেকে আলোতে নিয়ে এসেছেন। এর চেয়ে বড় নেয়ামত আর কী-ই বা আছে। [ইবন কাসীর]
[২] অর্থাৎ এর মধ্যে এমন কোন কথাবার্তা নেই যা বুঝতে পারা যায় না। আবার সত্য ও ন্যায়ের সরল রেখা থেকে বিচ্যুত এমন কথাও নেই যা মেনে নিতে কোন সত্যপন্থী লোক ইতস্তত করতে পারে। [ইবন কাসীর]