Skip to main content

قَالَ بَلْ فَعَلَهٗ كَبِيْرُهُمْ هٰذَا فَسْـَٔلُوْهُمْ اِنْ كَانُوْا يَنْطِقُوْنَ   ( الأنبياء: ٦٣ )

qāla
قَالَ
He said
সে বললো
bal
بَلْ
"Nay
"বরং
faʿalahu
فَعَلَهُۥ
(some doer) did it
তা করেছে
kabīruhum
كَبِيرُهُمْ
Their chief
তাদের প্রধান
hādhā
هَٰذَا
(is) this
এটা
fasalūhum
فَسْـَٔلُوهُمْ
So ask them
তবে তাদেরকে জিজ্ঞেস করো
in
إِن
if
যদি
kānū
كَانُوا۟
they (can)
তারা ছিলো
yanṭiqūna
يَنطِقُونَ
speak"
কথা বলতে পারে"

Qaala bal fa'alahoo kabeeruhum haazaa fas'aloohum in kaanoo yantiqoon (al-ʾAnbiyāʾ ২১:৬৩)

English Sahih:

He said, "Rather, this – the largest of them – did it, so ask them, if they should [be able to] speak." (Al-Anbya [21] : 63)

তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):

সে বলল, ‘না, তাদের এই বড়টাই এ সব করেছে, তারা যদি কথা বলতে পারে তবে তাদেরকে জিজ্ঞেস কর।’ (আম্বিয়া [২১] : ৬৩)

1 Tafsir Ahsanul Bayaan

সে বলল, ‘বরং ওদের মধ্যে এই বড়টিই এরূপ করেছে। সুতরাং তোমরা ওদেরকেই জিজ্ঞেস কর; যদি ওরা কথা বলতে পারে।’ [১]

[১] সুতরাং ইবরাহীম (আঃ)-কে জনসমক্ষে আনা হল এবং জিজ্ঞাসা করা হল। ইবরাহীম (আঃ) উত্তর দিলেন যে, এ কাজ তো বড় মূর্তিটিই করেছে। যদি এই ভাঙ্গা মূর্তিগুলো কথা বলতে পারে, তাহলে এদেরকেই জিজ্ঞেস কর। তাদের জন্য এ বক্রোক্তি আভাসে তিরস্কারস্বরূপ ব্যবহার করেছিলেন, যাতে তারা জানতে পারে যে, যারা কথা বলার ক্ষমতা রাখে না, বা কোন জিনিস সম্পর্কে কোন খবর রাখে না, তারা মাবূদ হতে পারে না; তাদেরকে সঠিক অর্থে 'উপাস্য' বলাই সঠিক নয়।। একটি সহীহ হাদীসে ইবরাহীম (আঃ)-এর 'বরং ওদের মধ্যে এই বড়টিই এরূপ করেছে' উক্তিটিকে তাঁর মিথ্যা বলে বর্ণনা করা হয়েছে। বলা হয়েছে, তিনি তিনটি মিথ্যা বলেছিলেন; দু'টি আল্লাহর জন্য এবং একটি নিজের জন্য। প্রথমঃ তাঁর কথা, আমি অসুস্থ। (অথচ তিনি অসুস্থ ছিলেন না।) দ্বিতীয়ঃ 'বরং ওদের মধ্যে এই বড়টিই এরূপ করেছে।' আর তৃতীয়ঃ আপন স্ত্রী সারাকে বোন বলা। (সহীহ বুখারী, আম্বিয়া অধ্যায়) সম্প্রতিকালের কিছু ব্যাখ্যাকারিগণ এই সহীহ হাদীসটিকে কুরআন-বিরোধী মনে করে অস্বীকার করেছেন এবং সহীহ মানার ব্যাপারে তাকীদ করলে তাঁরা সেটাকে অতিরঞ্জন ও বর্ণনার উপর অন্ধবিশ্বাস বলে মনে করেন। কিন্তু তাদের এ অভিমত সঠিক নয়। নিঃসন্দেহে বাস্তবিকতার দিক দিয়ে এগুলিকে যেরূপ মিথ্যা বলা যায় না, ঠিক অনুরূপই বাহ্যিকভাবে এগুলিকে মিথ্যা থেকে খারিজ করাও যায় না। কারণ এগুলি আল্লাহর জন্যই বলা হয়েছিল। আর কোন পাপ কাজ আল্লাহর জন্য হতে পারে না। অবশ্য এটা তখনই সম্ভব যখন এগুলি বাহ্যিক দৃষ্টিতে মিথ্যা হলেও প্রকৃতপক্ষে মিথ্যা নয় বলে মেনে নেওয়া যায়। যেমন আদম (আঃ)-এর ব্যাপারে বলা হয়েছে যে, 'আদম তার প্রতিপালকের অবাধ্য হল; ফলে সে পথভ্রষ্ট হয়ে গেল।' অথচ তাঁর নিষিদ্ধ গাছ খাওয়ার কাজকে তাঁর ভুলে যাওয়া বা ইচ্ছাশক্তির দুর্বলতার পরিণতিও বলা হয়েছে। যার পরিষ্কার অর্থ হল, প্রত্যেক কাজের দু'টি দিক থাকতে পারে; একদিক ভালো এবং অপরদিক মন্দ। ইবরাহীম (আঃ)-এর উক্ত কথাগুলি একদিক দিয়ে বাহ্যিকরূপে মিথ্যা ছিল। কারণ তা ছিল বাস্তব ও সত্যের বিপরীত। মূর্তিগুলি তিনি নিজেই ভেঙ্গেছিলেন, কিন্তু ভাঙ্গার সম্পর্ক বড় মূর্তিটির দিকে জুড়লেন। কিন্তু যেহেতু তাঁর উদ্দেশ্য ছিল, (এই কাজের মাধ্যমে তাদেরকে জ্ঞান দেওয়া,) তাদেরকে তিরস্কার করা এবং তওহীদ সাব্যস্ত করা, সেহেতু বাস্তবতার দিক দিয়ে আমরা তা মিথ্যা না বলে, প্রমাণের পূর্ণতা দানের একটি কৌশল এবং মুশরিকদের মূর্খতা প্রতিপাদন ও প্রকাশ করার একটি যুক্তিময় পদ্ধতি বলব। এ ছাড়া হাদীসের মধ্যে এসব উক্তিকে মিথ্যা বলে আখ্যায়ন যে পরিস্থিতিতে করা হয়েছে তাও বিবেচ্য। আর তা হল হাশরের ময়দানে মহান আল্লাহর সামনে সুপারিশ করা হতে নিজেকে দূরে রাখা। যেহেতু পার্থিব জীবনে তিন জায়গায় তার ত্রুটি হয়ে গিয়েছিল। যদিও লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও বাস্তবতার দিক দিয়ে তা মিথ্যা (ত্রুটি) নয়। কিন্তু তিনি আল্লাহর মাহাত্ম্য ও প্রতাপের জন্য এত ভীত হবেন যে, এ কথাগুলির মিথ্যার সাথে বাহ্যিক সাদৃশ্য থাকার কারণে পাকড়াও যোগ্য মনে করবেন। অতএব হাদীসের উদ্দেশ্য ইবরাহীম (আঃ)-কে মিথ্যা সাব্যস্ত করা কখনই নয়; বরং উদ্দেশ্য হল, ঐ অবস্থার বিবরণ, যা কিয়ামতের দিন আল্লাহর ভয়ে তাঁর ঘটবে।