সেই আখিরাতের ঘর আমি তাদের জন্য করেছি যারা পৃথিবীর বুকে ঔদ্ধত্য প্রকাশ ও বিপর্যয় সৃষ্টি করতে চায় না। শুভ পরিণাম আল্লাহভীরুদের জন্য।
English Sahih:
That home of the Hereafter We assign to those who do not desire exaltedness upon the earth or corruption. And the [best] outcome is for the righteous.
1 Tafsir Ahsanul Bayaan
এ পরলোকের আবাস; যা আমি নির্ধারিত করি তাদেরই জন্য যারা এ পৃথিবীতে উদ্ধত হতে ও বিপর্যয় সৃষ্টি করতে চায় না। সাবধানীদের জন্য শুভ পরিণাম। [১]
[১] عُلُوّ এর অর্থ যুলুম ও ঔদ্ধত্য করা, নিজেকে অন্যের চেয়ে বড় মনে করা, গর্ব ও অহংকার করা। আর فَسَاد এর অর্থঃ অন্যায়ভাবে অন্যের মাল নিয়ে নেওয়া, পাপাচারে লিপ্ত হওয়া। এই দু'টি কারণে পৃথিবীতে ফাসাদ ও বিপর্যয় সৃষ্টি হয়। আর যারা পরহেযগার ও সাবধানী তাদের কর্ম ও চরিত্র উক্ত সকল পাপ হতে পবিত্র থাকে। তাদের চরিত্র অহংকারের পরিবর্তে বিনয় ও পাপাচারের বদলে আল্লাহর আনুগত্যে পরিপূর্ণ থাকে। আর আখেরাতের ঘরঃ অর্থাৎ, জান্নাত ও শুভ পরিণাম তাদেরই ভাগ্যে জুটবে।
2 Tafsir Abu Bakr Zakaria
এটা আখেরাতের সে আবাস যা আমরা নির্ধারিত করি তাদের জন্য যারা যমীনে উদ্ধত হতে ও বিপর্যয় সৃষ্টি করতে চায় না [১]। আর শুভ পরিণাম মুত্তাকীদের জন্য [২]।
[১] এ আয়াতে আখেরাতের মুক্তি ও সাফল্য শুধু তাদের জন্য নির্ধারিত বলা হয়েছে, যারা যমীনে ঔদ্ধত্য ও অনার্থের ইচ্ছা করে না। علو শব্দের অর্থ অহংকার তথা নিজেকে অন্যের চাইতে বড় মনে করা ও অন্যকে ঘৃণিত ও হেয় মনে করা। فساد বলে, অপরের উপর যুলুম বোঝানো হয়েছে। কোন কোন তাফসীরকারক বলেন, গোনাহ মাত্ৰই যমীনে ফাসাদের শামিল। কারণ, গোনাহের কুফলস্বরূপ বিশ্বময় বরকত হ্রাস পায়। এই আয়াত থেকে জানা গেল যে, যারা অহংকার, যুলুম অথবা গোনাহের ইচ্ছা করে, পরকালে তাদের অংশ নেই।
আয়াতে ঔদ্ধত্য ও ফাসাদের ইচ্ছার কারণে আখেরাত থেকে বঞ্চিত হওয়ার বিষয় থেকে জানা গেল যে, কোন গোনাহের বদ্ধপরিকতার পর্যায়ে দৃঢ় সংকল্পও গোনাহ। তবে পরে যদি আল্লাহ্র ভয়ে সংকল্প পরিত্যাগ করে, তবে গোনাহের পরিবর্তে তার আমলনামায় সওয়াব লিখা হয়। পক্ষান্তরে যদি কোন ইচ্ছা-বহির্ভূত কারণে সে গোনাহ করতে সক্ষম না হয়; কিন্তু চেষ্টা ষোলআনাই করে, তবে গোনাহ না করলেও তার আমলনামায় গোনাহ লিখা হবে।
[২] এর সারমর্ম এই যে, আখেরাতের মুক্তি ও সাফল্যের জন্য দু’টি বিষয় জরুরী। এক, ঔদ্ধত্য ও অনর্থ সৃষ্টি থেকে বেঁচে থাকা এবং দুই, তাকওয়া অবলম্বন করা। আখেরাতের মুক্তির জন্য শুধু ঔদ্ধত্য ও অনর্থ থেকে মুক্ত থাকলেই চলবে না সাথে সাথে তাকওয়ার অধিকারীও হতে হবে। ফির‘আউন দুনিয়ার বুকে ঔদ্ধত্য, অনর্থ ও অহংকার করেছিল যা এ সূরার প্রথমে উল্লেখ করা হয়েছিল, অনুরূপভাবে কারূনও চরম ঔদ্ধত্যপূর্ণ কাজ করেছিল ফলে আখেরাতে সে কোন কল্যাণ লাভ করবে না। পক্ষান্তরে মূসা ও অপরাপর নবী-রাসূল ও তাদের অনুসারীগণ বিনীত ও নিরহংকার তাকওয়াভিত্তিক জীবন-যাপন করেছেন সুতরাং তাদের জন্যই আখেরাতের যাবতীয় আবাসভূমি অপেক্ষা করছে।
3 Tafsir Bayaan Foundation
এই হচ্ছে আখিরাতের নিবাস, যা আমি তাদের জন্য নির্ধারিত করি, যারা যমীনে ঔদ্ধত্য দেখাতে চায় না এবং ফাসাদও চায় না। আর শুভ পরিণাম মুত্তাকীদের জন্য।
4 Muhiuddin Khan
এই পরকাল আমি তাদের জন্যে নির্ধারিত করি, যারা দুনিয়ার বুকে ঔদ্ধত্য প্রকাশ করতে ও অনর্থ সৃষ্টি করতে চায় না। খোদাভীরুদের জন্যে শুভ পরিণাম।
5 Zohurul Hoque
এই পরলোকের আবাস, -- আমরা এটি নির্ধারিত করেছি তাদের জন্য যারা পৃথিবীতে বাড়াবাড়ি করতে চায় না এবং ফেসাদও বাধায় না। আর শুভ-পরিণাম হচ্ছে ধর্মপরায়ণদের জন্য।