আল্লাহ তাদের প্রতি ক্ষমাশীল হবেন অথবা তাদেরকে শাস্তি প্রদান করবেন- এ ব্যাপারে তোমার কিছু করার নেই। কেননা তারা হচ্ছে যালিম।
English Sahih:
Not for you, [O Muhammad, but for Allah], is the decision whether He should [cut them down] or forgive them or punish them, for indeed, they are wrongdoers.
1 Tafsir Ahsanul Bayaan
এ বিষয়ে তোমার করণীয় কিছুই নেই,[১] তিনি (আল্লাহ) তাদের তওবা কবুল করবেন[২] অথবা শাস্তি প্রদান করবেন। কারণ, তারা অত্যাচারী।
[১] অর্থাৎ, এই কাফেরদেরকে হেদায়াত দেওয়া অথবা তাদের ব্যাপারে যে কোন প্রকারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা সব কিছুই আল্লাহর এখতিয়ারাধীন। বহু হাদীসে এসেছে যে, উহুদ যুদ্ধে নবী করীম (সাঃ)-এর দাঁত শহীদ এবং মুখমন্ডল আহত হলে তিনি বলেছিলেন, "এমন জাতি কিভাবে সফল হতে পারে, যারা তাদের নবীকে আহত করে।" তিনি যেন তাদের হেদায়াত থেকে নিরাশা প্রকাশ করেন। যার ফলে এই আয়াত অবতীর্ণ হল। অনুরূপ অন্যান্য বর্ণনায় এসেছে যে, তিনি (সাঃ) কাফেরদের উপর বদ্দুআ করার জন্য ক্বুনুতে নাযেলার যত্ন নিলে মহান আল্লাহ এই আয়াত অবতীর্ণ করেন। অতঃপর তিনি (সাঃ) বদ্দুআ করা বাদ দেন। (ইবনে কাসীর, ফাতহুল ক্বাদীর) এই আয়াত থেকে তাদের শিক্ষা গ্রহণ করা উচিত, যারা নবী করীম (সাঃ)-কে ইচ্ছাময় ক্ষমতার মালিক মনে করে। তাঁর তো এতটুকু এখতিয়ারও ছিল না যে, কাউকে সঠিক পথের পথিক করে দেন। অথচ তিনি (সাঃ) এই পথের দিকে আহবান করার জন্যই প্রেরিত হয়েছিলেন।
[২] এই সেই গোত্র যাদের উপর রসূল (সাঃ) বদ্দুআ করেছিলেন তারা সকলেই আল্লাহর তাওফীকে মুসলমান হয়ে যায়। অতএব এ কথা পরিষ্কার যে, সমস্ত ক্ষমতার মালিক এবং অদৃশ্য জগতের (গায়বী) জ্ঞানের অধিকারী একমাত্র আল্লাহ।
2 Tafsir Abu Bakr Zakaria
তিনি তাদের তাওবা কবুল করবেন বা তাদেরকে শাস্তি দেবেন– এ বিষয়ে আপনার করণীয় কিছুই নেই; কারণ তারা তো যালেম [১]।
[১] এখান থেকে আবারো ওহুদের ঘটনায় প্রত্যাবর্তন করা হয়েছে। মাঝখানে সংক্ষেপে বদর যুদ্ধের কথা উল্লেখ করা হয়েছিল। এ আয়াত অবতরনের কারণ এই যে, ওহুদ যুদ্ধে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের সম্মুখস্থ উপর ও নীচের চারটি দাঁতের মধ্যে থেকে নীচের পাটির ডান দিকের একটি দাত পড়ে গিয়েছিল এবং মুখমণ্ডল আহত হয়ে পড়েছিল। এতে দুঃখিত হয়ে তিনি এ বাক্যটি উচ্চারণ করেছিলেনঃ “যারা নিজেদের নবীর সাথে এমন দুর্ব্যবহার করে, তারা কেমন করে সাফল্য অর্জন করবে? অথচ নবী তাদেরকে আল্লাহ্র দিকে আহবান করেন।” এরই প্রেক্ষিতে আলোচ্য আয়াত নাযিল হয়। [বুখারী, মুসলিমঃ ১৭৯১]
এ আয়াতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামকে ধৈর্য ও সহনশীলতার শিক্ষা দেয়া হয়েছে। অনুরূপভাবে রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম রুকু থেকে উঠার পর কাফেরদের উপর বদ দো’আ করতেন, কিন্তু এ আয়াত নাযিল হওয়ার পর তিনি তা ত্যাগ করেন। [বুখারীঃ ৪৫৬০, ৪০৬৯, ৪০৭০ মুসলিমঃ ৬৭৫]
3 Tafsir Bayaan Foundation
এ বিষয়ে তোমার কোন অধিকার নেই- হয়তো তিনি তাদেরকে ক্ষমা করবেন অথবা তিনি তাদেরকে আযাব দেবেন। কারণ নিশ্চয় তারা যালিম।
4 Muhiuddin Khan
হয় আল্লাহ তাদের ক্ষমা করবেন কিংবা তাদেরকে আযাব দেবেন। এ ব্যাপারে আপনার কোন করণীয় নাই। কারণ তারা রয়েছে অন্যায়ের উপর।
5 Zohurul Hoque
এই ব্যাপারে তোমার আদৌ কোনো সংস্রব নেই যে তিনি তাদের প্রতি ফিরবেন, অথবা তাদের শাস্তি দেবেন, যদিও তারা নিঃসন্দেহ অন্যায়কারী।