Skip to main content

وَقَرْنَ فِيْ بُيُوْتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْاُوْلٰى وَاَقِمْنَ الصَّلٰوةَ وَاٰتِيْنَ الزَّكٰوةَ وَاَطِعْنَ اللّٰهَ وَرَسُوْلَهٗ ۗاِنَّمَا يُرِيْدُ اللّٰهُ لِيُذْهِبَ عَنْكُمُ الرِّجْسَ اَهْلَ الْبَيْتِ وَيُطَهِّرَكُمْ تَطْهِيْرًاۚ   ( الأحزاب: ٣٣ )

And stay
وَقَرْنَ
এবং তোমরা অবস্থান করো
in
فِى
মধ্যে
your houses
بُيُوتِكُنَّ
ঘরগুলোর তোমাদের
and (do) not
وَلَا
এবং না
display yourselves
تَبَرَّجْنَ
তোমরা প্রদর্শন করো
(as was the) display
تَبَرُّجَ
প্রদর্শনী
(of the times of) ignorance
ٱلْجَٰهِلِيَّةِ
অজ্ঞযুগের
the former
ٱلْأُولَىٰۖ
প্রাচীন
And establish
وَأَقِمْنَ
এবং তোমরা প্রতিষ্ঠিত করো
the prayer
ٱلصَّلَوٰةَ
সালাত
and give
وَءَاتِينَ
ও তোমরা আদায় করো
zakah
ٱلزَّكَوٰةَ
যাকাত
and obey
وَأَطِعْنَ
এবং তোমরা আনুগত্য করো
Allah
ٱللَّهَ
আল্লাহর
and His Messenger
وَرَسُولَهُۥٓۚ
ও রাসূলের তাঁর
Only
إِنَّمَا
কেবল
Allah wishes
يُرِيدُ
চান
Allah wishes
ٱللَّهُ
আল্লাহ্‌
to remove
لِيُذْهِبَ
যাতে দূর করে দেন
from you
عَنكُمُ
হ'তে তোমাদের
the impurity
ٱلرِّجْسَ
অপবিত্রতা
(O) People
أَهْلَ
(অর্থাৎ হ'তে) বাসিন্দাদের
(of) the House!
ٱلْبَيْتِ
(নাবীর) ঘরের
And to purify you
وَيُطَهِّرَكُمْ
এবং পবিত্র করবেন তোমাদেরকে
(with thorough) purification
تَطْهِيرًا
সম্পূর্ণ পবিত্র

তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):

আর তোমরা নিজেদের গৃহে অবস্থান কর, প্রাচীন অজ্ঞতার যুগের মত চোখ ঝলসানো প্রদর্শনী করে বেড়িও না। আর তোমরা নামায প্রতিষ্ঠা কর, যাকাত প্রদান কর এবং আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আনুগত্য কর। হে নবীর পরিবার! আল্লাহ কেবল চান তোমাদের থেকে অপবিত্রতা দূর করতে এবং তোমাদেরকে পবিত্র ও নিষ্কলংক করতে।

English Sahih:

And abide in your houses and do not display yourselves as [was] the display of the former times of ignorance. And establish prayer and give Zakah and obey Allah and His Messenger. Allah intends only to remove from you the impurity [of sin], O people of the [Prophet's] household, and to purify you with [extensive] purification.

1 Tafsir Ahsanul Bayaan

তোমরা স্বগৃহে অবস্থান কর[১] এবং (প্রাক-ইসলামী) জাহেলী যুগের মত নিজেদেরকে প্রদর্শন করে বেড়িয়ো না।[২] তোমরা নামায প্রতিষ্ঠা কর ও যাকাত প্রদান কর এবং আল্লাহ ও তাঁর রসূলের অনুগতা হও;[৩] হে নবী-পরিবার![৪] আল্লাহ তো কেবল তোমাদের মধ্য থেকে অপবিত্রতা দূর করতে চান এবং তোমাদেরকে সম্পূর্ণরূপে পবিত্র করতে চান।

[১] অর্থাৎ, তোমরা ঘরে অবস্থান কর এবং প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বাইরে যেও না। এতে পরিষ্কার করে দেওয়া হয়েছে যে, নারীদের কর্ম রাজনীতি, দুনিয়া পরিচালনা ও পরিশ্রম-উপার্জন করা নয়। বরং তাদের প্রধান কাজ হল, ঘরের চার দেওয়ালের মাঝে সুরক্ষিত থেকে গৃহকর্ম দেখাশোনা করা।

[২] এখানে নারীদের ঘর থেকে বের হওয়ার আদব বর্ণনা করে দেওয়া হয়েছে যে, যদি প্রয়োজনে বাড়ি থেকে বের হতে হয়, তবে তোমরা যেন সাজসজ্জা করে বাইরে না যাও কিংবা এমনভাবে বের না হও, যাতে তোমাদের সৌন্দর্য প্রকাশ পায়। যেমন বেপর্দা হয়ে এমনভাবে বের না হও, যাতে তোমাদের মাথা, চেহারা, ঘাড় ও বুক ইত্যাদি পুরুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। বরং সুগন্ধি ব্যবহার না করে সাধারণ পোশাকে আবৃত হয়ে পর্দার সাথে বের হবে। 'تبرج' এর অর্থ হল বেপর্দা হওয়া, সৌন্দর্য প্রকাশ ও প্রদর্শন করা। কুরআন এ কথা স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, 'تَبَرُّجْ' (পর্দাহীনতা) হল জাহেলী যুগের প্রথা; যা ইসলামের পূর্বে ছিল এবং ভবিষ্যতে যখন তা বেছে নেওয়া হবে, তখন তা জাহেলী প্রথাই গণ্য হবে। তার সাথে ইসলামের কোন সম্পর্ক নেই, তাতে তার নাম যতই সুন্দর ও মনলোভা (নারী-স্বাধীনতা, নারী-প্রগতি, সভ্যতা ইত্যাদি) রাখা হোক না কেন।

[৩] পূর্বের নির্দেশগুলি পাপকর্ম থেকে দূরে থাকার ব্যাপারে ছিল। এই সকল নির্দেশাবলী পুণ্যকর্ম বেছে নেওয়ার ব্যাপারে দেওয়া হচ্ছে।

[৪] 'আহলে বায়ত' (নবী-পরিবার) বলতে কাদেরকে বুঝানো হয়েছে? এতে কিছু মতভেদ রয়েছে। অনেকে তাঁর পবিত্র স্ত্রীগণকে বুঝিয়েছেন, যেমন এখানে কুরআনের পূর্ব বর্ণনায় প্রকাশ হচ্ছে। কুরআন এ স্থানে তাঁর পবিত্র স্ত্রীগণকেই 'আহলে বায়ত' বলেছে। কুরআনের অন্য স্থানেও নবী (সাঃ)-এর স্ত্রীগণকেই 'আহলে বায়ত' বলা হয়েছে। যেমন সুরা হূদের ৭৩ আয়াতে। সুতরাং তাঁর পবিত্র স্ত্রীগণের 'আহলে বায়ত' হওয়া কুরআনী দলীল দ্বারা প্রমাণিত। অনেকে হাদীসের বিভিন্ন বর্ণনার পরিপ্রেক্ষিতে 'আহলে বায়ত' বলতে আলী, ফাতেমা এবং হাসান-হুসাইন (রাঃ)-কে ধরেন এবং নবী-পত্নীগণকে তার বাইরে মনে করেন। পক্ষান্তরে পূর্বোক্ত উলামাগণ এই চারজনকে আহলে বায়তের বাইরে মনে করেন। তবে মধ্যপন্থা এই যে, উভয় শ্রেণীর ব্যক্তিবর্গই 'আহলে বায়ত'। নবী-পত্নীগণ কুরআনের দলীলের ভিত্তিতে এবং মেয়ে-জামাই ও তাঁদের পুত্রগণ সেই সহীহ বর্ণনার ভিত্তিতে 'আহলে বায়ত' যাতে নবী (সাঃ) তাঁদেরকে নিজের চাদরে ঢেকে নিয়ে বলেছিলেন, "হে আল্লাহ! এরা আমার আহলে বায়ত।" যার অর্থ হল যে, এরাও আমার আহলে বায়তের মধ্যে শামিল। অথবা তা দু'আ ছিল যে, "হে আল্লাহ! এদেরকেও আমার পত্নীগণের মত আমার আহলে বায়তে শামিল করে নাও।" আর এইভাবে সকল দলীলগুলি সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়ে যায়। (বিস্তারিত জানার জন্য আল্লামা শাওকানীর ফাতহুল ক্বাদীর দ্রষ্টব্য)