১০-১২ নম্বর আয়াতের তাফসীর :
আল্লাহ তা‘আলা তাঁর বান্দাদেরকে নির্দেশ প্রদান করছেন যে, তারা যেন আল্লাহ তা‘আলার আনুগত্য করার মাধ্যমে এবং তাঁর অবাধ্য হওয়া থেকে বিরত থাকার মাধ্যমে তাঁকে যথাযথ ভয় করে। মনে রাখবে যারা এ দুনিয়াতে ভাল কাজ করে তাদের জন্য দুনিয়া ও পরকাল উভয় অবস্থাতেই রয়েছে কল্যাণ। পরকালে রয়েছে চিরস্থায়ী জান্নাত আর দুনিয়াতে তারা আল্লাহ তা‘আলা প্রদত্ত সুস্থতা, নিরাপত্তা, বিজয়, সাহায্য, গনিমত ইত্যাদি প্রাপ্ত হবে। কেননা সৎ কর্মের প্রতিদান ভালই হয়ে থাকে।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
(هَلْ جَزَا۬ءُ الْإِحْسَانِ إِلَّا الْإِحْسَانُ)
“উত্তম কাজের পুরস্কার উত্তম (জান্নাত) ব্যতীত আর কী হতে পারে?” (সূরা র্আ রহমান ৫৫ : ৬০)
এরপর আল্লাহ তা‘আলা বলেন : আল্লাহ তা‘আলার পৃথিবী সঙ্কীর্ণ নয়, বরং তা প্রশস্ত। যদি আল্লাহ তা‘আলার দীন পালন করতে গিয়ে তোমরা কোথাও বাধাগ্রস্ত হও তাহলে সেখান থেকে হিজরত করে অন্যত্র চলে যাও, যেখানে গিয়ে তোমরা নিরাপদে আল্লাহ তা‘আলার দীন পালন করতে পারবে। যেখানে তোমাদেরকে ধর্ম পালনে কেউ কখনো বাধা দেবে না।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
(إِنَّ الَّذِيْنَ تَوَفّٰهُمُ الْمَلٰ۬ئِكَةُ ظَالِمِيْٓ أَنْفُسِهِمْ قَالُوْا فِيْمَ كُنْتُمْ ط قَالُوْا كُنَّا مُسْتَضْعَفِيْنَ فِي الْأَرْضِ ط قَالُوْآ أَلَمْ تَكُنْ أَرْضُ اللّٰهِ وَاسِعَةً فَتُهَاجِرُوْا فِيْهَا)
“যারা নিজেদের ওপর জুলুম করে, তাদের প্রাণ হরণের সময় ফেরেশতাগণ বলে, ‘তোমরা কী অবস্থায় ছিলে? তারা বলে, ‘দুনিয়ায় আমরা অসহায় ছিলাম।’
তারা বলে, ‘আল্লাহর জমিন কি প্রশস্ত ছিল না যেখানে তোমরা হিজরত করতে?’’ (সূরা আন্ নিসা ৪ : ৯৭)
আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,
(يَا عِبَادِيَ الَّذِيْنَ اٰمَنُوْآ إِنَّ أَرْضِيْ وَاسِعَةٌ فَإِيَّايَ فَاعْبُدُوْنِ)
“হে আমার মু’মিন বান্দাগণ! নিশ্চয় আমার পৃথিবী প্রশস্ত; সুতরাং তোমরা আমারই ইবাদত কর।” (সূরা ‘আনকাবূত ২৯ : ৫৬)
সুতরাং পরবর্তীতে কোন অভিযোগ গ্রহণযোগ্য হবে না যে, আমরা জমিনে ইবাদত করতে বাধাগ্রস্ত হয়েছি। তাই যেখানে ইবাদত করতে বাধা আসবে সেখান থেকে নিরাপদ স্থানে হিজরত করতে হবে। তথাপি সঠিক ধর্ম ত্যাগ করা যাবে না।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয় :
১. সৎ কর্মের প্রতিদান ভাল-ই হয়ে থাকে।
২. ইবাদত করতে বাধা আসলে নিরাপদ স্থানে হিজরত করতে হবে।
৩. একনিষ্ঠভাবে আল্লাহ তা‘আলার ইবাদত করতে হবে।