Skip to main content

আল মুমতাহিনা শ্লোক ১

يٰٓاَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا لَا تَتَّخِذُوْا عَدُوِّيْ وَعَدُوَّكُمْ اَوْلِيَاۤءَ تُلْقُوْنَ اِلَيْهِمْ بِالْمَوَدَّةِ وَقَدْ كَفَرُوْا بِمَا جَاۤءَكُمْ مِّنَ الْحَقِّۚ يُخْرِجُوْنَ الرَّسُوْلَ وَاِيَّاكُمْ اَنْ تُؤْمِنُوْا بِاللّٰهِ رَبِّكُمْۗ اِنْ كُنْتُمْ خَرَجْتُمْ جِهَادًا فِيْ سَبِيْلِيْ وَابْتِغَاۤءَ مَرْضَاتِيْ تُسِرُّوْنَ اِلَيْهِمْ بِالْمَوَدَّةِ وَاَنَا۠ اَعْلَمُ بِمَآ اَخْفَيْتُمْ وَمَآ اَعْلَنْتُمْۗ وَمَنْ يَّفْعَلْهُ مِنْكُمْ فَقَدْ ضَلَّ سَوَاۤءَ السَّبِيْلِ   ( الممتحنة: ١ )

O you!
يَٰٓأَيُّهَا
ওহে
who!
ٱلَّذِينَ
যারা
believe!
ءَامَنُوا۟
ঈমান এনেছ
(Do) not
لَا
না
take
تَتَّخِذُوا۟
তোমরা গ্রহণ করো
My enemies
عَدُوِّى
আমার শত্রুকে
and your enemies
وَعَدُوَّكُمْ
ও তোমাদের শত্রুকে
(as) allies
أَوْلِيَآءَ
বন্ধুরূপে
offering
تُلْقُونَ
তোমরা স্থাপন কর
them
إِلَيْهِم
তাদের সাথেে
love
بِٱلْمَوَدَّةِ
বন্ধুত্ব
while
وَقَدْ
অথচ নিশ্চয়
they have disbelieved
كَفَرُوا۟
ত্রা অস্বীকার করেছে
in what
بِمَا
যা
came to you
جَآءَكُم
তোমাদের কাছে এসেছে
of
مِّنَ
থেকে
the truth
ٱلْحَقِّ
সত্য
driving out
يُخْرِجُونَ
তারা বহিষ্কার করেছে
the Messenger
ٱلرَّسُولَ
রসূলকে
and yourselves
وَإِيَّاكُمْۙ
এবং তোমাদেরকেও
because
أَن
একারণে যে
you believe
تُؤْمِنُوا۟
তোমরা ঈমান এনেছো
in Allah
بِٱللَّهِ
আল্লাহর উপর
your Lord
رَبِّكُمْ
তোমাদের রব
If
إِن
যদি
you
كُنتُمْ
তোমরা
come forth
خَرَجْتُمْ
বের হয়ে থাকো
(to) strive
جِهَٰدًا
জিহাদে
in
فِى
(মধ্যে)
My way
سَبِيلِى
আমার পথে
and (to) seek
وَٱبْتِغَآءَ
ও সন্ধানে
My Pleasure
مَرْضَاتِىۚ
আমার সন্তুষ্টির
You confide
تُسِرُّونَ
তোমরা গোপনে কর
to them
إِلَيْهِم
তাদের সাথে
love
بِٱلْمَوَدَّةِ
বন্ধুত্ব
but I Am
وَأَنَا۠
আমি অথচ
most knowing
أَعْلَمُ
সম্যক অবগত
of what
بِمَآ
যা কিছু
you conceal
أَخْفَيْتُمْ
তোমরা গোপন কর
and what
وَمَآ
ও যা
you declare
أَعْلَنتُمْۚ
তোমরা প্রকাশ কর
And whoever
وَمَن
এবং যে
does it
يَفْعَلْهُ
তা করবে
among you
مِنكُمْ
তোমাদের মধ্যে
then certainly
فَقَدْ
অতঃপর নিশ্চয়
he has strayed
ضَلَّ
ভ্রষ্ট হয়েছে
(from the) straight
سَوَآءَ
সোজা
path
ٱلسَّبِيلِ
পথ থেকে

তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):

হে ঈমানদারগণ! তোমরা আমার ও তোমাদের শত্রুদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না, তোমরা তাদের কাছে বন্ধুত্বের খবর পাঠাও, অথচ যে সত্য তোমাদের কাছে এসেছে তারা তা প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা রসূলকে আর তোমাদেরকে শুধু এ কারণে বের করে দিয়েছে যে, তোমরা তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহয় বিশ্বাস কর। তোমরা যদি আমার সন্তুষ্টি কামনায় আমার পথে জিহাদে বের হয়ে থাক, তাহলে তোমরা কেন গোপনে তাদের সাথে বন্ধুত্ব করছ? তোমরা যা গোপন কর আর তোমরা যা প্রকাশ কর, তা আমি খুব ভাল করেই জানি। তোমাদের মধ্যে যে তা করে সে সরল পথ থেকে ভ্রষ্ট হয়ে গেছে।

English Sahih:

O you who have believed, do not take My enemies and your enemies as allies, extending to them affection while they have disbelieved in what came to you of the truth, having driven out the Prophet and yourselves [only] because you believe in Allah, your Lord. If you have come out for jihad [i.e., fighting or striving] in My cause and seeking means to My approval, [take them not as friends]. You confide to them affection [i.e., instruction], but I am most knowing of what you have concealed and what you have declared. And whoever does it among you has certainly strayed from the soundness of the way.

1 Tafsir Ahsanul Bayaan

হে বিশ্বাসীগণ! আমার শত্রু ও তোমাদের শত্রুকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না।[১] তোমরা তাদের কাছে বন্ধুত্বের বার্তা পাঠাও,[২] অথচ তারা তোমাদের নিকট যে সত্য এসেছে, তা প্রত্যাখ্যান করেছে, রসূলকে এবং তোমাদেরকে বহিষ্কৃত করেছে এই কারণে যে, তোমরা তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহকে বিশ্বাস কর।[৩] যদি তোমরা আমার সন্তুষ্টিলাভের জন্য আমার পথে জিহাদের উদ্দেশ্যে বহির্গত হয়ে থাক (তাহলে তাদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না)।[৪] তোমরা গোপনে তাদের প্রতি বন্ধুত্বের বার্তা পাঠাও, অথচ তোমরা যা গোপন কর এবং তোমরা যা প্রকাশ কর, তা আমি সম্যক অবগত। তোমাদের যে কেউ এটা করে, সে তো সরল পথ হতে বিচ্যুত হয়। [৫]

[১] মক্কার কাফেরগণ এবং নবী (সাঃ)-এর মাঝে হুদাইবিয়াতে যে সন্ধিচুক্তি হয়েছিল, মক্কার কাফেররা তা ভঙ্গ করল। এই জন্য নবী (সাঃ)ও গোপনে মুসলিমদেরকে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণের নির্দেশ দিলেন। হাত্বেব ইবনে আবী বালতাআ' (রাঃ) বদর যুদ্ধে অংশ গ্রহণকারী একজন মুহাজির সাহাবী ছিলেন। কুরাইশদের সাথে তাঁর কোন আত্মীয়তা ছিল না। কিন্তু তাঁর স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততি মক্কাতেই ছিল। তিনি ভাবলেন যে, মক্কার কুরাইশদেরকে যদি নবী (সাঃ)-এর প্রস্তুতি সম্পর্কে জানিয়ে দিই, তাহলে এই অনুগ্রহের বদলায় তারা আমার সন্তান-সন্ততি ও মাল-ধনের হিফাযত করবে। তাই তিনি এই সংবাদটা লিখিত আকারে এক মহিলার মাধ্যমে মক্কার কাফেরদের নিকট প্রেরণ করলেন। এদিকে অহীর মাধ্যমে নবী করীম (সাঃ)-কে ব্যাপারটা জানিয়ে দেওয়া হয়। তাই তিনি আলী, মিকদাদ এবং যুবায়ের (রাঃ)-দেরকে বললেন, "যাও, 'রওয্বাতু খাখ' নামক স্থানে মক্কাগামিনী একজন মহিলাকে পাবে; তার কাছে আছে একটি পত্র, সেটি উদ্ধার করে নিয়ে আসবে।" তাঁরা গিয়ে তাঁর কাছ থেকে পত্র উদ্ধার করে নিয়ে এলেন, যা সে তার মাথার চুলের মধ্যে লুকিয়ে রেখেছিল। তিনি হাত্বেব (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলেন যে, "তুমি এ কাজ কেন করেছ?" তিনি বললেন, 'আমি এ কাজ কুফরী এবং দ্বীন থেকে বিমুখ হয়ে যাওয়ার কারণে করিনি, বরং অন্যান্য মুহাজির সাহাবীদের আত্মীয়-স্বজন মক্কাতে বিদ্যমান থাকায় তারা এঁদের (মুহাজির সাহাবীদের) সন্তান-সন্ততির হিফাযত করে। আমার সেখানে কোন আত্মীয়-স্বজন নেই। তাই আমি চিন্তা করলাম যে, আমি যদি তাদের কিছু জানিয়ে দিই, তবে তারা আমার অনুগ্রহের মূল্য দিয়ে আমার সন্তানদের হিফাযত করবে।' রসূল (সাঃ) এ কথা সত্য জেনে তাঁকে কিছুই বললেন না। তবুও আল্লাহ সতর্কতা স্বরূপ এই আয়াত অবতীর্ণ করলেন। যাতে আগামীতে কোন মু'মিন কোন কাফেরের সাথে যেন এই ধরনের বন্ধুত্বের সম্পর্ক না রাখে। (বুখারী সূরা মুমতাহিনার তাফসীর, মুসলিম ফাযায়েলে সাহাবা অধ্যায়)

[২] অর্থাৎ, নবী (সাঃ)-এর এই প্রস্তুতির খবর তাদের কাছে পৌঁছে দিয়ে তাদের সাথে বন্ধুত্ব সম্পর্ক স্থাপন করতে চাও?

[৩] যখন তাদের তোমাদের সাথে এবং সত্যের সাথে এই ধরনের আচরণ, তখন তোমাদের জন্য কি এটা উচিত যে, তোমরা তাদের সাথে ভালবাসা রাখবে ও সহানুভূতি দেখাবে?

[৪] বন্ধনীর মাঝে এটা শর্তের জওয়াব; যা আয়াতে ঊহ্য আছে।

[৫] অর্থাৎ, আমার এবং তোমাদের শত্রুদের সাথে ভালবাসার সম্পর্ক জুড়া এবং তাদের কাছে গোপনে পত্র ও বার্তা প্রেরণ করা হল ভ্রষ্টতার পথ, যা অবলম্বন করা কোন মুসলিমের উচিত নয়।