আর মূসার সম্প্রদায়ের মধ্যে এমন দল রয়েছে যারা অন্যকে ন্যায়ভাবে পথ দেখায় ও সে অনুযায়ীই (বিচারে) ইনসাফ করে [১]।
[১] এ আয়াতে সত্যনিষ্ঠ দল বলতে কাদেরকে বুঝানো হয়েছে, এ ব্যাপারে দু’টি মত রয়েছে-
এক. অধিকাংশ অনুবাদক এ আয়াতের অনুবাদ এভাবে করেছেন- “মূসার জাতির মধ্যে এমন একটি দল আছে যারা সত্য অনুযায়ী পথনির্দেশ দেয় এবং ইনসাফ করে”। অর্থাৎ তাদের মতে কুরআন নাযিল হবার সময় বনী-ইসরাঈলীদের যে নৈতিক ও মানসিক অবস্থা বিরাজমান ছিল তারই কথা এ আয়াতে বর্ণনা করা হয়েছে। অর্থাৎ বিগত আয়াতসমূহে মূসা আলাইহিস সালামের সম্প্রদায়ের অসদাচরণ, কুটতর্ক এবং গোমরাহীর বর্ণনা ছিল। কিন্তু এ আয়াতে বলা হয়েছে যে, গোটা জাতিটাই এমন নয়; বরং তাদের মধ্যে কিছু লোক ভালও রয়েছে যারা সত্যানুসরণ করে এবং ন্যায়ভিত্তিক মীমাংসা করে। এরা হল সেসব লোক, যারা তাওরাত ও ইঞ্জীলের যুগে সেগুলোর হেদায়াত অনুযায়ী আমল করত এবং যখন খাতামুন্নাবিয়ীন সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আবির্ভাব হয়, তখন তাওরাত ও ইঞ্জলের সুসংবাদ অনুসারে তার উপর ঈমান আনে এবং তার যথাযথ অনুসরণও করে। বনী-ইসরাঈলদের এই সত্যনিষ্ঠ দলটির উল্লেখও কুরআনুল কারীমে বারংবার করা হয়েছে। যেমন, সূরা আলে-ইমরানঃ ১১৩, ১৯৯, সূরা আল-বাকারাহঃ ১২১, সূরা আল-ইস্রা ১০৭-১০৯, সূরা আল-কাসাসঃ ৫২৫৪। [ ইবন কাসীর]
দুই. পূর্বাপর আলোচনা বিশ্লেষণ করে কোন কোন মুফাসসির এ মত দিয়েছেন যে, এখানে মূসার সময় তথা বনী-ইসরাঈলীদের যে অবস্থা ছিল তারই কথা বর্ণনা করা হয়েছে এবং এর মাধ্যমে এ বক্তব্য প্রকাশ করা হয়েছে যে, এ জাতির মধ্যে যখন বাছুর পূজার অপরাধ অনুষ্ঠিত হয় এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে তার উপর পাকড়াও করা হয় তখন সমগ্র জাতি গোমরাহ ছিল না; বরং তাদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ তখনো সৎ ছিল। [তাবারী; ইবন কাসীর] মোটকথা, আয়াতের মর্ম দাঁড়াল এই যে, মূসা আলাইহিস সালামের সম্প্রদায়ের মধ্যে একটি দল রয়েছে যারা সব সময়ই সত্যে সুদৃঢ় ছিল। তারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আবির্ভাবের সংবাদ শুনে যারা ইসলামে দীক্ষিত হয়েছিল তারাই হোক অথবা মূসার যুগে যারা হকপন্থী ছিল তারা। যারা গো-বাছুর পূজা করেনি বা নবীদেরকে হত্যা করেনি।