কিন্তু যারা ধৈর্য ধরে ও ভাল কাজ করে (তারা এরূপ হয় না); এমন লোকদের জন্য রয়েছে ক্ষমা এবং মহা প্রতিদান। [১]
[১] অর্থাৎ, মু'মিনগণ সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যে থাকুক বা দুঃখ-কষ্টে থাকুক উভয় অবস্থাতেই তারা আল্লাহর বিধান অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করেন। যেমন হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, নবী (সাঃ) শপথ করে বলেছেন, "সেই সত্তার শপথ, যার হাতে আমার প্রাণ আছে! আল্লাহ তাআলা মু'মিনদের জন্য যে ফায়সালাই করেন, তাদের ভালোর জন্যই করেন। যদি সে সুখ লাভ করে, তাহলে তার উপর সে আল্লাহর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে, যা তার জন্য মঙ্গলময় (অর্থাৎ, নেকীর কারণ হয়)। আর যদি কোন দুঃখ-কষ্ট পায়, তাহলে ধৈর্য ধারণ করে, আর এটাও তাঁর জন্য মঙ্গলময় (অর্থাৎ, নেকীর কারণ) হয়। এই বৈশিষ্ট্য একজন মু'মিন ব্যতীত অন্য কারো নয়।" (মুসলিম) অন্য আরো একটি হাদীসে বলেন যে, "একজন মু'মিন যখন কোন দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয় এবং কষ্ট পায়, এমনকি তার পায়ে কাঁটা প্রবিষ্ট হয়, তখন আল্লাহ তাআলা তার কারণে তাঁর গুনাহ মাফ করে দেন।"
(আহমাদ ৩/৪) সূরা মাআরিজের ৭০;১৯-২২ নং আয়াতেও এই বিষয়টি বর্ণনা করা হয়েছে।)
2 Tafsir Abu Bakr Zakaria
কিন্তু যারা ধৈর্যশীল [১] ও সৎকর্মপরায়ণ তাদেরই জন্য আছে ক্ষমা ও মহাপুরস্কার।
[১] এ আয়াতে সত্যিকার মানুষকে সাধারণ মানবীয় দুর্বলতা হতে পৃথক করে বলা হয়েছে যে, সে সব ব্যক্তি সাধারণ মানবীয় দুর্বলতার উর্ধের্ব যাদের মধ্যে দুটি বিশেষ গুণ রয়েছে। একটি হচ্ছে ধৈর্য ও সহনশীলতা, দ্বিতীয়টি সৎকর্মশীলতা। সবর শব্দটি আরবী ভাষায় অনেক ব্যাপকতর অর্থে ব্যবহৃত হয়। সবরের আভিধানিক অর্থ হচ্ছে বাধা দেয়া, বন্ধন করা। কুরআন ও হাদীসের পরিভাষায় অন্যায় কার্য হতে প্রবৃত্তিকে নিয়ন্ত্রণ করাকে সবর বলে। সুতরাং শরীআতের পরিপন্থী যাবতীয় পাপকার্য হতে প্রবৃত্তিকে দমন করা যেমন সবরের অন্তর্ভুক্ত তদ্রুপ ফরয, ওয়াজিব, সুন্নাত ও মুস্তাহাব ইত্যাদি নেক কাজের জন্য প্রবৃত্তিকে বাধ্য করাও সবরের শামিল। এর বাইরে বিপদাপদে নিজেকে সংযত রাখতে পারাও সবরের অন্তর্ভুক্ত। [ইবনুল কাইয়্যেম; মাদারেজুস সালেকীন] রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “যার হাতে আমার আত্মা তার শপথ করে বলছি, একজন মুমিনের উপর আপতিত যে কোন ধরনের চিন্তা, পেরেশানী, কষ্ট, ব্যথা, দুর্ভাবনা এমনকি একটি কাঁটা ফুটলেও এর মাধ্যমে আল্লাহ তার গুণাহের কাফ্ফারা করে দেন”। [বুখারীঃ ৫৬৪১, ৫৬৪২, মুসলিমঃ ২৫৭৩] অন্য হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “যার হাতে আমার প্রাণ তার শপথ করে বলছি, আল্লাহ মুমিনের জন্য যে ফয়সালাই করেছেন এটা তার জন্য ভাল হয়ে দেখা দেয়, যদি কোন ভাল কিছু তার জুটে যায় তখন সে শুকরিয়া আদায় করে সুতরাং তা তার জন্য কল্যাণ। আর যদি খারাপ কিছু তার ভাগ্যে জুটে যায় তখন সে ধৈর্য ধারণ করে তখন তার জন্য তা কল্যাণ হিসেবে পরিগণিত হয়। একমাত্র মুমিন ছাড়া কারো এ ধরনের সৌভাগ্য হয় না। [মুসলিমঃ ২৯৯৯]
3 Tafsir Bayaan Foundation
তবে যারা সবর করেছে এবং সৎকর্ম করেছে, তাদের জন্যই রয়েছে ক্ষমা ও মহা প্রতিদান।
4 Muhiuddin Khan
তবে যারা ধৈর্য্যধারণ করেছে এবং সৎকার্য করেছে তাদের জন্য ক্ষমা ও বিরাট প্রতিদান রয়েছে।
5 Zohurul Hoque
তারা ছাড়া যারা ধৈর্যধারণ করে ও সৎকর্ম করে, এরাই -- এদের জন্য রয়েছে পরিত্রাণ ও মহাপুরস্কার।