কাহফ শ্লোক ৮৬

চলতে চলতে সে যখন সূর্যের অস্ত গমন স্থানে পৌছল [১] তখন সে সূর্যকে এক পংকিল জলাশয়ে অস্তগমন করতে দেখল [২] এবং সে সেখানে এক সম্প্রদায়কে দেখতে পেল। আমরা বললাম, ‘হে যুল-কারনাইন! তুমি এদেরকে শাস্তি দিতে পার অথবা এদের ব্যাপার সদয়ভাবে গ্রহণ করতে পার।

[১] কোন কোন মুফাসসির বলেন, তিনি পশ্চিম দিকে দেশের পর দেশ জয় করতে করতে স্থলভাগের শেষ সীমানায় পৌঁছে যান, এরপর ছিল সমুদ্র। এটিই হচ্ছে সূর্যাস্তের সীমানার অর্থ। হাবীব ইবন হাম্মায বলেন; আমি আলী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর কাছে বসা ছিলাম। এমতাবস্থায় একলোক তাকে জিজ্ঞেস করল যে, যুলকারনাইন কিভাবে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যদেশে পৌঁছুতে সক্ষম হয়েছিল? তিনি বললেন; সুবহানাল্লাহ! আল্লাহ আকাশের মেঘকে তার নিয়ন্ত্রণাধীন করেছিলেন। পর্যাপ্ত উপায়-উপকরণ দিয়েছিলেন এবং প্রচুর শক্তি-সামৰ্থ দান করেছিলেন। তারপর আলী বললেন; আরও বলব? লোকটি চুপ করলে আলী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুও চুপ করে যান। ' [আল-মুখতারাহ; ৪০৯] [ইবন কাসীর]

[২] حَمِىَٔةٍ এর শাব্দিক অর্থ কালো জলাভূমি অথবা কাদা। অর্থাৎ তিনি সূর্যকে তার দৃশ্যে মহাসাগরে ডুবতে দেখলেন। আর সাধারণত; যখন কেউ সমুদ্র তীরে দাঁড়িয়ে সূর্য অস্ত যাওয়া প্রত্যক্ষ করবে, তখনই তার এটা মনে হবে, অথচ সূর্য কখনও তার কক্ষপথ ত্যাগ করেনি। [ইবন কাসীর]। এখানে সে জলাশয়কে বোঝানো হয়েছে, যার নীচে কালো রঙের কাদা থাকে। ফলে পানির রঙও কালো দেখায়। এখানে একটি বিষয় স্পষ্ট হওয়া উচিত, তা হলো, কুরআন একথা বলেনি যে, সূর্য কালো জলাশয়ে ডুবে। বরং এখানে যুলকারনাইনের অনুভূতিই শুধু ব্যক্ত করা হয়েছে।

অবশেষে যখন সে সূর্যাস্তের স্থানে পৌঁছল, তখন সে সূর্যকে একটি কর্দমাক্ত পানির ঝর্ণায় ডুবতে দেখতে পেল এবং সে এর কাছে একটি জাতির দেখা পেল। আমি বললাম, ‘হে যুলকারনাইন, তুমি তাদেরকে আযাবও দিতে পার অথবা তাদের ব্যাপারে সদাচরণও করতে পার’।

অবশেষে তিনি যখন সুর্যের অস্তাচলে পৌছলেন; তখন তিনি সুর্যকে এক পঙ্কিল জলাশয়ে অস্ত যেতে দেখলেন এবং তিনি সেখানে এক সম্প্রদায়কে দেখতে পেলেন। আমি বললাম, হে যুলকারনাইন! আপনি তাদেরকে শাস্তি দিতে পারেন অথবা তাদেরকে সদয়ভাবে গ্রহণ করতে পারেন।

পরে যখন তিনি সূর্য অস্ত যাবার স্থানে পৌঁছলেন, তিনি এটিকে দেখতে পেলেন এক কালো জলাশয়ে অস্তগমন করছে, আর তার কাছে পেলেন এক অধিবাসী। আমরা বললাম -- ''হে যুল্‌ক্কারনাইন, তুমি শাস্তি দিতে পার অথবা এদের সদয়ভাবে গ্রহণ করতে পার।’’