আর যখন তাদেরকে বলা হয়, ‘আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন তাতে ঈমান আন’; তারা বলে, ‘আমাদের প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে তাতে আমরা বিশ্বাস করি’। অথচ পরবর্তী কিতাবকে (কুরআনকে) তারা প্রত্যাখ্যান করে, যদিও তা সত্য এবং যা তাদের নিকট আছে তার সমর্থক। বল, ‘যদি তোমরা বিশ্বাসী ছিলে তবে কেন তোমরা পূর্বে নাবীদেরকে হত্যা করেছিলে’?
English Sahih:
And when it is said to them, "Believe in what Allah has revealed," they say, "We believe [only] in what was revealed to us." And they disbelieve in what came after it, while it is the truth confirming that which is with them. Say, "Then why did you kill the prophets of Allah before, if you are [indeed] believers?"
1 Tafsir Ahsanul Bayaan
যখন তাদের বলা হয়, আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন তাতে বিশ্বাস কর, তারা বলে আমাদের প্রতি যা অবতীর্ণ করা হয়েছে আমরা তাতে বিশ্বাস করি [১] আর তা ছাড়া সব কিছুই তারা অবিশ্বাস করে; যদিও তা সত্য এবং যা তাদের নিকট আছে তার সমর্থক। বল, যদি তোমরা বিশ্বাসী হতে তবে কেন তোমরা অতীতে নবীগণকে হত্যা করেছিলে? [২]
[১] অর্থাৎ, তাওরাতের উপর আমরা ঈমান রাখি, কাজেই আর কুরআনের উপর ঈমান আনার আমাদের কোনই প্রয়োজন নেই।
[২] অর্থাৎ, তাওরাতের উপর তোমাদের ঈমান রাখার দাবীও সঠিক নয়। যদি তাওরাতের উপর তোমাদের ঈমান থাকত, তাহলে তোমরা আম্বিয়াদেরকে হত্যা করতে না। এ থেকে পরিষ্কার হয়ে যায় যে, এখনো তোমাদের অস্বীকার কেবল হিংসা ও শত্রুতার কারণে।
2 Tafsir Abu Bakr Zakaria
আর যখন তাদের কে বলা হয়, ‘আল্লাহ্ যা নাযিল করেছেন তাতে ঈমান আনো’ ,তারা বলে ‘আমাদের প্রতি যা নাযিল হয়েছে আমরা কেবল তাতে ঈমান আনি’। অথচ এর বাইরে যা কিছু আছে সবকিছুই তারা অস্বীকার করে, যদিও তা সত্য এবং তাদের নিকট যা আছে তার সত্যায়নকারী। বলুন, ‘ যদি তোমরা মুমিন হয়ে থাক, তবে কেন তোমরা অতীতে আল্লাহ্র নবীদেরকে হত্যা করেছিলে [১] ?
[১] ‘আমরা শুধু তাওরাতের প্রতিই ঈমান আনব, অন্যান্য গ্রন্থের প্রতি ঈমান আনব না,’ ইয়াহুদীদের এ উক্তি সুস্পষ্ট কুফর। সেই সাথে তাদের উক্তি যা (তাওরাত) আমাদের প্রতি নাযিল করা হয়েছে' - এ থেকে প্রতিহিংসা বুঝা যায়। এর পরিস্কার অর্থ হচ্ছে এই যে, অন্যান্য গ্রন্থ যেহেতু আমাদের প্রতি নাযিল করা হয়নি, কাজেই আমরা সেগুলোর প্রতি ঈমান আনব না। আল্লাহ্ তা'আলা তিন পস্থায় তাদের এ উক্তি খণ্ডন করেছেন।
প্রথমতঃ অন্যান্য গ্রন্থের সত্যতা ও বাস্তবতা যখন অকাট্য দলীল দ্বারা প্রমাণিত, তখন সেগুলো অস্বীকার করার কোন কারণ থাকতে পারে না। অবশ্য দলীলের মধ্যে কোন আপত্তি থাকলে তারা তা উপস্থিত করে দূর করে নিতে পারত। অহেতুক অস্বীকার করার কোন অর্থ হয় না।
দ্বিতীয়তঃ অন্যান্য গ্রন্থের মধ্যে একটি হচ্ছে কুরআনুল কারীম, যা তাওরাতেরও সত্যায়ন করে। সুতরাং কুরআনুল কারীমকে অস্বীকার করলে তাওরাতের অস্বীকৃতিও অপরিহার্য হয়ে পড়ে। তৃতীয়তঃ আল্লাহ্র সকল গ্রন্থের মতেই নবীদের হত্যা করা কুফর ! তোমাদের সম্পপ্রদায়ের লোকেরা কয়েকজন নবীকে হত্যা করেছে। অথচ তারা বিশেষভাবে তাওরাতের শিক্ষাই প্রচার করতেন। তোমরা সেসব হত্যাকারীকেই নেতা ও পুরোহিত মনে করেছ। এভাবে কি তোমরা তাওরাতের সাথেই কুফরী করনি? সুতরাং তাওরাতের প্রতি তোমাদের ঈমান আনার দাবী আসার প্রমাণিত হয়। মোটকথা, কোন দিক দিয়েই তোমাদের কথা ও কাজ শুদ্ধ ও সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। পরবর্তী আয়াতে আরও কতিপয় যুক্তির দ্বারা ইয়াহুদীদের দাবী খণ্ডন করা হয়েছে। [মাআরিফুল কুরআন]
3 Tafsir Bayaan Foundation
আর যখন তাদেরকে বলা হয়, ‘আল্লাহ যা নাযিল করেছেন তোমরা তার প্রতি ঈমান আন’। তারা বলে, ‘আমাদের প্রতি যা নাযিল হয়েছে আমরা তা বিশ্বাস করি’। আর এর বাইরে যা আছে তারা তা অস্বীকার করে। অথচ তা সত্য, তাদের সাথে যা আছে তার সত্যায়নকারী। বল, ‘তবে কেন তোমরা আল্লাহর নবীদেরকে পূর্বে হত্যা করতে, যদি তোমরা মুমিন হয়ে থাক’?
4 Muhiuddin Khan
যখন তাদেরকে বলা হয়, আল্লাহ যা পাঠিয়েছেন তা মেনে নাও, তখন তারা বলে, আমরা মানি যা আমাদের প্রতি অবর্তীণ হয়েছে। সেটি ছাড়া সবগুলোকে তারা অস্বীকার করে। অথচ এ গ্রন্থটি সত্য এবং সত্যায়ন করে ঐ গ্রন্থের যা তাদের কাছে রয়েছে। বলে দিন, তবে তোমরা ইতিপূর্বে পয়গম্বরদের হত্যা করতে কেন যদি তোমরা বিশ্বাসী ছিলে?
5 Zohurul Hoque
আর যখন তাদের বলা হয় -- “ঈমান আনো আল্লাহ্ যা নাযিল করেছেন তাতে,” তারা বলে -- “আমরা বিশ্বাস করি যা আমাদের কাছে নাযিল হয়েছিল।” অথচ তারা অবিশ্বাস করে যা তার পরে এসেছে, যদিও উহা হলো ধ্রুব সত্য, সমর্থন করছে যা তাদের কাছে রয়েছে তার। বলো -- “তাহলে তোমরা কেন আল্লাহ্র নবীদের এর আগে হত্যা করতে যাচ্ছিলে? যদি তোমরা বিশ্বাসী হয়ে থাকো।”