আল-ফুরকান আয়াত ৭৪
وَالَّذِيْنَ يَقُوْلُوْنَ رَبَّنَا هَبْ لَنَا مِنْ اَزْوَاجِنَا وَذُرِّيّٰتِنَا قُرَّةَ اَعْيُنٍ وَّاجْعَلْنَا لِلْمُتَّقِيْنَ اِمَامًا ( الفرقان: ٧٤ )
Wallazeena yaqooloona Rabbanaa hab lanaa min azwaajinaa wa zurriyaatinaa qurrata a'yuninw waj 'alnaa lilmuttaqeena Imaamaa (al-Furq̈ān ২৫:৭৪)
English Sahih:
And those who say, "Our Lord, grant us from among our wives and offspring comfort to our eyes and make us a leader [i.e., example] for the righteous." (Al-Furqan [25] : 74)
তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):
আর যারা প্রার্থনা করে ; হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে এমন স্ত্রী ও সন্তানাদি দান কর যারা আমাদের চোখ জুড়িয়ে দেয় আর আমাদেরকে মুত্তাকীদের নেতা বানিয়ে দাও। (আল-ফুরকান [২৫] : ৭৪)
1 Tafsir Ahsanul Bayaan
এবং যারা (প্রার্থনা করে) বলে, ‘হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততিদেরকে আমাদের জন্য নয়নপ্রীতিকর কর[১] এবং আমাদেরকে সাবধানীদের জন্য আদর্শস্বরূপ কর।’ [২]
[১] অর্থাৎ, তাদেরকে নিজের আজ্ঞাবহ ও আমাদের অনুগত বানাও; যাতে আমাদের চোখ ঠান্ডা হয়।
[২] অর্থাৎ, এমন সুন্দর আদর্শস্বরূপ বানাও যে, সৎকাজে তারা যেন আমাদের অনুসরণ করে।
2 Tafsir Abu Bakr Zakaria
এবং যারা প্রার্থনা করে বলে, ‘হে আমাদের রব! আমাদের জন্য এমন স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততি দান করুন যারা হবে আমাদের জন্য চোখজুড়ানো। আর আপনি আমাদেরকে করুন মুত্তাকীদের জন্য অনুসরণযোগ্য।
3 Tafsir Bayaan Foundation
আর যারা বলে, ‘হে আমাদের রব, আপনি আমাদেরকে এমন স্ত্রী ও সন্তানাদি দান করুন যারা আমাদের চক্ষু শীতল করবে। আর আপনি আমাদেরকে মুত্তাকীদের নেতা বানিয়ে দিন’।
4 Muhiuddin Khan
এবং যারা বলে, হে আমাদের পালনকর্তা, আমাদের স্ত্রীদের পক্ষ থেকে এবং আমাদের সন্তানের পক্ষ থেকে আমাদের জন্যে চোখের শীতলতা দান কর এবং আমাদেরকে মুত্তাকীদের জন্যে আদর্শস্বরূপ কর।
5 Zohurul Hoque
আর যারা বলে -- ''আমাদের প্রভু! আমাদের স্ত্রীদের থেকে ও আমাদের সন্তান-সন্ততি থেকে চোখ-জোড়ানো আনন্দ আমাদের প্রদান করো, আর আমাদের তুমি বানিয়ে দাও ধর্মপরায়ণদের নেতৃস্থানীয়।’’
6 Mufti Taqi Usmani
এবং যারা (এই) বলে (দোয়া করে যে), হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে আমাদের স্ত্রী ও সন্তানদের পক্ষ হতে দান কর নয়নপ্রীতি এবং আমাদেরকে মুত্তাকীদের নেতা বানাও।
7 Mujibur Rahman
আর যারা প্রার্থনা করেঃ হে আমাদের রাব্ব! আমাদের জন্য এমন স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততি দান করুন যারা আমাদের জন্য নয়ন প্রীতিকর এবং আমাদেরকে মুত্তাকীদের জন্য আদর্শ স্বরূপ করুন।
8 Tafsir Fathul Mazid
৬৩-৭৪ নং আয়াতের তাফসীর:
অত্র আয়াতগুলোতে দয়াময় আল্লাহ তা‘আলার একনিষ্ঠ বান্দা যারা শুধুমাত্র আল্লাহ তা‘আলারই ইবাদত করে তাদের বিশেষ বৈশিষ্ট্য ও আলামত উল্লেখ করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে বিশ্বাসগত, দৈহিক ও আর্থিক যাবতীয় ব্যক্তিগত কর্মে আল্লাহ তা‘আলা ও রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বিধান অনুসরণ, অপর মানুষের সাথে সামাজিকতা ও সম্পর্ক স্থাপনের প্রকারভেদ, দিবারাত্রি ইবাদতের মাধ্যমে সাথে আল্লাহ তা‘আলা-ভীতি, যাবতীয় গোনাহ থেকে বেঁচে থাকার প্রয়াস, নিজের সাথে সাথে সন্তান-সন্ততি ও স্ত্রীদের সংশোধন চিন্তা ইত্যাদি বিষয়বস্তু শামিল রয়েছে। সেগুলো হল:
প্রথম গুণ:
عِبَادُ হওয়া। عِبَادُ শব্দটি عبد এর বহুবচন, অর্থন বান্দা, দাস, গোলাম, যে তার প্রভুর মালিকানাধীন এবং যার সমস্ত ইচ্ছা ও ক্রিয়াকর্ম প্রভুর আদেশ ও মর্জির ওপর নির্ভরশীল। আল্লাহ তা‘আলার আবদ বা দাস হতে পারা সৌভাগ্যের ও মর্যাদার ব্যাপার, সবাই আল্লাহ তা‘আলার আবদ হতে পারে না। আল্লাহ তা‘আলা কুরআনে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে অনেক স্থানে আবদ বা দাস বলে উল্লেখ করেছেন। আল্লাহ তা‘আলার দাসত্ব দু’প্রকারন (১) عبودية لربوبيته বা আল্লাহ তা‘আলা প্রতিপালন করেন সে জন্য তাঁর দাসত্ব করা, এতে কাফির মুশরিক, মুসলিম সবাই শামিল। কেননা পৃথিবীর সবাই আল্লাহ তা‘আলার প্রতিপালন বা রুবুবিয়াহ স্বীকার করে। (২) عبودية لألوهيته বা আল্লাহ তা‘আলা মা‘বূদ বা তিনি ইবাদত পাওয়ার যোগ্য তাই তাঁর ইবাদত করা। এ প্রকার ইবাদত একমাত্র মুসলিমরাই করে থাকে, এখানে এ প্রকার ইবাদতকারী বান্দাদের আলোচনা করা হয়েছে। (তাফসীর সাদী)
দ্বিতীয় গুণ:
(يَمْشُوْنَ عَلَي الْأَرْضِ هَوْنًا)
‘যারা পৃথিবীতে নম্রভাবে চলাফেরা করে’ هَوْنً শব্দের অর্থ স্থিরতা, গাম্ভীর্য, বিনয়। অর্থাৎ গর্বভরে চলে না, অহংকারীর ন্যায় পা ফেলে না। আল্লাহ তা‘আলার ভয়ে খুব বিনয়-নম্রতার সাথে চলে। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেনন
(وَلَا تَمْشِ فِي الْأَرْضِ مَرَحًا ط إِنَّ اللّٰهَ لَا يُحِبُّ كُلَّ مُخْتَالٍ فَخُوْرٍ)
“এবং পৃথিবীতে গর্বভরে বিচরণ কর না। নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা কোন দাম্ভিক, অহংকারকারীকে ভালোবাসেন না।” (সূরা লুকমান ৩১:১৮)
তৃতীয় গুণ:
(وَّإِذَا خَاطَبَهُمُ الْجٰهِلُوْنَ قَالُوْا سَلَامًا)
‘এবং তাদেরকে যখন অজ্ঞ ব্যক্তিরা সম্বোধন করে তখন তারা বলে, ‘সালাম’; الْجٰهِلُوْنَ এখানে এই শব্দের অনুবাদ অজ্ঞ ব্যক্তিরা করা হয়েছে। কিন্তু এর অর্থ বিদ্যাহীন ব্যক্তি নয় বরং যারা মূর্খতাপূর্ণ কথাবার্তা বলে ও কাজ করে যদিও বাস্তবে বিদ্বান হয়। ‘সালাম’ শব্দ বলে এখানে প্রচলিত সালাম বুঝানো হয়নি। বরং নিরাপত্তার কথাবার্তা বুঝানো হয়েছে। ইমাম কুরতুবী নাহহাস থেকে বর্ণনা করেন যে, سلام শব্দটি تسليم থেকে নয় বরং تسلم থেকে উদ্ভুত যার অর্থ নিরাপদ থাকা। উদ্দেশ্য হলন মূর্খদের জবাবে তারা নিরাপত্তার কথাবার্তা বলে, যাতে অন্যরা কষ্ট না পায় এবং কোন বিশৃংখলা না হয় সে জন্য তাদের থেকে পাশ কাটিয়ে চলে যায়। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
وَإِذَا سَمِعُوا اللَّغْوَ أَعْرَضُوْا عَنْهُ وَقَالُوْا لَنَآ أَعْمَالُنَا وَلَكُمْ أَعْمَالُكُمْ ز سَلٰمٌ عَلَيْكُمْ ز لَا نَبْتَغِي الْجٰهِلِيْنَ
“তারা যখন অসার বাক্য শ্রবণ করে তখন তারা তা উপেক্ষা করে চলে এবং বলে: ‘আমাদের কাজের ফল আমাদের জন্য এবং তোমাদের কাজের ফল তোমাদের জন্য এবং তোমাদের প্রতি ‘সালাম’। আমরা অজ্ঞদের সঙ্গ চাই না।’’ (সূরা কাসাস ২৮:৫৫)
চতুর্থ গুণ:
(وَالَّذِيْنَ يَبِيْتُوْنَ لِرَبِّهِمْ سُجَّدًا وَّقِيَامًا)
‘তারা আল্লাহ তা‘আলার আনুগত্য ও ইবাদতের মধ্যে রাত্রি অতিবাহিত করে।’ মানুষ যখন ঘুমিয়ে যায় তখন ইবাদতের কথা বলার কারণ হলন এ সময়টি হল নিদ্রা ও আরামের সময়, এ সময় সালাতের জন্য জাগ্রত হওয়া যেমন কষ্টকর ব্যাপার তেমনি এতে লোক দেখানোর কোন আশংকা থাকে না, ইবাদতে একাগ্রতা আসে। এ সময় আল্লাহ তা‘আলা দুনিয়ার আকাশে নেমে আসেন। আল্লাহ তা‘আলার বাণী:
(كَانُوْا قَلِيْلًا مِّنَ اللَّيْلِ مَا يَهْجَعُوْنَ - وَبِالْأَسْحَارِ هُمْ يَسْتَغْفِرُوْنَ)
“তারা রাত্রির সামান্য অংশই নিদ্রাবস্থায় অতিবাহিত করত। রাত্রির শেষ প্রহরে তারা ক্ষমা প্রার্থনা করত।” (সূরা যারিয়াত ৫১:১৭-১৮)
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
يَا أَيُّهَا النَّاسُ، أَفْشُوا السَّلَامَ، وَأَطْعِمُوا الطَّعَامَ، وَصَلُّوا وَالنَّاسُ نِيَامٌ تَدْخُلُونَ الجَنَّةَ بِسَلَامٍ
হে মানুষ সকল! সালামের প্রসার কর, আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখ, মানুষকে খাদ্য খাওয়াও, রাতে সালাত আদায় কর যখন মানুষ ঘুমিয়ে যায়, তাহলে শান্তিতে জান্নাতে প্রবেশ করবে। (তিরমিযী হা: ২৪৮৫, সহীহ)
পঞ্চম গুণ:
(وَالَّذِيْنَ يَقُوْلُوْنَ رَبَّنَا اصْرِفْ عَنَّا عَذَابَ جَهَنَّمَ)
‘তারা জাহান্নামের শাস্তি থেকে দয়াময় আল্লাহ তা‘আলার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করে।’ অর্থাৎ রাতে ইবাদত করার পরেও নিশ্চিন্ত হয়ে বসে থাকে না বরং জাহান্নামের ভয়ে আল্লাহ তা‘আলার কাছে শাস্তি থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করে। কেননা তারা জানে যে, এ জাহান্নামের শাস্তি চিরস্থায়ী। এর থেকে আল্লাহ তা‘আলা মুক্তি না দিলে মুক্তি পাওয়ার কোন রাস্তা নেই। তারা আল্লাহ তা‘আলার শাস্তির ব্যাপারে ভয় করে। যেমন জাহান্নামের শাস্তির ব্যাপারে আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَلَا يُخَفَّفُ عَنْهُمْ مِّنْ عَذَابِهَا ط كَذٰلِكَ نَجْزِيْ كُلَّ كَفُوْرٍ)
“তাদের থেকে জাহান্নামের আযাবও হালকা করা হবে না। আমি এরূপই শাস্তি দিয়ে থাকি প্রত্যেক অকৃতজ্ঞকে।” (সূরা ফাতির ৩৫:৩৬)
ষষ্ঠ গুণ:
(وَالَّذِيْنَ إِذَآ أَنْفَقُوْا لَمْ يُسْرِفُوْا وَلَمْ يَقْتُرُوْا)
‘তারা খরচ করার সময় কৃপণতা করে না, আবার অপচয়ও করে না; বরং তারা এ ব্যাপারে মধ্যমপন্থা অবলম্বন করে।’ ইবনু আব্বাস প্রমুখ বলেন: আল্লাহ তা‘আলার অবাধ্য কাজে ব্যয় করাকে اسراف বলা হয়, যদিও তা এক পয়সা হয়। কেউ বলেছেন, বৈধ ও অনুমোদিত কাজে প্রয়োজনাতিরিক্ত ব্যয় করাকেও اسراف বলা হয়। আর তারা তাক্বওয়া ও ভাল কাজে ব্যয় করতে কুন্ঠাবোধ করে না, যথাসম্ভব ব্যয় করার চেষ্টা করে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَاٰتِ ذَا الْقُرْبٰي حَقَّه۫ وَالْمِسْكِيْنَ وَابْنَ السَّبِيْلِ وَلَا تُبَذِّرْ تَبْذِيْرًا)
“আত্মীয়-স্বজনকে তার প্রাপ্য অধিকার দাও এবং অভাবগ্রস্ত ও মুসাফিরকেও; আর কিছুতেই অপব্যয় কর না।” (বানী ইসরাঈল ১৭:২৬) অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(إِنَّ الْمُبَذِّرِيْنَ كَانُوْآ إِخْوَانَ الشَّيَاطِيْنِ ط وَكَانَ الشَّيْطَانُ لِرَبِّهٰ كَفُوْرًا)
“যারা অপব্যয় করে তারা শয়তানের ভাই এবং শয়তান তার প্রতিপালকের প্রতি অতিশয় অকৃতজ্ঞ।” (সূরা ইসরা ১৭:২৭)
সপ্তম গুণ:
(وَالَّذِيْنَ لَا يَدْعُوْنَ مَعَ اللّٰهِ إلٰهًا اٰخَرَ)
‘তারা আল্লাহ তা‘আলার সাথে কাউকে ইলাহ হিসেবে আহ্বান করে না।’ অর্থাৎ তারা একমাত্র আল্লাহ তা‘আলার ইবাদত করে, অন্য কাউকে তাঁর সাথে মা‘বূদ হিসেবে আহ্বান করে না। যেমন হাদীসে এসেছে: আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞেস করা হলন সবচেয়ে বড় পাপ কোন্টি? তিনি বলেন: আল্লাহর সাথে শির্ক করা যিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন। (সহীহ বুখারী হা: ৬০০১-৪৪৭৭, সহীহ মুসলিম হা: ৮৬)
এ সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(إِنَّه۫ مَنْ يُّشْرِكْ بِاللّٰهِ فَقَدْ حَرَّمَ اللّٰهُ عَلَيْهِ الْجَنَّةَ وَمَأْوٰهُ النَّارُ ط وَمَا لِلظّٰلِمِيْنَ مِنْ أَنْصَارٍ)
“কেউ আল্লাহ তা‘আলার সাথে শরীক করলে আল্লাহ তা‘আলা তার জন্য জান্নাত অবশ্যই হারাম করবেন এবং তার আবাস জাহান্নাম। জালিমদের জন্য কোন সাহায্যকারী নেই।” (সূরা মায়িদাহ ৫:৭২)
অষ্টম গুণ:
(وَلَا يَقْتُلُوْنَ النَّفْسَ الَّتِيْ حَرَّمَ اللّٰهُ إِلَّا بِالْحَقِّ)
‘তারা অন্যায়ভাবে কোন মানুষকে হত্যা করে না।’ তবে যথাযথ কারণ পাওয়া গেলে ভিন্ন কথা, যথাযথ কারণ বলতে যে বিষয়টি বুঝনো হয়েছে তা হল: মুসলিম হওয়ার পর ধর্ম ত্যাগ করে মুর্তাদ হওয়া, এমতাবস্থায় তাকে হত্যা করা বৈধ। বিবাহের পর ব্যভিচারে লিপ্ত হলে তাকে হত্যা করা বৈধ। কাউকে হত্যা করলে কিসাসস্বরূপ তাকে হত্যা করা বৈধ।
নবম গুণ:
(وَلَا يَزْنُوْنَ)
‘তারা যিনা-ব্যভিচারে লিপ্ত হয় না।’ বরং নিজেদের সতীত্বকে হেফাযত করে। নিজ স্ত্রী বা দাসী ছাড়া অন্য কারো সাথে এ অপকর্মে লিপ্ত হয় না।
অতঃপর যারা এ সকল অপকর্মে বিশেষ করে উক্ত তিনটি যথা আল্লাহ তা‘আলার সাথে শির্ক, হত্যা ও ব্যভিচারে লিপ্ত হবে আল্লাহ তা‘আলা তাদের শাস্তির কথা বর্ণনা করেছেন যে, কিয়ামতের দিন এদের শাস্তি দ্বিগুণ করে দেয়া হবে। আর তারা সেখানে চিরস্থায়ীভাবে অবস্থান করবে। তবে যদি কেউ এগুলো করার পর অনুতপ্ত হয়ে ফিরে আসে, আল্লাহ তা‘আলার প্রতি ঈমান রাখে তাহলে আল্লাহ তা‘আলা তাকে ক্ষমা করে দেবেন এবং তার গুনাহগুলো আল্লাহ তা‘আলা নেকী দ্বারা পরিবর্তন করে দেবেন।
দশম গুণ:
(وَالَّذِيْنَ لَا يَشْهَدُوْنَ الزُّوْرَ)
‘তারা কোন ব্যাপারে কোন মিথ্যা সাক্ষী দেয় না।’ মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়া অন্যতম একটি কবীরা গুনাহ, যা ব্যক্তিকে ও সমাজকে নষ্ট করে। হাদীসে এসেছে, আবূ বকর
(رضي الله عنه)
থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: আমি কি তোমাদেরকে সবচেয়ে বড় গুনাহ সম্পর্কে সচেতন করব না? এ কথাটি তিনি তিনবার বললেন, বর্ণনাকারী বলেন, তখন আমরা বললাম, হ্যাঁ। তখন রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন: আল্লাহ তা‘আলার সাথে শির্ক করা, পিতা-মাতার অবাধ্য হওয়া, মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়া। এ কথটি তিনি বার বার বলতে থাকলেন। (সহীহ বুখারী হা: ২৬৬৪, সহীহ মুসলিম হা: ৮৭)
একাদশ গুণ:
(وَإِذَا مَرُّوْا بِاللَّغْوِ مَرُّوْا كِرَامًا)
‘এবং অসার ক্রিয়াকলাপের সম্মুখীন হলে স্বীয় মর্যাদার সাথে সেটা পরিহার করে চলে।’ অর্থাৎ এমন মাজলিস বা আলোচনা সভা যেখানে এমন কথা-বার্তা হয় যা দুনিয়া ও আখিরাতের জন্য উপকারী নয়, তাহলে তারা সে সব মাজলিস ও বৈঠক বর্জন করে। এতে সকল প্রকার অসার কথা, গান-বাজনা ও অনর্থক কথা চলে আসে।
দ্বাদশ গুণ:
(وَالَّذِيْنَ إِذَا ذُكِّرُوْا بِاٰيٰتِ رَبِّهِمْ)
‘যাদের সম্মুখে তাদের প্রতিপালকের আয়াতসমূহ পাঠ করা হলে তারা অন্ধ ও বধিরসদৃশ আচরণ করে না।’ বরং এতে তাদের ঈমান আরো বৃদ্ধি পায় ও তার যথার্থ মূল্যায়ন করে, আল্লাহ তা‘আলার জন্য সিজদাবনত হয়, তাঁর প্রশংসা করে এবং অহংকার করে না।
যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
(إِنَّمَا يُؤْمِنُ بِاٰيٰتِنَا الَّذِيْنَ إِذَا ذُكِّرُوْا بِهَا خَرُّوْا سُجَّدًا وَّسَبَّحُوْا بِحَمْدِ رَبِّهِمْ وَهُمْ لَا يَسْتَكْبِرُوْنَ)
“কেবল তারাই আমার নিদর্শনগুলোর প্রতি ঈমান রাখে, যাদেরকে আমার আয়াতসমূহ যখন স্মরণ করিয়ে দেয়া হয় তখনই তারা সিজদায় লুটিয়ে পড়ে এবং স্বীয় প্রতিপালকের প্রশংসা, পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে, আর তারা অহঙ্কার করে না।” (সূরা সিজদাহ ৩২:১৫)
ত্রয়োদশ গুণ:
(وَالَّذِيْنَ يَقُوْلُوْنَ رَبَّنَا هَبْ لَنَا مِنْ أَزْوَاجِنَا)
‘এবং তারা প্রার্থনা করে বলে, হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততিদেরকে আমাদের জন্য নয়ন প্রীতিকর এবং আমাদেরকে মুত্তাকীদের জন্য আদর্শস্বরূপ কর।’ সুতরাং আমরা যারা আল্লাহ তা‘আলার একনিষ্ঠ বান্দা হতে চাই তাদের উচিত উপরোল্লিখিত এ সকল বৈশিষ্ট্যগুলো অর্জন করা।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. আল্লাহ তা‘আলার সাথে কাউকে শরীক করা যাবে না।
২. কোন প্রকার গর্ব অহঙ্কার করা যাবে না।
৩. কোন প্রকার কৃপণতা ও অপচয় করা যাবে না।
৫. অন্যায়ভাবে কাউকে হত্যা করা যাবে না।
৫. অশ্লীল কার্যকলাপ করা যাবে না।
৬. ভুলবশত পাপ কাজ হয়ে গেলেও সাথে সাথে তাওবাহ করে নিতে হবে।
৭. মিথ্যা কথা বলা যাবে না ও মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়া যাবে না।
9 Fozlur Rahman
এবং যারা বলে, “হে আমাদের প্রভু! আমাদের জন্য আমাদের স্ত্রী ও সন্তানদের দিক থেকে চোখের শান্তি দান করো (এমন স্ত্রী ও সন্তান দাও যাদের দেখলে আমাদের চোখ জুড়িয়ে যায়) আর আমাদেরকে মোত্তাকীদের ইমাম (অনুসরণীয় নেতা) বানিয়ে দাও”
10 Mokhtasar Bangla
৭৪. আর যারা নিজেদের প্রতিপালকের নিকট দু‘আ করতে গিয়ে বলে: হে আমাদের প্রতিপালক! আপনি আমাদেরকে এমন স্ত্রী ও সন্তান দিন যে নিজের তাকওয়া ও সত্যের উপর অটল থাকার দরুন আমাদের চোখ জুড়িয়ে দিবে। আর আপনি আমাদেরকে সত্যের ক্ষেত্রে মুত্তাকীদের এমন ইমাম বানিয়ে দিন যাদের অনুসরণ করা হবে।
11 Tafsir Ibn Kathir
৭২-৭৪ নং আয়াতের তাফসীর
আল্লাহর সৎ বান্দাদের আরো বিশেষণ বর্ণনা করা হচ্ছে যে, তারা মিথ্যা সাক্ষ্য দেয় না অর্থাৎ শিরক করে না, মূর্তিপূজা হতে তারা বেঁচে থাকে। তারা মিথ্যা কথা বলে না, পাপাচারে লিপ্ত হয় না, কুফরী করে না, অসার ক্রিয়া-কলাপ হতে দূরে থাকে, গান শুনে না এবং মুশরিকদের আনন্দ-উৎসবে যোগদান করে। তারা মদ্যপান করে না, মদ্যখানায় যায় না এবং ওর প্রতি আকৃষ্ট হয় না। যেমন হাদীসে এসেছে যে, যে আল্লাহর উপর ও আখিরাতের উপর বিশ্বাস রাখে সে যেন ঐ দস্তরখানায় না বসে যেখানে মদচক্র চলতে থাকে। আবার ভাবার্থ এও হয় যে, তারা মিথ্যা সাক্ষ্য দেয় না ।
হযরত আবু বুকরা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “আমি কি তোমাদেরকে সবচেয়ে বড় পাপের খবর দেবো না?” এ কথা তিনি তিনবার বলেন। সাহাবীগণ উত্তরে বলেনঃ “হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! হা (খবর দিন)।” তখন তিনি বললেনঃ “তাহলো আল্লাহর সাথে শরীক স্থাপন করা, পিতা-মাতার অবাধ্য হওয়া।” তখন পর্যন্ত তিনি বালিশে হেলান লাগিয়েছিলেন। এরপর তিনি সোজা হয়ে বসেন এবং বলেনঃ “আর মিথ্যা কথা বলা ও মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়া।” এ কথা তিনি বারবার বলতে থাকেন। শেষ পর্যন্ত সাহাবীগণ মনে মনে বললেন যে, যদি তিনি নীরব হতেন! (এ হাদীসটি সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমে বর্ণিত আছে) কুরআন কারীমের শব্দ দ্বারা তো এ অর্থই বেশী প্রকাশমান যে, তারা মিথ্যার কাছেও যায় না। এ জন্যেই পরে বর্ণিত হয়েছে যে, ঘটনাক্রমে তারা অসার ক্রিয়া-কলাপের সম্মুখীন হলে স্বীয় মর্যাদার সাথে তারা তা পরিহার করে চলে।
ইবরাহীম ইবনে মাইসার (রঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, একদা হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) কোন খেলার পার্শ্ব দিয়ে গমন করেন। সেখানে তিনি না থেমে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে চলতে থাকেন। তিনি আল্লাহ তাআলার নিকট মর্যাদাবান হয়ে গেলেন। (এটা ইবনে আবি হাতিম (রঃ) বর্ণনা করেছেন) আল্লাহ তা'আলার এই বুযর্গ বান্দাদের আর একটি গুণ এই যে, কুরআনের আয়াতগুলো শুনে তাদের অন্তরে আলোড়ন সৃষ্টি হয় এবং তাদের ঈমান এবং আল্লাহর উপর নির্ভরশীলতা আরো বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়। কিন্তু কাফিরদের এরূপ হয় না। কুরআনের আয়াতসমূহ তাদের অন্তরে ক্রিয়াশীল হয়। সুতরাং তারা তাদের দুষ্কর্ম থেকে বিরত থাকে না, কুফরী পরিত্যাগ করে না এবং ঔদ্ধত্যপনা, হঠকারিতা এবং অজ্ঞতা হতে বিরত হয় না। পক্ষান্তরে ঈমানদারদের ঈমান বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়। আর যাদের অন্তরে ব্যাধি আছে তাদের ব্যাধি আরো বেড়ে যায়। অতএব, কাফিররা আল্লাহর আয়াতসমূহ হতে বধির ও অন্ধ হয়।
মুমিনদের অভ্যাস এর বিপরীত। তারা হক হতে বধিরও নয় এবং অন্ধও নয়। তারা শুনে ও বুঝে। আর এর দ্বারা তারা উপকার লাভ করে এবং নিজেদেরকে সংশোধিত করে নেয়। বহু লোক এমন রয়েছে যারা পাঠ করে, অথচ নিজেদের বধিরতা ও অন্ধত্ব পরিত্যাগ করে না।
হযরত শা’বী (রঃ)-কে প্রশ্ন করা হয়ঃ “একটি লোক এসে দেখে যে, কতকগুলো লোক সিজদায় পড়ে রয়েছে, কিন্তু তারা কোন আয়াতটি পড়ে সিজদায় পড়েছে তা তার জানা নেই। এমতাবস্থায় লোকটি কি তাদের সাথে সিজদায় পড়ে যাবে?” তখন হযরত শা’বী (রঃ) এ আয়াতটিই পাঠ করেন। অর্থাৎ সে তাদের সাথে সিজদা করবে না। কেননা, সে সিজদার আয়াত পাঠ করেনি, শুনেনি এবং বুঝেনি। আর কোন কাজ অন্ধভাবে করা মুমিনের উচিত নয়। যখন পর্যন্ত তার সামনে কোন জিনিসের হাকীকত না থাকবে তখন পর্যন্ত ভার তাতে শামিল হওয়া ঠিক নয়।
অতঃপর এই বুযর্গ বান্দাদের একটি দু'আর বর্ণনা দেয়া হচ্ছে যে, তারা আল্লাহ তা'আলার নিকট প্রার্থনা করে- হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের জন্যে এমন স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততি দান করুন যারা আমাদের জন্যে নয়ন প্রীতিকর হয়। অর্থাৎ তারা মহান আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করে যে, তাদের সন্তান-সন্ততিও যেন তাদের মত একত্ববাদী হয় এবং মুশরিক না হয়, যাতে দুনিয়াতেও ঐ সুসন্তানদের কারণে তাদের অন্তর ঠাণ্ডা থাকে এবং আখিরাতেও তাদের ভাল অবস্থা দেখে তারা খুশী হতে পারে। এই প্রার্থনার উদ্দেশ্য তাদের দৈহিক সৌন্দর্য নয়, বরং সততা ও সুন্দর চরিত্রই উদ্দেশ্য। মুসলমানদের প্রকৃত আনন্দ এতেই রয়েছে যে, তারা তাদের সন্তানদেরকে ও বন্ধু-বান্ধবদেরকে আল্লাহর অনুগত বান্দারূপে দেখতে পায়। তারা যেন যালিম না হয়, দুষ্কৃতিকারী না হয়, বরং খাটি মুসলমান হয়।
হযরত নুফায়ের (রাঃ) বর্ণনা করেছেনঃ আমরা একদা হযরত মিকদাদ ইবনে আসওয়াদ (রাঃ)-এর নিকট বসেছিলাম, এমন সময় একটি লোক তার পার্শ্ব দিয়ে গমন করে। সে বলেঃ “তাঁর দু’চক্ষুর জন্যে মুবারকবাদ, যে চক্ষুদ্বয় রাসূলুল্লাহ (সঃ)-কে দর্শন করেছে! আপনি যেমন তাঁকে দেখেছেন ও তাঁর সঙ্গ লাভ করেছেন তেমনই যদি আমরাও তাঁকে দেখতাম ও তাঁর সাহচর্য লাভ করতাম তবে আমাদের জীবনকে আমরা ধন্য মনে করতাম!” তার এ কথা শুনে হযরত মিকদাদ (রাঃ) অসন্তুষ্ট হলেন। আমি বিস্মিত হলাম যে, লোকটি তো মন্দ কথা বলেনি, অথচ তিনি অসন্তুষ্ট হলেন কেন! ইতিমধ্যে হযরত মিকদাদ (রাঃ) বললেনঃ “জনগণের কি হয়েছে যে, তারা এমন কিছুর আকাক্ষা করে যা তাদের শক্তির বাইরে এবং যা আল্লাহ তাআলা তাদেরকে প্রদান করেননি? তারা ঐ সময় থাকলে তবে তাদের অবস্থা কি হতো তা আল্লাহই ভাল জানেন। আল্লাহর শপথ! রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর যুগে তো ঐসব লোকও ছিল যারা না তাঁকে বিশ্বাস করেছে এবং না তাঁর আনুগত্য করেছে। ফলে তারা উল্টো মুখে জাহান্নামে চলে গেছে। তোমরা কি আল্লাহর এ অনুগ্রহ স্বীকার কর না যে, তিনি ইসলামে ও মুসলমান ঘরে তোমাদের জন্ম দিয়েছেন? ভূমিষ্ট হওয়ার সাথে সাথেই তোমাদের কানে আল্লাহর তাওহীদ ও হযরত মুহাম্মাদ (সঃ)-এর রিসালাতের শব্দ পৌঁছেছে। আর ঐসব বিপদ-আপদ থেকে তোমাদেরকে বাঁচিয়ে নেয়া হয়েছে যেগুলো তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের উপর পতিত হয়েছিল। আল্লাহ তা'আলা হযরত মুহাম্মাদ (সঃ)-কে এমন যুগে প্রেরণ করেন যখন দুনিয়ার অবস্থা ছিল খুবই শশাচনীয়। ঐ সময় দুনিয়াবাসীদের নিকট মূর্তিপূজা অপেক্ষা উত্তম ধর্ম আর কিছুই ছিল না। রাসূলুল্লাহ (সঃ) ফুরকান নিয়ে আসলেন যা হক ও বাতিলের মধ্যে প্রভেদ সৃষ্টি করলো এবং এর ফলে পিতা ও পুত্র পৃথক পৃথক হয়ে গেল। মুসলমানরা তাদের পিতা, পিতামহ, পুত্র, পৌত্র এবং বন্ধু-বান্ধবদেরকে কুফরীর উপর দেখে তাদের উপর থেকে তাদের প্রেম-প্রীতি ও শ্রদ্ধা লোপ পায় এবং তাদের দৃঢ় বিশ্বাস জন্মে যে, তারা সব জাহান্নামী। এ জন্যেই তাদের প্রার্থনা ছিলঃ “হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে এমন স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততি দান করুন যারা আমাদের জন্যে নয়ন প্রীতিকর হয়। কেননা, কাফিরদেরকে দেখে তাদের চক্ষু ঠাণ্ডা হতো না। এই প্রার্থনার শেষে রয়েছেঃ “আমাদেরকে মুত্তাকীদের জন্যে আদর্শ স্বরূপ করুন। আমরা যেন তাদেরকে পুণ্যকর্মের শিক্ষা দিতে পারি। তারা যেন ভাল কাজে আমাদের অনুসারী হয়। আমাদের সন্তানরা যেন আমাদের পথ অনুসরণ করে, যাতে পুণ্য বৃদ্ধি পায় এবং তাদের পুণ্যের কারণও যেন আমরা হয়ে যাই।
হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “আদম সন্তান যখন মারা যায় তখন তার আমল বন্ধ হয়ে যায়, শুধু তিনটি আমল বাকী থাকে। প্রথম হলো সুসন্তান, যে তার জন্যে প্রার্থনা করে, দ্বিতীয় হলো সেই ইল্ম যার দ্বারা তার মৃত্যুর পরে মানুষ উপকৃত হয় এবং তৃতীয় হলো সাদকায়ে জারিয়া (এগুলোর সওয়াব সে মৃত্যুর পরেও পেয়ে থাকে)।” (এ হাদীসটি সহীহ মুসলিমে বর্ণিত হয়েছে)