Skip to main content

ثُمَّ اَنْزَلَ عَلَيْكُمْ مِّنْۢ بَعْدِ الْغَمِّ اَمَنَةً نُّعَاسًا يَّغْشٰى طَۤاىِٕفَةً مِّنْكُمْ ۙ وَطَۤاىِٕفَةٌ قَدْ اَهَمَّتْهُمْ اَنْفُسُهُمْ يَظُنُّوْنَ بِاللّٰهِ غَيْرَ الْحَقِّ ظَنَّ الْجَاهِلِيَّةِ ۗ يَقُوْلُوْنَ هَلْ لَّنَا مِنَ الْاَمْرِ مِنْ شَيْءٍ ۗ قُلْ اِنَّ الْاَمْرَ كُلَّهٗ لِلّٰهِ ۗ يُخْفُوْنَ فِيْٓ اَنْفُسِهِمْ مَّا لَا يُبْدُوْنَ لَكَ ۗ يَقُوْلُوْنَ لَوْ كَانَ لَنَا مِنَ الْاَمْرِ شَيْءٌ مَّا قُتِلْنَا هٰهُنَا ۗ قُلْ لَّوْ كُنْتُمْ فِيْ بُيُوْتِكُمْ لَبَرَزَ الَّذِيْنَ كُتِبَ عَلَيْهِمُ الْقَتْلُ اِلٰى مَضَاجِعِهِمْ ۚ وَلِيَبْتَلِيَ اللّٰهُ مَا فِيْ صُدُوْرِكُمْ وَلِيُمَحِّصَ مَا فِيْ قُلُوْبِكُمْ ۗ وَاللّٰهُ عَلِيْمٌ ۢبِذَاتِ الصُّدُوْرِ  ( آل عمران: ١٥٤ )

thumma
ثُمَّ
Then
এরপর
anzala
أَنزَلَ
He sent down
তিনি অবতীর্ণ করলেন
ʿalaykum
عَلَيْكُم
upon you
তোমাদের উপর
min
مِّنۢ
from
(থেকে)
baʿdi
بَعْدِ
after
পরে
l-ghami
ٱلْغَمِّ
the distress
দুঃখের
amanatan
أَمَنَةً
security
প্রশান্তি
nuʿāsan
نُّعَاسًا
slumber
তন্দ্রারূপে
yaghshā
يَغْشَىٰ
overcoming
আচ্ছন্ন করে
ṭāifatan
طَآئِفَةً
a group
একটি দলকে (মুমিনদেরকে)
minkum
مِّنكُمْۖ
of you
তোমাদের মধ্য হতে
waṭāifatun
وَطَآئِفَةٌ
while a group
কিন্তু (আর) একটি দল (অর্থাৎ মুনাফিকরা)
qad
قَدْ
certainly
নিশ্চয়
ahammathum
أَهَمَّتْهُمْ
worried [them]
তাদেরকে গুরুত্ব দিল
anfusuhum
أَنفُسُهُمْ
(about) themselves
তারা নিজেরা
yaẓunnūna
يَظُنُّونَ
thinking
ধারণা করে
bil-lahi
بِٱللَّهِ
about Allah
আল্লাহর ব্যাপারে
ghayra
غَيْرَ
other than
বিপরীত
l-ḥaqi
ٱلْحَقِّ
the truth
সত্যের
ẓanna
ظَنَّ
(the) thought
ধারণা
l-jāhiliyati
ٱلْجَٰهِلِيَّةِۖ
(of) [the] ignorance
জাহিলিয়্যাতের
yaqūlūna
يَقُولُونَ
saying
তারা বলে
hal
هَل
"Is (there)
''কি
lanā
لَّنَا
for us
আমাদের জন্য (আছে)
mina
مِنَ
from
কোন
l-amri
ٱلْأَمْرِ
the matter
এখতিয়ার
min
مِن
any
কোন
shayin
شَىْءٍۗ
thing?"
কিছুর''
qul
قُلْ
Say
বল
inna
إِنَّ
"Indeed
''নিশ্চয়
l-amra
ٱلْأَمْرَ
the matter
এখতিয়ার
kullahu
كُلَّهُۥ
all (of) it
সবটাই
lillahi
لِلَّهِۗ
(is) for Allah"
আল্লাহরই জন্য''
yukh'fūna
يُخْفُونَ
They hide
তারা লুকায়
فِىٓ
in
মধ্যে
anfusihim
أَنفُسِهِم
themselves
তাদের মনের
مَّا
what
যা
لَا
not
না
yub'dūna
يُبْدُونَ
they reveal
তারা প্রকাশ করে
laka
لَكَۖ
to you
তোমার কাছে
yaqūlūna
يَقُولُونَ
They say
তারা বলে
law
لَوْ
"if
''যদি
kāna
كَانَ
was
থাকত
lanā
لَنَا
for us
আমাদের জন্য
mina
مِنَ
from
কোন
l-amri
ٱلْأَمْرِ
the matter
এখতিয়ার
shayon
شَىْءٌ
anything
কোন কিছুর
مَّا
not
না
qutil'nā
قُتِلْنَا
we would have been killed
আমরা নিহত হতাম
hāhunā
هَٰهُنَاۗ
here"
এখানে''
qul
قُل
Say
বল
law
لَّوْ
"if
''যদি
kuntum
كُنتُمْ
you were
তোমরা হতে
فِى
in
মধ্যে
buyūtikum
بُيُوتِكُمْ
your houses
তোমাদের ঘরের
labaraza
لَبَرَزَ
surely (would have) come out
অবশ্যই বের হতো
alladhīna
ٱلَّذِينَ
those who
(তারা) যাদের
kutiba
كُتِبَ
was decreed
লেখা হয়েছে
ʿalayhimu
عَلَيْهِمُ
upon them
তাদের উপর
l-qatlu
ٱلْقَتْلُ
[the] death
নিহত হওয়া
ilā
إِلَىٰ
towards
দিকে
maḍājiʿihim
مَضَاجِعِهِمْۖ
their places of death
তাদের নিহত হওয়ার জায়গাগুলোর
waliyabtaliya
وَلِيَبْتَلِىَ
And that might test
এবং পরীক্ষা করার জন্য (এটা ঘটিয়েছেন)
l-lahu
ٱللَّهُ
Allah
আল্লাহ্‌
مَا
what
যা কিছু
فِى
(is) in
মধ্যে আছে
ṣudūrikum
صُدُورِكُمْ
your breasts
তোমাদের বুকে (অর্থাৎ অন্তরে)
waliyumaḥḥiṣa
وَلِيُمَحِّصَ
and that He may purge
এবং বিশুদ্ধ করার জন্য
مَا
what
যা
فِى
(is) in
মধ্যে আছে
qulūbikum
قُلُوبِكُمْۗ
your hearts
তোমাদের অন্তরগুলোতে
wal-lahu
وَٱللَّهُ
And Allah
এবং আল্লাহ
ʿalīmun
عَلِيمٌۢ
(is) All-Aware
খুব অবহিত
bidhāti
بِذَاتِ
of what
অবস্থা সম্পর্কে
l-ṣudūri
ٱلصُّدُورِ
(is in) the breasts
অন্তরের

Summa anzala 'alaikum mim ba'dil ghammi amanatan nu'aasai yaghshaa taaa' ifatam minkum wa taaa'ifatun qad ahammathum anfusuhum yazunnoona billaahi ghairal haqqi zannal jaahiliyyati yaqooloona hal lanaa minal amri min shai'; qul innal amra kullahoo lillaah; yukhfoona fee anfusihim maa laa yubdoona laka yaqooloona law kaana lanaa minal amri shai'ummaa qutilnaa haahunaa; qul law kuntum fee buyootikum labarazal lazeena kutiba 'alaihimul qatlu ilaa madaaji'ihim wa liyabtaliyal laahu maa fee sudoorikum wa liyumah hisa maa fee quloobikum; wallaahu 'aleemum bizaatis sudoor (ʾĀl ʿImrān ৩:১৫৪)

English Sahih:

Then after distress, He sent down upon you security [in the form of] drowsiness, overcoming a faction of you, while another faction worried about themselves, thinking of Allah other than the truth – the thought of ignorance, saying, "Is there anything for us [to have done] in this matter?" Say, "Indeed, the matter belongs completely to Allah." They conceal within themselves what they will not reveal to you. They say, "If there was anything we could have done in the matter, we [i.e., some of us] would not have been killed right here." Say, "Even if you had been inside your houses, those decreed to be killed would have come out to their death beds." [It was] so that Allah might test what is in your breasts and purify what is in your hearts. And Allah is Knowing of that within the breasts. (Ali 'Imran [3] : 154)

তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):

অতঃপর কষ্টের পর আল্লাহ তোমাদের প্রতি শান্তি-তন্দ্রা প্রেরণ করলেন, যা তোমাদের একদলকে আচ্ছন্ন করল এবং অন্যদল মূর্খের মতো আল্লাহর প্রতি কুধারণা পোষণ করতঃ নিজেরাই নিজেদের জীবনকে উদ্বেগাকুল করে বলল, কাজ-কর্মের ব্যাপারে (সিদ্ধান্ত গ্রহণের) আমাদের কিছুমাত্র অধিকার আছে কি? বল, ‘সমস্তই আল্লাহর নিরঙ্কুশ অধিকারভুক্ত’। তারা এমন সব কথা অন্তরে পোষণ করে- যা তোমার কাছে প্রকাশ করে না। তারা বলে, ‘যদি মতামত প্রদানের অধিকার আমাদের কিছুমাত্রও থাকত, তাহলে আমরা এ স্থলে নিহত হতাম না’। বলে দাও, ‘যদি তোমরা তোমাদের ঘরেও থাকতে, তথাপি যাদের ভাগ্যে মৃত্যু লেখা ছিল, তারা তাদের এ মৃত্যুশয্যার পানে বের হয়ে পড়ত’। এবং এজন্যও যে আল্লাহ তোমাদের অন্তরের ভেতরের বিষয়গুলো পরীক্ষা করেন এবং তোমাদের অন্তরস্থ বিষয়গুলোকে পরিষ্কার করেন, বস্তুতঃ আল্লাহ সকলের অন্তরের কথা সম্পর্কে বিশেষভাবে অবহিত। (আল ইমরান [৩] : ১৫৪)

1 Tafsir Ahsanul Bayaan

অতঃপর তিনি তোমাদেরকে দুঃখের পর তন্দ্রারূপে নিরাপত্তা (ও শান্তি) প্রদান করলেন, যা তোমাদের একদলকে আচ্ছন্ন করেছিল। [১] আর একদল ছিল যারা নিজেদের জান নিয়েই ব্যস্ত ছিল। [২] প্রাগ্-ইসলামী অজ্ঞদের ন্যায় আল্লাহ সম্বন্ধে কুধারণা পোষণ করেছিল। [৩] তারা বলেছিল যে, ‘এ বিষয়ে আমাদের কি কোন এখতিয়ার আছে?’[৪] বল, ‘সমস্ত বিষয় আল্লাহরই এখতিয়ারভুক্ত।’[৫] তারা তাদের অন্তরে এমন কিছু গোপন রাখে, যা তোমার নিকট প্রকাশ করে না।[৬] তারা বলে, ‘যদি এ ব্যাপারে আমাদের কোন এখতিয়ার থাকত, তাহলে আমরা এখানে নিহত হতাম না।’[৭] বল, ‘যদি তোমরা তোমাদের গৃহে অবস্থান করতে তবুও নিহত হওয়া যাদের ভাগ্যে অবধারিত ছিল, তারা নিজেদের বধ্যভূমিতে এসে উপস্থিত হত।’[৮] তা এ জন্য যে, যাতে আল্লাহ তোমাদের অন্তরে যা আছে, তা পরীক্ষা করেন ও তোমাদের হৃদয়ে যা (কালিমা) আছে, তা পরিশুদ্ধ করেন।[৯] আর অন্তরে যা আছে, সে সম্পর্কে আল্লাহ বিশেষভাবে অবহিত।[১০]

[১] উল্লিখিত চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতির পর আল্লাহ তাআলা মুসলিমদের উপর পুনরায় অনুগ্রহ করলেন এবং তাঁদের মধ্যে যাঁরা যুদ্ধের ময়দানে অবশিষ্ট ছিলেন, তাঁদের উপর তন্দ্রার ভাব সৃষ্টি করে দিলেন। আর এই তন্দ্রা (ঢুল) ছিল আল্লাহর পক্ষ হতে প্রশান্তি এবং সাহায্যের দলীল। আবূ ত্বালহা (রাঃ) বলেন, আমিও তাঁদের একজন, যাঁদের উপর উহুদের দিন তন্দ্রার ভাব সৃষ্টি হয়েছিল। এমন কি আমার তরবারি কয়েকবার আমার হাত থেকে পড়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল, আর আমি ধরে নিয়েছিলাম। (সহীহ বুখারী) نُعَاسًا হল أَمَنَةً শব্দের বদল (পরিবর্ত শব্দ)। طَائِفَةٌ একবচন এবং বহুবচন উভয় ক্ষেত্রেই ব্যবহার হয়। (ফাতহুল ক্বাদীর)

[২] এ থেকে মুনাফিকদেরকে বুঝানো হয়েছে। প্রকাশ থাকে যে, এ রকম কঠিন পরিস্থিতিতে তারা কেবল নিজেদের প্রাণ নিয়েই চিন্তিত ছিল।

[৩] যেমন ভাবত যে, নবী করীম (সাঃ)-এর সম্পূর্ণ ব্যাপারটাই মিথ্যা। তিনি যে দ্বীনের প্রতি আহবান করেন, তার ভবিষ্যৎ আশঙ্কাজনক। তিনি তো আল্লাহর সহযোগিতা থেকেই বঞ্চিত ইত্যাদি ইত্যাদি।

[৪] অর্থাৎ, আমাদের জন্য কি আল্লাহর পক্ষ হতে আর কোন বিজয় ও সহযোগিতার সম্ভাবনা আছে? অথবা আমাদের কি কোন কথা চলতে পারে এবং মেনে নেওয়া যেতে পারে?

[৫] তোমাদের কিংবা শত্রুদের এখতিয়ারে কিছুই নেই। সাহায্য-সহযোগিতা তাঁর পক্ষ থেকেই আসবে, সফলতা তিনিই দান করবেন এবং আদেশ-নিষেধ কেবল তাঁরই চলবে।

[৬] নিজেদের অন্তরে মুনাফিক্বী গোপন রেখে ভাব এমন দেখাত যে, তারা পথ নির্দেশের মুখাপেক্ষী।

[৭] এটা তারা আপোসে বলাবলি করত অথবা মনে মনে বলত।

[৮] মহান আল্লাহ বললেন, এই ধরনের কথার লাভ কি? যেভাবেই হোক না কেন, মৃত্যু তো আসবেই এবং তা সেই স্থানেই আসবে, যেখানে আল্লাহর পক্ষ হতে লিখে দেওয়া হয়েছে। যদি তোমরা নিজেদের বাড়িতে অবস্থান কর, আর তোমাদের মৃত্যু কোন যুদ্ধের ময়দানে লিখা থাকে, তাহলে আল্লাহ কর্তৃক এই ফায়সালা তোমাদেরকে সেখানেই টেনে নিয়ে যাবে।

[৯] (যুদ্ধের ময়দানে) যা কিছু ঘটেছে তার পিছনে একটি উদ্দেশ্য ছিল, তোমাদের অন্তরে বিদ্যমান ঈমানকে পরীক্ষা করা (যাতে মুনাফিকরা তোমাদের থেকে পৃথক হয়ে যায়) এবং তোমাদের অন্তঃকরণকে শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে পবিত্র করা।

[১০] অর্থাৎ, খাঁটি মুসলিম কে এবং মুনাফিক হয়ে বাহ্যিকভাবে ইসলামের পোশাক কে পরে আছে, তা তো তিনি জানেন। জিহাদের বিভিন্ন কৌশলের মধ্যে এটাও একটি কৌশল যে, এতে মু'মিন ও মুনাফিকের প্রকৃত রূপ বিকশিত হয়ে সামনে চলে আসে; ফলে সাধারণ মানুষও তাদেরকে দেখে ও চিনে নিতে পারে।