২২-২৫ নং আয়াতের তাফসীর:
ঐ সৎ লোকটি, যে আল্লাহর রাসূলদেরকে অবিশ্বাস, প্রত্যাখ্যান ও অপমান করতে দেখে দৌড়িয়ে এসেছিল এবং যে স্বীয় কওমকে নবীদের আনুগত্য করার জন্যে উৎসাহিত করছিল, সে এখন নিজের আমল ও আকীদার কথা তাদের সামনে পেশ করলো এবং তাদেরকে মূলতত্ত্ব সম্পর্কে সংবাদ দিয়ে ঈমানের দাওয়াত দিলো। সে তাদেরকে বললোঃ “আমি তো শুধু এক ও অংশীবিহীন আল্লাহরই ইবাদত করি। একমাত্র তিনিই যখন আমাকে সষ্টি করেছেন তখন কেন আমি তার ইবাদত করবো না? এটাও নয় যে, আমরা এখন তার ক্ষমতার বাইরে চলে গেছি, সুতরাং তার সাথে আমাদের এখন আর কোন সম্পর্ক নেই? না, না। বরং আমাদের সবকেই আবার তার সামনে একত্রিত হতে হবে। ঐ সময় তিনি আমাদেরকে আমাদের ভাল ও মন্দের পুরোপুরি প্রতিদান প্রদান করবেন। এটা কতই না লজ্জার কথা যে, আমি ঐ সৃষ্টিকর্তা ও ক্ষমতাবানকে
ছেড়ে অন্যদের উপাসনা করবো, যে না কোন ক্ষমতা রাখে যে, আল্লাহর পক্ষ থেকে আমার উপর কোন বিপদ আসলে ঐ বিপদ দূর করতে পারে, না দয়াময় আল্লাহ আমাকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে চাইলে তাদের কোন সুপারিশ আমার কোন কাজে আসতে পারে! আমার প্রতি আপতিত কোন বিপদ হতে তারা আমাকে উদ্ধার করতে পারবে না। যদি আমি এরূপ করি তবে অবশ্যই আমি স্পষ্ট বিভ্রান্তিতে পড়বো। হে আমার কওম! তোমরা তোমাদের যে প্রকৃত মা'বুদকে অস্বীকার করছো, জেনে রেখো যে, আমি তার প্রতি ঈমান এনেছি। অতএব, তোমরা আমার কথা শোনো।” এই আয়াতের ভাবার্থ এও হতে পারে যে, ঐ সৎ লোকটি আল্লাহ্ তা'আলার ঐ রাসূলদেরকে বলেছিলঃ “আপনারা আমার ঈমানের উপর সাক্ষী থাকুন। আমি ঐ আল্লাহর সত্তার উপর ঈমান এনেছি যিনি আপনাদেরকে সত্য রাসূলরূপে প্রেরণ করেছেন। তাহলে লোকটি যেন ঐ রাসূলদেরকে নিজের ঈমানের উপর সাক্ষী করছে। পূর্বের চেয়ে এই অর্থটি বেশী স্পষ্ট। এসব ব্যাপারে আল্লাহ্ তা'আলাই সবচেয়ে ভাল জানেন।
হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ), হযরত কা'ব (রাঃ), হযরত অহাব (রাঃ) প্রমুখ গুরুজন বলেন যে, ঐ লোকটি এ কথা বলামাত্র তারা তার উপর ঝাপিয়ে পড়ে এবং তাকে হত্যা করে ফেলে। তথায় এমন কেউ ছিল না যে তার পক্ষ অবলম্বন করে তাদেরকে বাধা প্রদান করে। হযরত কাতাদা (রঃ) বলেন যে, তারা তাকে পাথর মারতে থাকে আর সে মুখে উচ্চারণ করেঃ “হে আল্লাহ! আমার কওমকে আপনি হিদায়াত দান করুন, যেহেতু তারা জানে না। এমতাবস্থায় তারা তাকে শহীদ করে দেয়। আল্লাহ্ তার প্রতি দয়া করুন!