তারা আকাঙ্ক্ষা করে যে, তারা নিজেরা যেমন কুফরী করেছে, তোমরাও তেমনি কুফরী কর, যাতে তোমরা তাদের সমান হয়ে যাও। কাজেই তাদের মধ্য হতে কাউকেও বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না, যে পর্যন্ত তারা আল্লাহর পথে হিজরত না করে। যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে তাদেরকে গ্রেফতার কর এবং যেখানেই তাদেরকে পাও, হত্যা কর। তাদের মধ্য হতে কোন বন্ধু ও সাহায্যকারী গ্রহণ করো না।
English Sahih:
They wish you would disbelieve as they disbelieved so you would be alike. So do not take from among them allies until they emigrate for the cause of Allah. But if they turn away [i.e., refuse], then seize them and kill them [for their betrayal] wherever you find them and take not from among them any ally or helper,
1 Tafsir Ahsanul Bayaan
তারা চায় যে, তারা যেরূপ অবিশ্বাস করেছে, তোমরাও সেরূপ অবিশ্বাস কর; ফলে তারা ও তোমরা একাকার হয়ে যাও। অতএব আল্লাহর পথে দেশত্যাগ না করা পর্যন্ত তাদের মধ্য হতে কাউকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না। [১] অতঃপর যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তাহলে তাদেরকে যেখানে পাও, সেখানেই গ্রেফতার করে হত্যা কর[২] এবং তাদের মধ্য হতে কাউকেও বন্ধু ও সহায়রূপে গ্রহণ করো না।
[১] হিজরত (দ্বীনের জন্য স্বদেশত্যাগ) করলে প্রমাণিত হয় যে, এখন সে নিষ্ঠাবান মুসলিমে পরিণত হয়েছে। এই অবস্থায় তার সাথে বন্ধুত্ব স্থাপন করা বৈধ।
[২] তাতে তা 'হিল্ল' (যেখানে হত্যাকান্ড বৈধ সেখানে) হোক অথবা 'হারাম' (যেখানে হত্যাকান্ড বৈধ নয় সেখানে) হোক, যখন তোমরা তাদেরকে নিজেদের কাবুতে পেয়ে যাবে।
2 Tafsir Abu Bakr Zakaria
তারা এটাই কামনা করে যে, তারা যেরূপ কুফরী করেছে তোমরাও সেরূপ কুফরী কর, যাতে তোমরা তাদের সমান হয়ে যাও। কাজেই আল্লাহর পথে হিজরত [১] না করা পর্যন্ত তাদের মধ্য থেকে কাউকেও বন্ধুরূপে গ্রহণ করবে না। যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে তাদেরকে যেখানে পাবে গ্রেফতার করবে এবং হত্যা করবে আর তাদের মধ্য থেকে কাউকেও বন্ধু ও সহায়রূপে গ্রহণ করবে না।
[১] হিজরত দু’অর্থে ব্যবহৃত হয়- (১) দ্বীনের খাতিরে দেশ ত্যাগ করা, যেমন সাহাবায়ে কেরাম স্বদেশ মক্কা ছেড়ে মদীনা ও আবিসিনিয়ায় চলে যান। (২) পাপ কাজ বর্জন করা। তন্মধ্যে প্রথম প্রকার হিজরত হচ্ছে নিজের দ্বীনকে বাঁচানোর জন্য। ইসলামের প্রাথমিক যুগে কাফেরদের দেশ থেকে হিজরত করা প্রত্যেক মুসলিমের উপর ফরয ছিল। এ কারণে যারা এ ফরয পরিত্যাগ করতো, তাদের সাথে আল্লাহ্ তা’আলা মুসলিমদের মত ব্যবহার করতে নিষেধ করে দেন। হিজরত সম্পর্কে হাদীসে বলা হয়েছেঃ যতদিন তাওবা কবুল হওয়ার সময় থাকবে, ততদিন হিজরত বাকী থাকবে। [আবু দাউদঃ ২৪৭৯]
এর দ্বারা বোঝা যায় যে, বর্তমানেও যদি কোন দেশে মুসলিমরা তাদের ঈমান টিকিয়ে রাখতে সামর্থ না হয়, তাদেরকে সেখান থেকে হিজরত করতে হবে। পক্ষান্তরে দ্বিতীয় প্রকার হিজরত হচ্ছে, পাপকর্ম ত্যাগ করা। যেমন, এক হাদীসে রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ ‘ঐ ব্যক্তি মুহাজির, যে আল্লাহর নিষিদ্ধ বিষয় বর্জন করে 'মুসনাদে আহমাদঃ ৪/৯৯]
এ হিজরত সর্বাবস্থায় একজন মুমিনের কর্তব্য। এর জন্য দেশ ত্যাগের প্রয়োজন পড়ে না।
3 Tafsir Bayaan Foundation
তারা কামনা করে, যদি তোমরা কুফরী করতে যেভাবে তারা কুফরী করেছে। অতঃপর তোমরা সমান হয়ে যেতে। সুতরাং আল্লাহর রাস্তায় হিজরত না করা পর্যন্ত তাদের মধ্য থেকে কাউকে তোমরা বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না। অতএব তারা যদি মুখ ফিরিয়ে নেয় তাহলে তাদেরকে পাকড়াও কর এবং তাদেরকে যেখানে পাও হত্যা কর। আর তাদের কাউকে অভিভাবকরূপে গ্রহণ করো না এবং না সাহায্যকারীরূপে।
4 Muhiuddin Khan
তারা চায় যে, তারা যেমন কাফের, তোমরাও তেমনি কাফের হয়ে যাও, যাতে তোমরা এবং তারা সব সমান হয়ে যাও। অতএব, তাদের মধ্যে কাউকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না, যে পর্যন্ত না তারা আল্লাহর পথে হিজরত করে চলে আসে। অতঃপর যদি তারা বিমুখ হয়, তবে তাদেরকে পাকড়াও কর এবং যেখানে পাও হত্যা কর। তাদের মধ্যে কাউকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না এবং সাহায্যকারী বানিও না।
5 Zohurul Hoque
তারা ব্যতীত যারা এমন লোকদের সাথে যোগ-সাজশ করে যাদের মধ্যে ও তোমাদের মধ্যে অঙ্গীকার রয়েছে, অথবা যারা তোমাদের কাছে আসে যাদের হৃদয় সংকুচিত হয়েছে তোমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে অথবা তাদের লোকদের সঙ্গে লড়াই করতে। আর যদি আল্লাহ্ ইচ্ছা করতেন তবে তিনি তোমাদের উপরে তাদের বলীয়ান করতেন, তার ফলে তারা নিশ্চয়ই তোমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করতো। কাজেই যদি তারা তোমাদের থেকে সরে যায় ও তোমাদের সঙ্গে যুদ্ধ না করে, বরঞ্চ তোমাদের প্রতি শান্তি চুক্তি পেশ করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কোনো পথ ধরবার জন্য আল্লাহ্ তোমাদের নিযুক্ত করেন নি।