ذٰلِكَ الَّذِيْ يُبَشِّرُ اللّٰهُ عِبَادَهُ الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا وَعَمِلُوا الصّٰلِحٰتِۗ قُلْ لَّآ اَسْـَٔلُكُمْ عَلَيْهِ اَجْرًا اِلَّا الْمَوَدَّةَ فِى الْقُرْبٰىۗ وَمَنْ يَّقْتَرِفْ حَسَنَةً نَّزِدْ لَهٗ فِيْهَا حُسْنًا ۗاِنَّ اللّٰهَ غَفُوْرٌ شَكُوْرٌ ( الشورى: ٢٣ )
Zaalikal lazee yubash shirul laahu 'ibaadahul lazeena aamanoo wa 'amilus saalihaat; qul laaa as'alukum 'alaihi ajran illal mawaddata fil qurbaa; wa mai yaqtarif hasanatan nazid lahoo feehaa husnaa; innal laaha Ghafoorun Shakoor (aš-Šūrā ৪২:২৩)
English Sahih:
It is that of which Allah gives good tidings to His servants who believe and do righteous deeds. Say, [O Muhammad], "I do not ask you for it [i.e., this message] any payment [but] only good will through [i.e., due to] kinship." And whoever commits a good deed – We will increase for him good therein. Indeed, Allah is Forgiving and Appreciative. (Ash-Shuraa [42] : 23)
তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):
এটা হল তাই আল্লাহ যার সুসংবাদ দিয়েছেন তাঁর সে সব বান্দাহদের জন্য যারা ঈমান আনে আর সৎ কাজ করে। বল, এ কাজের জন্য আত্মীয়তার ভালবাসা ছাড়া তোমাদের কাছে কিছুই চাই না। যে কেউ উত্তম কাজ করে, আমি তার জন্য তাতে পুণ্য বাড়িয়ে দেই। আল্লাহ বড়ই ক্ষমাশীল, ভাল কাজের বড়ই মর্যাদাদানকারী। (আশ-শুরা [৪২] : ২৩)
1 Tafsir Ahsanul Bayaan
আল্লাহ এ সুসংবাদই তাঁর দাসদেরকে দেন, যারা বিশ্বাস করে ও সৎকাজ করে। বল, ‘আমি আমার আহবানের জন্য তোমাদের নিকট হতে আত্মীয়তার সৌহার্দ্য ব্যতীত অন্য কোন প্রতিদান চাই না।’[১] আর যে উত্তম কাজ করে, আমি তার জন্য এতে কল্যাণ বর্ধিত করি।[২] নিশ্চয়ই আল্লাহ পরম ক্ষমাশীল, অতীব গুণগ্রাহী।[৩]
[১] কুরাইশ গোত্রগুলো এবং নবী (সাঃ)-এর মাঝে আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিল। আয়াতের অর্থ একেবারে পরিষ্কার যে, আমি ওয়ায-নসীহত এবং দ্বীনের দাওয়াতের কোন পারিশ্রমিক তোমাদের কাছে চাই না। তবে একটি জিনিস অবশ্যই চাই যে, আমার ও তোমাদের মাঝে যে আত্মীয়তা আছে, তার খেয়াল কর। আমার দাওয়াতকে তোমরা মেনে নিচ্ছ না, তো নিয়ো না। এটা তোমাদের ইচ্ছার ব্যাপার। কিন্তু আমার অনিষ্ট করা হতে তো বিরত থাক। তোমরা আমার বন্ধু ও সহায়ক হতে না পারলেও আত্মীয়তার খাতিরে আমাকে কষ্ট দিয়ো না এবং আমার পথে বাধা হয়ো না, যাতে আমি রিসালাতের দায়িত্ব পালন করতে পারি। ইবনে আব্বাস (রাঃ)-এর অর্থ করেছেন, আমার ও তোমাদের মাঝে যে আত্মীয়তা আছে, তা বজায় রাখ। (বুখারীঃ তাফসীর সূরা আশ্-শুরা) নবী (সাঃ)-এর বংশ অবশ্যই মর্যাদা-সম্মানের দিক দিয়ে দুনিয়ার সর্বাধিক সম্ভ্রান্ত বংশ। এই বংশের প্রতি ভক্তি ও ভালবাসা রাখা এবং তাঁদেরকে ইজ্জত ও সম্মান দান করা, ঈমানের অংশ। কেননা, নবী (সাঃ) বহু হাদীসে তাঁদেরকে সম্মান ও হিফাযত করার ব্যাপারে তাকীদ করেছেন। পক্ষান্তরে এই আয়াতের কোনই সম্পর্ক সে বিষয়ের সাথে নেই, যে বিষয়কে শিয়ারা প্রমাণ করতে চেয়েছে। তারা টেনে-হেঁচড়ে এই আয়াতকে নবী-বংশের প্রতি ভালবাসার সাথে জুড়ে দেয়। আর এই বংশের আওতায় কারা পড়ে তার ব্যক্তিত্বও তারা আলী, ফাতিমা এবং হাসান-হুসাইন (রাযিবয়াল্লাহ আনহুম) পর্যন্ত সীমাবদ্ধ করে দিয়েছে। অনুরূপ তাঁদেরকে ভালবাসার অর্থ তাদের কাছে এই যে, তাঁদেরকে নিষ্পাপ এবং ইলাহী এখতিয়ারের মালিক মনে করতে হবে। অন্য দিকে মক্কার কাফেরদের কাছে তবলীগের বিনিময় স্বরূপ স্বীয় বংশীয় ভালবাসা প্রার্থনা অতীব বিস্ময়কর ব্যাপার; যা নবী (সাঃ)-এর সুউচ্চ মর্যাদার তুলনায় অনেক নিম্নতর। তাঁর তবলীগকে গ্রহণ না করা সত্ত্বেও তাঁর দাবী কেবল এই ছিল যে, আত্মীয়তার ভিত্তিতে ভালবাসা প্রতিষ্ঠিত রাখা হোক। তাছাড়া এই আয়াত ও সূরাটি হল মক্কী। তখন আলী ও ফাতিমা (রাযিআল্লাহু আনহুমা)র মধ্যে বিবাহ বন্ধন সম্পন্ন হয়নি। অর্থাৎ, তখনও পর্যন্ত এ বংশ অস্তিত্বে আসেনি, যার প্রতি মনগড়া ভালবাসা রাখার প্রমাণ এই আয়াত থেকে করা হয়।
[২] অর্থাৎ, নেকী ও সওয়াবে বৃদ্ধি দান করি। অথবা নেকীর পর তার প্রতিদানে আরো নেকী করার তাওফীক দান করি। যেমন, পাপের প্রতিফল স্বরূপ অনেকে আরো অধিক পাপে লিপ্ত হয়ে থাকে।
[৩] এই জন্য তিনি গোপন করেন ও ক্ষমা করে দেন এবং বেশী বেশী করে নেকী দান করেন।