৯০-৯৩ নং আয়াতের তাফসীর:
এখানে আল্লাহ পাক স্বীয় মুমিন বান্দাহদেরকে মদ্য পান জুয়া খেলা ইত্যাদি থেকে নিষেধ করছেন। আমীরুল মুমিনীন হযরত আলী ইবনে আবি তালিব (রাঃ) বলেন যে, শতরঞ্জ এক প্রকারের জুয়া। মুজাহিদ (রঃ) এবং আতা’ (রঃ) বলেন যে, বাজি রেখে যে খেলা করা হয় সেটাই জুয়া। এমনকি ছেলেরা বাজি রেখে যে কড়ি খেলে সেটাও জুয়া। রাশিদ ইবনে সা'দ ও যমরা' ইবনে হাবীব অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। অজ্ঞতার যুগে ইসলাম আগমনের পূর্ব পর্যন্ত এই জুয়া বিশেষভাবে খেলা হতো। কিন্তু আল্লাহ তাআলা মুসলমানদেরকে এই জঘন্য খেলা খেলতে নিষেধ করেছেন। মালিক (রঃ) বলেন যে, অজ্ঞতার যুগে সাধারণভাবে এই জুয়া খেলা হতো। একটি দু'টি ছাগলের গোশত শর্ত হিসেবে বিক্রি করে দেয়া হতো। যুহরী (রঃ) বলেন, জুয়া এভাবে হতো যে, মাল এবং ফলের উপর পাশা নিক্ষেপ করা হতো এবং এভাবে জুয়ার মাধ্যমে ওগুলোর উপর অধিকার লাভ করা হতো। কাসিম ইবনে মুহাম্মাদ (রঃ) বলেন যে, যা কিছু। আল্লাহ ও নামাযের স্মরণ থেকে ভুলিয়ে রাখে তার সবই জুয়া। রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন, পাশার মাধ্যমে যে খেলা করা হয় তা-ই জুয়া। অনুরূপভাবে খেলার সময় যে জিনিসকে মেরে জয়লাভ করা হয় সেটাও জুয়া। এর ভাবার্থ যেন এটাই যে, শতরঞ্জ খেলা হারাম।
রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “যে ব্যক্তি চওসর’ খেলা করলো সে যেন শূকরের মাংস ও রক্ত দ্বারা স্বীয় হাত রঙ্গিয়ে দিলো।” (এটা ইমাম মুসলিম (রঃ) বুরাইদাহ ইবনে খাসীব আসলামী (রঃ) হতে বর্ণনা করেছেন) মুআত্তায়ে ইমাম মালিকের মধ্যে হযরত আবু মূসা আশআরী (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “যে ব্যক্তি চওসর’ খেললো সে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সঃ)-এর নাফরমানী করলো। (এই হাদীসটি ইমাম আহমাদ (রঃ), ইমাম আবু দাউদ (রঃ) এবং ইমাম ইবনে মাজা (রঃ) বর্ণনা করেছেন) আর শতরঞ্জ সম্পর্কে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমার (রাঃ) বলেন যে, ওটা চওসর থেকেও খারাপ এবং তিনি ওটাকে পাশা ও জুয়ার মধ্যে গণ্য করেন। ইমাম মালিক (রঃ), ইমাম আবু হানীফা (রঃ) এবং ইমাম আহমাদ (রঃ) একে মাকরূহ বলেছেন।
اَنْصَابٌ সম্পর্কে হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) ও হযরত মুজাহিদ (রঃ) বলেন যে, اَنْصَابٌ ঐ পাথরগুলোকে বলা হতো যেগুলোর উপর পশু যবাই করে মুশরিকরা তাদের মূর্তিগুলোর নামে উৎসর্গ করতো। اَزْلَامٌ ঐ পাশাগুলোকেও বলা হতো যেগুলোকে বণ্টন করে শুভাশুভ লক্ষণ বের করা হতো। رِجْسٌ مِّنْ عَمَلِ الشَّيْطٰنِ- অর্থাৎ এগুলো গহিত বিষয়, আর এগুলো শয়তানী কাজ ছাড়া আর কিছুই নয়। এমনকি এগুলো হচ্ছে নিকৃষ্টতম শয়তানী কাজ।
فَاجْتَنِبُوْهُ -এর ه সর্বনামটি رِجْسٌ শব্দের দিকে প্রত্যাবর্তিত হয়েছে। অর্থাৎ তোমরা এগুলো পরিত্যাগ কর।
لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُوْنَ - এ কথা দ্বারা আল্লাহ পাক স্বীয় বান্দাদেরকে এসব কাজ পরিত্যাগ করার প্রতি উৎসাহ প্রদান করেছেন। অতঃপর আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ শয়তান তো ওটাই চায় যে, মদ ও জুয়া দ্বারা তোমাদের পরস্পরের মধ্যে শত্রুতা ও হিংসা সৃষ্টি করে এবং আল্লাহর স্মরণ ও নামায থেকে তোমাদেরকে বিরত রাখে, সুতরাং এখনও কি তোমরা (এসব কাজ থেকে) বিরত থাকবে না? এ কথাগুলো আল্লাহ তা'আলার বান্দাদের প্রতি ভয় প্রদর্শন ও সতর্কবাণী।
মদ্য হারাম হওয়া সম্পর্কে বর্ণিত হাদীসগুলো নিম্নে উল্লেখ করা হলোঃ
ইমাম আহমাদ (রঃ) হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেছেন, মদ্য তিনবার হারাম করা হয়। যখন নবী (সঃ) মদীনায় আগমন করেন সেই সময় মদীনার লোকেরা মদ্য পান করতো এবং জুয়ার মাধ্যমে উপার্জিত মাল ভক্ষণ করতো। ঐ সম্পর্কে তারা রাসূলুল্লাহ (সঃ)-কে জিজ্ঞাসাবাদ করলে আল্লাহ তা'আলা নিম্নলিখিত আয়াত অবতীর্ণ করেন।
তুমি বল- এই দু’জিনিসে মানুষের জন্যে সামান্য উপকার আছে বটে; কিন্তু এই উপকারের তুলনায় ক্ষতি খুবই বেশী। তখন লোকেরা বলাবলি করতে লাগলোঃ আল্লাহ তাআলা এ দুটো জিনিস আমাদের উপর হারাম তো করলেন। না। তিনি শুধু বললেন যে, এ দুটো জিনিসে আমাদের উপকার কম এবং ক্ষতি বেশী। সুতরাং তারা মদ্যপান করতেই থাকলো। কিন্তু একদিন এমন আসলো যে, এক মুহাজির সাহাবী নেশার অবস্থায় নামাযে কুরআন মাজীদ পাঠ করতে গিয়ে ভুল ও গড়বড় করে দেন। তখন নিম্নের আয়াতটি অবতীর্ণ হয়।
“হে মুমিনগণ! তোমরা নেশার অবস্থায় নামাযের কাছেও যেয়ো না, যে পর্যন্ত না জানতে পার যে, তোমরা কি বলছো। সুতরাং লোকেরা নামাযের সময় মদ্যপান পরিত্যাগ করলো বটে; কিন্তু অন্য সময় পান করতেই থাকলো। কেননা, তখন পর্যন্ত স্পষ্টভাবে তা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়নি। অবশেষে একদিন মদ্যপান করে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় কোন একজন লোক নামায পড়ছিল, এমন সময় পরিষ্কারভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْۤا اِنَّمَا الْخَمْرُ وَ الْمَیْسِرُ -এ আয়াত অবতীর্ণ হয়। তখন লোকেরা বলেঃ হে আমাদের প্রভু! আমরা বিরত থাকলাম। অতঃপর লোকেরা রাসূলুল্লাহ (সঃ)-কে জিজ্ঞেস করলোঃ “হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! মদ্য নিষিদ্ধ ঘোষিত হওয়ার পূর্বে যারা আল্লাহর পথে যুদ্ধ করে নিহত হয়েছে কিংবা স্বাভাবিক মৃত্যুবরণ করেছে; কিন্তু তারা মদ্যপান করতো এবং জুয়া খেলতো- তাদের কি হবে? কেননা, আল্লাহ তা'আলা তো এটাকে শয়তানী কাজ বলে আখ্যায়িত করলেন এবং নিষিদ্ধ করলেন। তখন নিম্নের আয়াত অবতীর্ণ হলো-যারা ঈমান এনেছিল এবং ভাল কাজ করেছিল তারা নিষিদ্ধ ঘোষণা হওয়ার পূর্বে যা কিছু ভক্ষণ করেছিল সে জন্যে তাদের উপর কোন দোষারোপ করা হবে না। আর রাসূলুল্লাহ (সঃ) বললেনঃ “যদি তাদের জীবদ্দশায় এটা হারাম করা হতো তবে তোমরা যেমন তা ছেড়ে দিলে, তারাও দ্রুপ ছেড়ে দিতো।”
ইমাম আহমাদ (রঃ) বর্ণনা করেছেন যে, মদ হারাম হওয়ার আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার পূর্বে হযরত উমার (রাঃ) আল্লাহ তা'আলার নিকট প্রার্থনা জানিয়ে বললেনঃ হে আল্লাহ! আমাদের জন্যে মদ্য সম্পর্কে স্পষ্ট বর্ণনা দিন!' তখন সূরায়ে বাকারার یَسْــئَلُوْنَكَ عَنِ الْخَمْرِ وَ الْمَیْسِرِؕ-قُلْ فِیْهِمَاۤ اِثْمٌ كَبِیْرٌ (২:২১৯)-এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। অতঃপর যখন হযরত উমার (রাঃ)-কে এ আয়াত শুনানো হয় তখন তিনি পুনরায় প্রার্থনা করেন, হে আল্লাহ! আমাদের জন্যে মদ্যের ব্যাপারে সুস্পষ্ট বর্ণনা দান করুন! তখন সূরায়ে নিসার یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا لَا تَقْرَبُوا الصَّلٰوةَ وَ اَنْتُمْ سُكٰرٰى -এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। তখন নবী (সঃ)-এর মুআযযিন حَىَّ عَلَى الصَّلٰوةِ বলার পর উচ্চৈঃস্বরে বলে দেন যে, নেশার অবস্থায় নামায পড়া নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। হযরত উমার (রাঃ)-কে এ আয়াতটিও পড়ে শুনানো হয়। তিনি এবারেও বলেন, হে আল্লাহ! আপনি আমাদের জন্যে আরও সুস্পষ্ট ও খোলাখুলিভাবে বর্ণনা করে দিন! তখন সূরায়ে মায়িদাহ্র উল্লিখিত আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। এবারও হযরত উমার (রাঃ)-কে আয়াতটি পাঠ করে শুনানো হয়। যখন আল্লাহ তা'আলা বলেন, فَهَلْ اَنْتُمْ مُّنْتَهُوْنَ (সুতরাং তোমরা বিরত থাকবে কি?) তখন হযরত উমার (রাঃ) বলেন, আমরা বিরত থাকলাম, আমরা বিরত থাকলাম।
সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমে রয়েছে যে, হযরত উমার (রাঃ) নবী (সঃ)-এর মিম্বরের উপর দাঁড়িয়ে ভাষণ দিতে গিয়ে বলেন, হে লোক সকল! মদ হারাম ঘোষিত হয়েছে। আর পাঁচটি জিনিসের মধ্যে যেটা দিয়েই মদ তৈরী করা হবে সেটাই হারাম। সেই পাঁচটি জিনিস হচ্ছেঃ আঙ্গুর, খেজুর, মধু, গম ও যব। خَمْرٌ বা মদ শব্দটি সাধারণ। সুতরাং যে নেশার জিনিস পান করলে জ্ঞান লোপ পায় সেটাই মদ। সহীহ বুখারীতে হযরত ইবনে উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেছেন, যে সময় মদ হারাম করা হয় সে সময় মদীনায় আঙ্গুরের মদ চালু ছিল না।
অপর একটি হাদীসে রয়েছে যে, আব্দুর রহমান ইবনে আ’লা বলেন, আমি হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ)-কে মদ্য বিক্রয় সম্পর্কে জিজ্ঞেস করি। তখন তিনি বলেন, সাকীফ অথবা দাউদ গোত্রের একটি লোক রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর বন্ধু ছিলেন। মক্কা বিজয়ের দিন তিনি রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর সাথে মিলিত হন এবং মদের একটি বড় কলস উপঢৌকন হিসেবে তাকে প্রদান করেন। তখন রাসূলুল্লাহ (সঃ) লোকটিকে বলেনঃ “আল্লাহ তাআলা মদ হারাম করে দিয়েছেন, তা কি তুমি জান না? তখন লোকটি স্বীয় গোলামকে বলেনঃ “এটা নিয়ে গিয়ে বাজারে বেচে দাও।' রাসূলুল্লাহ (সঃ) তখন বলেনঃ “যিনি মদ হারাম করেছেন তিনি ওর ক্রয়-বিক্রয়ও হারাম করেছেন। তখন লোকটি তার গোলামকে বললো, তুমি এই কলসটি শহরে নিয়ে গিয়ে উলটিয়ে ফেলে দাও।” (এটা ইমাম আহমাদ (রঃ) বর্ণনা করেছেন এবং ইমাম মুসলিম (রঃ) ও ইমাম নাসাঈ (রঃ) এটা তাখরীজ করেছেন)
আর একটি হাদীসে তামীম দারী (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, তিনি প্রতি বছর রাসূলুল্লাহ (সঃ)-কে একটি মদের মটকা (মৃৎপাত্র) উপঢৌকন স্বরূপ পাঠাতেন। অতঃপর মদ হারাম হয়ে যাওয়ার পর পূর্বের অভ্যাস মত তিনি মদের মটকা নিয়ে আসেন। তখন রাসূলুল্লাহ (সঃ) হেসে উঠে বলেনঃ “ইতিমধ্যে মদ হারাম করে দেয়া হয়েছে।” তিনি তখন বলেন, হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! তাহলে আমি ওটা বিক্রি করে দেবো এবং ওর মূল্য দ্বারা উপকৃত হবো। তখন রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেনঃ “আল্লাহ ইয়াহুদীদের উপর লা'নত বর্ষণ করুন। তাদের উপর গরু ও ছাগলের চর্বি হারাম করে দিয়েছিলেন, তখন তারা তা গলিয়ে ‘রাওগান’ (তৈল) তৈরী করতঃ বিক্রি করতো। আল্লাহ তা'আলা মদ ও ওর মূল্য সব কিছুই হারাম করেছেন।”
মুসনাদে আহমাদে হযরত নাফে ইবনে কাইসান হতে বর্ণিত আছে যে, তাঁর পিতা (কাইসান) রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর যুগে মদের ব্যবসা করতেন। একবার তিনি ব্যবসার জন্যে সিরিয়া হতে কতগুলো মদের মটকা নিয়ে আসেন। রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর নিকট তিনি একটি মটকা নিয়ে এসে বলেন, হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! আপনার জন্য খুবই উত্তম মদ নিয়ে এসেছি। তখন তিনি বলেনঃ ‘হে কাইসান। ইতিমধ্যে মদ তো হারাম করে দেয়া হয়েছে।' কাইসান (রাঃ) তখন জিজ্ঞেস করেন, হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! আমি কি এটা বিক্রি করে দেববা? তিনি উত্তরে বলেনঃ “এটা হারাম করা হয়েছে এবং এর মূল্যও হারাম করে দেয়া হয়েছে।” তখন কাইসান (রাঃ) মটকাগুলো নিয়ে গিয়ে পা দিয়ে উলটিয়ে ফেলে দেন এবং সমস্ত মদ বইয়ে দেন।
মুসনাদে আহমাদে হযরত আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেন, আমি আবূ তালহা (রাঃ)-এর বাড়ীতে হযরত আবু উবাইদাহ্ ইবনে জাররাহ (রাঃ), হযরত উবাই ইবনে কা'ব (রাঃ), হযরত সুহাইল ইবনে বাইযা (রাঃ) এবং তার অন্যান্য সাথীদেরকে মদ পান করাচ্ছিলাম। এমনকি তাদের মাতাল হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল। এমতাবস্থায় মুসলমানদের এক আগমনকারী এসে বলেনঃ “মদকে হারাম করে দেয়া হয়েছে এ খবর কি আপনারা জানেন?” তখন তারা বলেন, এখনও আমরা অপেক্ষা করবো এবং এ সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করবো। অন্যান্য সাহাবীগণ বললেনঃ “হে আনাস (রাঃ)! তোমার মটকায় যা কিছু মদ অবশিষ্ট রয়েছে তা উলটিয়ে,ফেলে দাও। আল্লাহর কসম! এখন আমরা আর মদ পান করবো না।” এটা ছিল খেজুর ও যবের মদ। আর সে সময় ঐ মদই চালু ছিল। (এটা ইমাম আহমাদ (রঃ), ইমাম বুখারী (রঃ) এবং ইমাম মুসলিম (রঃ) হযরত আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন) হযরত আনাস (রাঃ) হতে আর একটি বর্ণনা রয়েছে, তিনি বলেন, যেদিন মদ হারাম করা হয় সেদিন আমি আবূ তালহা (রাঃ)-এর বাড়িতে লোকদেরকে মদ পান করাচ্ছিলাম। ঐ মদ ছিল যব ও খেজুরের তৈরী। হঠাৎ একজন ঘোষণাকারী ঘোষণা দেন। তখন কেউ বলে ওঠেন, ‘বেরিয়ে দেখ তো। কি ঘোষণা করা হচ্ছে?' তখন জানা গেল যে, ঘোষণাকারী ঘোষণা করছেন“জেনে রেখো যে, মদ হারাম করে দেয়া হয়েছে।” ঐ সময় মদীনার অলিতে গলিতে মদ বয়ে যাচ্ছিল। বর্ণনাকারী আনাস (রাঃ) বলেন, আবু তালহা (রাঃ) আমাকে বললেন, ‘বেরিয়ে গিয়ে মদ বইয়ে দাও।' তখন আমি তা বইয়ে দিলাম। তখন কেউ কেউ বললেন, অমুক ও অমুক যুদ্ধে শহীদ হয়েছেন, অথচ এই মদ তাঁদের পেটের মধ্যে বিদ্যমান ছিল। বর্ণনাকারী বলেন, তখন আল্লাহ তা'আলা নিম্নের আয়াতটি অবতীর্ণ করেন- لَیْسَ عَلَى الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ جُنَاحٌ فِیْمَا طَعِمُوْا অর্থাৎ যারা ঈমান রাখে ও ভাল কাজ করে, এরূপ লোকদের উপর তাতে কোন গুনাহ নেই যা তারা (পূর্বে) পানাহার করেছে। হযরত আনাস (রাঃ) বলেন, আমি আবূ তালহা (রাঃ), আবু উবাইদাহ ইবনে জাররাহ (রাঃ), আবু দাজানা (রাঃ), মুআয ইবনে জাবাল (রাঃ), সুহাইল ইবনে বাহযা (রাঃ) প্রমুখ ব্যক্তি মহোদয়ের কাছে মদ পরিবেশন করছিলাম এবং নেশার কারণে তাঁদের মাথাগুলো ঢলে পড়ছিল, এমন সময় আমি ঘোষণাকারীকে ঘোষণা করতে শুনলাম, জেনে রেখো যে, মদ হারাম করে দেয়া হয়েছে। এ কথা শোনা মাত্রই যারা আমাদের কাছে আসছিলেন এবং যারা আমাদের নিকট থেকে বেরিয়ে যাচ্ছিলেন, সবাই নিজ নিজ মদ বইয়ে দেন। আমরা সবাই মদের কলসগুলো ভেঙ্গে ফেলি। আমাদের কেউ কেউ অযু করেন এবং কেউ কেউ গোসলও করেন। আমরা উম্মে সুলাইমের নিকট থেকে সুগন্ধি নিয়ে ব্যবহার করি। অতঃপর আমরা মসজিদে গমন করি। তখন রাসূলুল্লাহ (সঃ) আমাদেরকে یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْۤا اِنَّمَا الْخَمْرُ وَ الْمَیْسِرُ হতে فَهَلْ اَنْتُمْ مُّنْتَهُوْنَ পর্যন্ত আয়াতগুলো পাঠ করে শুনিয়ে দেন। একটি লোক তখন বলেনঃ হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! যারা এটা পান করা অবস্থায় মারা গেছে তাদের কি হবে? সেই সময় আল্লাহ তা'আলা لَیْسَ عَلَى الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا আয়াতটি অবতীর্ণ করেন। একটি লোক হযরত কাতাদা (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করেন, আপনি আপনি এটা হযরত আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) থেকে শুনেছেন? তিনি উত্তরে বলেন, হ্যা। একটি লোক হযরত আনাস ইবনে মালিক (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করেন, আপনি কি এটা রাসূলুল্লাহ (সঃ) থেকে শুনেছেন? তিনি উত্তর দেন, হ্যা, আমরা কখনও মিথ্যা বলি না এবং মিথ্যা কি তা আমরা জানি না। (এটা ইবনে জারীর (রঃ) ইবাদ ইবনে রাশিদ (রঃ)-এর হাদীস হতে তাখরীজ করেছেন, তিনি কাতাদাহ (রাঃ) হতে এবং তিনি আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন)
ইমাম আহমাদ (রঃ) হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন- “নিশ্চয় আল্লাহ মদ, জুয়া, শতরঞ্জ এবং গাবীরা গাছ হতে নিংড়ানো মদ হারাম করেছেন, আর প্রত্যেক নেশাযুক্ত জিনিসই। হারাম।' হযরত ইবনে উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ (সঃ) একটি বেড়ার দিকে গমন করেন। আমি তাঁর ডান দিকে ছিলাম। এমন সময় হযরত আবু বকর (রাঃ) সামনের দিক থেকে আগমন করলেন। আমি তখন পিছনে চলে গেলাম এবং হযরত আবূ বকর (রাঃ) তাঁর ডান দিকে হয়ে গেলেন। আর আমি তার বাম দিকে গেলাম। ইতিমধ্যে হযরত উমার (রাঃ)-কে আসতে দেখা গেল। আমি তখন সরে গেলাম এবং তিনি তাঁর বাম দিকে চলে গেলেন। এখন রাসূলুল্লাহ (সঃ) ঐ বেড়ার মধ্যে আসলেন যা বাড়ীর পিছনে উট বাঁধার জায়গা ছিল। সেখানে মদের একটি মশক দেখা গেল। ইবনে উমার (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সঃ) আমাকে ডাকলেন এবং ছুরি দিয়ে ওটা কেটে ফেলতে বললেন। আমি তখন ওটা ফেড়ে ফেললাম। তারপর তিনি বললেনঃ ‘মদ, মদ্যপানকারী, পরিবেশনকারী, বহনকারী, নিংড়িয়ে রস বেরকারী, তৈরিকারী এবং ওর মূল্য গ্রহণকারী সকলের উপর আল্লাহর লানত।” (এ হাদীসটি ইমাম আহমাদ (রঃ) বর্ণনা করেছেন।)
হযরত সা'দ (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, মদের ব্যাপারে চারটি আয়াত অবতীর্ণ হয়। অতঃপর তিনি হাদীস বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, একজন আনসারী আমাদেরকে দাওয়াত করেন। আমরা সেখানে প্রচুর মদ পান করি। এটা ছিল মদ হারাম হওয়ার পূর্বের ঘটনা। আমরা যখন নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়ি তখন আমরা পরস্পর ফখর বা গৌরব প্রকাশ করতে শুরু করি। আনসারগণ বলেন, আমরাই উত্তম।' আবার কুরাইশরা বলেন, “আমরাই উত্তম।' অতঃপর এক আনসারী উটের একটা বড় হাড় নিয়ে হযরত সা'দ (রাঃ)-এর নাকের উপর মেরে দেন। ফলে হযরত সা'দ (রাঃ)-এর নাকের হাড় ভেঙ্গে যায়। তখন اِنَّمَا الْخَمْرُ وَ الْمَیْسِرُ হতে فَهَلْ اَنْتُمْ مُّنْتَهُوْنَ পর্যন্ত আয়াতগুলো অবতীর্ণ হয়। (এ হাদীসটি ইমাম বায়হাকী (রঃ) বর্ণনা করেছেন এবং ইমাম মুসলিম (রঃ) এটা তাখরীজ করেছেন)
হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আনসারদের দু'টি দলকে কেন্দ্র করে মদ্য হারাম হওয়ার আয়াতগুলো অবতীর্ণ হয়। তারা প্রচুর পরিমাণে মদ পান করার ফলে নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন এবং তাদের পরস্পরের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়ে যায়। কারও চেহারায় আঘাত লাগে, কারও মাথা ক্ষত-বিক্ষত হয় এবং কারও দাড়ি উঠিয়ে ফেলা হয়। কেউ বলেন, “আমার অমুক সঙ্গী আমাকে আহত করেছে। এভাবে তারা একে অপরের শক্ত হয়ে পড়েন। অথচ ইতিপূর্বে তাদের মধ্যে প্রেম-প্রীতি বিদ্যমান ছিল। কারও প্রতি কারও কোন হিংসা বিদ্বেষ ছিল না। তারা বলতে শুরু করেন, যদি সে আমার প্রতি সহানুভূতিশীল হতো তবে আমাকে এভাবে আহত করতো না। এভাবে তাদের মধ্যে শক্রতা বেড়ে যায়। তখন আল্লাহ তা'আলা یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْۤا اِنَّمَا الْخَمْرُ وَ الْمَیْسِرُ হতে فَهَلْ اَنْتُمْ مُّنْتَهُوْنَ পর্যন্ত পর্যন্ত আয়াতগুলো অবতীর্ণ করেন। এরপর কতক লোক বলেনঃ কতগুলো লোক উহুদ যুদ্ধে শহীদ হয়েছেন, অথচ তাদের পেটে মদ বিদ্যমান ছিল, তাদের কি হবে? তখন আল্লাহ পাক لَیْسَ عَلَى الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ -এ আয়াত অবতীর্ণ করেন। (এই হাদীসটি ইমাম বায়হাকী (রঃ) ও ইমাম নাসাঈ (রঃ) বর্ণনা করেছেন)
ইবনে জারীর (রঃ) আবু বুরাইদাহ (রঃ) হতে এবং তিনি তাঁর পিতা হতে বর্ণনা করেন যে, তিনি (তার পিতা) বলেন, আমরা একটা ছোট পাহাড়ের উপর বসে মদ পান করছিলাম। আমরা তিনজন বা চারজন ছিলাম। আমাদের সামনে মদের কলস ছিল এবং মদের চক্র চলছিল। আমি উঠে রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর কাছে গেলাম এবং তাঁকে সালাম দিলাম। তখনই মদ হারাম হওয়ার আয়াত অবতীর্ণ হলো। আমি তৎক্ষণাৎ আমার সঙ্গীদের নিকট আসলাম এবং তাদের কাছে فَهَلْ اَنْتُمْ مُّنْتَهُوْنَ পর্যন্ত পাঠ করলাম। কেউ মদ পান করে ফেলেছিলেন। আবার কেউ কেউ আংশিক পান করেছিলেন এবং আংশিক পাত্রে অবশিষ্ট ছিল। পাত্র তার হাতেই ছিল। কারও মুখে মদ লেগেও ছিল। এমতাবস্থায় সবাই নিজ নিজ মদ মাটিতে বইয়ে দিলেন এবং আয়াতের শেষাংশ فَهَلْ اَنْتُمْ مُّنْتَهُوْنَ শোনামাত্রই তারা বলে উঠলেন, “হে আমাদের প্রভু! আমরা বিরত থাকলাম।
সহীহ বুখারীতে হযরত জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন যে, উহুদ যুদ্ধের দিন সকালে লোকেরা মদ পান করেছিলেন এবং সেই দিনই তাঁদের অধিকাংশ শহীদ হয়েছিলেন। এটা ছিল মদ হারাম হওয়ার পূর্বের ঘটনা।
আবু দাঊদ তায়ালিসী (রঃ) হযরত বারা ইবনে আমির (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন যে, যখন মদ হারাম হওয়া সম্পর্কিত আয়াত অবতীর্ণ হয়। তখন জনগণ বলেন, এটা হারাম হওয়ার পূর্বে যারা এটা পান করেছিলেন (এবং ঐ অবস্থাতেই মারা গিয়েছেন। তাঁদের কি হবে?” তখন لَیْسَ عَلَى الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا –এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়।
মুসনাদে আহমাদ হযরত আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, হযরত আবু তালহা (রাঃ) তাঁর কাছে প্রতিপালিত ইয়াতীমদের সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (সঃ)-কে ফতওয়া জিজ্ঞেস করেন যারা উত্তরাধিকার সূত্রে মদ প্রাপ্ত হয়েছিল। রাসলল্লাহ (সঃ) উত্তরে বলেনঃ “ওটা বইয়ে দাও।' আবু তালহা (রাঃ) জিজ্ঞেস করেন, ‘ওর সিরকাহ বানিয়ে নিলে হয় না? তিনি জবাবে বলেনঃ না।'
হযরত ইবনে উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন“যে ব্যক্তি দুনিয়ার মদ পান করলো এবং তা থেকে তাওবা করলো না, পরকালে তার জন্যে তা হারাম হয়ে গেল।” (এটা ইমাম বুখারী (রঃ) ও ইমাম মুসলিম (রঃ) মালিক (রাঃ)-এর হাদীস হতে তাখরীজ করেছেন)
হযরত নাফে' (রাঃ) হযরত ইবনে উমার (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন- ‘নেশাযুক্ত প্রত্যেক জিনিসই হারাম। যে ব্যক্তি সারা জীবন ধরে মদ পান করে মারা গেলো এবং তা হতে তাওবা করলো না, সে পরকালে তা পান করতে পাবে না।” (এ হাদীসটি ইমাম মুসলিম (রঃ) বর্ণনা করেছেন)
হযরত আবু সাঈদ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, নবী (সঃ) বলেছেনঃ অনুগ্রহের খোটাদানকারী, পিতা-মাতার অবাধ্য এবং সদা মদ্যপানকারী জান্নাতে যাবে না। (এ হাদীসটি ইমাম নাসাঈ (রঃ) ও ইমাম আহমাদ (রঃ) বর্ণনা করেছেন)
ইমাম যুহরী (রঃ) বর্ণনা করেছেন যে, হযরত উসমান ইবনে আফফান (রাঃ) একবার জনগণকে সম্বোধন করে বলেন, তোমরা মদ্য পান থেকে বিরত থাক, কেননা, এটাই হচ্ছে সমস্ত দুস্কার্য ও অশ্লীলতার মূল। তোমাদের পূর্ব যুগে একজন বড় ‘আবেদ লোক ছিল। সে জনগণের সাহচর্যে থাকতো না। একটি পতিতা মহিলার তার প্রতি দৃষ্টি পড়ে যায়। সে সাক্ষ্য নেয়ার বাহানায় তার চাকরাণীর মাধ্যমে তাকে ডেকে পাঠায়। সে তার সাথে চলে আসে। অতঃপর সে যে দরজা দিয়ে প্রবেশ করে, পিছন থেকে তা বন্ধ করে দেয়া হয়। অবশেষে সে মহিলাটির নিকট হাযির হয়ে দেখতে পায় যে, সেখানে একটি শিশু ও মদের একটি কলস রয়েছে। সে তখন তাকে বলে, “আল্লাহ্র কসম! আমি আপনাকে সাক্ষ্য নেয়ার উদ্দেশ্যে ডাকিনি। বরং ডেকেছি এই উদ্দেশ্যে যে, আপনি আমার কাছে থেকে রাত কাটাবেন, অথবা এই শিশুটিকে হত্যা করবেন কিংবা মদ পান করবেন।” তখন সে (হত্যা ও ব্যভিচার অপেক্ষা মদ্যপানের পাপকে ছোট মনে করে) এক পেয়ালা মদ পান করে ফেলে। তারপর বলেঃ আমাকে আরও দাও।' শেষ পর্যন্ত সে নেশাগ্রস্ত হয়ে শিশুটিকে হত্যা করে বসে এবং মহিলাটির সাথে ব্যভিচার করে ফেলে। তাই তোমরা মদ্যপান থেকে বিরত থাক। মদ ও ঈমান কখনও এক জায়গায় জমা হতে পারে না। মদ থাকলে ঈমান নেই এবং ঈমান থাকলে মদ নেই। তাঁর এ উক্তির প্রমাণ হিসেবে সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমের ঐ হাদীসটি উল্লেখ করা যেতে পারে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ ব্যভিচারী যে সময় ব্যভিচার করে সে সময় সে মুমিন থাকে না, চোর যখন চুরি করে তখন সে মুমিন থাকে না এবং মদ্যপানকারী যখন মদ্যপান করে তখন সে মুমিন থাকে না। মুসনাদ আহমাদে আসমা বিনতে ইয়াযীদ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, আমি নবী করীম (সঃ)-কে বলতে শুনেছি- “যে ব্যক্তি মদ্য পান করে, আল্লাহ তার উপর চল্লিশ দিন পর্যন্ত অসন্তুষ্ট থাকেন। ঐ অবস্থায় যদি সে মারা যায় তবে সে কাফির হয়ে মারা যাবে। আর যদি সে তাওবা করে তবে আল্লাহ সেই তাওবা কবুল করবেন। কিন্তু যদি সে পুনরায় এতে ফিরে যায় (অর্থাৎ পুনরায় পান করতে শুরু করে। তবে তাকে طِيْنة الْخَبَالِ পান করাবার অধিকার আল্লাহর আছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রাসূল (সঃ) طِيْنة الْخَبَالِ কি? তিনি উত্তরে বললেনঃ তা হচ্ছে জাহান্নামীদের পূজ।