قَالَ هٰذَا رَحْمَةٌ مِّنْ رَّبِّيْۚ فَاِذَا جَاۤءَ وَعْدُ رَبِّيْ جَعَلَهٗ دَكَّاۤءَۚ وَكَانَ وَعْدُ رَبِّيْ حَقًّا ۗ ( الكهف: ٩٨ )
তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):
সে বলল, ‘এ আমার প্রতিপালকের করুণা, যখন আমার প্রতিপালকের ওয়া‘দার নির্দিষ্ট সময় আসবে, তখন তিনি তাকে ধূলিসাৎ করে দেবেন আর আমার প্রতিপালকের ওয়া‘দা সত্য।
English Sahih:
[Dhul-Qarnayn] said, "This is a mercy from my Lord; but when the promise of my Lord comes [i.e., approaches], He will make it level, and ever is the promise of my Lord true."
1 Tafsir Ahsanul Bayaan
সে বলল, ‘এটা আমার প্রতিপালকের অনুগ্রহ; অতঃপর যখন আমার প্রতিপালকের প্রতিশ্রুতি এসে পড়বে তখন তিনি ওটাকে চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দেবেন।[১] আর আমার প্রতিপালকের প্রতিশ্রুতি সত্য।’
[১] এই প্রাচীর যদিও অত্যন্ত মজবুত করে বানানো হয়েছে; যার উপর চড়ে কিংবা যাতে ছিদ্র করে এদিকে আসা তাদের সম্ভবপর নয়, তবুও আমার প্রতিপালকের প্রতিশ্রুতি যখন এসে যাবে, তখন তিনি সেটাকে চূর্ণ-বিচূর্ণ করে মাটি বরাবর করে ফেলবেন। ওয়াদা বা প্রতিশ্রুতি এসে পড়বে অর্থাৎ কিয়ামতের নিকটবর্তী য়্যা'জূজ-মা'জূজের বের হবার সময় এসে পড়বে; যেমন এ কথা হাদীসে উল্লেখ আছে। একটি হাদীসে এসেছে, নবী (সাঃ) ঐ প্রাচীরের সামান্য ছিদ্রকে ফিতনার নিকটবর্তী সময় বলে উল্লেখ করেছেন। (বুখারী ৩৩৪৬, মুসলিম ২২০৮নং) অন্য এক হাদীসে বলা হয়েছে, তারা প্রতিদিন সেই প্রাচীর ভাঙ্গার চেষ্টা করে আর বাকী অংশ কাল ভাঙ্গব বলে ফেলে রাখে। অতঃপর যখন আল্লাহর ইচ্ছায় তাদের বের হবার সময় হবে তখন তারা বলবে, ইন শাআল্লাহ বাকী অংশ আগামী কাল ভেঙ্গে ফেলব। সুতরাং তার পরের দিন তারা বের হতে সক্ষম হবে এবং পৃথিবীতে ধ্বংসলীলা চালাবে এমনকি ভয়ে মানুষ দুর্গে গিয়ে আশ্রয় নেবে। এরপর তারা আকাশে তীর ছুঁড়তে শুরু করবে যা রক্ত মাখা অবস্থায় তাদের কাছে ফিরে আসবে। শেষ পর্যন্ত আল্লাহ তাআলা তাদের ঘাড়ে এক প্রকার কীট (পোকা) সৃষ্টি করবেন, যার ফলে তারা সকলেই প্রাণ হারাবে। (আহমাদ ১২/৫১১, তিরমিযী ৩১৫৩নং) সহীহ মুসলিমে নাওয়াস বিন সামআন (রাঃ)-এর হাদীসে আরও পরিষ্কারভাবে এসেছে যে, তারা বের হবে ঈসা (আঃ) অবর্তীণ হবার পর তাঁর বর্তমানে। (ফিতনাহ অধ্যায়) আর এই উক্তি দ্বারা ঐ সমস্ত লোকেদের ধারণার খন্ডন হয় যারা মনে করে যে, মুসলিমদের উপর আক্রমণকারী তাতার অথবা তুর্কী ও মুঘল সম্প্রদায়; যাদের মধ্যে চেঙ্গিস খান একজন, অথবা রুশ বা চীনা জাতিই হল য়্যা'জূজ-মা'জূজ; যাদের প্রকাশ ঘটে গেছে। অনেকের মতে য়্যা'জূজ-মা'জূজ হল পাশ্চাত্য জাতি, যারা আজ সারা পৃথিবীর উপর আগ্রাসী সাম্রাজ্যবাদের জাল বিস্তার করে রেখেছে। এ সমস্ত ধারণা ভুল। কারণ য়্যা'জূজ-মা'জূজের আধিপত্য বলতে রাজনৈতিক আধিপত্য উদ্দেশ্য নয়; বরং তাদের হত্যা ও লুঠতরাজের এ জাতীয় সাময়িক আধিপত্য উদ্দেশ্য, মুসলিমরা যার মোকাবেলা করতে সক্ষম হবে না। অতঃপর আল্লাহ-প্রেরিত মহামারী দ্বারা আক্রান্ত হয়ে সকলেই একই সময়ে মারা যাবে।