হযরত যাকারিয়ার (আঃ) প্রার্থনা কবুল হয় এবং তাকে বলা হয়ঃ তুমি একটি সন্তানের সুসংবাদ শুনে নাও, যার নাম হবে ইয়াহইয়া (আঃ)। যেমন অন্য জায়গায় রয়েছেঃ هُنَالِكَ دَعَا زَكَرِیَّا رَبَّهٗۚ-قَالَ رَبِّ هَبْ لِیْ مِنْ لَّدُنْكَ ذُرِّیَّةً طَیِّبَةًۚ-اِنَّكَ سَمِیْعُ الدُّعَآءِ ـ فَنَادَتْهُ الْمَلٰٓىٕكَةُ وَ هُوَ قَآىٕمٌ یُّصَلِّیْ فِی الْمِحْرَابِۙ-اَنَّ اللّٰهَ یُبَشِّرُكَ بِیَحْیٰى مُصَدِّقًۢا بِكَلِمَةٍ مِّنَ اللّٰهِ وَ سَیِّدًا وَّ حَصُوْرًا وَّ نَبِیًّا مِّنَ الصّٰلِحِیْنَ অর্থাৎ “তখন যাকারিয়া (আঃ) প্রার্থনা করলো স্বীয় প্রভূর নিকট, বললোঃ হে আমার প্রতিপালক! দান করুন আমাকে আপনার নিকট হতে কোন উত্তম সন্তান; নিশ্চয় আপনি খুব প্রার্থনা শ্রবণকারী। অতঃপর তাকে ফেরেশতারা ডেকে বললোঃ যখন সে মেহরাবে দাঁড়িয়ে নামায পড়ছিলঃ আল্লাহ আপনাকে সুসংবাদ দিচ্ছেন ইয়াহইয়ার (আঃ)। তার অবস্থা এই হবে যে, তিনি সমর্থনকারী হবেন কালেমাতুল্লাহর (নবুওয়াতে ঈসা (আঃ) এবং সরদার হবেন ও স্বীয় প্রবৃত্তিকে খুব দমনকারী হবেন, আর নবীও হবেন এবং উচ্চ স্তরের সুসভ্যও হবেন।" (৩:৩৮-৩৯)
এখানে মহান আল্লাহ বলেন যে, তার পূর্বে এই নামের কোন মানুষ ছিল। এটাও বলা হয়েছে যে, তার সাথে সাদৃশ্যযুক্ত কেউ হবে না।' سَمِيَّا শব্দের এই অর্থই هَلْ تَعْلَمُ لَهٗ سَمِيًّا এই আয়াতেও রয়েছে। এ অর্থও বর্ণনা করা হয়েছে যে, এর পূর্বে কোন বন্ধ্যা স্ত্রী লোকের এইরূপ সন্তান হয় নাই। হযরত যাকারিয়ার কোন সন্তান জন্ম গ্রহণ করে নাই এবং তার স্ত্রীও পূর্ব হতেই সন্তানহীনা ছিলেন। হযরত ইবরাহীম (আঃ) ও হযরত সারা (আঃ) এই দু’জনও সন্তানের সুসংবাদ পেয়ে অত্যন্ত বিস্ময় প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু তারা সন্তানহীনা ও বন্ধ্যা ছিলেন বলেই যে বিস্ময় প্রকাশ করেছিলেন তা নয়। বরং তাদের বিস্ময় প্রকাশের কারণ ছিল তাদের ঐ চরম বার্ধক্যের অবস্থায় সন্তান লাভ। হযরত যাকারিয়ার (আঃ) ঐ পূর্ণ বার্ধক্য অবস্থা পর্যন্ত কোন সন্তানই জন্মগ্রহণ করে নাই এবং তাঁর স্ত্রী তো প্রথম থেকেই বন্ধ্যা ছিলেন। কিন্তু হযরত ইবরাহীম খলীলের (আঃ) অবস্থা তো ছিল এর বিপরীত। কারণ, তখন থেকে তেরো বছর পূর্বে তো তাঁর পুত্র। হযরত ইসমাঈল (আঃ) জন্মগ্রহণ করেছিলেন। কাজেই বন্ধ্যা হওয়ার কারণে তিনি বিস্মিত হন নাই। বরং অত্যন্ত বৃদ্ধ বয়সে সন্তানের (ইসহাকের (আঃ) সুসংবাদ শুনেই তিনি বিস্মিত হয়েছিলেন। তাঁর স্ত্রী সারাও (রাঃ) ঐ সুসংবাদ শুনে আশ্চর্যান্বিতা হয়েছিলেন এবং বলেছিলেনঃ “এই চরম বার্ধক্যের অবস্থায় আমার সন্তান হবে এটা কেমন কথা? আর আমার স্বামীও তো সীমাহীন বুদ্ধ! এটাতো চরম বিস্ময়কর ব্যাপারই বটে। তাঁর এ কথা শুনে ফেরেশতারা বলেছিলেনঃ “আপনি কি আল্লাহর কাজে বিস্ময় প্রকাশ করছেন? (হে) এই পরিবারের লোকেরা! আপনাদের প্রতি তো আল্লাহর বিশেষ রহমত ও তাঁর বিবিধ বরকতসমূহ (নাযিল হয়ে আসছে) নিশ্চয় তিনি প্রশংসার যোগ্য, মহামহিমান্বিত।”