শয়ত্বানের পক্ষ থেকে যদি তুমি কুমন্ত্রণা অনুভব কর, তাহলে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা কর। তিনি সর্বশ্রোতা সর্বজ্ঞ।
English Sahih:
And if there comes to you from Satan an evil suggestion, then seek refuge in Allah. Indeed, He is the Hearing, the Knowing.
1 Tafsir Ahsanul Bayaan
যদি শয়তানের কুমন্ত্রণা তোমাকে প্ররোচিত করে, তবে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা কর।[১] নিশ্চয় তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ। [২]
[১] অর্থাৎ, শয়তান যদি শরীয়তের কার্যকলাপ থেকে তোমাকে ফিরিয়ে দিতে চায় অথবা উত্তম পন্থায় অন্যায়ের প্রতিকার করার ব্যাপারে সে বাধা সৃষ্টি করে, তবে তার অনিষ্ট থেকে বাঁচার জন্য আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা কর।
[২] আর যে সত্তা এ রকম যে, তিনি সকলের কথা শোনেন এবং প্রত্যেক কথা জানেন, তিনিই আশ্রয়প্রার্থীদের আশ্রয় দিতে পারেন। এটা হল পূর্বোক্ত বিষয়ের কারণ স্বরূপ। এরপর পুনরায় কিছু এমন নিদর্শন উল্লেখ করা হচ্ছে, যা আল্লাহর একত্ব, তাঁর অসীম ক্ষমতা এবং তাঁর সুনিপুণ নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনা শক্তির কথা প্রমাণ করে।
2 Tafsir Abu Bakr Zakaria
আর যদি শয়তানের পক্ষ থেকে কোন কুমন্ত্রণা আপনাকে প্ররোচিত কর তবে আপনি আল্লাহর আশ্রয় চাইবেন, নিশ্চয় তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ [১]।
[১] বলা হয়েছে, শয়তানের প্রতারণার ব্যাপারে সাবধান থাকো। সে অত্যন্ত দরদী ও মঙ্গলকামী সেজে এই বলে তোমাদেরকে উত্তেজিত করবে যে, অমুক অত্যাচার কখনো বরদাশত করা উচিত নয়, অমুকের কাজের দাঁতভাঙ্গা জবাব দেয়া উচিত এবং এই আক্রমণের জবাবে লড়াই করা উচিত। তা না হলে তোমাদেরকে কাপুরুষ মনে করা হবে, এবং তোমাদের আদৌ কোন প্রভাব থাকবে না। এ ধরনের প্রতিটি ক্ষেত্রে তোমরা যখন নিজেদের মধ্যে কোন অযথা উত্তেজনা অনুভব করবে তখন সাবধান হয়ে যাও। কারণ, তা শয়তানের প্ররোচনা। সে তোমাদের উত্তেজিত করে কোন ভুল সংঘটিত করাতে চায়। সাবধান হয়ে যাওয়ার পর মনে করো না, আমি আমার মেজাজকে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে রাখছি, শয়তান আমাকে দিয়ে কোন ত্রুটি করাতে পারবে না। নিজের ইচ্ছা শক্তির বিভ্রম হবে শয়তানের আরেকটি বেশী ভয়ংকর হাতিয়ার। এর চেয়ে বরং আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করা উচিত। কারণ তিনি যদি তাওফীক দান করেন ও রক্ষা করেন তবেই মানুষ ভুল-ত্রুটি থেকে রক্ষা পেতে পারে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সামনে একবার এক ব্যক্তি হযরত আবু বকর সিদ্দিক রাদিয়াল্লাহু আনহুকে অকথ্য গালিগালাজ করতে থাকলো। আবু বকর চুপচাপ তার গালি শুনতে থাকলেন আর তার দিকে চেয়ে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মুচকি হাসতে থাকলেন। অবশেষে আবু বকর সিদ্দীক জবাবে তাকে একটি কঠোর কথা বলে ফেললেন। তার মুখ থেকে সে কথাটি বের হওয়া মাত্র নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওপর চরম বিরক্তি ভাব ছেয়ে গেল এবং ক্রমে তা তার পবিত্র চেহারায় ফুটে উঠতে থাকলো। তিনি তখনই উঠে চলে গেলেন। আবু বকরও উঠে তাকে অনুসরণ করলেন এবং পথিমধ্যেই জিজ্ঞেস করলেন, ব্যাপার কি? সে যখন আমাকে গালি দিচ্ছিলো তখন আপনি চুপচাপ মুচকি হাসছিলেন। কিন্তু যখনই আমি তাকে জবাব দিলাম তখনই আপনি অসন্তুষ্ট হলেন? নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ তুমি যতক্ষণ চুপচাপ ছিলে ততক্ষণ একজন ফেরেশতা তোমার সাথে ছিল এবং তোমার পক্ষ থেকে জবাব দিচ্ছিলো। কিন্তু যখন তুমি নিজেই জবাব দিলে তখন ফেরেশতার স্থানটি শয়তান দখল করে নিল। আমি তো শয়তানের সাথে বসতে পারি না। [মুসনাদে আহমাদ; ২/৪৩৬]
3 Tafsir Bayaan Foundation
আর যদি শয়তানের পক্ষ থেকে কোন কুমন্ত্রণা কখনো তোমাকে প্ররোচিত করে, তাহলে তুমি আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করবে। নিশ্চয়ই তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞাত।
4 Muhiuddin Khan
যদি শয়তানের পক্ষ থেকে আপনি কিছু কুমন্ত্রণা অনুভব করেন, তবে আল্লাহর শরণাপন্ন হোন। নিশ্চয় তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।
5 Zohurul Hoque
আর শয়তান থেকে কোনো খোঁচা যদি তোমাকে খোঁচা দেয় তাহলে তুমি আল্লাহ্র কাছে আশ্রয় চাও। নিঃসন্দেহ তিনি স্বয়ং সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞাতা।