اَهُمْ يَقْسِمُوْنَ رَحْمَتَ رَبِّكَۗ نَحْنُ قَسَمْنَا بَيْنَهُمْ مَّعِيْشَتَهُمْ فِى الْحَيٰوةِ الدُّنْيَاۙ وَرَفَعْنَا بَعْضَهُمْ فَوْقَ بَعْضٍ دَرَجٰتٍ لِّيَتَّخِذَ بَعْضُهُمْ بَعْضًا سُخْرِيًّا ۗوَرَحْمَتُ رَبِّكَ خَيْرٌ مِّمَّا يَجْمَعُوْنَ ( الزخرف: ٣٢ )
Ahum yaqsimoona rahmata Rabbik; Nahnu qasamnaa bainahum ma'eeshatahum fil hayaatid dunyaa wa rafa'naa ba'dahum fawqa ba'din darajaatil liyattakhiza ba'duhum ba'dan sukhriyyaa; wa rahmatu Rabbika khairum mimmaa yajma'oon (az-Zukhruf ৪৩:৩২)
English Sahih:
Do they distribute the mercy of your Lord? It is We who have apportioned among them their livelihood in the life of this world and have raised some of them above others in degrees [of rank] that they may make use of one another for service. But the mercy of your Lord is better than whatever they accumulate. (Az-Zukhruf [43] : 32)
তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):
তোমার প্রতিপালকের রহমত কি তারা বণ্টন করে (যে তাদের মর্জিমত কুরআন নাযিল করতে হবে)? তাদের মাঝে তাদের জীবিকা আমিই বণ্টন করেছি পার্থিব জীবনে এবং মর্যাদায় এককে অন্যের উপর উন্নত করি যাতে একে অপরের সহায়তা গ্রহণ করতে পারে। তারা যা সঞ্চয় করে, তোমার প্রতিপালকের রহমত তাত্থেকে উত্তম (যুখরুফ [৪৩] : ৩২)
1 Tafsir Ahsanul Bayaan
এরা কি তোমার প্রতিপালকের অনুগ্রহ বণ্টন করে![১] আমিই ওদের মধ্যে জীবিকা বণ্টন করেছি ওদের পার্থিব জীবনে এবং এককে অপরের উপর মর্যাদায় উন্নত করেছি; যাতে ওরা একে অপরের দ্বারা কাজ করিয়ে নিতে পারে[২] এবং ওরা যা জমা করে, তা হতে তোমার প্রতিপালকের অনুগ্রহ উৎকৃষ্টতর। [৩]
[১] 'রহমত' বা অনুগ্রহ-এর মানে নিয়ামত, সম্পদ। আর এখানে এর অর্থ নবুঅত; যা সবচেয়ে বড় নিয়ামত। 'ইস্তিফহাম' (প্রশ্ন) এখানে 'ইনকার' (অস্বীকৃতি) এর অর্থে ব্যবহূত হয়েছে। অর্থাৎ, এ কাজ তাদের নয় যে, তারা প্রতিপালকের নিয়ামতকে -- বিশেষ করে নবুঅতের মত নিয়ামতকে নিজেদের ইচ্ছা অনুযায়ী বণ্টন করবে। বরং এ কাজ কেবল প্রতিপালকের। কারণ, তিনিই সব কিছুর জ্ঞান রাখেন এবং প্রত্যেক ব্যক্তির সমস্ত অবস্থা সম্পর্কে সম্পূর্ণ অবহিত। তিনিই ভাল বুঝেন যে, মানুষের মধ্য থেকে নবুঅতের মুকুট কার মাথায় অধিক শোভনীয় হবে এবং স্বীয় অহী ও রিসালাত দানে কাকে ধন্য করতে হবে।
[২] অর্থাৎ, ধনে-মালে, পদমর্যাদায় এবং বুদ্ধি-জ্ঞানে আমি মানুষের মাঝে এই পার্থক্য ও তফাৎ এই জন্য রেখেছি যে, যাতে বেশী মালের অধিকারী ব্যক্তি স্বল্প মালের অধিকারী ব্যক্তির কাছ থেকে, উচ্চ পদের মালিক তার চাইতে নিম্ন পদের মালিকের কাছ থেকে এবং অনেক বেশী জ্ঞান-বুদ্ধির মালিক তার চাইতে কম জ্ঞান-বুদ্ধির মালিকের কাছ থেকে কাজ নিতে পারে। মহান আল্লাহর পরিপূর্ণ এই কৌশলের মাধ্যমে বিশ্বজাহানের সুশৃঙ্খল ব্যবস্থাপনা সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হচ্ছে। অন্যথা সকলেই যদি ধন-মালে, মান-সম্মানে, জ্ঞান-গরিমায় এবং বুদ্ধি-বিবেচনা ও অন্যান্য পার্থিব উপায়-উপকরণে সমান হত, তবে কেউ কারো কাজ করার জন্য প্রস্তুত হত না। অনুরূপ ছোট মানের ও তুচ্ছ মনে করা হয় এমন কাজও কেউ করত না। এ হল মানুষেরই প্রয়োজনীয় বিষয়; যা মহান আল্লাহ প্রত্যেককে পার্থক্য ও তফাতের মাঝে রেখেছেন এবং যার কারণে প্রত্যেক মানুষ অপর মানুষের মুখাপেক্ষী হয়। মানবিক সমস্ত প্রয়োজন কোন একজন মানুষ --তাতে সে যদি কোটিপতিও হয় তবুও --অন্য মানুষের সাহায্য-সহযোগিতা না নিয়েই সে একাকী পূরণ করতে চাইলেও তা কোন দিন পারবে না।
[৩] এই রহমত বা অনুগ্রহ থেকে আখেরাতের সেই সব নিয়ামতকে বুঝানো হয়েছে, যা আল্লাহ তাঁর নেক বান্দাদের জন্য প্রস্তুত করে রেখেছেন।