আল আ'রাফ আয়াত ৪৫

‘যারা আল্লাহর পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করত এবং সে পথে জটিলতা খুঁজে বেড়াত; এবং তারা আখেরাতকে অস্বীকারকারী ছিল।’

‘যারা আল্লাহর পথে বাধা প্রদান করত এবং তাতে বক্রতা সন্ধান করত এবং তারা ছিল আখিরাতকে অস্বীকারকারী’।

যারা আল্লাহর পথে বাধা দিত এবং তাতে বক্রতা অন্বেষণ করত। তারা পরকালের বিষয়েও অবিশ্বাসী ছিল।

''যারা আল্লাহ্‌র পথ থেকে সরিয়ে দেয় আর তাকে কুটিল করতে চেষ্টা করে, আর তারা আখেরাতের সন্বন্ধে অবিশ্বাসী।’’

যারা আল্লাহর পথে (মানুষকে) বাধা দিত এবং তাতে বক্রতা সন্ধান করত এবং যারা আখিরাতকে অস্বীকার করত।

যারা আল্লাহর পথে চলতে (মানুষকে) বাধা দিত এবং তাতে বক্রতা অনুসন্ধান করত তারা পরকালকেও অস্বীকার করত।

Please check ayah 7:53 for complete tafsir.

যারা আল্লাহর পথে (লোকদেরকে) বাধা দিত এবং তাতে বক্রতা অন্বেষণ করত।” তারা পরকালের প্রতিও অবিশ্বাসী ছিল।

৪৫. এ যালিমরাই স্বেচ্ছায় আল্লাহর পথ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতো এবং অন্যদেরকেও তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়ার জন্য উৎসাহিত করতো। তারা চাইতো আল্লাহর পথটি সহজ না হোক। যাতে মানুষ তার উপর চলতে না পারে। বস্তুতঃ তারা পরকালে অবিশ্বাসী এবং সেজন্য তারা প্রস্তুতও নয়।

৪৪-৪৫ নং আয়াতের তাফসীর:

জাহান্নামবাসীকে জাহান্নামে যাওয়ার পর উপহাসমূলকভাবে সম্বোধন করা হচ্ছে যে, জান্নাতবাসী জাহান্নামবাসীকে সম্বোধন করে বলবেঃ “আমাদের প্রতিপালক আমাদের সাথে যে অঙ্গীকার করেছিলেন তা তিনি সত্যরূপে দেখিয়েছেন। তোমাদের সাথে আল্লাহ তা'আলা যে ওয়াদা করেছিলেন তা তোমরা সত্যরূপে পেয়েছো কি?” اَنْ এখানে হরফটি উহ্য উক্তির তাফসীর করছে এবং قَدْ শব্দটি নিশ্চয়তা বুঝাবার জন্যে এসেছে। সেই সময় কাফিররা উত্তরে বলবেঃ “হা (আমরা তা সত্যরূপে পেয়েছি)।” যেমন মহান আল্লাহ সূরায়ে সাফফাতে বলেছেন এবং তিনি ঐ ব্যক্তি সম্বন্ধে সংবাদ দিয়েছেন যে ব্যক্তি দুনিয়ায় কোন কাফিরের বন্ধু ছিল। ঐ মুমিন ব্যক্তি যখন তার কাফির বন্ধুকে জাহান্নামে উঁকি মেরে দেখবে তখন বলবেঃ “আল্লাহর শপথ! তুমি তো আমাকেও ধ্বংস করারই উপক্রম করেছিলে, যদি না আমার প্রভুর অনুগ্রহ হতো তবে আমিও তোমার ন্যায় দণ্ডিতদের অন্তর্ভুক্ত হতাম।” এই কাফিররা বলতোঃ “এই যে, আমরা মরলাম তো মরলামই, আর আমরা উথিত হবে না এবং আমাদেরকে শাস্তিও দেয়া হবে না।” ফেরেশতা এখন তাদের কান খুলে দেবে এবং বলবে- দেখ, এটাই হচ্ছে সেই জাহান্নাম যা তোমরা অস্বীকার করতে। এটা কি কোন যাদু, না তোমরা এটা দেখতে পাচ্ছ না? এসো, জাহান্নামে প্রবেশ কর। পেরে না পেরে তোমাদেরকে সহ্য করতেই হবে। তোমরা তোমাদের কৃতকর্মের প্রতিদান পাচ্ছ।

অনুরূপভাবে রাসূলুল্লাহ (সঃ) বদরের নিহতদেরকে সম্বোধন করে বলেছিলেন“হে আবু জেহেল ইবনে হিশাম, হে উৎবা ইবনে রাবীআ, হে শাইবা ইবনে রাবীআ এবং অন্যান্য মৃত কুরায়েশ নেতৃবর্গের নাম ধরে ধরে বলেছিলেন! আল্লাহ তোমাদের সাথে যে ওয়াদা করেছিলেন তা সত্যে পরিণত হয়েছে কি? আমার প্রভু আমার সাথে যে ওয়াদা করেছিলেন তা পূর্ণ হয়ে গেছে।” ঐ সময় হযরত উমার (রাঃ) জিজ্ঞেস করেছিলেনঃ “হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! আপনি মৃতদেরকে সম্বোধন করছেন (অথচ তারা তো শুনতেই পায় না)?” তিনি উত্তরে বলেছিলেনঃ “আল্লাহর কসম! তারা তোমাদের চেয়ে কম শুনতে পাচ্ছে না, কিন্তু তারা উত্তর দিতে সক্ষম নয়।”

অতঃপর ইরশাদ হচ্ছে- একজন ঘোষণাকারী ঘোষণা করবে- যালিমদের উপর আল্লাহর অভিসম্পাত। আল্লাহ পাক বলেনঃ এরা হচ্ছে ঐসব লোক যারা লোকদেরকে সরল সোজা পথে আসতে বাধা প্রদান করতো। তারা জনগণকে নবীদের শরীয়তের পথ থেকে ফিরিয়ে দিতো, যেন তারা বক্র পথে পরিচালিত হয় এবং নবীদের অনুসরণ না করে। তারা পরকালে আল্লাহর সামনে হাজির হওয়াকে অস্বীকার করতো। কেননা, তাদের হিসাবের দিনের কোন ভয়ই ছিল না। এরা ছিল বড়ই দুষ্ট প্রকৃতির লোক।