Skip to main content

۞ لَتُبْلَوُنَّ فِيْٓ اَمْوَالِكُمْ وَاَنْفُسِكُمْۗ وَلَتَسْمَعُنَّ مِنَ الَّذِيْنَ اُوْتُوا الْكِتٰبَ مِنْ قَبْلِكُمْ وَمِنَ الَّذِيْنَ اَشْرَكُوْٓا اَذًى كَثِيْرًا ۗ وَاِنْ تَصْبِرُوْا وَتَتَّقُوْا فَاِنَّ ذٰلِكَ مِنْ عَزْمِ الْاُمُوْرِ   ( آل عمران: ١٨٦ )

latub'lawunna
لَتُبْلَوُنَّ
You will certainly be tested
তোমাদের অবশ্যই পরীক্ষা করা হবে
فِىٓ
in
মধ্যে
amwālikum
أَمْوَٰلِكُمْ
your wealth
তোমাদের সম্পদ সমূহের
wa-anfusikum
وَأَنفُسِكُمْ
and yourselves
ও তোমাদের জান সমূহে
walatasmaʿunna
وَلَتَسْمَعُنَّ
And you will certainly hear
এবং তোমরা অবশ্যই শুনবে
mina
مِنَ
from
তাদের থেকে
alladhīna
ٱلَّذِينَ
those who
যাদের
ūtū
أُوتُوا۟
were given
দেয়া হয়েছে
l-kitāba
ٱلْكِتَٰبَ
the Book
কিতাব
min
مِن
from
(থেকে)
qablikum
قَبْلِكُمْ
before you
তোমাদের পূর্বে
wamina
وَمِنَ
and from
এবং হতেও
alladhīna
ٱلَّذِينَ
those who
(তাদের) যারা
ashrakū
أَشْرَكُوٓا۟
associate partners with Allah
শিরক করেছে
adhan
أَذًى
hurtful things
কষ্টদায়ক (কথা)
kathīran
كَثِيرًاۚ
many
অনেক
wa-in
وَإِن
and if
এবং যদি
taṣbirū
تَصْبِرُوا۟
you are patient
তোমরা সবর কর
watattaqū
وَتَتَّقُوا۟
and fear (Allah)
ও তোমরা তাকওয়া অবলম্বন কর
fa-inna
فَإِنَّ
then indeed
তবে নিশ্চয়
dhālika
ذَٰلِكَ
that
এটা
min
مِنْ
(is) of
অন্যতম
ʿazmi
عَزْمِ
(of) determination
দৃঢ় সংকল্পের
l-umūri
ٱلْأُمُورِ
the matters
ব্যাপার

Latublawunna feee amwaalikum wa anfusikum wa latasma'unna minal lazeena ootul Kitaaba min qablikum wa minal lazeena ashrakooo azan kaseeraa; wa in tasbiroo wa tattaqoo fa inna zaalika min 'azmil umoor (ʾĀl ʿImrān ৩:১৮৬)

English Sahih:

You will surely be tested in your possessions and in yourselves. And you will surely hear from those who were given the Scripture before you and from those who associate others with Allah much abuse. But if you are patient and fear Allah – indeed, that is of the matters [worthy] of resolve. (Ali 'Imran [3] : 186)

তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):

অবশ্যই তোমরা তোমাদের ধনের ও জানের ব্যাপারে পরীক্ষিত হবে এবং তোমরা নিশ্চয়ই তোমাদের আগের কিতাবধারীদের ও মুশরিকদের নিকট হতে দুঃখজনক অনেক কথা শুনবে এবং তোমরা যদি ধৈর্যধারণ কর আর তাকওয়া অবলম্বন কর, তবে অবশ্যই তা হবে দৃঢ় সংকল্পের কাজ। (আল ইমরান [৩] : ১৮৬)

1 Tafsir Ahsanul Bayaan

(হে বিশ্বাসিগণ!) নিশ্চয় তোমাদের ধনৈশ্বর্য ও জীবন সম্বন্ধে পরীক্ষা করা হবে।[১] আর তোমাদের পূর্বে যাদেরকে কিতাব দেওয়া হয়েছিল, তাদের এবং অংশীবাদী (মুশরিক)দের কাছ থেকে অবশ্যই তোমরা অনেক কষ্টদায়ক কথা শুনতে পাবে। সুতরাং যদি তোমরা ধৈর্য ধারণ কর এবং সংযমী হও, তাহলে তা হবে দৃঢ়সংকল্পের কাজ। [২]

[১] ঈমানদারদেরকে তাদের ঈমান অনুযায়ী পরীক্ষা করার কথা আলোচিত হয়েছে। সূরা বাক্বারার ২;১৫৫ নং আয়াতেও এই ধরনের কথা উল্লিখিত হয়েছে। এই আয়াতের তফসীরে একটি ঘটনাও বর্ণিত হয়েছে। তা হল, মুনাফিকদের সর্দার আব্দুল্লাহ ইবনে উবাই তখনও (বাহ্যিক) ইসলাম প্রকাশ করেনি এবং বদরের যুদ্ধও তখন পর্যন্ত সংঘটিত হয়নি। এমন এক দিনে নবী করীম (সাঃ) (রোগাক্রান্ত) সা'দ ইবনে উবাদা (রাঃ)-কে দেখার জন্য বানী-হারেস ইবনে খাযরাজে গেলেন। পথে এক মজলিসে কিছু মুশরিক, ইয়াহুদী এবং আব্দুল্লাহ ইবনে উবাই প্রভৃতি বসেছিল। রসূল (সাঃ)-এর সওয়ারীর পায়ের উড়ন্ত ধুলো তাদের গায়ে লাগলে তারা ক্ষুব্ধ ভাব প্রকাশ করল। তিনি সেখানে দাঁড়িয়ে তাদেরকে ইসলাম কবুল করার দাওয়াতও দিলেন। ফলে আব্দুল্লাহ ইবনে উবাই বেআদবীমূলক বাক্যও ব্যবহার করল। সেখানে কিছু মুসলিমও ছিলেন। তাঁরা তাদের বিপরীত রসূল (সাঃ)-এর প্রশংসা করলেন। তাদের উভয়ের মধ্যে ঝগড়া বেধে যাওয়ার উপক্রম হলে তিনি তাদেরকে থামালেন। অতঃপর তিনি সা'দ (রাঃ)-এর কাছে পৌঁছে তাঁকে এ ঘটনা শুনান। শুনে সা'দ (রাঃ) বললেন, আব্দুল্লাহ ইবনে উবাইয়ের এই ধরনের কথা বলার কারণ হল, আপনার মদীনা আগমনের পূর্বে এখানের বাসিন্দারা তার মাথায় মুকুট পরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কিন্তু আপনার আগমনে তার এই সুন্দর স্বপ্ন অবাস্তব রয়ে গেল। এতে সে চরমভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। তার এই ধরনের কথাগুলো উক্ত কারণঘটিত বিদ্বেষ ও ঔদ্ধত্যেরই বহিঃপ্রকাশ। কাজেই আপনি ক্ষমাশীলতা প্রয়োগ করুন।

(সহীহ বুখারী থেকে সংগৃহীত সার-সংক্ষেপ)

[২] 'তোমাদের পূর্বে যাদেরকে কিতাব দেওয়া হয়েছিল' বলতে ইয়াহুদী ও খ্রিষ্টানদের বুঝানো হয়েছে। এরা বিভিন্নভাবে নবী করীম (সাঃ), ইসলাম এবং মুসলিমদের বিরুদ্ধে নিন্দা গেয়ে বেড়াত। মুশরিকদের অবস্থাও অনুরূপ ছিল। এ ছাড়াও মদীনা আসার পর মুনাফিকগণ বিশেষতঃ তাদের সর্দার আব্দুল্লাহ ইবনে উবাই রসূল (সাঃ)-এর ব্যাপারে তাচ্ছিল্য প্রদর্শন করে বেড়াত। রসূল (সাঃ)-এর মদীনা আসার পূর্বে মদীনাবাসীরা তাদের সর্দারের মাথায় সর্দারীর মুকুট পরানোর সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করে নিয়েছিল। রসূল (সাঃ)-এর আগমনের কারণে তার এই স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেল। এতে সে চরমভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হল। তাই প্রতিশোধ গ্রহণ করার নিমিত্তেও এই লোকটি রসূল (সাঃ)-এর বিরুদ্ধে গালিগালাজ করার কোন সুযোগ পেলে, তা হাত ছাড়া করে না। (যেমন, পূর্বের টীকায় বুখারীর হাওয়ালায় এই ঘটনার বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।) এই রকম পরিস্থিতিতে মুসলিমদেরকে ক্ষমা, ধৈর্য এবং আল্লাহভীরুতার পথ অবলম্বন করার কথা শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে। এ থেকে প্রতীয়মান হয় যে, সত্যের প্রতি আহবায়কদের বহু কষ্ট ও কঠিন সমস্যার শিকার হওয়ার বিষয়টা সত্য পথের নানা পর্যায়ে স্বাভাবিক ব্যাপার। আর এর চিকিৎসাঃ ধৈর্য ধারণ, আল্লাহর নিকট সাহায্য কামনা এবং তাঁরই দিকে প্রত্যাবর্তন বৈ আর কিছুই নয়। (ইবনে কাসীর)