وَقَالَتِ الْيَهُوْدُ وَالنَّصٰرٰى نَحْنُ اَبْنٰۤؤُ اللّٰهِ وَاَحِبَّاۤؤُهٗ ۗ قُلْ فَلِمَ يُعَذِّبُكُمْ بِذُنُوْبِكُمْ ۗ بَلْ اَنْتُمْ بَشَرٌ مِّمَّنْ خَلَقَۗ يَغْفِرُ لِمَنْ يَّشَاۤءُ وَيُعَذِّبُ مَنْ يَّشَاۤءُۗ وَلِلّٰهِ مُلْكُ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضِ وَمَا بَيْنَهُمَا ۖوَاِلَيْهِ الْمَصِيْرُ ( المائدة: ١٨ )
তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):
ইয়াহূদী ও নাসারারা বলে, আমরা আল্লাহর পুত্র ও তাঁর প্রিয়পাত্র। বল, তাহলে তোমাদের পাপের জন্য আল্লাহ তোমাদেরকে শাস্তি দেন কেন? বরং তিনি যাদের সৃষ্টি করেছেন তোমরা তাদের অন্তর্গত মানুষ, তিনি যাকে ইচ্ছে ক্ষমা করেন, যাকে ইচ্ছে শাস্তি দেন, আকাশসমূহ ও পৃথিবী আর এদের মধ্যে যা আছে সবকিছুর সার্বভৌমত্ব আল্লাহরই জন্য, আর প্রত্যাবর্তন তাঁরই পানে।
English Sahih:
But the Jews and the Christians say, "We are the children of Allah and His beloved." Say, "Then why does He punish you for your sins?" Rather, you are human beings from among those He has created. He forgives whom He wills, and He punishes whom He wills. And to Allah belongs the dominion of the heavens and the earth and whatever is between them, and to Him is the [final] destination.
1 Tafsir Ahsanul Bayaan
ইয়াহুদী ও খ্রিষ্টানরা বলে, ‘আমরা আল্লাহর পুত্র ও তাঁর প্রিয়।’[১] বল, ‘তবে কেন তিনি তোমাদের পাপের জন্য তোমাদেরকে শাস্তি দেবেন?[২] বরং তোমরা অন্যান্য সৃষ্টির ন্যায় তাঁরই সৃষ্ট মানুষ। যাকে ইচ্ছা তিনি ক্ষমা করবেন এবং যাকে ইচ্ছা শাস্তি দেবেন।[৩] আর আকাশ-পৃথিবী এবং এর মধ্যে যা কিছু আছে, তার সার্বভৌমত্ব আল্লাহরই। আর তাঁরই নিকট ফিরে যেতে হবে।’
[১] ইয়াহুদীরা উযায়ের (আঃ)-কে এবং খ্রিষ্টানরা ঈসা (আঃ)-কে 'আল্লাহর পুত্র বলে' এবং তারা নিজেদেরকেও 'আল্লাহর পুত্র ও তাঁর প্রিয়পাত্র' বলে দাবী করে। অনেকে বলেন, এখানে একটি শব্দ ঊহ্য আছে, আর তা হচ্ছে أتباع أبناء الله অর্থাৎ, আমরা আল্লাহর পুত্রদ্বয় (উযায়ের ও ঈসা)এর অনুসারী। উল্লিখিত দুই অর্থের মধ্যে যে অর্থই নেওয়া হোক না কেন, তাতে তাদের গর্ব ও আস্ফালন এবং আল্লাহর উপর অনর্থক ভরসা প্রকাশ পায়; যা আল্লাহর নিকটে মূল্যহীন।
[২] এই অংশে তাদের উল্লিখিত আস্ফালন ও গর্বকে ভিত্তিহীন বলে বর্ণনা করা হয়েছে। বলা হয়েছে যে, বস্তুতঃপক্ষে তোমরা যদি সত্যিই আল্লাহর প্রিয়পাত্র ও অভীষ্ট হও, তাহলে তোমরা যা ইচ্ছা তাই কর। আল্লাহ তো সে ব্যাপারে তোমাদেরকে কোন জিজ্ঞাসাবাদই করবেন না। আর যদি তাই হয়, তাহলে তোমাদের কৃতপাপের কারণে কেন তিনি তোমাদেরকে শাস্তি দিয়ে আসছেন ও দিবেন? এর দ্বারা স্পষ্ট প্রতীয়মান হয় যে, আল্লাহর দরবারে বিচার কেবল দাবীর ভিত্তিতে হয় না; আর তা কিয়ামতের দিনেও হবে না। বরং আল্লাহ ঈমান, পরহেযগারী ও সৎকর্ম দেখেন এবং দুনিয়াতেও তারই ভিত্তিতেই ফায়সালা করেন। আর কিয়ামতের দিনেও এই ভিত্তির উপরেই বিচার ফায়সালা করবেন।
[৩] তথাপি এই শাস্তি অথবা ক্ষমার ফায়সালা আল্লাহর সেই নিয়ম মোতাবেকই হবে; যা পরিষ্কারভাবে তিনি বর্ণনা করে দিয়েছেন যে, মুমিনগণের জন্য ক্ষমা এবং কাফের ও ফাসেকদের জন্য শাস্তি। সমস্ত মানুষের বিচার এই সাধারণ নীতি অনুসারেই হবে। হে আহলে কিতাবগণ! তোমরাও তাঁরই সৃষ্ট মানুষ। তোমাদের ব্যাপারে বিচার-ফায়সালা অন্য মানুষ থেকে ভিন্নতর কেন হবে?