আকাশসমূহ ও যমীনের স্রষ্টা। তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের মধ্য হতে যুগল সৃষ্টি করেছেন, চতুস্পদ জন্তুদের মধ্যেও সৃষ্টি করেছেন জোড়া, এভাবেই তিনি তোমাদের বংশধারা বিস্তৃত করেন, কোন কিছুই তাঁর সদৃশ নয়, তিনি সব শোনেন, সব দেখেন।
আসমান ও যমীনের চাবিকাঠি তাঁরই হাতে নিবদ্ধ। যার জন্য ইচ্ছে তিনি রিযক প্রশস্ত করেন ও (যার জন্য ইচ্ছে) সীমিত করেন। সব বিষয়েই তিনি সবচেয়ে জ্ঞানী।
তিনি তোমাদের জন্য দ্বীনের সেই বিধি-ব্যবস্থাই দিয়েছেন যার হুকুম তিনি দিয়েছিলেন নূহকে। আর সেই (বিধি ব্যবস্থাই) তোমাকে ওয়াহীর মাধ্যমে দিলাম যার হুকুম দিয়েছিলাম ইবরাহীম, মূসা ও ‘ঈসাকে- তা এই যে, তোমরা দ্বীন প্রতিষ্ঠিত কর, আর তাতে বিভক্তি সৃষ্টি করো না, ব্যাপারটি মুশরিকদের জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে যার দিকে তুমি তাদেরকে আহবান জানাচ্ছ। আল্লাহ যাকে ইচ্ছে করেন তাঁর পথে বেছে নেন, আর তিনি তাঁর পথে পরিচালিত করেন তাকে, যে তাঁর অভিমুখী হয়।
মানুষের কাছে ইলম আসার পর (বিভিন্ন অংশে) বিভক্ত হয়ে গেল নিজেদের মধ্যে বাড়াবাড়ি করার কারণে। পূর্বেই যদি তোমার প্রতিপালকের পক্ষ হতে একটা নির্দিষ্ট মেয়াদ পর্যন্ত ফয়সালা মূলতবী রাখার কথা ঘোষিত না হত, তাহলে তাদের মধ্যে (পূর্বেই) ফয়সালা করে দেয়া হত। আগেকার লোকেদের পরে যারা (তাওরাত ও ইঞ্জিল এ দু’) কিতাব উত্তরাধিকার সূত্রে পাপ্ত হয়েছে, তারা অস্বস্তিকর সন্দেহে পতিত হয়েছে।
অবস্থার এই প্রেক্ষাপটে (হে নবী!) তাদেরকে আহবান কর (দ্বীনের প্রতি), আর তোমাকে যে হুকুম দেয়া হয়েছে তুমি তার প্রতি সুদৃঢ় থাক, আর তাদের খেয়াল খুশির অনুসরণ করো না। আর বল, আল্লাহ যে কিতাবই অবতীর্ণ করেছেন আমি তার প্রতি ঈমান এনেছি। তোমাদের মাঝে ইনসাফ করার জন্য আমাকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আল্লাহ আমাদেরও প্রতিপালক, তোমাদেরও প্রতিপালক। আমাদের কাজের প্রতিফল আমরা ভোগ করব। আর তোমাদের কাজের প্রতিফল তোমরা ভোগ করবে। আমাদের আর তোমাদের মাঝে কোন ঝগড়া নেই। আল্লাহ আমাদের সবাইকে (একদিন) একত্রিত করবেন, আর তাঁর কাছেই (সকলকে) ফিরে যেতে হবে।
আল্লাহর আহবানে সাড়া দেয়ার পর সে সম্পর্কে যারা বিতর্কে লিপ্ত হয়, তাদের দলীল প্রমাণ তাদের রব্ব-এর কাছে বাতিল। তাদের প্রতি (আল্লাহর) গযব আর তাদের জন্য আছে কঠিন শাস্তি।
তিনিই আল্লাহ যিনি সত্য ও ইনসাফের মানদন্ড সহকারে কিতাব অবতীর্ণ করেছেন। তুমি কি জান, সম্ভবতঃ চূড়ান্ত ফয়সালার সময় নিকটবর্তী হয়ে গেছে।
যে সব লোক তাতে বিশ্বাস করে না, তারাই তার (অর্থাৎ ক্বিয়ামতের) আগমনকে তরান্বিত করতে চায়। কিন্তু যারা বিশ্বাসী তারা তাকে ভয় করে আর তারা জানে যে, তা সত্য। জেনে রেখ, যারা ক্বিয়ামত সম্পর্কে বিতর্ক করে, তারা স্পষ্টতই সত্য পথ হতে বহু দূরে চলে গেছে।
আল্লাহ তাঁর বান্দাহদের প্রতি মেহেরবান, তিনি যাকে যা ইচ্ছে রিযক দেন। তিনি প্রবল, মহাপরাক্রমশালী।
যে লোক পরকালের ক্ষেত করতে চায়, আমি তার জন্য তার ক্ষেতে বৃদ্ধি দান করি। আর যে লোক দুনিয়ার ক্ষেত চায়, আমি তাকে তাত্থেকে দেই, কিন্তু পরকালে তার অংশে (বা ভাগ্যে) কিছুই নেই।