Skip to main content

فَاطِرُ
(আল্লাহ-ই) সৃষ্টিকর্তা
ٱلسَّمَٰوَٰتِ
আকাশের
وَٱلْأَرْضِۚ
এবং পৃথিবীর
جَعَلَ
তিনি সৃষ্টি করেছেন
لَكُم
তোমাদের জন্যে
مِّنْ
মধ্য হ'তে
أَنفُسِكُمْ
তোমাদের নিজেদের
أَزْوَٰجًا
জোড়া জোড়া
وَمِنَ
এবং মধ্য হতে
ٱلْأَنْعَٰمِ
গবাদি পশুর
أَزْوَٰجًاۖ
জোড়া জোড়া
يَذْرَؤُكُمْ
তোমাদের বিস্তার করেন (বংশ)
فِيهِۚ
তার মধ্যে
لَيْسَ
নেই
كَمِثْلِهِۦ
তাঁর মতো
شَىْءٌۖ
কোনো কিছুই
وَهُوَ
এবং তিনি
ٱلسَّمِيعُ
সবকিছু শুনেন
ٱلْبَصِيرُ
সবকিছুই দেখেন

আকাশসমূহ ও যমীনের স্রষ্টা। তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের মধ্য হতে যুগল সৃষ্টি করেছেন, চতুস্পদ জন্তুদের মধ্যেও সৃষ্টি করেছেন জোড়া, এভাবেই তিনি তোমাদের বংশধারা বিস্তৃত করেন, কোন কিছুই তাঁর সদৃশ নয়, তিনি সব শোনেন, সব দেখেন।

ব্যাখ্যা

لَهُۥ
তাঁরই (নিয়ন্ত্রণে)
مَقَالِيدُ
চাবিসমূহ
ٱلسَّمَٰوَٰتِ
আকাশের
وَٱلْأَرْضِۖ
ও পৃথিবীর
يَبْسُطُ
প্রশস্ত করে দেন
ٱلرِّزْقَ
জীবনের উপকরণ
لِمَن
(তার) জন্যে যাকে
يَشَآءُ
তিনি ইচ্ছে করেন
وَيَقْدِرُۚ
এবং পরিমিত দেন (যাকে ইচ্ছে করেন)
إِنَّهُۥ
তিনি নিশ্চয়ই
بِكُلِّ
সম্পর্কে সব
شَىْءٍ
কিছু
عَلِيمٌ
খুব অবহিত

আসমান ও যমীনের চাবিকাঠি তাঁরই হাতে নিবদ্ধ। যার জন্য ইচ্ছে তিনি রিযক প্রশস্ত করেন ও (যার জন্য ইচ্ছে) সীমিত করেন। সব বিষয়েই তিনি সবচেয়ে জ্ঞানী।

ব্যাখ্যা

شَرَعَ
তিনি বিধান দিয়েছেন
لَكُم
তোমাদের জন্যে (একমাত্র)
مِّنَ
থেকে
ٱلدِّينِ
দ্বীনের
مَا
যা
وَصَّىٰ
আদেশ দিয়েছিলেন
بِهِۦ
সে সম্পর্কে
نُوحًا
নূহকে
وَٱلَّذِىٓ
এবং (হে নাবী) যা
أَوْحَيْنَآ
আমরা ওহী করেছি
إِلَيْكَ
তোমার প্রতিও
وَمَا
এবং যা
وَصَّيْنَا
আমরা আদেশ দিয়েছি
بِهِۦٓ
সে সম্পর্কে
إِبْرَٰهِيمَ
ইব্রাহীমকে
وَمُوسَىٰ
ও মূসাকে
وَعِيسَىٰٓۖ
ও ঈসাকে
أَنْ
(এ তাগিদসহ) যে
أَقِيمُوا۟
তোমরা প্রতিষ্ঠিত করো
ٱلدِّينَ
দ্বীনকে
وَلَا
এবং না
تَتَفَرَّقُوا۟
তোমরা মতবিরোধ করো
فِيهِۚ
তার মধ্যে
كَبُرَ
বড় কঠিন হয়েছে
عَلَى
কাছে
ٱلْمُشْرِكِينَ
মুশরিকদের
مَا
যার
تَدْعُوهُمْ
তুমি আহবান করছো তাদেরকে
إِلَيْهِۚ
তাঁর দিকে
ٱللَّهُ
আল্লাহ
يَجْتَبِىٓ
বেছে নেন
إِلَيْهِ
তাঁর দিকে
مَن
যাকে
يَشَآءُ
তিনি ইচ্ছে করেন
وَيَهْدِىٓ
এবং পথ দেখান
إِلَيْهِ
তাঁর দিকে
مَن
যে
يُنِيبُ
মুখ ফিরায় (তাঁর দিকে)

তিনি তোমাদের জন্য দ্বীনের সেই বিধি-ব্যবস্থাই দিয়েছেন যার হুকুম তিনি দিয়েছিলেন নূহকে। আর সেই (বিধি ব্যবস্থাই) তোমাকে ওয়াহীর মাধ্যমে দিলাম যার হুকুম দিয়েছিলাম ইবরাহীম, মূসা ও ‘ঈসাকে- তা এই যে, তোমরা দ্বীন প্রতিষ্ঠিত কর, আর তাতে বিভক্তি সৃষ্টি করো না, ব্যাপারটি মুশরিকদের জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে যার দিকে তুমি তাদেরকে আহবান জানাচ্ছ। আল্লাহ যাকে ইচ্ছে করেন তাঁর পথে বেছে নেন, আর তিনি তাঁর পথে পরিচালিত করেন তাকে, যে তাঁর অভিমুখী হয়।

ব্যাখ্যা

وَمَا
এবং না
تَفَرَّقُوٓا۟
তারা মতবিরোধ করেছে
إِلَّا
এ ব্যতীত
مِنۢ
মধ্য হতে
بَعْدِ
পরে
مَا
যা
جَآءَهُمُ
(কাছে) এসেছিলো তাদের
ٱلْعِلْمُ
(অর্থাৎ) জ্ঞান
بَغْيًۢا
(এমন করেছে) বিদ্বেষ বশতঃ
بَيْنَهُمْۚ
তাদের মাঝে
وَلَوْلَا
এবং যদি না
كَلِمَةٌ
একটি বাণী (ফায়সালার)
سَبَقَتْ
অতীতে সিদ্ধান্ত করা হতো
مِن
পক্ষ হতে
رَّبِّكَ
তোমার রবের
إِلَىٰٓ
পর্যন্ত
أَجَلٍ
সময় (অবকাশের)
مُّسَمًّى
নির্ধারিত
لَّقُضِىَ
মীমাংসা অবশ্যই করে দেওয়া হতো
بَيْنَهُمْۚ
তাদের মাঝে
وَإِنَّ
এবং নিশ্চয়ই
ٱلَّذِينَ
যাদের
أُورِثُوا۟
উত্তরাধিকারী করা হয়েছিলো
ٱلْكِتَٰبَ
কিতাবের
مِنۢ
মধ্য হতে
بَعْدِهِمْ
তাদের পরে
لَفِى
অবশ্যই মধ্যে আছে
شَكٍّ
সন্দেহের
مِّنْهُ
তা সম্পর্কে
مُرِيبٍ
বিভ্রান্তিকর

মানুষের কাছে ইলম আসার পর (বিভিন্ন অংশে) বিভক্ত হয়ে গেল নিজেদের মধ্যে বাড়াবাড়ি করার কারণে। পূর্বেই যদি তোমার প্রতিপালকের পক্ষ হতে একটা নির্দিষ্ট মেয়াদ পর্যন্ত ফয়সালা মূলতবী রাখার কথা ঘোষিত না হত, তাহলে তাদের মধ্যে (পূর্বেই) ফয়সালা করে দেয়া হত। আগেকার লোকেদের পরে যারা (তাওরাত ও ইঞ্জিল এ দু’) কিতাব উত্তরাধিকার সূত্রে পাপ্ত হয়েছে, তারা অস্বস্তিকর সন্দেহে পতিত হয়েছে।

ব্যাখ্যা

فَلِذَٰلِكَ
(হে নাবী) এজন্যে
فَٱدْعُۖ
তাই আহবান করো
وَٱسْتَقِمْ
এবং অবিচল থাকো
كَمَآ
যেমন
أُمِرْتَۖ
তোমাকে আদেশ করা হয়েছে
وَلَا
এবং না
تَتَّبِعْ
অনুসরণ করো
أَهْوَآءَهُمْۖ
তাদের খেয়ালখুশীর
وَقُلْ
এবং বলো
ءَامَنتُ
"আমি ঈমান এনেছি
بِمَآ
ঐ বিষয়ে যা
أَنزَلَ
অবতীর্ণ করেছেন
ٱللَّهُ
আল্লাহ
مِن
থেকে
كِتَٰبٍۖ
(অর্থাৎ) কিতাব
وَأُمِرْتُ
এবং আমাকে আদেশ করা হয়েছে
لِأَعْدِلَ
আমি যেন ন্যায় বিচার করি
بَيْنَكُمُۖ
তোমাদের মাঝে
ٱللَّهُ
আল্লাহ
رَبُّنَا
আমাদের রব
وَرَبُّكُمْۖ
ও তোমাদের রব
لَنَآ
আমাদের জন্যে
أَعْمَٰلُنَا
আমাদের কাজসমূহ
وَلَكُمْ
ও তোমাদের জন্যে
أَعْمَٰلُكُمْۖ
তোমাদের কাজসমূহ
لَا
নেই
حُجَّةَ
কোনো বিবাদ
بَيْنَنَا
আমাদের মাঝে
وَبَيْنَكُمُۖ
ও তোমাদের মাঝে
ٱللَّهُ
আল্লাহ
يَجْمَعُ
একত্র করবেন
بَيْنَنَاۖ
আমাদেরকে
وَإِلَيْهِ
এবং তাঁরই দিকে
ٱلْمَصِيرُ
প্রত্যাবর্তন (হবে সবার)"

অবস্থার এই প্রেক্ষাপটে (হে নবী!) তাদেরকে আহবান কর (দ্বীনের প্রতি), আর তোমাকে যে হুকুম দেয়া হয়েছে তুমি তার প্রতি সুদৃঢ় থাক, আর তাদের খেয়াল খুশির অনুসরণ করো না। আর বল, আল্লাহ যে কিতাবই অবতীর্ণ করেছেন আমি তার প্রতি ঈমান এনেছি। তোমাদের মাঝে ইনসাফ করার জন্য আমাকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আল্লাহ আমাদেরও প্রতিপালক, তোমাদেরও প্রতিপালক। আমাদের কাজের প্রতিফল আমরা ভোগ করব। আর তোমাদের কাজের প্রতিফল তোমরা ভোগ করবে। আমাদের আর তোমাদের মাঝে কোন ঝগড়া নেই। আল্লাহ আমাদের সবাইকে (একদিন) একত্রিত করবেন, আর তাঁর কাছেই (সকলকে) ফিরে যেতে হবে।

ব্যাখ্যা

وَٱلَّذِينَ
এবং যারা
يُحَآجُّونَ
বিতর্ক করে
فِى
সম্পর্কে
ٱللَّهِ
আল্লাহ্‌র দ্বীনের
مِنۢ
মধ্য হতে
بَعْدِ
পরেও
مَا
যা
ٱسْتُجِيبَ
সাড়া দেওয়া হয়েছে (অর্থাৎ দ্বীন গ্রহণের পরেও)
لَهُۥ
তাকে
حُجَّتُهُمْ
তাদের যুক্তিতর্ক
دَاحِضَةٌ
নিরর্থক
عِندَ
কাছে
رَبِّهِمْ
তাদের রবের
وَعَلَيْهِمْ
এবং তাদের উপর
غَضَبٌ
অভিসম্পাত
وَلَهُمْ
এবং তাদের জন্যে
عَذَابٌ
শাস্তি (রয়েছে)
شَدِيدٌ
কঠিন

আল্লাহর আহবানে সাড়া দেয়ার পর সে সম্পর্কে যারা বিতর্কে লিপ্ত হয়, তাদের দলীল প্রমাণ তাদের রব্ব-এর কাছে বাতিল। তাদের প্রতি (আল্লাহর) গযব আর তাদের জন্য আছে কঠিন শাস্তি।

ব্যাখ্যা

ٱللَّهُ
(তিনিই) আল্লাহ্‌
ٱلَّذِىٓ
যিনি
أَنزَلَ
অবতীর্ণ করেছেন
ٱلْكِتَٰبَ
কিতাব
بِٱلْحَقِّ
সত্যসহ
وَٱلْمِيزَانَۗ
এবং মীযান
وَمَا
এবং কিসে
يُدْرِيكَ
তোমাকে জানাবে
لَعَلَّ
সম্ভবতঃ
ٱلسَّاعَةَ
ক্বিয়ামাত
قَرِيبٌ
আসন্ন

তিনিই আল্লাহ যিনি সত্য ও ইনসাফের মানদন্ড সহকারে কিতাব অবতীর্ণ করেছেন। তুমি কি জান, সম্ভবতঃ চূড়ান্ত ফয়সালার সময় নিকটবর্তী হয়ে গেছে।

ব্যাখ্যা

يَسْتَعْجِلُ
তাড়াহুড়া করে
بِهَا
তা সম্পর্কে
ٱلَّذِينَ
(তারাই) যারা
لَا
না
يُؤْمِنُونَ
ঈমান আনে
بِهَاۖ
তা সম্পর্কে
وَٱلَّذِينَ
কিন্তু যারা
ءَامَنُوا۟
ঈমান এনেছে
مُشْفِقُونَ
তারা ভয় করে
مِنْهَا
তা থেকে
وَيَعْلَمُونَ
এবং তারা জানে
أَنَّهَا
তা যে
ٱلْحَقُّۗ
মহাসত্য
أَلَآ
জেনে রাখো
إِنَّ
নিশ্চয়ই
ٱلَّذِينَ
যারা
يُمَارُونَ
কুতর্ক করে
فِى
সম্পর্কে
ٱلسَّاعَةِ
ক্বিয়ামাতের
لَفِى
অবশ্যই মধ্যে
ضَلَٰلٍۭ
বিভ্রান্তির
بَعِيدٍ
বহুদূরে (চলে গিয়েছে)

যে সব লোক তাতে বিশ্বাস করে না, তারাই তার (অর্থাৎ ক্বিয়ামতের) আগমনকে তরান্বিত করতে চায়। কিন্তু যারা বিশ্বাসী তারা তাকে ভয় করে আর তারা জানে যে, তা সত্য। জেনে রেখ, যারা ক্বিয়ামত সম্পর্কে বিতর্ক করে, তারা স্পষ্টতই সত্য পথ হতে বহু দূরে চলে গেছে।

ব্যাখ্যা

ٱللَّهُ
আল্লাহ্‌
لَطِيفٌۢ
অতি দয়ালু
بِعِبَادِهِۦ
তার দাসদের উপর
يَرْزُقُ
তিনি জীবিকা দান করেন
مَن
যাকে
يَشَآءُۖ
ইচ্ছে করেন
وَهُوَ
এবং তিনি
ٱلْقَوِىُّ
প্রবল শক্তিমান
ٱلْعَزِيزُ
পরাক্রমশালী

আল্লাহ তাঁর বান্দাহদের প্রতি মেহেরবান, তিনি যাকে যা ইচ্ছে রিযক দেন। তিনি প্রবল, মহাপরাক্রমশালী।

ব্যাখ্যা

مَن
যে
كَانَ
ছিল
يُرِيدُ
কামনা করে
حَرْثَ
ফসল
ٱلْءَاخِرَةِ
পরকালের
نَزِدْ
বাড়িয়ে দিই আমরা
لَهُۥ
তার জন্যে
فِى
মধ্যে
حَرْثِهِۦۖ
তার ফসলের
وَمَن
এবং যে
كَانَ
ছিল
يُرِيدُ
কামনা করে
حَرْثَ
ফসল
ٱلدُّنْيَا
দুনিয়ার
نُؤْتِهِۦ
তাকে দিই আমরা
مِنْهَا
তা থেকে কিছু
وَمَا
এবং নেই
لَهُۥ
তার জন্যে
فِى
মধ্যে
ٱلْءَاخِرَةِ
পরকালের
مِن
কোনো
نَّصِيبٍ
অংশ

যে লোক পরকালের ক্ষেত করতে চায়, আমি তার জন্য তার ক্ষেতে বৃদ্ধি দান করি। আর যে লোক দুনিয়ার ক্ষেত চায়, আমি তাকে তাত্থেকে দেই, কিন্তু পরকালে তার অংশে (বা ভাগ্যে) কিছুই নেই।

ব্যাখ্যা