Skip to main content

وَلَوْ
এবং যদি (এমন হতো)
أَنَّ
যে
قُرْءَانًا
(এই) কুরআন
سُيِّرَتْ
গতিশীল করা যেতো
بِهِ
দিয়ে তা
ٱلْجِبَالُ
পাহাড়সমূহকে
أَوْ
বা
قُطِّعَتْ
টুকরো টুকরো করা যেতো
بِهِ
দিয়ে তা
ٱلْأَرْضُ
জমিনকে
أَوْ
অথবা
كُلِّمَ
কথা বলা যেতো
بِهِ
দিয়ে তা
ٱلْمَوْتَىٰۗ
মৃতদের সাথে (তবুও ঈমান আনতো না)
بَل
বরং
لِّلَّهِ
আল্লাহর নিয়ন্ত্রণে
ٱلْأَمْرُ
বিষয়
جَمِيعًاۗ
সমস্তই
أَفَلَمْ
তবে কি না
يَا۟يْـَٔسِ
নিরাশ হয়েছে
ٱلَّذِينَ
যারা
ءَامَنُوٓا۟
ঈমান এনেছে
أَن
যে
لَّوْ
যদি
يَشَآءُ
ইচ্ছে করতেন
ٱللَّهُ
আল্লাহ
لَهَدَى
অবশ্যই পথ দেখাতেন
ٱلنَّاسَ
মানুষকে
جَمِيعًاۗ
সকল
وَلَا
এবং না
يَزَالُ
সর্বদাই
ٱلَّذِينَ
যারা
كَفَرُوا۟
অস্বীকার করেছে
تُصِيبُهُم
তাদের কাছে পৌঁছবে
بِمَا
এ কারণে যা
صَنَعُوا۟
তারা করেছে
قَارِعَةٌ
বিপর্যয়
أَوْ
অথবা
تَحُلُّ
আপতিত হবে
قَرِيبًا
নিকটে
مِّن
থেকে
دَارِهِمْ
তাদের ঘরের
حَتَّىٰ
যতক্ষণ না
يَأْتِىَ
আসবে
وَعْدُ
অঙ্গীকার
ٱللَّهِۚ
আল্লাহর
إِنَّ
নিশ্চয়ই
ٱللَّهَ
আল্লাহ
لَا
না
يُخْلِفُ
ভঙ্গ করেন
ٱلْمِيعَادَ
অঙ্গীকার

কুরআন দিয়ে পর্বতকে যদি গতিশীল করা যেত, কিংবা যমীনকে দীর্ণ করা যেত কিংবা তা দিয়ে মৃত মানুষকে কথা বলানো যেত (তবুও তারা তাতে বিশ্বাস করত না)। (আলৌকিক কিছু করা মানুষের সাধ্যাতীত) বরং সমস্ত কিছুই আল্লাহর ক্ষমতাভুক্ত। যারা ঈমান এনেছে তারা কি জানে না যে, আল্লাহ ইচ্ছে করলে সকল মানুষকে সৎ পথে পরিচালিত করতে পারতেন। যারা কুফুরী করে তাদের কার্যকলাপের কারণে তাদের উপর কোন না কোন বিপদ আসতেই থাকে কিংবা তাদের ঘরের আশেপাশেই নাযিল হতে থাকে, যতক্ষণ না আল্লাহর ও‘য়াদা পূর্ণ হয়। নিশ্চয়ই আল্লাহ ওয়াদার ব্যতিক্রম করেন না।

ব্যাখ্যা

وَلَقَدِ
এবং নিশ্চয়ই
ٱسْتُهْزِئَ
বিদ্রুপ করা হয়েছে
بِرُسُلٍ
সাথে রাসূলদের
مِّن
থেকেই
قَبْلِكَ
তোমার পূর্ব
فَأَمْلَيْتُ
অতঃপর আমি অবকাশ দিয়েছি
لِلَّذِينَ
(তাদেরকে) জন্যে যারা
كَفَرُوا۟
অস্বীকার করেছে
ثُمَّ
এরপর
أَخَذْتُهُمْۖ
তাদের আমি পাকড়াও করেছি
فَكَيْفَ
অতঃপর (দেখো) কেমন
كَانَ
ছিলো
عِقَابِ
আমার শাস্তি

তোমার আগেও বহু রসূলকে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করা হয়েছিল, তখন আমি কাফিরদেরকে (ইচ্ছেমত কাজ চালিয়ে যাওয়ার) অবকাশ দিয়েছিলাম, অবশেষে তাদেরকে পাকড়াও করেছিলাম। কেমন (ভয়াবহ) ছিল আমার শাস্তি!

ব্যাখ্যা

أَفَمَنْ
তবে কি সেই (সত্ত্বা)
هُوَ
যিনি
قَآئِمٌ
দন্ডায়মান (পর্যবেক্ষক)
عَلَىٰ
উপর
كُلِّ
প্রত্যেক
نَفْسٍۭ
মানুষ
بِمَا
ঐ সম্পর্কে যা
كَسَبَتْۗ
সে উপার্জন করেছে
وَجَعَلُوا۟
এ অবস্হায়ও তারা বানিয়েছে
لِلَّهِ
আল্লাহর জন্যে
شُرَكَآءَ
বহু শরীক
قُلْ
বলো
سَمُّوهُمْۚ
"তাদের নাম বলো
أَمْ
কি
تُنَبِّـُٔونَهُۥ
তাঁকে তোমরা সংবাদ দিচ্ছো
بِمَا
ঐ সম্পর্কে যা
لَا
না
يَعْلَمُ
তিনি জানেন
فِى
মধ্যে
ٱلْأَرْضِ
পৃথিবীর
أَم
অথবা
بِظَٰهِرٍ
বাহ্যিক দিক
مِّنَ
কিছু
ٱلْقَوْلِۗ
(অর্থহীন) কথার"
بَلْ
বরং
زُيِّنَ
শোভনীয় করা হয়েছে
لِلَّذِينَ
(তাদের) জন্যে যারা
كَفَرُوا۟
অস্বীকার করেছে
مَكْرُهُمْ
তাদের ছলনা
وَصُدُّوا۟
এবং নিবৃত্ত করা হয়েছে
عَنِ
থেকে
ٱلسَّبِيلِۗ
পথ
وَمَن
এবং যাকে
يُضْلِلِ
পথভ্রষ্ট করেন
ٱللَّهُ
আল্লাহ
فَمَا
অতঃপর নেই
لَهُۥ
জন্যে তার
مِنْ
কোনো
هَادٍ
পথ প্রদর্শক

প্রত্যেক প্রাণীর উপার্জনের প্রতি যিনি দৃষ্টি রাখেন (তিনি কি তাদের অক্ষম ইলাহদের মত?) অথচ তারা আল্লাহর শরীক নির্দিষ্ট করে রেখেছে। বল, ‘তাদের নাম বল (যাদেরকে তোমরা আল্লাহর অংশীদার মনে কর), তোমরা কি পৃথিবীর এমন কোন সংবাদ তাঁকে দিতে চাও যা তিনি জানেন না। নাকি এগুলো কেবল কথার প্রদর্শনী? প্রকৃত ব্যাপার হল, কাফিরদের নিকট তাদের কলা কৌশলকে আকর্ষণীয় করে দেয়া হয়েছে আর তাদেরকে সৎ পথ থেকে বিরত রাখা হয়েছে। আল্লাহ যাকে গুমরাহ করেন তাঁকে পথ দেখানোর কেউ নেই।

ব্যাখ্যা

لَّهُمْ
তাদের জন্যে
عَذَابٌ
শাস্তি (রয়েছে)
فِى
মধ্যে
ٱلْحَيَوٰةِ
জীবনের
ٱلدُّنْيَاۖ
পার্থিব
وَلَعَذَابُ
এবং অবশ্যই শাস্তি
ٱلْءَاخِرَةِ
আখিরাতের
أَشَقُّۖ
কঠোরতর
وَمَا
এবং নেই
لَهُم
তাদের জন্যে
مِّنَ
থেকে
ٱللَّهِ
আল্লাহর
مِن
কোনো
وَاقٍ
রক্ষাকারী

দুনিয়ার জীবনে তাদের জন্য আছে শাস্তি, আর আখেরাতের শাস্তি অবশ্যই আরো বেশি কঠিন। আল্লাহর শাস্তি থেকে বাঁচানোর তাদের কেউ নেই।

ব্যাখ্যা

مَّثَلُ
দৃষ্টান্ত (পরিচয়)
ٱلْجَنَّةِ
জান্নাতের
ٱلَّتِى
যা
وُعِدَ
প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে
ٱلْمُتَّقُونَۖ
মুত্তাকীদের (এমন যে)
تَجْرِى
প্রবাহিত হয়
مِن
থেকে
تَحْتِهَا
তার নিচ
ٱلْأَنْهَٰرُۖ
ঝর্ণাসমূহ
أُكُلُهَا
তার ফলসমূহ
دَآئِمٌ
চিরস্হায়ী
وَظِلُّهَاۚ
এবং তার ছায়াও (অবিনশ্বর)
تِلْكَ
এসব
عُقْبَى
পরিণাম
ٱلَّذِينَ
(তাদের) যারা
ٱتَّقَوا۟ۖ
(আল্লাহকে) ভয় করে
وَّعُقْبَى
ও পরিণাম
ٱلْكَٰفِرِينَ
কাফেরদের
ٱلنَّارُ
(জাহান্নামের) আগুন

মুত্তাকীদেরকে যে জান্নাতের ওয়া‘দা দেয়া হয়েছে তার দৃষ্টান্ত এই যে, তার তলদেশ দিয়ে ঝর্ণাধারা প্রবাহিত, তার ফলফলাদি চিরস্থায়ী আর তার ছায়াও। যারা তাক্ওয়া অবলম্বন করে তাদের পরিণাম হবে এই। আর কাফিরদের পরিণতি হবে জাহান্নামের আগুন।

ব্যাখ্যা

وَٱلَّذِينَ
এবং যাদেরকে
ءَاتَيْنَٰهُمُ
আমরা দিয়েছি তাদের
ٱلْكِتَٰبَ
কিতাব
يَفْرَحُونَ
তারা আনন্দ পায়
بِمَآ
এ কারণে যা
أُنزِلَ
অবতরণ করা হয়েছে
إِلَيْكَۖ
তোমার প্রতি
وَمِنَ
আবার কিন্তু
ٱلْأَحْزَابِ
বিভিন্ন দলের
مَن
কেউ কেউ
يُنكِرُ
অস্বীকার করে
بَعْضَهُۥۚ
তার কিছু অংশ
قُلْ
বলো
إِنَّمَآ
"শুধুমাত্র
أُمِرْتُ
আমাকে আদেশ করা হয়েছে
أَنْ
যে
أَعْبُدَ
আমি (যেন) ইবাদত করি
ٱللَّهَ
আল্লাহর
وَلَآ
এবং না (যেন)
أُشْرِكَ
আমি শরীক করি
بِهِۦٓۚ
তাঁর সাথে (অন্য কাউকে)
إِلَيْهِ
তাঁরই দিকে
أَدْعُوا۟
আমি ডাকি
وَإِلَيْهِ
ও তাঁরই দিকে
مَـَٔابِ
আমার গন্তব্যস্থান"

আমি যাদেরকে কিতাব দিয়েছিলাম তারা তোমার প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে তাতে উৎফুল্ল, কিন্তু কতক দল তার কোন কোন কথা মানে না। বল, ‘আমি আল্লাহর ‘ইবাদাত করার জন্য এবং তাঁর সাথে কোন কিছু শারীক না করার জন্য নির্দেশপ্রাপ্ত হয়েছি, আমি তাঁর দিকেই আহবান জানাই, আর আমার প্রত্যাবর্তন তাঁর দিকেই।

ব্যাখ্যা

وَكَذَٰلِكَ
এবং এভাবে
أَنزَلْنَٰهُ
তা আমরা অবতীর্ণ করেছি
حُكْمًا
বিধানরূপে
عَرَبِيًّاۚ
আরবী ভাষায়
وَلَئِنِ
এবং অবশ্যই যদি
ٱتَّبَعْتَ
তুমি অনুসরণ করো
أَهْوَآءَهُم
তাদের খেয়ালখুশীর
بَعْدَمَا
পরেও যা
جَآءَكَ
তোমার কাছে এসেছে
مِنَ
থেকে
ٱلْعِلْمِ
জ্ঞান
مَا
নেই
لَكَ
তোমার জন্যে
مِنَ
বিরুদ্ধে
ٱللَّهِ
আল্লাহর
مِن
কোনো
وَلِىٍّ
অভিভাবক (বাঁচাতে)
وَلَا
এবং না
وَاقٍ
কোনো রক্ষাকারী

এভাবে আমি একে বিধানরূপে নাযিল করেছি আরবী ভাষায়। তোমার কাছে জ্ঞান আসার পরেও তুমি যদি তাদের খাহেশের অনুসরণ কর, তবে আল্লাহর মোকাবালায় তোমার কোন অভিভাবক থাকবে না, থাকবে না কোন রক্ষাকারী।

ব্যাখ্যা

وَلَقَدْ
এবং নিশ্চয়ই
أَرْسَلْنَا
আমরা প্রেরণ করেছি
رُسُلًا
রাসূলদেরকে
مِّن
থেকেই
قَبْلِكَ
তোমার পূর্ব
وَجَعَلْنَا
এবং আমরা দিয়েছিলাম
لَهُمْ
জন্যে তাদের
أَزْوَٰجًا
স্ত্রীসমূহ
وَذُرِّيَّةًۚ
ও সন্তান-সন্ততি
وَمَا
এবং না
كَانَ
ছিলো (সম্ভব)
لِرَسُولٍ
কোনো রাসূলের জন্যে
أَن
যে
يَأْتِىَ
সে আসবে
بِـَٔايَةٍ
নিয়ে কোনো নিদর্শন
إِلَّا
ছাড়া
بِإِذْنِ
নিয়ে অনুমতি
ٱللَّهِۗ
আল্লাহর
لِكُلِّ
জন্যে প্রত্যেক
أَجَلٍ
নির্ধারিত যুগের
كِتَابٌ
একটি কিতাব (আছে)

আমি তোমার পূর্বেও রসূলগণকে পাঠিয়েছিলাম, আর তাদেরকে দিয়েছিলাম স্ত্রী ও সন্তানাদি, আল্লাহর হুকুম ব্যতীত নিদর্শন হাজির করার শক্তি কোন রসূলের নেই। যাবতীয় বিষয়ের নির্দিষ্ট সময় লিপিবদ্ধ আছে।

ব্যাখ্যা

يَمْحُوا۟
নিশ্চিহ্ন করেন
ٱللَّهُ
আল্লাহ
مَا
যা
يَشَآءُ
ইচ্ছে করেন
وَيُثْبِتُۖ
ও বহাল রাখেন (যা চান)
وَعِندَهُۥٓ
এবং তাঁর কাছে আছে
أُمُّ
মূল
ٱلْكِتَٰبِ
কিতাবের

আল্লাহ যা ইচ্ছে করেন নিশ্চিহ্ন করে দেন আর যা ইচ্ছে প্রতিষ্ঠিত রাখেন, উম্মুল কিতাব তাঁর নিকটই রক্ষিত।

ব্যাখ্যা

وَإِن
এবং যদি
مَّا
যা
نُرِيَنَّكَ
তোমাকে আমরা দেখাই
بَعْضَ
কিছুটা
ٱلَّذِى
যা
نَعِدُهُمْ
তাদের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি আমরা
أَوْ
অথবা
نَتَوَفَّيَنَّكَ
তোমাকে মৃত্যু দিই আমরা (যাই হউক)
فَإِنَّمَا
প্রকৃতপক্ষে
عَلَيْكَ
তোমার দায়িত্ব
ٱلْبَلَٰغُ
প্রচার করা
وَعَلَيْنَا
এবং আমাদের দায়িত্ব
ٱلْحِسَابُ
হিসাব-নিকাশের

আমি তাদেরকে যে শাস্তি দেয়ার ওয়া‘দা করেছি তার কিছু যদি তোমাকে দেখাই কিংবা (দেখানোর পূর্বেই) তোমার মৃত্যু ঘটাই, (উভয় অবস্থাতেই) তোমার দায়িত্ব হল প্রচার করে দেয়া, আর হিসেব নেয়ার কাজ হল আমার।

ব্যাখ্যা