আর ঈমানদার নারীদেরকে বলে দাও তাদের দৃষ্টি অবনমিত করতে আর তাদের লজ্জাস্থান সংরক্ষণ করতে, আর তাদের শোভা সৌন্দর্য প্রকাশ না করতে যা এমনিতেই প্রকাশিত হয় তা ব্যতীত। তাদের ঘাড় ও বুক যেন মাথার কাপড় দিয়ে ঢেকে দেয়। তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভাই, ভাই-এর ছেলে, বোনের ছেলে, নিজেদের মহিলাগণ, স্বীয় মালিকানাধীন দাসী, পুরুষদের মধ্যে যৌন কামনামুক্ত পুরুষ আর নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ বালক ছাড়া অন্যের কাছে নিজেদের শোভা সৌন্দর্য প্রকাশ না করে। আর তারা যেন নিজেদের গোপন শোভা সৌন্দর্য প্রকাশ করার জন্য সজোরে পদচারণা না করে। হে মু’মিনগণ! তোমরা আল্লাহর নিকট তাওবাহ কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার।
তোমাদের মধ্যে যারা বিবাহহীন তাদের বিবাহ সম্পন্ন কর আর তোমাদের সৎ দাস-দাসীদেরও। তারা যদি নিঃস্ব হয় তাহলে আল্লাহ তাদেরকে নিজ অনুগ্রহে অভাবমুক্ত করে দেবেন, আল্লাহ প্রচুর দানকারী, সর্ববিষয়ে জ্ঞাত।
যাদের বিয়ের সম্বল নেই তারা যেন সংযম অবলম্বন করে যতক্ষণ না আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে অভাবমুক্ত করেন। আর তোমাদের দাসদাসীদের মধ্যে যারা মুক্তির জন্য লিখিত চুক্তি পেতে চায়, তাদের সঙ্গে চুক্তি কর যদি তাতে কোন কল্যাণ আছে ব’লে তোমরা জান। আল্লাহ তোমাদেরকে যে মাল দিয়েছেন তাত্থেকে তাদেরকে দান কর। তোমাদের দাসীরা নিজেদের পবিত্রতা রক্ষা করতে চাইলে তোমরা পার্থিব জীবনের সম্পদের লালসায় তাদেরকে ব্যভিচারে বাধ্য করো না। যদি কেউ তাদের উপর জবরদস্তি করে তবে তাদের উপর জবরদস্তির পর আল্লাহ (তাদের প্রতি) ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
তোমাদের নিকট অবতীর্ণ করেছি সুস্পষ্ট আয়াত আর তোমাদের পূর্বে যারা অতীত হয়ে গেছে তাদের দৃষ্টান্ত ও মুত্তাকীদের জন্য দিয়েছি উপদেশ।
আল্লাহ আসমান ও যমীনের আলো, তাঁর আলোর দৃষ্টান্ত হল যেন একটি তাক- যার ভিতরে আছে একটি প্রদীপ, প্রদীপটি হচ্ছে কাঁচের ভিতরে, কাঁচটি যেন একটি উজ্জ্বল নক্ষত্র, যা প্রজ্জ্বলিত করা হয় বরকতময় যায়তুন গাছের তেল দ্বারা যা পূর্বদেশীয়ও নয়, আর পশ্চিমদেশীয়ও নয়। আগুন তাকে স্পর্শ না করলেও তার তেল যেন উজ্জ্বলের বেশ নিকটবর্তী, আলোর উপরে আলো। আল্লাহ যাকে ইচ্ছে করেন স্বীয় আলোর দিকে পথ দেখান। আল্লাহ মানুষের জন্য দৃষ্টান্ত পেশ করেন, আল্লাহ সর্ববিষয়ে অধিক জ্ঞাত।
(এ রকম আলো জ্বালানো হয়) সে সব গৃহে (অর্থাৎ মাসজিদে ও উপাসনালয়ে) যেগুলোকে সমুন্নত রাখতে আর তাতে তাঁর নাম স্মরণ করতে আল্লাহ নির্দেশ দিয়েছেন, ওগুলোতে তাঁর মাহাত্ম্য ঘোষণা করা হয় সকাল ও সন্ধ্যায় (বার বার)
ঐ সব লোকের দ্বারা ব্যবসায় ও ক্রয়-বিক্রয় যাদেরকে তাঁর স্মরণ হতে বিচ্যুত করতে পারে না, আর নামায প্রতিষ্ঠা ও যাকাত প্রদান থেকেও না। তাদের ভয় করে (কেবল) সেদিনের যেদিন অন্তর ও দৃষ্টিসমূহ উল্টে যাবে।
(তারা এভাবে আল্লাহর ইবাদাত করে) যাতে আল্লাহ তাদেরকে পুরস্কৃত করেন তাদের উত্তম কার্যাবলী অনুসারে আর নিজ অনুগ্রহে আরো অধিক দেন, কারণ আল্লাহ যার জন্য ইচ্ছে করেন অপরিমিত রিযক্ দান করেন।
আর যারা কুফুরী করে তাদের কাজকর্ম হল বালুকাময় মরুভূমির মরীচিকার মত। পিপাসার্ত ব্যক্তি সেটাকে পানি মনে করে অবশেষে সে যখন তার নিকটে আসে, সে দেখে ওটা কিছুই না, সে সেখানে পায় আল্লাহকে, অতঃপর আল্লাহ তার হিসাব চুকিয়ে দেন। আল্লাহ দ্রুত হিসাব গ্রহণ করে থাকেন।
অথবা (কাফিরদের অবস্থা) বিশাল গভীর সমুদ্রে গভীর অন্ধকারের ন্যায়, যাকে আচ্ছন্ন করে রেখেছে ঢেউয়ের উপরে ঢেউ, তার উপরে মেঘ, একের পর এক অন্ধকারের স্তর, কেউ হাত বের করলে সে তা একেবারেই দেখতে পায় না। আল্লাহ যাকে আলো দান করেন না, তার জন্য কোন আলো নেই।