তারা বলল, ‘হে আমাদের আব্বাজান! কী ব্যাপার, আপনি ইউসুফের ব্যাপারে আমাদেরকে বিশ্বাস করেন না কেন, অথচ আমরা অবশ্যই তার কল্যাণকামী।
তাকে আগামীকাল আমাদের সঙ্গে পাঠিয়ে দিন, সে আমোদ করবে আর খেলবে, আমরা তার পুরোপুরি দেখাশুনা করব।’
পিতা বলল, ‘তোমরা যে তাকে নিয়ে যাবে সেটা আমাকে অবশ্যই কষ্ট দেবে আর আমি ভয় করছি যে, নেকড়ে বাঘ তাকে খেয়ে ফেলবে, আর তখন তার সম্পর্কে তোমরা বে-খেয়াল হয়ে থাকবে।’
তারা বলল, ‘আমরা একটা দল থাকতে তাকে যদি নেকড়ে বাঘে খেয়ে ফেলে, তাহলে তো আমরা অপদার্থই বনে যাবো।’
অতঃপর যখন তারা তাকে নিয়ে গেল, আর তাকে অন্ধ কূপে ফেলার ব্যাপারে মতৈক্যে পৌঁছল, এমতাবস্থায় আমি ইউসুফকে ওয়াহী করলাম- এক সময় আসবে যখন তুমি তাদেরকে তাদের এ কর্মের কথা অবশ্য অবশ্যই ব্যক্ত করবে।’ অথচ তারা (অর্থাৎ ইউসুফের ভাইয়েরা) মোটেই টের পাবে না।
রাতের প্রথম প্রহরে তারা তাদের পিতার কাছে কাঁদতে কাঁদতে আসল।
তারা বলল, ‘হে আমাদের আব্বাজান! আমরা দৌড়ের প্রতিযোগিতা করছিলাম, আর ইউসুফকে আমরা আমাদের জিনিসপত্রের কাছে রেখে গিয়েছিলাম, তখন তাকে নেকড়ে বাঘে খেয়ে ফেলল, কিন্তু আপনি তো আমাদের কথা বিশ্বাস করবেন না, আমরা সত্যবাদী হলেও।’
তারা তার জামায় মিছেমিছি রক্ত মাখিয়ে নিয়ে এসেছিল। পিতা বলল, ‘না, বরং তোমাদের প্রবৃত্তি তোমাদেরকে একটা কাহিনী বানাতে উদ্বুদ্ধ করেছে। ঠিক আছে, আমি পুরোপুরি ধৈর্য ধারণ করব, তোমরা যা বানিয়েছ সে ব্যাপারে আল্লাহই আমার আশ্রয়স্থল।’
সেখানে একটা কাফেলা আসলো। তারা তাদের পানি সংগ্রহকারীকে পাঠালো। সে তার পানির বালতি নামিয়ে দিল। সে বলল, ‘কী খুশির খবর! এ যে দেখছি এক বালক!’ তারা তাকে পণ্য দ্রব্য জ্ঞানে লুকিয়ে দিল, আর তারা যা করছিল সে সম্পর্কে আল্লাহ খুবই অবহিত।
তারা তাকে স্বল্প মূল্যে- মাত্র কয়টি দিরহামের বিনিময়ে বিক্রি করে দিল, তারা ছিল তাকে তুচ্ছ জ্ঞানকারী!