বল, ‘এসো, তোমাদের প্রতিপালক তোমাদের জন্য যা নিষিদ্ধ করেছেন তা পড়ে শোনাই, তা এই যে, তাঁর সাথে কোন কিছুকে শরীক করো না, পিতা-মাতার সঙ্গে সদ্ব্যবহার কর, দরিদ্রতার ভয়ে তোমাদের সন্তানদের হত্যা করো না, আমিই তোমাদেরকে আর তাদেরকে জীবিকা দিয়ে থাকি, প্রকাশ্য বা গোপন কোন অশ্লীলতার কাছেও যেয়ো না, আল্লাহ যে প্রাণ হরণ করা হারাম করেছেন তা ন্যায় সঙ্গত কারণ ছাড়া হত্যা করো না। এ সম্পর্কে তিনি তোমাদেরকে নির্দেশ দিচ্ছেন যাতে তোমরা চিন্তা- ভাবনা করে কাজ কর।
(ইয়াতীমরা) বয়ঃপ্রাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত কল্যাণ সাধনের উদ্দেশ্য ছাড়া ইয়াতীমদের সম্পত্তির নিকটবর্তী হয়ো না। পরিমাপ ও ওজন ন্যায়সঙ্গতভাবে পূর্ণ কর, আমি কোন ব্যক্তির উপর সাধ্যের অতিরিক্ত দায়িত্ব চাপিয়ে দেই না, যখন কথা বলবে তখন ইনসাফপূর্ণ কথা বলবে- নিকটাত্মীয়দের সম্পর্কে হলেও, আর আল্লাহর সঙ্গে কৃত ওয়াদা পূর্ণ কর। এসব ব্যাপারে তিনি নির্দেশ দিচ্ছেন যাতে তোমরা উপদেশ গ্রহণ কর।
আর এটাই আমার সঠিক সরল পথ, কাজেই তোমরা তার অনুসরণ কর, আর নানান পথের অনুসরণ করো না, করলে তা তোমাদেরকে তাঁর পথ থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলবে। এভাবে তিনি তোমাদেরকে নির্দেশ দিচ্ছেন যাতে তোমরা তাঁকে ভয় করে যাবতীয় পাপ থেকে বেঁচে চলতে পার।
অতঃপর (তোমরা অবগত হও যে) আমি মূসাকে কিতাব দিয়েছিলাম যার মাধ্যমে আমি আমার নি‘য়ামাত পূর্ণ করে দিয়েছিলাম তাদের জন্য যারা উত্তম কাজ করে, তাতে ছিল যাবতীয় বিষয়ের বিশদ বিবরণ, (তা ছিল) সঠিক পথের দিশারী ও দয়া স্বরূপ যাতে তারা তাদের প্রতিপালকের সঙ্গে সাক্ষাতের ব্যাপারে বিশ্বাস স্থাপন করে।
আর এ কিতাব যা আমি অবতীর্ণ করলাম তা বরকতময়, কাজেই তা মান্য কর, আর আল্লাহকে ভয় করে চল, যাতে তোমাদের উপর দয়া বর্ষিত হয়।
যাতে তারা না বলতে পারে যে কিতাব তো শুধু আমাদের পূর্বের দু’দল (ইয়াহূদী ও খ্রীস্টান) এর উপর অবতীর্ণ হয়েছিল আর আমরা জানতাম না ওরা কী পড়ত আর পড়াত।
অথবা তোমরা না বলতে পার যে আমাদের উপর যদি কিতাব অবতীর্ণ হত তাহলে আমরা তাদের চেয়ে বেশি হিদায়াতপ্রাপ্ত হতাম। তাই এখন তোমাদের কাছে তোমাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে সুস্পষ্ট প্রমাণ, হিদায়াত ও রহমত এসেছে। অতঃপর যে ব্যক্তি আল্লাহর (এ সব) আয়াতসমূহকে মিথ্যে মনে ক’রে তাত্থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে তার চেয়ে বড় যালিম আর কে আছে? আমার আয়াতসমূহ থেকে যারা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তাদেরকে অচিরেই আমি তাদের মুখ ফিরিয়ে নেয়ার কারণে নিকৃষ্টতম শাস্তি প্রদান করব।
তারা কি এই অপেক্ষায় আছে যে, তাদের কাছে ফেরেশতারা আসবে অথবা তোমার প্রতিপালক (স্বয়ং) আসবেন কিংবা তোমার রবের কিছু নিদর্শন আসবে (তখন তারা ঈমান আনবে)? যে দিন তোমার রবের কতক নিদর্শন এসে যাবে সে দিন ঐ ব্যক্তির ঈমান কোন সুফল দিবে না যে পূর্বে ঈমান আনেনি বা ঈমানের মাধ্যমে কল্যাণ অর্জন করেনি। বল, তোমরা অপেক্ষা কর (তাহলে দেখতে পাবে তোমাদের কুফরীর পরিণাম কী দাঁড়ায়), আমরাও অপেক্ষায় থাকলাম (আমাদের পুরস্কার প্রাপ্তি ও তোমাদের পরিণতি দেখার জন্য)।
যারা নিজেদের (পূর্ণ পরিণত) দ্বীনকে খন্ডে খন্ডে বিভক্ত করে নিয়েছে আর (আপন আপন অংশ নিয়ে) দলে দলে ভাগ হয়ে গেছে তাদের কোন কাজের সাথে তোমার কোন সম্পর্ক নেই। তাদের ব্যাপারটি পুরোপুরি আল্লাহর ইখতিয়ারভুক্ত। (সময় হলেই) তিনি তাদেরকে জানিয়ে দেবেন তাদের কৃতকর্ম সম্পর্কে।
যে ব্যক্তি সৎকর্ম করবে তার জন্য আছে দশ গুণ পুরস্কার, আর যে ব্যক্তি অসৎকাজ করবে তাকে শুধু কৃতকর্মের তুল্য প্রতিফল দেয়া হবে, তাদের উপর অত্যাচার করা হবে না।