فَلَمَّا سَمِعَتْ بِمَكْرِهِنَّ اَرْسَلَتْ اِلَيْهِنَّ وَاَعْتَدَتْ لَهُنَّ مُتَّكَاً وَّاٰتَتْ كُلَّ وَاحِدَةٍ مِّنْهُنَّ سِكِّيْنًا وَّقَالَتِ اخْرُجْ عَلَيْهِنَّ ۚ فَلَمَّا رَاَيْنَهٗٓ اَكْبَرْنَهٗ وَقَطَّعْنَ اَيْدِيَهُنَّۖ وَقُلْنَ حَاشَ لِلّٰهِ مَا هٰذَا بَشَرًاۗ اِنْ هٰذَآ اِلَّا مَلَكٌ كَرِيْمٌ ( يوسف: ٣١ )
মহিলাটি যখন তাদের চক্রান্তের কথা জানতে পারল, তখন তাদেরকে ডেকে পাঠাল আর তাদের জন্য হেলান দিয়ে বসার ব্যবস্থা করল, আর তাদের প্রত্যেককে একটা করে ছুরি দিল। অতঃপর ইউসুফকে বলল, ‘ওদের সামনে বেরিয়ে এসো।’ যখন তারা তাকে দেখল, বিস্ময়ে অভিভূত হয়ে গেল আর নিজেদের হাত কেটে ফেলল, আর বলল, ‘আল্লাহ আমাদের রক্ষা করুন, এ তো মানুষ নয়, এতো এক সম্মানিত ফেরেশতা।’
قَالَتْ فَذٰلِكُنَّ الَّذِيْ لُمْتُنَّنِيْ فِيْهِ ۗوَلَقَدْ رَاوَدْتُّهٗ عَنْ نَّفْسِهٖ فَاسْتَعْصَمَ ۗوَلَىِٕنْ لَّمْ يَفْعَلْ مَآ اٰمُرُهٗ لَيُسْجَنَنَّ وَلَيَكُوْنًا مِّنَ الصّٰغِرِيْنَ ( يوسف: ٣٢ )
মহিলাটি বলল, ‘এ হল সেই যার ব্যাপারে তোমরা আমাকে ভৎর্সনা করছ, আমিই তো তাকে ভুলাতে চেষ্টা করেছি, কিন্তু সে নিজেকে নিষ্পাপ রেখেছে, আমি তাকে যে আদেশ করি তা যদি সে না করে, তাহলে তাকে অবশ্যই কয়েদ করা হবে, আর সে হীন লোকদের অন্তর্ভুক্ত হবে।’
قَالَ رَبِّ السِّجْنُ اَحَبُّ اِلَيَّ مِمَّا يَدْعُوْنَنِيْٓ اِلَيْهِ ۚوَاِلَّا تَصْرِفْ عَنِّيْ كَيْدَهُنَّ اَصْبُ اِلَيْهِنَّ وَاَكُنْ مِّنَ الْجٰهِلِيْنَ ( يوسف: ٣٣ )
সে (ইউসুফ) বলল, ‘হে আমার রব্ব! তারা আমাকে যে দিকে ডাকছে তার চেয়ে জেলখানা আমার কাছে অধিক প্রিয়। তুমি যদি আমা হতে তাদের অপকৌশল সরিয়ে না দাও তা হলে আমি তাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ব, আর অজ্ঞদের দলে শামিল হয়ে যাব।’
فَاسْتَجَابَ لَهٗ رَبُّهٗ فَصَرَفَ عَنْهُ كَيْدَهُنَّ ۗاِنَّهٗ هُوَ السَّمِيْعُ الْعَلِيْمُ ( يوسف: ٣٤ )
তখন তার প্রতিপালক তার ডাকে সাড়া দিলেন আর তার থেকে তাদের কূট কৌশল অপসারিত করলেন, তিনি সব কিছু শুনেন, সব কিছু জানেন।
ثُمَّ بَدَا لَهُمْ مِّنْۢ بَعْدِ مَا رَاَوُا الْاٰيٰتِ لَيَسْجُنُنَّهٗ حَتّٰى حِيْنٍ ࣖ ( يوسف: ٣٥ )
নিদর্শনবলী দেখার পর তাদের মনে হল যে, কিছু দিনের জন্য তাকে অবশ্য অবশ্যই কারারুদ্ধ করতে হবে।
وَدَخَلَ مَعَهُ السِّجْنَ فَتَيٰنِ ۗقَالَ اَحَدُهُمَآ اِنِّيْٓ اَرٰىنِيْٓ اَعْصِرُ خَمْرًا ۚوَقَالَ الْاٰخَرُ اِنِّيْٓ اَرٰىنِيْٓ اَحْمِلُ فَوْقَ رَأْسِيْ خُبْزًا تَأْكُلُ الطَّيْرُ مِنْهُ ۗنَبِّئْنَا بِتَأْوِيْلِهٖ ۚاِنَّا نَرٰىكَ مِنَ الْمُحْسِنِيْنَ ( يوسف: ٣٦ )
তার সঙ্গে দু’যুবকও কারাগারে প্রবেশ করেছিল। তাদের একজন বলল, ‘আমি স্বপ্নে দেখলাম যে আমি মদ তৈরি করছি।’ অন্যজন বলল, ‘আমি স্বপ্নে দেখলাম, আমি মাথায় রুটি বহন করছি আর পাখী তাত্থেকে খাচ্ছে। আমাদেরকে এর ব্যাখ্যা বলে দাও, আমরা দেখছি তুমি একজন সৎকর্মশীল লোক।’
قَالَ لَا يَأْتِيْكُمَا طَعَامٌ تُرْزَقٰنِهٖٓ اِلَّا نَبَّأْتُكُمَا بِتَأْوِيْلِهٖ قَبْلَ اَنْ يَّأْتِيَكُمَا ۗذٰلِكُمَا مِمَّا عَلَّمَنِيْ رَبِّيْۗ اِنِّيْ تَرَكْتُ مِلَّةَ قَوْمٍ لَّا يُؤْمِنُوْنَ بِاللّٰهِ وَهُمْ بِالْاٰخِرَةِ هُمْ كٰفِرُوْنَۙ ( يوسف: ٣٧ )
সে (ইউসুফ) বলল, ‘তোমাদেরকে যে খাবার দেয়া হয় তা আসার আগেই আমি তোমাদেরকে তার ব্যাখ্যা জানিয়ে দেব। আমার প্রতিপালক আমাকে যে জ্ঞান দান করেছেন এটা সেই জ্ঞানেরই অংশ। যে সম্প্রদায় আল্লাহতে বিশ্বাস করে না আর আখেরাতে অবিশ্বাসী, আমি তাদের নিয়ম নীতি পরিত্যাগ করেছি।
وَاتَّبَعْتُ مِلَّةَ اٰبَاۤءِيْٓ اِبْرٰهِيْمَ وَاِسْحٰقَ وَيَعْقُوْبَۗ مَا كَانَ لَنَآ اَنْ نُّشْرِكَ بِاللّٰهِ مِنْ شَيْءٍۗ ذٰلِكَ مِنْ فَضْلِ اللّٰهِ عَلَيْنَا وَعَلَى النَّاسِ وَلٰكِنَّ اَكْثَرَ النَّاسِ لَا يَشْكُرُوْنَ ( يوسف: ٣٨ )
আমি আমার পূর্বপুরুষ ইবরাহীম, ইসহাক ও ইয়া‘কূবের আদর্শের অনুসরণ করি। আল্লাহর সাথে কোন কিছুকে শরীক করা আমাদের কাজ নয়। এটা আমাদের প্রতি ও মানুষের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ, কিন্তু অধিকাংশ লোকই শোকর করে না।
يٰصَاحِبَيِ السِّجْنِ ءَاَرْبَابٌ مُتَفَرِّقُوْنَ خَيْرٌ اَمِ اللّٰهُ الْوَاحِدُ الْقَهَّارُۗ ( يوسف: ٣٩ )
হে আমার জেলের সঙ্গীদ্বয়! ভিন্ন ভিন্ন প্রতিপালক ভালো, না মহাপরাক্রমশালী এক আল্লাহ?
مَا تَعْبُدُوْنَ مِنْ دُوْنِهٖٓ اِلَّآ اَسْمَاۤءً سَمَّيْتُمُوْهَآ اَنْتُمْ وَاٰبَاۤؤُكُمْ مَّآ اَنْزَلَ اللّٰهُ بِهَا مِنْ سُلْطٰنٍۗ اِنِ الْحُكْمُ اِلَّا لِلّٰهِ ۗاَمَرَ اَلَّا تَعْبُدُوْٓا اِلَّآ اِيَّاهُ ۗذٰلِكَ الدِّيْنُ الْقَيِّمُ وَلٰكِنَّ اَكْثَرَ النَّاسِ لَا يَعْلَمُوْنَ ( يوسف: ٤٠ )
তাঁকে বাদ দিয়ে তোমরা যার ‘ইবাদাত করছ তা কতকগুলো নাম ছাড়া আর কিছুই নয়, যে নামগুলো তোমরা আর তোমাদের পিতৃ পুরুষরা রেখেছ। এ ব্যাপারে আল্লাহ কোন প্রমাণ নাযিল করেননি। আল্লাহ ছাড়া কোন বিধান দাতা নেই। তিনি আদেশ করেছেন যে, তোমরা তাঁকে ছাড়া আর কারো ‘ইবাদাত করবে না, এটাই সঠিক দ্বীন, কিন্তু অধিকাংশ মানুষই তা জানে না।